(১৮+এলার্ট)
#শব্দহীন_প্রণয়কাব্য(বারো)
#Mst.Shah Mira Rahman
রাত প্রায় আটটা।মির্জা বাড়ি থেকে বেশ দূরে সিদ্ধান্ত গাড়ি দাঁড় করিয়েছে।ঢাকা থেকে মাত্র ফিরেছে তারা।সকাল হাসি মুখে তার থেকে বিদায় নিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্ধুত হতেই সিদ্ধান্ত হাত ধরে আটকালো তাকে।সকাল তাকাতেই দৃষ্টি বিনিময় হলো দুজনের। সকালের বুকটা ধ্বক করে উঠল।কি যেন ছিল ওই দৃষ্টিতে।সকাল কিছু না বলে তাকিয়ে রইল। সিদ্ধান্ত আলগোছে বুকে জড়িয়ে নিল তাকে।
“তোমার মনে হয়না এবার আমাদের তোমার পরিবার কে সবটা জানানো প্রয়োজন।”
সকাল কিছু বলল না ঘাপটি মেরে পড়ে রইল সিদ্ধান্তর বুকে।তার নিরবতা দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলল সিদ্ধান্ত।হাতের বাঁধন হালকা করবে তার আগেই সকাল বলে উঠলো,
“ঠিক আছে,আমি সময় বুঝে মাকে বলবো সবটা।”
সিদ্ধান্তর ঠোঁটে হাসি ফুটলো।হালকা হয়ে আসা হাতের বাঁধন দৃঢ় হলো। উৎফুল্ল মনে বলল,
“তোমায় বলতে হবে না।যা বলার বা করার আমি করবো।তুমি অপেক্ষা করো আমার জন্য।”
সকাল মাথা তুলে তাকালো সিদ্ধান্তর দিকে।চোখে চোখ রেখে মৃদু হেসে নরম গলায় উত্তর দিল,
“আচ্ছা।”
অনুভূতির জোয়াড়ে ভাসল সিদ্ধান্ত।টুপ করে সকালের ঠোঁটে চুমু খেল।সকাল হাসল।
“এবার যাই।”
“যাও।”
যেতে বললে ও সকাল কে ছাড়ল না সিদ্ধান্ত। ওভাবেই জড়িয়ে ধরে বসে রইল।বেশ কিছুক্ষণ পর রয়ে সয়ে বলল,
“আর একটু থেকে যাও।”
____
সকালে সালমানের আগে হায়াতের ঘুম ভাঙল।চোখ মেলতেই সালমানের ঘুমন্ত মুখশ্রী ভেসে উঠলো দৃশ্যপটে।তাকে জড়িয়ে ধরে আছে।কিছুক্ষণ একধ্যানে সেদিকেই তাকিয়ে রইল হায়াত।অতঃপর কিছু একটা ভেবে হুট করে ওঠে ছুটে গেল ওয়াশরুমে। সালমান নড়েচড়ে আবার ঘুমালো।
ওয়াশরুম থেকে একবারে গোসল করে বের হলো হায়াত।চুল মুছতে মুছতে তাকালো সালমানের দিকে।এখনো ঘুমিয়ে আছে।হায়াতের সহ্য হলো না।রাতে তার ঘুম হারাম করে এখন নিজে পরে পরে ঘুমোচ্ছে।হায়াত ড্রেসিংটেবিলের দিকে এগিয়ে গেল।নিজের কাজল হাতে নিয়ে এগিয়ে গেল সালমানের দিকে। সালমান সোজা হয়ে শুয়ে আছে।তার কাছাকাছি বসল। খুব সাবধানে আঁকিবুঁকি শুরু করল তার মুখে।মুখের ওপর অদ্ভুত স্পর্শে ঘুম ভাঙল সালমানের।চোখ বন্ধ থাকা অবস্থাতেই খুব কাছ হতে এক মেয়েলি সুঘ্রাণ ভেসে এলো তার নাকে।চট করে চোখ মেলে তাকালো। হায়াত চমকালো।সরে যেতে চাইল। সালমান খপ করে হাত ধরে ফেলল তার।
“কি করছিস?”
