#উধয়রনী
#লেখিকা_সামিয়া_বিনতে_হামিদ
||পর্ব-৩৪(২য় ভাগ)||
৬৮।
ফোন বেজে উঠতেই সালমা ফাওজিয়া হাত মুছতে মুছতে ফোনের কাছে এগিয়ে গেলেন। স্ক্রিনে অপরিচিত নম্বর ভেসে উঠতেই তিনি ভ্রূ কুঁচকে তাকালেন। খুব আশা নিয়েই ফোনের কাছে এসেছিলেন। ভেবেছিলেন আহির কল হবে৷ কিন্তু তিনি হতাশ হলেন৷ কলটা রিসিভ করে কানের কাছে আনতেই তিনি থমকে গেলেন। তার বুকটা কেঁপে উঠলো। ব্যস্ত কন্ঠে বললেন,
“আহি, মা আমার! কাঁদছো কেন?”
আহি ফোন কানের কাছ থেকে সরিয়ে তাজওয়ারের দিকে তাকিয়ে বলল,
“আমাকে একটু স্পেইস দেবে? আমি একা কথা বলতে চাই। প্লিজ।”
তাজওয়ার সরে যেতেই আহি ফোনটা আবার কানের কাছে আনলো। বললো, “মা।”
“কাঁদছো কেন মা?”
“হয়তো তোমাকে আর ফিরে পাবো না। হয়তো আমার স্বপ্নগুলো শেষ হয়ে গেছে। কতো স্বপ্ন দেখেছি! একদিন মায়ের কাছে ফিরবো। আমাদের দু’জনের ছোট্ট একটা সংসার হবে। সেই সংসারে কোনো হিংসা থাকবে না। কোনো বিবাদ থাকবে না। শুধু শান্তি থাকবে। মা আর মেয়ের ভালোবাসা থাকবে। কিন্তু বাবা আমার সব স্বপ্ন আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিলো। লোকটার সাথে আমার এনগেজমেন্ট করিয়ে দিলো। মা, মানুষটা ভালো না। একদম ভালো না। আমি কি একটু ভালোবাসা ডিজার্ভ করি না? মানুষটা আমাকে ভালোবাসে না। তার জন্য ভালোবাসা মানে সুন্দর মুখ আর দেহ। আমি তো সাধারণ মানুষ চাই। একদম আফিফের মতো। সিম্পল, নব্বই দশকের ভালোবাসা চেয়েছি। যে আমার সাথে চাঁদ দেখবে, গান শুনবে, আমার ছবি আঁকা দেখবে, আমার সাথে সমুদ্র পাড়ে বসে সমুদ্র বিলাস করবে। আমি কি খুব কঠিন স্বপ্ন দেখে ফেলেছি? আমার সাথে ভাগ্য এমন বেইমানি কেন করলো, মা? আফিফকে পাই নি। ঠিক আছে। মেনে নিলাম সেটা। অন্তত একটা ভালো মানুষ তো পেতে পারতাম। মা, দম বন্ধ হয়ে আসছে আমার। কেন সেদিন আমাকে মেরে ফেলো নি? কেন আমাকে পৃথিবীতে এনেছো? কেন আমাকে মিস্টার কবিরের কাছে ফেলে চলে গেছো?”
সালমা ফাওজিয়া কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বললেন,
“আম্মু, এই আম্মু, এভাবে কাঁদছো কেন? চুপ করো। আমি আছি তো। আমি আমার মেয়েকে নিয়ে আসবো। আমি তোমার বাবার সাথে কথা বলবো।”
“এতোদিন কি পেরেছিলে? তাহলে এখন কীভাবে পারবে? একদিকে বাবা, অন্যদিকে তাজওয়ার খান। বাবার সাথে যুদ্ধ করতে পারো নি, তাহলে ডনের সাথে পারবে? মিস্টার কবির তো আমার বাবা। সে-ই আমার কথা ভাবে নি। আর এই মানুষটা তো আমার কেউ না। সে শুধু তার শখ পূরণের জন্য আমাকে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। নিলাম হয়ে গেছি আমি।”
তাজওয়ার আহির রুমে ঢুকে শেষ কথাটি শুনে ফেললো। আহির সামনে বসে হুট করে ফোনটা টেনে নিলো। আহি ভ্রূ কুঁচকে বললো,
“আমার কথা শেষ হয় নি।”
তাজওয়ার বলল,
“নিলাম হওয়ার কথা কেন বলছো?”
