#_ল্যাম্পপোস্টের_ঘোলাটে_বাতি ।
#_পর্ব = ৩৭
” তুমি কি আমাকে অপমান করে বের করে দিচ্ছ? ”
” নাহহ বরং আপনার অপমানের হাত থেকে বাঁচতে তাড়াতাড়ি যেতে বলছি। আপনি যতক্ষণ থাকবেন ততক্ষণ শুধু অপমান করবেন সেটা বুঝতে পারছি। তাই আপনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চলে যান, আর পথে সজীব এর সাথে দেখা হলে তাকেও সাথে করে নিয়ে যাবেন। ”
” আমি কিন্তু অপমান করে কিছু বলিনি, যেভাবে করলে দুটো পরিবারের ভালো হবে সেটা বোঝাতে চাই। আর সেটাকে তুমি অপমান বলে আমাকে উল্টো অপমান করছো। ”
” আপনি যদি সেটা মনে করেন তাহলে কিছু বলার নেই আমার। তবে আমি সবচেয়ে বেশি খুশি হতাম যদি আপনি রুম থেকে বেরিয়ে যেতেন। ”
” ঠিক আছে চলে যাচ্ছি তবে আমাদের ছেলের কাছে আবার আমার দোষ বলে ঝামেলা আরম্ভ করে দিও না। ”
” আপনার সাথে কথা বলার পরে আপনার ছেলের সাথে কথা বলার রুচি হারিয়ে গেছে। আমি আর কথা বাড়াতে চাই না সুতরাং প্লিজ আপনি চলে গেলে ভালো হয়। ”
সজীব এর খালা রুম থেকে বেরিয়ে গজগজ করতে করতে নিচে নেমে গেল। রাস্তায় ভেবেছিল সজীব এর সাথে দেখা হবে কিন্তু হলো না কারণ সজীব পানি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল ঠিকই কিন্তু রিক্সা পাচ্ছিল না। আর সজীব এর খালা বাসা থেকে বেরিয়ে গলির ভিতর একটা লোককে রিক্সা থেকে নামতে দেখলেন এবং সেই খালি রিক্সায় উঠে তিনি বন্দরটিলার দিকে চলে গেল।
সজীব পানি নিয়ে বাসায় গিয়ে দেখে রুমের মধ্যে কবরস্থানের মতো নীরবতা বিরাজ করছে। রুমের সামনে দাঁড়াতেই বৃষ্টি তার হাত ধরে টেনে ছাঁদের দিকে নিয়ে গেল। সজীব কিছুতেই কিছু বুঝতে পারছে না তাই সে নির্বিকার।
” সজীব বললো, কি হইছে বৃষ্টি? খালা কোথায়? ”
” চলে গেছে। ”
” কেন? ”
” সেই কারণ তুমি তোমার খালার কাছে জেনে নিও কিন্তু শুধু একটা প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। ”
” কি? ”
” আমি তোমাকে এতদিন কেন নিজের সাথে জড়াতে চাই নাই নিশ্চয়ই জানো? ”
” হ্যাঁ তোমার পরিবারের জন্য। ”
” এখনো সেটাই বলবো, যদি বলো তাহলে আমি এই হাত দিয়ে তোমার পা ধরবো তবুও তুমি আর কখনো আমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করবে না। প্লিজ সজীব এত অপমান যন্ত্রণা আর সহ্য করতে পারি না তাই মুক্তি চাই। ”
” আমার অপরাধ? ”
” তোমার কোন দোষ নেই, কিন্তু খুব স্বাভাবিক ভাবে ঠান্ডা মাথায় বলছি তুমি আর আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করবে না। আর তোমার খালার কাছে আজকের সম্পুর্ণ ঘটনা জিজ্ঞেস করবে তারপর সবকিছু শুনে তুমি যদি আমার সামনে দাঁড়াতে লজ্জা না পাও তাহলে সামনে এসো। ”
” আমি সত্যি সত্যি লজ্জিত। ”
” আমার বাবার এক সাইড প্যারালাইজড হয়ে গেছে সেটা তোমার খালা জানে না? ”
” অনেক আগে একবার বলেছিলাম। ”
” ওহহ আচ্ছা, তুমি তাহলে এবার যাও। ”
” ঠিক আছে কিন্তু আমি আবার আসবো। ”
