স্মৃতির_শেষ_অধ্যায়ে_তুমি #পর্ব_৩৬(দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ) #লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

0
304

#স্মৃতির_শেষ_অধ্যায়ে_তুমি
#পর্ব_৩৬(দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ)
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

বৈশাখ মাসের শেষের দিক আকাশ টা ঘনকালো মেঘে ছেয়ে আছে। পরিবেশটা কেমন থম মেরে আছে। চারিদিকে শীতল পরিবেশ শান্ত হয়ে রয়েছে। এ যেন ঝড় আসার পূর্বাভাস। আরাভ বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। আঁখি জোড়া নিচের দিকে বিদ্যমান। পরিবেশটা যেন তার হৃদয়ের ব্যাথা বুঝেছে। তাই মনের ঝড়ের সাথে পাল্লা দিয়ে, প্রাকৃতিক ঝড় আসতে শুরু করে দিয়েছে। আরাভের ভানবার মাঝেই প্রবল বেগে ঝড় আসতে শুরু করল। গাছের ডালপালা গুলো হেলেদুলে পড়ছে। কোনো কোনো গাছের থেকে ডাল ভাঙার মড়মড় আওয়াজ কর্ণকুহরে এসে পৌঁছাচ্ছে। এ যেন প্রকৃতি আরাভের ভেঙে চূর্ণ হয়ে যাওয়া মনের কথা বলে দিচ্ছে। আঁখি জোড়া রক্তিম বর্ন ধারণ করছে। কিছু কাঙ্ক্ষিত কারণে স্মৃতির বিয়ে বেশ কিছু দিন পেছানো হয়েছে। আজ স্মৃতিদের বাসা খুব জাঁকজমকপূর্ণ করে না হলে-ও বেশ সুন্দর করে আয়োজন করা হয়েছিল। ঝড় এসে সবকিছু তচনচ করে দিয়ে গেল। আরাভের ইচ্ছে করছিল। সে-ও যদি অতীতের সবকিছু তচনচ করে দিয়ে, আবার সবকিছু নতুন করে শুরু করতে পারতো। তাহলে জীবন কতই না সুন্দর হতো। কথা গুলো ভাবতেই বুক চিরে দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো।

আরাভ দম ছাড়েনি আরো দু’বার স্মৃতির কাছে গিয়েছিল। বরাবরই স্মৃতির থেকে নিরাশ হয়ে ফিরে এসেছে। পৃথিবীতে সবকিছু জোর করে পাওয়া গেলে-ও ভালোবাসা কখনো জোর করে পাওয়া যায় না। আরাভের ভেতরটা জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে। তার মনে হচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে কেউ তার বুকটা তীর দিয়ে ছিদ্র করে দিচ্ছে। সে কি অসহনীয় যন্ত্রনা সে আর কিছুতেই এখানে থাকবে না। নিজের প্রেয়সীকে নিজ চক্ষে অন্যের হতে দেখার আগে মৃত্যু হওয়া ঢেড় ভালো। সে থাকবে না এ শহরে। এই শহর তাকে অসন্মান আর ব্যাথা ছাড়া কিছু দিতে পারেনি। সে ভুল করেছে তার শাস্তি সে পাচ্ছে। মানুষ খু’ন করে-ও এখন এতটা শাস্তি পায় না। যতটা শাস্তি আমি একটা মেয়ের ভালো চাইতে গিয়ে পেলাম। মস্তিষ্ক শূন্য হয়ে গিয়েছে। নিজেকে ভিষণ অসহায় লাগছে। নিজের বাবা-মাকে এই সময়ে পাশে পেল না। ভিষণ অভিমান জমেছে মনে, সে কি আসলেই এতটা ছোট হবার যোগ্য ছিল। সে আর ছোট হবে না। সে ভুল করেছিল। তবে সে ক্ষমা চেয়েছে। যতটুকু ভুল করেছিল। তার থেকে বেশি ক্ষমা চেয়েছে। তবুও সে ক্ষমা পাইনি। এবার সবাই সবার মতো ভালো থাকুক। আর আসবে না ফিরে, এই চেনা শহরে। সে বোধহয় ভুলেই গিয়েছিল। দুঃখ যার নিত্যদিনের সঙ্গী তার ভালোবাসা পাবার আশা করাটা বিলাসিতা মাত্র। আর ভাবল না জামা-কাপড় গুছিয়ে রাখল। প্রভাতের আলো ফুটতেই শহর ত্যাগ করার উদ্দেশ্যে রওনা দিবে। শেষ বারের মতো বেলকনিতে এসে স্মৃতিদের বাসার দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে রইলো।