তাজওয়ার ফোন কানের কাছে নিয়ে বলল,
“হ্যালো মাদার-ইন-ল, আপনি নিশ্চিন্তমনে ঘুমান। আহিকে আমি রানীর মতো রাখবো।”
সালমা ফাওজিয়া দৃঢ় কন্ঠে বললেন,
“ফেরাউনও রাজা ছিল। আসিয়া ছিল তার রানী। শোনা, আমার মেয়েকে রানীর মতো রাখার জন্য রাজার প্রয়োজন নেই। আর তোমার মতো রাজা কোনো নারীকেই রানী করে রাখতে পারবে না। আমার মেয়েকে সে-ই রানী করে রাখবে, যার যোগ্যতা আছে মনের রাজা হওয়ার। দেশের রাজা নয়।”
তাজওয়ার কল কেটে দিলো। এরপর আহির দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ। তারপর বলল,
“মাদার-ইন-ল’কে আমার বিরুদ্ধে বেশ কিছু বুঝিয়ে ফেলেছো, দেখছি। এটা ঠিক করো নি, আহি।”
আহি করুণ দৃষ্টিতে তাজওয়ারের দিকে তাকিয়ে রইলো। এদিকে সালমা ফাওজিয়া কল কেটে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়লেন। ফোনটা বুকের সাথে চেপে ধরে কাঁদতে লাগলেন। তার কান্নার আওয়াজ পেয়ে রুম থেকে বেরিয়ে এলেন রোকেয়া আফজাল। মেয়েকে কাঁদতে দেখে রোকেয়া ব্যস্ত কন্ঠে বললেন,
“আরেহ, কাঁদছিস কেন সালমা?”
সালমা ফাওজিয়া মাকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
“আমার মেয়ে ভালো নেই, মা। তোমরা তো কেউ চাও না আমি ওর সাথে যোগাযোগ রাখি। কিন্তু আমার মেয়েটার কি অপরাধ, বলো? ওই রিজওয়ান কবির আমার মেয়েটাকে শেষ করে দিচ্ছে। আমি কেমন অসহায় মা! আমার মেয়েকে সাহায্য করতে পারছি না। আমার ওই ফেরাউনকে জিজ্ঞেস করা উচিত, কেন এমন করছে।”
রোকেয়া আফজাল কাঁপা কন্ঠে বললেন,
“পাগল হয়ে গেছিস? তোর ভাইদের মেরে ফেলবে। তোকে মেরে ফেলবে। আমি স্বামী হারিয়েছি। সন্তান হারাতে পারবো না। কতো বছর হয়ে গেছে, তোর বাবার কোনো হদিসই পেলাম না।”
সালমা ফাওজিয়া চোখ মুছে বললেন,
“আমিও স্বামী হারিয়েছি। সন্তান হারাতে পারবো না।”
সালমা ফাওজিয়া রিজওয়ান কবিরের নম্বরে ডায়াল করলেন। তার ফোন বন্ধ। হঠাৎ তার মনে পড়লো, একটু আগে যেই নম্বর থেকে কল এসেছে ওটা বিদেশি নম্বর। সালমা ফাওজিয়া নম্বরটি দেখে বুঝলেন, আমেরিকান নম্বর। তার কাছে রিজওয়ান কবিরের সব দেশের সিম নম্বর আছে। সালমা ফাওজিয়া ফোন বুক ঘেঁটে সেই নম্বরগুলো বের করলেন। তিনটা নম্বর আছে। দ্বিতীয় নম্বরটিতে কল করতেই রিং হলো। এরপর কল কেটে ফোনে বেশি করে টাকা ঢুকালেন। তারপরও মনে হচ্ছে দুই মিনিটের বেশি কথা বলা যাবে না। যতোক্ষণ বলা যায়, তিনি ইচ্ছেমতো শুনিয়ে দেবেন।
