#সে_আমার_চিত্তমহলের_প্রেয়সী
#সাবিকুন্নাহার_সুমী
#রাজনীতি+রোমান্টিক
#পর্ব:৬
(🚫দয়া করে কেউ কপি করবেন না। কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ 🚫)
——ঘর্মা*ক্ত দেহে শুভ্র পাঞ্জাবিটা আধভেজা হয়ে গিয়েছে নাদমানের।সুঠাম দেহে আঁটসাঁট শুভ্র পাঞ্জাবি শ্যামবর্ণের এই পুরুষের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে কাজে নিয়োজিত সকল লোকদের নির্দেশনা দিচ্ছে সে।নিজের মালিকানাধীন এক অনাবাদী জমিতে, বছর এক আগে একটি বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠিত করেছিল নাদমান। সেই, বৃদ্ধাশ্রম এর সকল বৃদ্ধ নর-নারীকে নিজ হাতে তাদের সকলের পছন্দসই খাবার দিচ্ছে সে । প্রতিদিন রুটিন অনুযায়ী খাবার দেওয়া হয় যার ফলে, অনেকের-ই খাবার পছন্দসই হয় না।যে বয়সে নিজ জন্ম দেওয়া সন্তান তাদের দেখবাল করার কথা ছিল, সে বয়সে এই অসহায় মানুষগুলো তার আওতাধীন। তার ভরসায় সন্তানের অবহেলিত এসব মা,বাবা এই বৃদ্ধাশ্রমকে নিজের বাসভবন হিসেবে গ্রহণ করেছে।তাদের পছন্দ,অপছন্দের দিকটাওতো নাদমানের এই খেয়াল করতে হবে।মাঝে মাঝে নাদমান তার এই রাজনীতি পেশাকে মন থেকে সম্মান করে। আজ যদি সে একজন সাধারণ জনগণ হতো।তাহলে, কি এত এত অসহায় মানুষকে বাধাহীন সাহায্য করতে পারতো?সকল বৃদ্ধ নর-নারী মন থেকে নাদমান সাইক তালুকদার এর জন্য আল্লাহর নিকট দুইহাত তোলে মোনাজাত করছে।অসহা*য় মানুষদের পূর্ব থেকেই সাহায্য করে আসছে সে।ইতোমধ্যে, সাভারের রাস্তাঘাট বেশ উন্নত হয়েছে। চলতে ফিরতে মানুষ তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
খাবার দেওয়ার মাঝামাঝি পর্যায়ে, তামিম চি*ন্তিত মুখ নিয়ে নাদমান এর নিকট আসল।
~ভাই একটু দরকার ছিল।
নাদমান ঘা*ড় ঘুরিয়ে তামিম এর দিকে তাকিয়ে বলল,
~কিছু বলবি?
~ভাই,, জেসমিন কল দিয়ে বলল, স্বর্ণভা নাকি অনেক কান্না*কাটি করছে।কেউ থামা-তে পারছেনা। আপনার মোবাইল ও নাকি বন্ধ। আর, আপনি এতদূর আসছেন
তাই,আপনার বিকল্প হিসেবে নাবহান ভাই অফিস থেকে স্বর্ণভার নিকট গেল।আশ্চর্য বিষয় নাবহান ভাইকে দেখে নাকি বুঝতে পারল,সেটা আপনি নন নাবহান ভাই।
নাদমান ভ্রু কুঁচকে কিছু একটা ভাবল।নাদমান বাহিরে সারাদিন ও থাকে। স্বর্ণভা কান্নাকাটি করলেও জেসমিন অথবা তালুকদার বাড়ির অন্য সদস্যরা সহজেই থামাতে পারে।আজ হঠাৎ এত কান্না করছে। যে,কেউই থামাতে পারছেনা!