রাতে বৃষ্টি হয়ে চারিদিকে স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে আছে৷ বিয়ে বাড়ির সব আয়োজন লন্ড ভন্ড করে দিয়ে গিয়েছে। প্রকৃতি যেন আরাভের হয়ে সবকিছু চূর্ণবিচূর্ণ করে দিয়ে গেল। প্রভাতের আলো ফুটতেই সবাই নতুন করে বাড়ি সাজাতে শুরু করে দিয়েছে। সবকিছু খুলে আবার নতুন করে লাগালো হচ্ছে। বিয়ে যেহেতু কাছেই হচ্ছে তাই বিয়ের অনুষ্ঠানে রাতে শুরু হবে। আরাভ স্মৃতির বিয়ে শুরু হবার আগেই এই শহর ত্যাগ করতে চায়। সবাই মিলে খেতে বসেছিল। তখনই রোকেয়া বেগম আরাভকে উদ্দেশ্য করে বলল,

–বয়স তো দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। বিয়েসাদী করবে না নাকি? রোকেয়া বেগমের স্বাভাবিক কথায় ভিষণ ভাবে আহত হলো আরাভ। কিন্তু বাহিরে তা প্রকাশ করল না৷ সে স্বাভাবিক কণ্ঠে বলল,

–এখনো সময় হয়নি। আমি এসব নিয়ে এখন ভাবছি না।

–তোমার সময় কবে হবে? তোমার জন্য পাড়ার লোকের কাছে কত কথা শুনতে হচ্ছে তুমি জানো! বয়স বেড়েই চলেছে। বিয়ে করার নামে খোঁজ নেই। আমাদের বাসায় থাকতে হলে, আমাদের কথা মতো চলতে হবে।

–থাকলাম না তোমাদের বাসায় কি হবে আমার? আজই আমি চলে যাচ্ছি। তোমাদের আমার জন্য আর কারো কাছে থেকে কথা শুনতে হবে না।

–বেয়াদব একটা।

–আম্মু তুমি যখন জানোই তোমার ছেলে বেয়াদব। তাহলে সেই বেয়াদবের সাথে কথা বলে মুখ নষ্ট করতে কেন আসো?

–তুই আমার ছেলে তোর ওপরে আমার অধিকার আছে। তুই আমার কথা মতো বিয়ে করবি না। আমি তোর জন্য মেয়ে দেখে রাখছি।

–মেয়ে দেখার আগে আমার অনুমতি নিয়েছো? কথা গুলো বলেই বিলম্ব করল না আরাভ। না খেয়েই উঠে চলে গেল। সবাই বিরক্ত মাখা মুখশ্রী করে আরাভের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।

আলোকে সম্পূর্ণ রুপে আঁধার গ্রাস করে ফেলছে। স্মৃতিদের বাসা জুড়ে আলো ঝলমল করছে। কিছু সংখ্যক মেহমান স্মৃতিদের বাসার আশেপাশে ঘুরাফেরা করছে৷ প্রতিটি মানুষের মুখশ্রীতে এসে ধরা দিয়েছে আনন্দের ছোঁয়া। সবকিছু দেখে আরাভের ভেতরটা জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। সকালে যেতে চেয়েও পারেনি। শেষ বারের মতো স্মৃতিদের বাসার সামনে দাঁড়িয়ে থেকে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছে। বুকটা ভিষণ ভারি হয়ে আসছে। বুকের মধ্যে অসহনীয় যন্ত্রনা করছে৷ শরীরটা কেমন জানি অবশ হয়ে আসছে। বুকের মধ্যে খানে ধপাস ধপাস আওয়াজ হচ্ছে। মস্তিষ্ক শূন্য হয়ে গিয়েছে। মাথা কাজ করছে না। এখানে আর কিছুক্ষণ থাকলে বোধহয় দম বন্ধ হয়ে মারা যাবে সে। বুকভরা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে শহর ত্যাগ করার উদ্দেশ্য রওনা দিল আরাভ। অর্ধেক পথ যেতেই কেউ আরাভের কাঁধে স্পর্শ করল। আরাভ দ্রুত গতিতে পেছনের দিকে ঘুরল। অভ্র দাঁড়িয়ে আছে। অভ্রের মুখ খানা শুকনো দেখাচ্ছে। ভাইয়ের শুকনো মুখশ্রীর দিকে তাকিয়ে আরাভ মলিন হাসলো। আরাভের মলিন হাসিটা অভ্রের বুকের ভেতরটা ছেদ করে গেল। অভ্র শান্ত ভাবে বলল,

–স্মৃতি তোকে যেতে বলেছে। কথা টা শুনে একটু আনন্দিত হলো আরাভ। পুরো শরীর কাঁপছে তার। কিন্তু আরাভের হাসোজ্জল মুখশ্রী দীর্ঘস্থায়ী হলো না। অভ্রেরে পরের বাক্য কর্ণকুহরে পৌঁছাতেই শরীর, মন, মস্তিষ্ক স্থীর হয়ে গেল। অভ্র বলতে শুরু করল,

–স্মৃতি চায় তুই স্মৃতির বিয়ে পর্যন্ত থাকিস। সে অনেক খুশি হবে। জীবন যে কারো জন্য থেমে থাকে না৷ সেটা আজ তোকে উপলব্ধি করাবে। তোকে রাতে খেয়ে তারপরে যেতে বলছে। না খেয়ে গেলে স্মৃতির খারাপ লাগবে। অভ্রের কথায় আরাভের মনটা বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়ল। বিষাদের ছায়ায় ঢেকে গেল এক টুকরো সুখ। আরাভ বিষাদগ্রস্ত মন নিয়ে বলল,