সালমা ফাওজিয়া আবার কল করলেন। ওপাশ থেকে রিজওয়ান কবিরের কন্ঠ ভেসে এলো। সালমা ফাওজিয়া রাগী সুরে বললেন,
“কেন আমার মেয়েকে জোর করে বিয়ে দিচ্ছো? আর তুমি আমাকে না জানিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারো না। আমি আহির মা।”
রিজওয়ান কবির খুব স্বাভাবিক কন্ঠে বললেন,
“হাইপার হচ্ছো কেন? এখন তো জেনেছো। বাসায় আসো। মেয়েকে শুভ কামনা দিও। সাথে বিয়েটাও এটেন্ড করবে। আহির মাস্টার্স শেষ হলেই বিয়ে হবে। তোমার কাছে বিশেষভাবে বিয়ের কার্ড পৌঁছে যাবে। আর এনগেজমেন্টে বাইরের মানুষ আসে নি। আর তুমি তো বাইরের একজন। ভুলে যেও না, আহির কাস্টাডি আমি পেয়েছি।”
“পেয়েছো। কিন্তু এখন ও এডাল্ট। ও আমার সাথে থাকতে চাই। আর তুমি ওকে আমার কাছেই আসতে দাও না। এখন তো ওর ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে দিচ্ছো। তুমি অনেক অন্যায় করেছো। আল্লাহ তোমাকে ছাড়বে না।”
“দেখা যাক, আল্লাহ আমার কি ক্ষতি করতে পারে?”
সালমা ফাওজিয়া কিছু বলার আগেই কল কেটে গেলো। কল কেটে যাওয়ায় তিনি রাগে ফোনটা দূরে ছুঁড়ে মারলেন। এরপর দাঁতে দাঁত চেপে বললেন,
“আমি আমার মেয়েকে বাঁচাবো। এর জন্য আমার যা যা করার আমি করবো।”
(***)
তাজওয়ার বন্ধুদের সাথে আড্ডায় ব্যস্ত। রিজওয়ান কবির তার কাছে গিয়ে বললেন,
“তাজওয়ার, একটু এদিকে এসো। তোমার সাথে কথা আছে।”
তাজওয়ার উঠে রিজওয়ান কবিরের সাথে একপাশে গিয়ে দাঁড়ালো। রিজওয়ান কবির বললেন,
“আহির কাছে ফোন নেই, তুমি কি ওকে ফোন দিয়েছিলে?”
“হ্যাঁ, কেন?”
“তুমি কি জানো, আহি তার মায়ের সাথে কথা বলেছে?”
“হ্যাঁ, জানি।”
“শোনো, তাজওয়ার। আহি যদি ওর মায়ের আশেপাশে থাকে তাহলে কিন্তু, তুমিই ওকে হারাবে।”
“কেন?”
“সালমা যদি আহিকে নিয়ে যেতে পারে, তাহলে আমাদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে আহি। আমি তো আহিকে ভয় দেখিয়ে আটকে রেখেছি।”
তাজওয়ার হাসলো। রিজওয়ান কবির ভ্রূ কুঁচকে বললেন,
“হাসছো কেন?”