গম্ভীরস্বরে নাদমান তামিম কে বলল,
~গাড়িতে গিয়ে বস।আমি আসছি।
হন্ত*দন্ত হয়ে বাড়িতে ফিরল নাদমান। সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠার সময় নয়ন তালুকদার এর মুখোমুখি হলো সে।নয়ন তালুকদার ছেলের দিকে তাচ্ছি*ল্যের হাসি দিয়ে বলল,
~একজন রাজনীতিবিদ কখনো-ই একজন দায়িত্বশীল বাবা,ছেলে, স্বামী হতে পারেনা। আফসোস, হচ্ছে তোমার জন্য নাদমান। মা ছাড়া সন্তানটিকে কাজের লোকের দায়িত্বে দিয়ে যাও।তোমার মেয়ে দুনিয়ার সবচেয়ে অসহায় নয় কি?
নাদমান দুই আঙুল দিয়ে কপালে ঘষা দিয়ে বজ্র*কন্ঠে বলল,
~আপনি-তো রাজনীতি করেন না।আপনি কি একজন দায়িত্বশীল বাবা,স্বামী হতে পেরেছেন?আপনার সন্তানদের নিকট একদিন প্রশ্ন করবেন।
নয়ন তালুকদার ছেলের কথায় ফুঁসে উঠে বলল,
~তুমি অত্যন্ত বেয়া*দব, বেয়া*ড়া একটা ছেলে। আমার বাড়িতে থেকে আমার সাথেই এভাবে কথা বলার সা*হস কি তোমার মা দিয়েছে?
নাদমান বাবার দিকে তাকিয়ে বলল,
আমার আম্মুকে নিয়ে কিছু বলবেন না।আর হ্যাঁ,
আমার মেয়েকে নিয়ে আপনার বেশি সমস্যা হলে, এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাব বাবা।
বাপ,ছেলের সকল কথায় কানে গেল রাজিয়া তালুকদার এর। বাপ,ছেলের এই নিরব যুদ্ধের কি কখনো সমাপ্ত হবে না?
নাদমান নিজের রুমে প্রবেশ করতেই “নাবহান”, স্বর্ণভার পাশ থেকে উঠে দাঁড়াল। স্বর্ণভা ঘুমাচ্ছে কান্নার ফলে গুলুমুলু বাচ্চাটির চোখমুখ ফুলে গিয়েছে। নাদমান, নাবহান এর পাশ কাটিয়ে মেয়ের কপালে চুমু দিল।
নাবহান হেসে হেসে নাদমানকে বলল,
~জানিস ভাই,যেখানে আম্মু হুট করে দেখলে আমার আর তোর তফাৎ করতে পারেনা,সেখানে স্বর্ণভা আমার আর তোর তফাৎ করতে পারে। আমি যখন বললাম, বাবাই আসছি কান্না করে না।তোর মেয়ে হেঁচকি দিতে দিতে বলে,মিথ্যা বলা মহাপাপ ছোট বাবাই।আমার বাবাই তুমি না।আমার বাবাই এর শরীরে সুন্দর ঘ্রাণ। একদম বাবাই, বাবাই ঘ্রাণ। স্বর্ণভা’র মুখে এই কথা শুনে, আমি বাকরুদ্ধ।
আম্মুতো তোকে অনেক বকা*ঝকা করল,বিয়ে না করার কারণে।বিয়ে করলে নাকি ও মা পাবে কান্না করবেনা।
নাদমান বলল,
~অন্যের মেয়েকে নিজের মেয়ে ভাবা কি এতই সহজ?