” বললাম তো যদি সবকিছু শুনে আমার সামনে দাঁড়াতে পারো তাহলে এসো। ”
★★
একরাশ হতাশা নিয়ে সজীব রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে বাসার দিকে রওনা দিল। সারাদিনের রোজার ক্লান্তি আর অফিসের চাপে পা আর চলতে চায় না। সজীব এর ধারণা ছিল শশুরের বাসায় রাতের বেলা পেট ভরে খাবে কিন্তু কপাল খারাপ।
খালার বাসায় যখন পৌছাল তখন আটটার মতো বাজে, সজীব এর খালা রান্না করতে বসেছে। দরজা খোলা ছিল সজীব চুপচাপ রুমের মধ্যে প্রবেশ করে খাটের উপর বসলো। কিছুক্ষণ নীরব থেকে সজীব টিভির দিকে তাকিয়ে বললো,
” হঠাৎ করে কিছু না জানিয়ে চলে আসার কি খুব দরকার ছিল? ”
” তাহলে সেখানে বসে বসে তোর প্রেমিকার কাছে অপমানিত হলে খুব খুশী লাগতো নাকি? ”
” অপমানের কি কিছু হইছে? ”
” আমাকে বলে আমার নাকি মানসিকতা খারাপ এটা কি সহ্য করার মতো? ”
” তুমি কি তার আগে কিছু বলছো? ”
” মেয়েটার বাবা যে অচল হয়ে গেছে আর তাদের সংসার মা মেয়ে দুজন গার্মেন্টস করে চালায় সেটা তো আগে জানতাম না। ”
” আমি তোমাকে বলেছিলাম কিন্তু তোমার হয়তো মনে নেই, আর তাছাড়া অসুস্থতার উপর আমাদের তো কোন হাত নেই তাই না? আজকে বৃষ্টির বাবাকে আল্লাহ অসুস্থ করে দিয়েছে কালকে তো আমারও এমন পরিস্থিতি হতে পারে। ”
” হতে পারে, আর হয়ে গেছে, এই দুটো বাক্যের মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। তোর মা-বাবা যখন দেখবে এমন একটা পরিবারের সাথে তোর বিয়ে ঠিক করা হয়েছে তখন তো আমার কাছে জবাব চাইবে। ”
” তোমার কি ধারণা যে মা-বাবা বৃষ্টিকে মেনে নেবে না? ”
” নাহ মেনে নিবে না। তুই আবেগে পরে একটা মেয়ের রূপ দেখে পাগল হতে পারো কিন্তু আমরা তো তোর মতো ভুল করতে পারি না। আর তোর মা-বাবা যদি তাকে মেনে নিতে পারে তাহলে আমার কোন আপত্তি নেই। ”
” ঠিক আছে আমি তাহলে তোমার উপর নির্ভর করা ছেড়ে দিচ্ছি, আর একই শহরে পাশাপাশি থেকেও আপাতত আর দেখা হবে না। ভালো থেকো। ”
” ওই মেয়ের জন্য আমাদের সাথে রাগ করে চলে যাবি তুই? ”
” ওই মেয়ের জন্য না, বরং আমি তোমার জন্য চলে যাচ্ছি। ”
” ঠিক আছে ভালো তো ভালো না? ”
” জানিনা। ”
★★
বাসায় গিয়ে রকির কাছে জানতে পারলো শফিক আপাতত আসতে পারছে না। তার বড়মামা কানাডা থাকে তাই শফিক সেখানে স্টুডেন্ট ভিসায় যাবার জন্য আবেদন করবে। আপাতত তাকে ঢাকা শহর গিয়ে কিছু কাগজ পত্র জমা দিতে হবে তারমধ্যে আবার পাসপোর্ট করতে হবে। সব মিলিয়ে শফিক আর আসতে পারবে না মনে হয় তাই সে সন্ধ্যা বেলা রকির কাছে কল দিয়ে জানিয়েছে।
বৃষ্টির সাথে বিয়ের বিষয়টা ভেঙ্গে গেছে শুনে রকির মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরলো। সে এমনটা আশা করে নাই আর প্রথমটা সে বিশ্বাস করতে পারে নাই। কিন্তু সজীব শুধু একটু পর পর কারণ ছাড়া হেসে ওঠে, রকি ভয় পেয়ে যায়। সজীবের কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি?