“আমি কিন্তু কাউকে ভয় পাই না। না আইন, না কারো শাসন। আমার রাজ্যে আমিই শাসক, আইনও আমার, দণ্ডও আমিই দেবো। সো ডোন্ট ওয়ারি। আহি এতো সহজে আমাকে ছেড়ে যেতে পারবে না। আর আমার প্রিয় মাদার-ইন-ল যা এতো বছর পারে নি, তা এখন আমার রাজ্যে এসে তো কখনোই পারবে না। সো আপনি এসব নিয়ে চিন্তা করবেন না। আমার সম্পদ আমি আগলে রাখতে জানি।”
৬৯।
আজই দেশে ফিরেছে আহি। দেশে ফিরতেই ফোন হাতে পেলো সে। ফোন পেতেই প্রথমে রাদকে কল করলো। রাদ এই কয়েকদিন ফোনের কাছ থেকে এক সেকেন্ডের জন্যও দূরে ছিল না। সবসময় ফোন সাথে রেখেছে। নামাজের সময় বোনের হাতে ফোন দিয়ে বলেছিল, আহির কল আসলেই যাতে রিসিভ করে কথা বলে। অস্থির লাগছিল রাদের। আজ ফোনের স্ক্রিনে আহির নম্বরটি দেখেই দেহে প্রাণ ফিরে পেলো রাদ৷ সাথে সাথেই কলটা রিসিভ করলো। আহি ওপাশ থেকে বলল,
“রাদ, দেখা করতে পারবি একটু?”
রাদ ব্যস্ত কন্ঠে বললো,
“হ্যাঁ, হ্যাঁ। বল কোথায় আসবো?”
“ক্যাম্পাসের পাশের পার্কটাতে।”
“আচ্ছা, আমি এক্ষুণি আসছি।”
(***)
রাদ আগে এসেই বসে ছিল পার্কে। আহি এই মাত্র রিকশা থেকে নামলো। ভাড়া মিটিয়ে এদিক-ওদিক তাকিয়ে রাদকে দেখতে পেয়েই আপনা-আপনি চোখে পানি চলে এলো আহির। মনে হচ্ছে, জেল থেকে বেরিয়ে কোনো আপন মানুষ দেখেছে। আহি আশপাশ না দেখে দৌঁড়ে গেলো রাদের দিকে। দৌঁড়ে যেতে যেতেই কান্না করছে সে। এরপর রাদের কাছে এসে ঝাপ্টে জড়িয়ে ধরলো তাকে। ফুঁপিয়ে বলতে লাগলো,
“আমাকে বাঁচাবি রাদ? আমি সত্যিই এবার বাঁচতে চাই। আমার কিচ্ছু লাগবে না। প্রেম-ভালোবাসার প্রয়োজন নেই আমার। কাউকে চাই না আমি। শুধু আমার সম্মানটা বাঁচলেই হলো। আমার এই দেহটা বাঁচা। আমার মনটা তো ক্ষত হয়ে গেছে। দেহটাও ক্ষত হয়ে গেলে, আমার কোনো অস্তিত্বই থাকবে না।”
রাদ আহিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল,
“কি করেছে ও তোর সাথে? আমাকে বল, আহি। আমি মেরে ফেলবো শয়তানটাকে।”
আহি রাদকে ছেড়ে তার হাত ধরে বলল,
“যা করেছে তাতেই আমার দম বন্ধ হয়ে গেছে। যদি সত্যিই এর চেয়ে বেশি কিছু হয়, আই সওয়ার আমি নিজের প্রাণ নিতে বাধ্য হবো।”
এদিকে পুষ্প আর লাবীবও ঘুরতে বের হয়েছিল আজ। কাকতালীয় ভাবে হাঁটতে হাঁটতে তারা ক্যাম্পাসের পার্কেই ঢুকলো। রাদ এবং আহিকে একসাথে দেখে দু’জনই অবাক। আর আহিকে পা ধাপিয়ে কাঁদতে দেখে আরো অবাক হলো তারা৷ দৌঁড়ে গেলো তাদের দিকে। পুষ্প আর লাবীবকে দেখে আহি আর রাদ চুপ হয়ে গেলো। আহি চোখ মুছে অন্যদিকে মুখ ঘুরালো। পুষ্প তা দেখে আহির হাত ধরে তাকে একপাশে টেনে নিয়ে গেলো। আহি নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। পুষ্প বলল,
“আমাকে দেখে চোখ মুছে ফেলেছিস? কেন আহি? কি হয়েছে, আমাকেও জানা! আমি কি তোর বন্ধু না?”
আহি মলিন মুখে পুষ্পের দিকে তাকালো। কেন যেন কান্নাটা আটকে রাখা দায়। আহি পুষ্পকে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল। পুষ্প আহির পিঠে হাত বুলিয়ে যাচ্ছে। পুষ্প আহিকে একটা বেঞ্চে বসিয়ে বলল,
“বল, কি হয়েছে!?”