**********
আসরের নামাজ শেষ করে ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিরা যে যার গন্তব্যের উদ্দেশ্য হাঁটছে। দীর্ঘদিন পরে চিরচেনা সেই চায়ের স্টল এর বেঞ্চিতে বসল তামিম।এতদিন, ব্যস্ততার কারণে আসতে পারিনি। তারই,সামনের বেঞ্চে দলবল নিয়ে রাফান বসা।আশেপাশে এত এত চায়ের স্টল থাকার পরেও দুজনের এই রহমত চাচার চায়ের স্টল এই আসতে হবে।এই কয়েকদিন কতজনের মাধ্যমে “রাফান”, তামিমের খোঁজখবর নিয়েছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। তামিম একটা দুধ চায়ের অর্ডার দিল।প্যান্টের পকেট থেকে ফোন বের করে মনোযোগ দিল মোবাইল স্ক্রিনে। রাফানকে দেখেও যেন দেখলনা।রাফান বারবার তামিমের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে দেখছে।কোন পাত্তা না পেয়ে তার মেজা*জ বিগড়ে গেল।আশেপাশে তাকিয়ে দেখল অনেক পথচারীদের পদচারণা।রাফানের অসহায় লাগছে তামিম তাকে পাত্তা দিল না!আশেপাশে তাকানোর ফলে রাফানের চোখে পড়ল এক মধ্য বয়স্ক নারীও তার পাশে একজন অল্পবয়সী মেয়েের উপর ।মহিলা মেয়েটিকে তামিম এর বেঞ্চ থেকে কিছুটা দূরে দাঁড় করিয়ে রহমত চাচাকে বলল,পান বানানোর জন্য। মহিলা মুখ পান খাওয়ার কারণে লাল হয়ে গিয়েছে। রাফান একটা সুযোগ পেল তামিমকে জব্দ করার।কতবড় সাহস ছেলের রাফানকে পাত্তা দিল না!
মহিলার নিকট গিয়ে রাফান ধীর কন্ঠে বলল,
~আসসালামু আলাইকুম আপু।
অচেনা এক ছেলের মুখে এই বয়সে আপু ডাক শোনে মহিলাটির মুখশ্রী হাসিতে জ্বলজ্বল করে উঠল।আজকালকার ছেলেরা একটু বয়স্ক মহিলা দেখলেই চাচি,খালা ডেকে মুখে ফ্যানা তোলে ফেলে।
~ওয়াআলাইকুম সালাম।তুমি কেডা?কিছু কইবা ভাই?
রাফান যেন এই প্রশ্নের আশায়-ই ছিল।
রাফান ফিসফিস করে বলল,
~আপু আপনার নাতনিকে না ঐ চশমা পড়া ভট*কা ছেলেটা চোখ টি*প দিয়েছে।
মহিলা হাস্যজ্জ্বল চেহারা নিমিষেই কাঠি*ন্য হল। রাফানকে ধ*মক দিয়ে বলল,
~চটক*না দিমু পোলা এইডা আমার মাইয়া, নাতনি না।
রাফান অসহায় মুখশ্রী করে মহিলাকে বলল,
~আপনার মেয়েকে ঐ যে ভ*টকা ছেলেটা চোখ টি*প দিয়েছে।
আমি নিজের চোখে দেখেছি।
মহিলা বলল,
~কি কও এত সুন্দর পোলাডা আমার মাইয়ারে চোখ টিপ দিছে?
রাফান উপর নিচ মাথা ঝুঁকিয়ে বলল,
~হ্যাঁ, আন্টি থুক্কু আপু।
~হেছা কথা কইতাছো?
রাফান বলল,
~জ্বি আপু আমি দেখছি।
মহিলা আর এক সেকেন্ড ও দাঁড়াল না। তে*ড়ে গিয়ে তামিম এর ডান বাহু আঁকড়ে ধরে দাঁড় করাল।
আচমকা এমন করায় তামিম এর হাত থেকে মোবাইলটা নিচে পড়ে গেল।তামিম রাগা*ন্বিত চেহারায় মহিলাকে বলল,
~এই যে,খালাম্মা এভাবে টানা হেঁচ*ড়া করছেন কেন?
মহিলা মধ্যমা আঙুল উঁচিয়ে বলল,
~বেআদ*ব ছোঁ*কড়া আমার মাইয়ারে চোখ টি*প দিছস কেন?