সজীব বৃষ্টির কাছে কল দিল, বৃষ্টি ঠাণ্ডা মাথায় বলে দিল যে, ” সজীব তোমার কাছে তোমার মা-বাবা ঠিক যতটুকু গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে আমার মা-বাবা ঠিক ততটুকু গুরুত্বপূর্ণ। আজকের এই আঘাত মুছে দেবার মতো কোন কিছু পৃথিবীতে তুমি পাবে কিনা জানিনা। কিন্তু আমি চাই এ জীবনে তুমি আর কভু আমার সামনে না আসো। তোমাকে এতটাই বেশি ভালবেসে ফেলেছি যে তোমাকে সামনে পেলে আমি হাউমাউ করে তোমার বুকে লুটিয়ে পরবো। আমি চাই সেই অনাকাঙ্ক্ষিত দিনটা তোমার আমার ক্ষুদ্র জীবনে না আসুক। মা-বাবা আত্মীয় বন্ধুদের নিয়ে আমার সজীব ভালো থাকুক।
পরদিন দ্বিতীয় রমজানে সজীব তার বাড়িতে বৃষ্টির বিষয় নিয়ে কথা বলে কিন্তু তারা সজীব এর খালার উপর নির্ভর। সজীব এর মা বললো, তোমার খালা যেহেতু আছে সেহেতু আমাদের মতামতের কোনো দরকার নেই। তোমার খালা যেটা করে সেটাই হবে সমস্যা নেই আমাদের। সজীব বুঝতে পারছে খালা তার মা-বাবার কাছে আগেই কথা বলে সবকিছু শিখিয়ে রেখেছে। সজীব একরাশ হতাশা নিয়ে মোবাইল কেটে দিল কারণ মা-বাবার সঙ্গে তো আর রাগ করা যায় না।
সজীব এর সাথে বৃষ্টির বিয়ে ঠিক হবার কথা ছিল এবং সজীব এর খালা বাসায় এসে অপমান করে গেছে এ বিষয় সবকিছু বৃষ্টির মা মামুনের কাছে বলে দিল। মামুন সবকিছু শুনে মহাখুশি হয়ে গেল কারণ সে এখন বৃষ্টির কাছে পৌঁছাতে পারবে এমন আশা করা যায়। কিন্তু তার স্বপ্ন বৃথা হয়ে গেল কারণ সে দু তিনবার বৃষ্টিদের বাসায় গেছে তবে তাকে দেখে বৃষ্টি রুম থেকে বেরিয়ে যায়। মামুন অনেকক্ষণ শুকনো মুখে বসে থাকে তারপর আবার বাসায় চলে আসে। তাই সে সিদ্ধান্ত নেয় যে বাসায় না গিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাঁটতে হাঁটতে কিছু একটা করতে হবে। আর কোন উপায় আপাতত জানা নেই তাই সে সাবধানে সবকিছু ভাবতে থাকে। তার বিশ্বাস সজীব যেহেতু পথের বাইরে আছে তখন তার নিজের চলার পথ অনেক পরিষ্কার হবে।
|
আরো তিন চারদিন পার হয়ে গেছে কিন্তু সজীব আর বৃষ্টির সাথে কোন যোগাযোগ নেই। অথচ দুজন দুজনের জন্য বুক ভর্তি ভালবাসা নিয়ে একজন আরেকজনকে দেবার জন্য ছটফট করে। পরিস্থিতি তাদের দুজনের ভালবাসার বিনিময় করতে দিচ্ছে না কি এক আজব বাস্তবতা। সজীব দিনের মধ্যে বৃষ্টির নাম্বারে কল করে কিন্তু বৃষ্টি রিসিভ করে না আবার ব্লক লিস্টে রাখার জন্য চেষ্টা করে কিন্তু মনের গভীর থেকে একটা বাঁধা এসে থামিয়ে দেয়। রাতের বেলা ঘুমাতে গেলে তার নিজের চোখ দুটো তার সাথে যেন বেঈমানী করে। সে চায় একটু শান্তি অনুভব করে দুচোখের পাতা এক করে