আহি কাঁপা কন্ঠে পুষ্পকে সবটা জানালো। যেই কথা রাদকে পরিষ্কার ভাবে বলতে পারে নি, তার সবটাই পুষ্পকে বললো। সব শুনে পুষ্পের চোখে অশ্রু ভীড় করলো। সে সান্ত্বনার সুরে বলল,
“কাঁদিস না। দেখিস পথ একটা বেরিয়ে আসবেই।”
“কখন আসবে?”
“এই মুহূর্তে একটাই পথ খোলা আছে, যদি তুই পারিস।”
“বল না।”
“কেইস করে দে।”
“বেশ তো। করতে সমস্যা নেই। উকিল কোথায় পাবো?”
“ভাইয়া।”
আহি ভ্রূ কুঁচকে তাকালো। পুষ্প বলল,
“উজ্জ্বল ভাইয়া অবশ্যই এর সলিউশন বের করবে।”
“তাজওয়ার আর বাবার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর মতো সাহস কারো নেই। আমি দেশের সনামধন্য উকিলের কাছে গিয়েছি। সে আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে।”
“দেখ আহি। এসব আমি বুঝি না। সবাই কিন্তু টাকার পেছনেই ছুটে। আমার ভাইটা আলাদা। ও তোর জন্য সব করবে। একবার এই ব্যাপারে জানিয়েই দেখ। আর উজ্জ্বল ভাইয়া অনেক বুদ্ধিমান। একটা কেইসও এখনো হারে নি। সিলেটের চেয়ারম্যানের ছেলের বিরুদ্ধে একটা মামলা হয়েছিল। ওটাতে ধরাশায়ী করে দিয়েছিল। পেপারে ছবিও ছাপিয়েছিল ভাইয়ার। ক্রেস্টও পেয়েছে। নিজের চেম্বার নিতে পেরেছিল। বেশ চলছে ওর। নিশ্চিত তোর কেইসটা জিতে যাবে।”
“যদি উনার কিছু হয়ে যায়? আমার জন্য কারো ক্ষতি হোক আমি চাই না।”
“ধুর গাধী। আইন আর বিচার বিভাগের সাথে যারা জড়িত তারা এসব চিন্তা করে না। এসব চিন্তা করলে সুখী ক্যারিয়ার বেছে নিতো। কে বলেছে তাকে উকিল হতে? সিলেটে ভাইয়ার শত্রু কি কম? ভাইয়া এসব পাত্তায় দেয় না। আর একবার কেইস জিতে গেলে তাজওয়ার আর তোর বাবা কিচ্ছু করতে পারবে না। এরপর সু্যোগ বুঝে তুই আন্টিকে নিয়ে দেশের বাইরে চলে যাবি। আর ভাইয়াও দেশে থাকবে না। উনি অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার প্ল্যান করছে। তোর কেইসটাই না হয় ভাইয়ার দেশের লাস্ট কেইস হবে।”
আহি পুষ্পকে জড়িয়ে ধরে বলল,
“উনাকে আজই বলিস। আমি আর পারছি না, পুষ্প।”
এদিকে রাদও কাঁদছে। লাবীব তার পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল,
“দেখ ঠিক হয়ে যাবে সব।”
রাদ বলল,
“এই কথা আর বলিস না। কিচ্ছু নিজের ইচ্ছেমতো হচ্ছে না। আমার কোনো যোগ্যতায় নেই আহিকে বাঁচানোর? কেমন বন্ধু আমি? কোনো কাজের না। বুঝতে পারছি না কি করবো। মাথাটা হ্যাং হয়ে যাচ্ছে।”
“হুম, শত্রু যদি ক্ষমতাবান হয়, তখন দুর্বল মানুষদের করার মতো কিছুই থাকে না।”
চলবে-
আগের পর্ব
https://www.facebook.com/groups/371586494563129/permalink/945399553848484/?mibextid=Nif5oz