বলেই তামিমের হাত ধরে বলল,
~তোরে আজকাই আমার মেয়ের জামাই বানামো।তখন সারাদিন চোখ টিপাটিপি করিস।তোর সামনে মাইয়ারে বসাই রাখমো।যত খুশি তত চোখ টিপা*টিপি করিস।
তামিম এর মুখ হা হয়ে গেল।সে কখন চোখ টিপ দিল? এখানে,আসার পর থেকে সে-তো মোবাইল স্ক্রিনে তাকিয়ে ছিল। এমনকি, সে রাফানের দিকে ও তাকায়নি।তামিম নিচ থেকে মোবাইল উঠালো।স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখল, মোবাইল এর তেমন ক্ষতি হয়নি।
তামিম মহিলাকে বলল,
~খালা বিশ্বাস করেন আমি চোখ টিপ দেয় নাই। সেহেতু, বিয়ে করার কোন মানে নাই।
মহিলা আঙুল উঁচিয়ে রাফানের দিকে ইশারা করে বলল,
~ঐ পোলা কইলো কেন? তুই চোখ টিপ দিছস?
তামিম যা বোঝার বোঝে নিল এই গন্ড*গোল এর মূলহোতা কে?তামিম মহিলার হাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে রাফানের দিকে ছোটে গেল,
~রাফাইন্না আজ আমি তোর কলি**জা দিয়ে ক্যারাম খেলব।
তামিম এর দৌড়ানো দেখে রাফান দৌড়ে জায়গা ত্যাগ করল।এমনিতেই ঐ দিন তামিম ওরে আধ*মরা করছে।
*******
পার্টি অফিসে নাদমান এর জন্যে মাহমুদ সাহেব অপেক্ষা করছেন।নাদমান এর অফিস রুমে তাকে স’সম্মানে বসতে দেওয়া হয়েছে। এর মাঝেই, নাদমান ভেতরে প্রবেশ করে তার চেয়ারে বসল।মাহমুদ সাহেব এর সাথে সালাম বিনিময় হলো।
“নাদমান”,,,অপরাধীর স্বরে মাহমুদ সাহেবকে উদ্দেশ্য করে বলল,
~সরি আংকেল আমি সময়ের জন্য আপনার নিকট যেতে পারিনি।আবার আপনিও এসে আমার জন্যে অপেক্ষা করেছেন।
মাহমুদ সাহেব হাসিমুখে বললেন,
~সমস্যা নেই বাবা।তা,বাবা হঠাৎ আমাকে জরুরি তলব করলে?
~নাদমান দ্বিধাবোধ না করেই মাহমুদ সাহেবকে বলল,
~আংকেল আমি সামনের বছর স্বর্ণভাকে স্কুলে ভর্তি করবো।তাই,আমার ইচ্ছে মামুনির হাতেখড়ি মিস আনজারা করুক।আংকেল আমি জানি আপনার যা অর্থ সম্পদ আছে,তাতে মিস আনজারাকে টিউশনি করাতে হবে না।কিন্তু, আমার মেয়েকে উনি ছাড়া মনে হয় না,কেউ পড়াতে পারবেন। প্লিজ আংকেল না করবেন না।
মাহমুদ সাহেবের প্রস্তাবটা পছন্দ না হলেও একমাত্র স্বর্ণভার কথা ভেবে উনি রাজি হলেন।
~আচ্ছা বাবা আনজারা,স্বর্ণভাকে পড়াবে।তবে শর্ত একটা কোন অর্থকুড়ি তুমি দিতে পারবে না।
নাদমান কিছু একটা ভেবে বলল,
~আংকেল ঠিক আছে।
*******
আনজারা ঘরময় পায়চারি করছে। কাল হঠাৎ মাহমুদ সাহেব তাকে এসে বলল,
~বিকালে সময় করে স্বর্ণভাকে পড়াতে তালুকদার বাড়িতে যেতে হবে। এখন, নিচে গাড়ি নিয়ে তামিম ওয়েট করছে।তার বিন্দু ইচ্ছে নেই এমপি নাদমান সাইক তালুকদার এর মুখোমুখি হওয়ার। কিন্তু, দুর্ভাগ্য স্বর্ণভার কথা ভেবে সে না করতে পারছে না।ইচ্ছের বিরুদ্ধে রেডি হয়ে সে নিচে গাড়ির সামনে আসল।আনজারাকে দেখে তামিম ড্রাইভিং সিট থেকে বের হয়ে আসল।গাড়ির পিছনের সিটের দরজা খোলে দিলে আনজারা গাড়ির ভিতর বসল।পাশের সিটে নাদমানকে দেখে বিরক্ত হলো সে।মুখ ভেং*চি দিয়ে নিজের সিটেই আরও চেপে বসল।নাদমান সবটাই পর্যবেক্ষণ করল। এমনকি, আনজারার মুখ ভেং*চিও নাদমান এর চোখ এড়ায়নি। তামিম গাড়ি স্টার্ট দিল।
নাদমান, তামিমকে ডাক দিয়ে বলল,
~তামিম মুখ ভেং*চি দেওয়া মেয়েদের কি চোখে দেখিস?