চুপটি করে থাকবে। কিন্তু চোখ দুটো বেঈমানী করে শুধু শুধু অঝোরে ঝড়তে থাকে অসহ্য যন্ত্রণা দিয়ে। মাঝে মাঝে বিছানা ছেড়ে গভীর রাতে ছাঁদের কিনারে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবতে থাকে। এভাবে কি জীবন চলে? কেন এমন হয়ে যায়? তার এমন একটা মানুষ দরকার যে মানুষটা ইশারা দিলেই তার সকল কষ্ট বুঝতে পারবে। তাকে মন খারাপের সময় বুকের মধ্যে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলবে আমি আছি তো। সে তার ভেতরে ভেতরে সামান্য একটু বিক্ষোভের আগুনে জ্বলে উঠলেই মানুষটা তোর মন ছুঁয়ে দিবে। এক অদ্ভূত শীতলতায় শান্ত হয়ে যাবে তার মনের সকল জ্বলন্ত কষ্ট। হাজার মাইল দূরে সরে গেলেও পৃথিবীর এক প্রান্তে হয়তো সে জ্বলে যাবে নিরন্তর। অন্য প্রান্তে হয়তো তার জন্য একটা মানুষ একরাশ শীতলতা নিয়ে চুপ করে বসে আছে।
সজীব এবং বৃষ্টি দুজনেই জানে তাদের দুজনেরই
দুজনকে ভীষণ দরকার। কিন্তু পরিস্থিতি বাস্তবতা তাদেরকে আলাদা করে দিয়েছে আকাশ পাতালের মতো। পৃথিবীটা বড়োই বিচিত্র নিষ্টুর কারণ এ নিষ্ঠুর পৃথিবী কারো “দরকার” বুঝে না। ভালবাসার স্পর্শ ছুয়ে দেখতে দেয় না। দুটি মনে আকুতি আর্তচিৎকার কানে বাজায় না, অনুভূতি বুঝতে চায় না। যদি সে
বুঝতো তাহলে সে অতটা বড় হতো না, সে অনেকটা ছোট হয়ে সে দুই প্রান্তের দুটো অভিমানী মানুষ কে মিলিয়ে দিতো।
★★
আজ দশম রমজান। অনেক দিন ধরে মিতু সজীব এর পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছে কিন্তু জিজ্ঞেস করার সাহস হচ্ছে না। তবে তার মনের মধ্যে প্রচুর ভয় ধরে গেছে কারণ তার ধারণা মামুন হয়তো যেকোন ভাবে সজীব আর বৃষ্টির মাঝে ফাটল সৃষ্টি করেছে। কিন্তু সে আগ বাড়িয়ে জিজ্ঞেস করতে পারে না তাহলে যদি সজীব তাকে সন্দেহ করে?
আগের মতো সজীব এর সাথে অফিসে বসে দেখা হয় না আবার যদি হয় তখন সামান্য কিছু কথা বলে কাজে চলে যায়। মিতু যখন কথা বলার জন্য সামনে দাঁড়িয়ে মুখ হা করে তখন সাথে সাথে সজীব বলে, আমার একটু ফটোকপি করতে হবে যাই তাহলে।
সজীবের কথা শুনে মিতুর বুক ফেটে কান্না আসতে চায়, মিতু ওয়াশরুমে গিয়ে চোখে মুখে ভালো করে পানি ছিটিয়ে কাজ করতে বসে।
গতকাল রাতে মিতু অনেকদিন পর তার বাবার সাথে কথা বলেছে। বাবার সঙ্গে কথা বলে মিতুর মনটা আরো বেশি খারাপ লাগে। সজীব এর কাছে কল করেছিল কিন্তু সজীব রিসিভ করে বলেছে যে, সে বাইরে আছে পরে কথা হবে। কিন্তু সজীব আর কল করে নাই। মিতু তখন তার বাবার সাথে বলা কথা গুলো ভালো করে ভাবতে থাকো।
” হ্যালো বাবা? কেমন আছো তুমি? ”