“কিছু না।”
সালমান তাকালো তার হাতের দিকে।হাতে কাজল দেখে সালমান চট করে উঠে ড্রেসিংটেবিলের সামনে দাঁড়ালো।সাথে সাথে চোখ শক্ত হলো।চোখ গরম করে পেছনে ফিরতেই দেখল হায়াত নেই।পালিয়েছে। সালমানের রাগ বাড়ল।
“হায়াতের বাচ্চা, একবার তোরে পাই।কাঁচায় চাবাবো।”
হায়াত আর দেখা দিল না তাকে। সকালের খাবার সময় ও দেখল না। সালমানের চোখ মুখ শক্ত হলো।মেয়েটা কিভাবে তার থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। একবার জোরে জোরে নাম ধরেও ডাকল তবুও শুনলো না।শেষ পর্যন্ত রাগ করে বেরিয়ে গেল বাড়ি থেকে।রাতের খাবারের সময় হায়াত কে সামনে পেল। কিন্তু কথা বলল না।গুম ধরে থেকে খেয়ে দেয়ে উপরে চলে গেল। হায়াত দেখল তার যাওয়া।মনে মনে ভয় পেল।সকাল থেকে তাদের অবকোলন করছিলেন মাহিন মির্জা।রাতে ঘুমানোর সময় শাহানা হাতে তেলের বাটি নিয়ে এগিয়ে এলো মাহিনের পায়ে মালিশ করতে।কয়েক বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় মাহিন গুরুতর ভাবে আহত হোন। দীর্ঘদিন হসপিটাল ও তিন মাস বেড রেস্টে থাকতে হয় উনাকে।ধীরে ধীরে সুস্থ হলেও পায়ের সমস্যা টা বাজে ভাবে ধরা দিয়েছে।তিনি এখনও ঠিক মতো হাঁটতে পারেন না। বেশিক্ষণ হাটলে বা দাড়িয়ে থাকলে পা অবশ হয়ে যায়।ডাক্তারের চিকিৎসা চলছে এখনো।ঠিক হওয়ার সম্ভাবনা কম বৈ কি।
মাহিন মির্জা শাহানা কে দেখে থমথম মুখে বললেন,
“মেয়েটার একটু খোঁজ রেখো শাহানা।কেমন আছে না আছে সেই দিকে একটু খেয়াল রাখবে।”
শাহানা তাকালো মাহিনের দিকে। শান্ত গলায় বলল,
“তুমি চিন্তা করো না।আমি মা তার।মেয়ের ভালো মন্দ আমি বুঝি। সালমান একরোখা জেদি হতে পারে কিন্তু আমাদের মেয়ের অযত্ন করবে না দেখো।”
মাহিন কিছু বলল না।অন্যদিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলল শুধু।
___
হায়াত ভয়ে সালমানের ঘরে গেল না।বিয়ের আগে হায়াত আয়াত এক ঘরেই থাকতো।হায়াত সেদিকে গেল।টোকা দিল দরজায়। আয়াত খুলল না।হায়াত এবার ডাক দিল,
“আয়াত দরজা খোল।”
“পড়তেছি আমি বিরক্ত করিস না।যা তো এখান থেকে।
আশাহত হলো হায়াত।সাথে রাগ ও। আয়াত দরজা খুলল না।খুলবেও না।তার ফোনে ইতিমধ্যেই হুমকিতে ভড়া মেসেজ এসেছে।
“খবরদার দরজা খুলবি না আয়াত।নইলে খবর আছে তোর।”
হায়াত এবার সকালের ঘরে গেল। সেখানে গিয়ে ও আশাহত হলো। সকাল যেন এখন বোনের রোল ছেড়ে ননদের রোল প্লে করছে।কান্না পেল হায়াতের।উপায় না পেয়ে সালমানের ঘরের দিকে এগোলো।ঘর অন্ধকার।শুধু বেডের পাশে টেবিল ল্যাম্পটা জ্বলছে। সালমান অন্যপাশে মুখ করে শুয়ে আছে।হায়াত চুপচাপ গিয়ে তার পাশে শুলো।সাথে সাথেই হামলা হলো তার ওপর। আচমকা সালমান ঘুরে এসে তার ওপর শুলো।হায়াতের আত্মা বেরিয়ে গেল।দম বন্ধ করে তাকিয়ে রইল সালমানের দিকে।
“কেন এলি এখন?সারাদিন কোথায় ছিলি?”