আনজারা মনে মনে বিড়বিড় করে বলল,
~ফাল*তু এমপি দেখে ফেলল! বেশ করেছি মুখ ভেংচি দিয়েছি প্রয়োজনে আরও দিব।
তামিম ড্রাইভিং এ মনোযোগ দিয়ে নাদমান এর প্রশ্নের উত্তর দিল।
~মুখ ভেং*চি দেওয়া মেয়েদের ভাই একদম শ্যাঁওড়া গাছের পেত্নী*র মতো লাগে।
আনজারা ফুঁসে উঠে তামিমকে বলল,
~এই মিয়া বা*জে কথা বলেন কেন?আপনি শ্যাঁওড়া গাছের পেত্নী দেখেছেন কখনো?কোন আক্কেলে শ্যাঁওড়া গাছের পে*ত্নী বললেন?
তামিম যে ভুল জায়গা কিছু বলে ফেলেছে সে ঢের বুঝতে পারল।
~সরি মেম ভুল হয়েছে।
~আবার, মেম বলছেন কেন?আমি আপনার ছোট।
তামিম বলল,
~তাহলে বোন ডাকব।
~এবার ঠিক আছে।
নাদমান হাসল কিন্তু, সে হাসি কারও চোখে পড়ল না।নাদমান তার পাঞ্জাবির পকেট থেকে মাস্ক বের করে পড়ে নিল।
আনজারা ভেবে নিল হয়তো তার শরীর থেকে বা*জে কোন স্মেইল আসার কারণে নাদমান মাস্ক পড়েছে।
গাড়ি এসে থামল তালুকদার বাড়ির গেইটে।তামিম দরজা খুলে দিলে আনজারা গাড়ি থেকে বের হওয়ার পূর্বে।
নাদমানকে শাঁসানোর স্বরে বলল,
~যে সাধারণ মানুষের শরীরের দু*র্গন্ধ সহ্য করতে পারে না।সে এমপি হওয়ার যো*গ্যতা রাখেনা।বলেই গাড়ি থেকে বের হল।
তামিম হতবাক, নাদমানকে একটা মেয়ে এতো অপমান করল।
নাদমান হাসল,হেলান দিল গাড়ির সিটে।
আনমনেই বলে ফেলল,
~আপনার শরীরের মেয়েলি ঘ্রাণটা একটু বেশি-ই তীব্র। যা, আমার স*হ্য ক্ষমতার বাহিরে ছিল আনজারা। শখের নারীর দেহের বি*দঘুটে গ*ন্ধও পুরুষের নিকট আফি*মের ন্যায় নেশা*লো।আপনি আমার শখের নারী আনজারা অথচ,আমি আপনার নিষিদ্ধ পুরুষ।
*****
রেষ্টুরেন্টে মুখোমুখি বসে আছে সুয়ারেজ সিকদার আর আনজারা। তী*ক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সুয়ারেজ তার সম্মুখে রমণীর দিকে।তার মুখশ্রীতে মুগ্ধতার ছড়াছড়ি।
অস্ফুটস্বরে বলে ফেলল,
~মা শা আল্লাহ।
আনজারা বিরক্ত কন্ঠে সুয়ারেজকে বলল,
~ভাইয়া এরকম চুপচাপ বসিয়ে রাখার জন্য কি তুমি আমাকে ধরে বেঁধে এনেছো।হয় কিছু বলো,নয় আমাকে বিদায় দেও।তোমার জন্য দুইটা লেকচার এ এটেন্ড হতে পারিনি।
সবসময় এর ন্যায় হাসি বিদ্যমান রেখে সুয়ারেজ বলল,
~তুই আর তোর বাপ,মা কোন নাটক শুরু করলি?কোন ভাবেই তোদের সিকদার বাড়িতে নেওয়া যাচ্ছে না?কেন এমন করছিস?