” এতদিন পরে বাবার কথা মনে হলো? আছি আল্লাহ ভালো রেখেছেন, তোর কি অবস্থা? ”
” সবদিক দিয়ে ভালোই আছি বাবা কিন্তু একটা বিষয় নিয়ে খুব ডিপ্রেশনে। ”
” কি হইছে? ”
” মায়ের শরীর কেমন আছে? ”
” তোর মা আলহামদুলিল্লাহ ভালো, তুই ডিপ্রেশনে কিসের জন্য তাই বল? ”
” সজীব এর কথা মনে আছে তোমার? আমার সাথে একটা ছেলে গেছিল আমাদের বাড়িতে। ”
” থাকবে না কেন? অবশ্যই মনে আছে। ”
” ওর সাথে আমার এখনো যোগাযোগ আছে বাবা, আমরা এখন একই অফিসে চাকরি করি। আসলে বাবা ও মানুষটা কেমন যেন একটা অদ্ভুত ধরনের, ওকে ভুলে থাকার চেষ্টা করছি কিন্তু পারি না। ”
” তাহলে তোর পছন্দের কথা বলে দে, যদি না পারো তাহলে নাম্বার দে আমি কথা বলবো। যদি তার সাথে বিয়ে হয়ে যায় তাহলে গ্রামের বাড়ি কেউ কিছু বলতে পারবে না। ”
” আমাকে নিয়ে অনেকে খারাপ কথা বলে তাই না বাবা? ”
” তা দু একজন বলে কিন্তু মানুষের কথা শুনলে কি আর পৃথিবী চলে? ”
” তবুও সবার সাথে মিলেমিশে চলতে হয়। ”
” ওই ছেলের সাথে কথা বলতে চাই আমি। ”
” লাভ নেই বাবা, ও বৃষ্টি নামের একটা মেয়েকে খুব পছন্দ করে আর পৃথিবীর যেকোন মূল্যে সজীব সেই মেয়েকে বিয়ে করতে চায়। ”
” ওহহ আচ্ছা, তাহলে তাকে পছন্দ করতে গেলি কেন? ”
” জানিনা, আচ্ছা বাবা রাখলাম তাহলে? ”
★★
সজীব এর অফিস ছুটি হয়েছে সাড়ে পাঁচটা বাজে, সে এখন বৃষ্টিদের বাসার সামনে সেই পানির টাংকির কাছে যাচ্ছে। গতকাল জুয়েলার্সের দোকান থেকে কল দিয়ে নুপুর আনার জন্য বলা হয়েছে। তার সেই নুপুর অনেকদিন আগেই বানানো হয়ে গেছে কিন্তু সে এখনো গিয়ে নিয়ে আসে নাই তাই কল করেছে।
নুপুর জোড়া দেখে সজীব মুগ্ধ হয়ে গেল, কল্পনার মাঝে সে বৃষ্টির পায়ে নুপুর দেখতে পেল। কত সুন্দর করে বৃষ্টির আলতা রাঙা পায়ে নুপুর জোড়া পরিয়ে দিচ্ছে সে। নিজের অজান্তেই ফিক করে হেঁসে দিল কিন্তু আবার পরক্ষণেই সেই হাসি বন্ধ করে সামনে হাঁটা শুরু করলো।
এখন শুধু একটাই কাজ করতে হবে, বৃষ্টির কাছে এই নুপুর পৌঁছাতে হবে। এ জীবনের সঙ্গী হিসেবে যদি নাও পায় তবুও তার ভালবাসার একটা ক্ষুদ্র স্মৃতি সে বৃষ্টির কাছে রাখতে চায়। কিন্তু বৃষ্টি তার এই ক্ষুদ্র স্মৃতি গ্রহণ করবে কিনা সেটাই ভাবনার বিষয়।
#বিঃদ্রঃ- এই গল্পটা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত এখন থেকে একদিন পর পর পোস্ট করা হবে। আমি শহরে যাচ্ছি তাই চাকরি করে বাসায় ফিরে এই ব্যাচেলর জীবনে নিজে রান্না করে খেতে হয়। অনেক সময় ব্যয় হবে যাবে পাশাপাশি নতুন গল্পটা পোস্ট করা হচ্ছে তাই।
#চলবে….
লেখাঃ-
মোঃ সাইফুল ইসলাম (সজীব)