হায়াতের রাগ হলো। সালমান হুট করে তার কাছে আসায় ভয় পেয়ে গিয়েছিল সে।রাগে চোখ মুখ শক্ত করে বলল,
“এসেছি বলে ভেব না মাথা কিনে নিয়েছো।হুটহাট কাছে আসবে না এভাবে।”
“শুধু মাথা কেন?দশ লক্ষ টাকা দেন মোহরে পুরো তুই’টাকেই কিনে নিয়েছি আমি।এখন তা সুদে আসলে মিটিয়ে নেওয়ার পালা।”
হায়াত চেয়ে রইল সালমানের দিকে।টেবিল ল্যাম্পের মৃদু আলোয় হায়াতের তেলতেলে মুখটা চকচক দেখালো।নেশা লাগল সালমানের চোখে।গলায় নাক ঘষতে ঘষতে মোহগ্রস্তের মতো আওড়ালো,
“আমার থেকে পালিয়ে বেড়াবি না হায়াত।একদম বেঁধে রেখে দেব।”
____(১৮+ অংশ _ প্রয়োজনে স্কিপ করুন)
রাত তখন গভীর।নীল রঙের ডিম লাইটের মৃদু আলো রুমের ভেতর আলো আঁধারির খেলায় মেতে উঠেছে।মীরাকে নিজের বুকে জড়িয়ে নিয়ে শুয়ে আছে সুলেমান।দুজনের কারো চোখে ঘুম নেই।মীরা নাক ঘষল সুলেমানের বুকে।সুলেমানের শরীর শিহরিত হলো।
“আপনি রেগে আছেন আমার ওপর।”
“কেন?”
“আমি আপনাকে অনেক কঠিন কথা শুনিয়েছি।কষ্ট দিয়েছি আপনাকে।”
“কেন কষ্ট দিয়েছ?”
মীরার চোখ জ্বলে উঠলো,
“আমি চাইনি আপনি আমার এই ত্রুটিময় জীবনে আবার ফিরে আসুন।”
সুলেমান চট করেই উঠে বসল।মীরার হাত ধরে টেনে তাকেও উঠিয়ে বসালো।দুই গালে হাত চেপে ধরে বলল,
“পেরেছো দূরে সরাতে?”
মীরা মাথা নাড়ল।পারে নি।
“পারবেও না।তুমি আমাকে আঘাত দিতে দিতে নিঃশেষ করে ফেললেও আমি শেষ নিঃশ্বাস অবধি তোমার কাছেই রবো।তুমি আমাকে এক পৃথিবী শূন্যতা দিলেও আমি সেই শূন্যতায় তোমার হাতটাই আঁকড়ে ধরবো।তোমার জীবন পুরোটাই ত্রুটিপূর্ণ হোক তবুও আমি তোমাকেই প্রয়োজন বোধ করবো মীরা।”
মীরা ফুঁপিয়ে উঠলো।মিশে গেল সুলেমানের বুকে।ধীর ও মিহি কণ্ঠে বলল,
“এতো কেন ভালোবাসেন?”
“জানিনা।”
“আমায় একটু আদর করবেন সুলেমান?”