আনজারা তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলল,
~রিকুয়েষ্ট তুমি করলে হবে না।তোমার বাপ সাইফুদ্দীন সিকদার-তো একবার ও আসল না।আর কেন এমন করছি সেটা কি তোমার অজানা?আর দশবছর এরও বেশি সময় সিকদার বাড়িতে যাইনা বাকি জীবন না গিয়েই থাকা যাবে।
যারা আমাদের বিপ*দের সময় মুখ লুকিয়ে ছিল। বিপ*দে আমাদের পাশে না থেকে আমার মাকে নতুন জীবনে পদার্পণ করার জন্য রীতিমতো হ্যারেস*মেন্ট করেছে, ঐলোকের বাড়িতে নাই গেলাম।
সুয়ারেজ দুই হাত টেবিল এ রাখল।
~সাইফুদ্দীন সিকদার তোর মামা হয় আনজারা।এভাবে কেন বলছিস?
আব্বু নিজেই আসবে তোদের নিতে সে অনু*তপ্ত।
আনজারা চেয়ার টেনে উঠে বসল,
~সেটা, সময় বলে দিবে। এখন আসি।
******
স্বর্ণভাকে পড়ানো শুরু করেছে আনজারা দু সপ্তাহ হলো।গাড়ি নিয়ে আসতে তামিমকে নিষেধ করে দিয়েছে সে।প্রতিদিন বাসার সামনে গাড়ি দেখলে
লোকজন বা*জে কথা বলতে সময় নিবে না।রিকশা দিয়েই সে তালুকদার বাড়িতে আসল।এই কয়েকদিন নাদমান এর সাথে তার দেখা হয়নি। সকলের সাথে দেখা করে স্টাডি রুমে প্রবেশ করতেই আনজারা দেখল “স্বর্ণভা”, নাদমান এর সাথে বসে তার জন্য অপেক্ষা করছে।আনজারা নিজেকে স্বাভাবিক করে টেবিলে বসল।আনজারা বসতেই স্বর্ণভা দৌড়ে এসে তার
বরাদ্দকৃত চেয়ারে বসল।
~নাদমান আনজারাকে বলল,
~এত চাপ দেওয়ার দরকার নেই। মাত্র-তো চারবছর একটু গল্পগুজব করবেন।
আনজারা চেয়ার ঘুরিয়ে বসল।
~আমি আপনার মতো নির্দ*য় লোক না চারবছরের একটা বাচ্চাকে চাপ দিব।
~আপনি আমাকে নির্দয় বললেন?
~তা নয়তো কি?ছোট একটা বাচ্চার জন্য ১২ টা বই এনেছেন মাথা ন*ষ্ট পুরুষ লোক।
স্বর্ণভা দুজনের দিকে তাকিয়ে বলল,
~বাবাই বলেছে ঝগড়া করা মহাপাপ।তোমরা ঝগড়া করছো কেন?
নাদমান মেয়েকে কোলে নিয়ে বলল,
~মামুনি আমি না তোমার ঐ বাচ্চা আন্টি ঝগড়া করছে।
চলবে —–
(আজকের পর্ব কেমন হয়েছে জানাবেন। ভুল ত্রুটি কমেন্টে দয়া করে বলবেন। কমেন্ট গ্রুপ লিংক দেওয়া আছে সকলেই এড হয়ে গল্প নিয়ে ফান পোস্ট, রিভিউ দিতে পারবেন)