সুলেমানের বুক ধ্বক করে উঠলো। কিছুক্ষণ স্থির বসে থেকে দুই হাতে মীরার মুখ তুলে চুমু খেল কপালে।
“করছি তো।”
মীরা এবার আবদারের সুরে তুলল,
“না এভাবে নয়।আরো বেশি আদর করুন।আমি আপনাকে কাছে পেতে চাই সুলেমান।মিশে যেতে চাই আপনার সাথে ।”
নিস্তব্ধ নির্জন এই অন্ধকার রাতে প্রিয় নারীর করা আবদারে সুলেমানের বুক ঝংকার দিয়ে কেঁপে উঠল।শরীরি আকাঙ্ক্ষা গুলো হুড়হুড় করে বেড়ে গেল।একদৃষ্টে চেয়ে রইল মীরার দিকে।মীরা দেখল সেই দৃষ্টি।অতঃপর নিজেই এগিয়ে গেল। সুলেমানের দুই গালে চুমু দিয়ে ঠোঁটে চুমু খেল।সরে আসতে নিলে বাধা পরল।সুলেমান আটকে দিল তাকে।আলগা হওয়া ঠোঁট জোড়া আবার মিশিয়ে নিল।নিজের পুরু ঠোঁট দ্বারা দংশন করল মীরার নরম কোমল ঠোঁট জোড়া।মীরা এক হাতে সুলেমানের চুল খামচে ধরল সমান তালে তাল মেলানোর চেষ্টা করল নিজেও।তিন বছরের তৃষ্ণায় ছটফট করা মন যেন এবার উন্মাদ হলো। উন্মাদনায় ছেয়ে গেল শরীর মন।স্পর্শ গুলো হলো বন্য এক অদম্য সুখ খোঁজায়।মীরা হাঁপিয়ে উঠল।সরাতে চাইল সুলেমান কে।সুলেমান সরল না।বরং হাতের বাঁধন দৃঢ় করল।মীরা হাঁসফাঁস করল।দম বন্ধ হয়ে এলো।হাত দিয়ে খামচালো ঠোঁটে কামড় বসালো।এপর্যায়ে তাকে ছাড়ল সুলেমান।মীরা দম ফেলল। হাঁপাতে হাঁপাতে তাকালো সুলেমানের দিকে। সুলেমান ব্যস্ত হাতে নিজের শার্ট খুলে ছুড়ে ফেলল দূরে। মীরাকে জড়িয়ে নিয়ে শুয়ে পরল সাথে সাথে।ঘন ঘন শ্বাস ফেলে তাকালো একে ওপরের দিকে।দৃষ্টি বিনিময় হলো দুজনের।মাদকতা ঘিরে ধরল।দুরত্বে থাকা ঠোঁট জোড়া আবার মিলিত হলো।সাথে এলোমেলো হলো সুলেমানের হাতের স্পর্শ।মীরা বেকাবু।চড়ুই পাখির মতো ছটফট করল সুলেমানের বলিষ্ঠ দেহের নিচে। সুলেমান ঠোঁট ছাড়ল।মুখ ডোবালো মীরার গলদেশে।অতঃপর তার বক্ষ বিভাজিকায়।মীরা কেঁপে উঠলো।চুল খামচে ধরলো সুলেমানের।সুলেমান ধীরে ধীরে গভীর থেকে গভীরে ডুব দিল।সাক্ষী হলো দীর্ঘ কয়েক রজনীর পর এক সুখময় রজনীর।
চলবে🌺
দাঁড়ান দাঁড়ান যাচ্ছেন কোথায়?লেখিকা একটা কথা বলবে মনোযোগ দিয়ে পড়ুন সবাই🙎।
আপনারা জানেন আমার গল্পে খুব বেশি রিচ নাই।তাই আপনাদের সাহায্য চাই।আপনারা সবার সাথে গল্পটা শেয়ার করে রিচ বাড়াতে সাহায্য করবেন দয়া করে।আর হ্যা,কেউ বইলেন না লেখিকাপুকে বসতে দিলে শুতে চায়।আসলেই আমি এইরকম ই কিছু🙊।
এবার সবার মতামত দিয়ে যান কেমন লেগেছে পর্ব টি।