–এমনিতেই ম’রে গিয়েছি ভাইয়া। তাকে বলে দিও এক মৃ’ত মানুষকে সে আর কতবার মা’র’বে। আমার পক্ষে সম্ভব নয় এখানে থাকা। কথা গুলো বলেই আরাভ চলে যেতে লাগলো। অভ্র খপ করে আরাভের হাত ধরে ফেলল। আরাভ যাবে না অভ্র আরাভকে টানতে টানতে বাসার মধ্যে নিয়ে গেল। আলমারি থেকে সুন্দর একটা পাঞ্জাবি বের করে পরিয়ে দিল। তারপর কঠিন কণ্ঠে বলল,

–সে যদি তোকে ছাড়া ভালো থাকতে পারে। তুই ও তাকে দেখিয়ে দে। তুই ও তাকে ছাড়া ভিষণ ভালো আছিস। এভাবে হেরে যাস না আরাভ। শেষ পর্যন্ত চলে যা। ভাগ্যে থাকলে আপনা-আপনি চলে আসবে।

–আমি তাকে ছাড়া ভালো নেই ভাইয়া। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। আমি তার জ্বালিয়ে দেওয়া আগুনে জ্বলে পুড়ে দগ্ধ হয়ে যাচ্ছি। আমার বুকে তাকে এনে দিয়ে আমার বুকটা শীতল করে দাও ভাইয়া। বুকটা ভিষণ খাঁ খাঁ করছে। কোনো এক মায়াবতীর মায়ায় আমি আজ-ও মাতাল। সেই মায়াবতীকে কিভাবে দেখিয়ে দেই। তাকে ছাড়া আমি ভিষণ ভালো আছি। আমাকে এত বড় শাস্তি দিও না। আমি স্মৃতির বিয়ে নিজের চোখে দেখতে পারব না।

–আমি যে তোর দু’নয়নে স্মৃতিকে দেখার আকুলতা দেখতে পাচ্ছি। তুই স্মৃতির কাছে যাবার জন্য ছটফট করছিস। তোর মনটা উতলা হয়ে আছে মেয়েটাকে কাছে পাবার জন্য। তুই যদি স্মৃতির কাছে যেতেই না চাইতি। তাহলে কি আমার সাথে আসতি। তোকে জোর করার সাধ্যি আমার আছে। নিজেকে আর কত ঠকাবি আরাভ। তুই নিজের সাথে নিজে যুদ্ধ করতে পারলেও। নিজের মনকে কিভাবে দমিয়ে রাখবি। তাই বলছি আমার কথা শোন চুপচাপ সাথে চল। কথা গুলো বলেই আরাভের হাত ধরে নিয়ে চলে গেল।

ড্রয়িং রুমে কাজী সহ সবাই বসে আছে। আরাভকে দেখে সবাই বিস্ময় নয়নে আরাভের দিকে তাকিয়ে আছে। আরাভের আঁখি জোড়া রক্তিম বর্ন ধারণ করেছে। যে মানুষটাকে দেখার জন্য নিজেই নিজের কাছে হেরে গেল। সেই মানুষটা কই। তার দেখা কেন মিলছে না। বুকের বা পাশ টায় চিনচিনে ব্যাথা শুরু করে দিয়েছে। ভেতরটা ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। অনুভূতিরা জোট বেঁধে পালিয়েছে। চিন্তার সমস্ত শরীর অবশ হয়ে আসছে। ক্ষণিকের জন্য মস্তিষ্ক অকেজো হয়ে গিয়েছে। আবিদ রহমান কিছু একটা ইশারা করতেই অভ্র আরাভকে বসিয়ে দিল। সবাই আরাভকে নিয়ে কানাঘুষা শুরু করে দিয়েছে। আরাভ মাথা নিচু করে বসে আছে। আরাভের অবস্থা দেখে, আবিদ রহমানের ভিষণ মায়া হলো। আবিদ রহমান বিলম্ব করল না। কাজী সাহেবকে বিয়ে পড়াতে শুরু করতে বললেন। এর মধ্যেই স্মৃতিকে নিয়ে আসতে লাগলো। লাল টকটকে রঙের একটা শাড়ি পড়ানো হয়েছে। অদ্ভুত ভাবে আজ মেয়েটার সুন্দর্য বেড়ে গিয়েছে। কথায় আছে না বউ যেমনই হোক না কেন বিয়ের দিন বউকে অন্য রকম সুন্দর লাগে। ঠিক তেমনই স্মৃতিকে ভয়ংকর সুন্দর লাগছে। অন্যের অর্ধাঙ্গিনীকে দেখার তীব্র নিষিদ্ধ ইচ্ছে আরাভের আঁখি জোড়া করছে। চোখ তুলতে গিয়ে নামিয়ে নিচ্ছে। আরাভের ভাবনার মাঝেই কিছু ভয়ংকর বাক্য আরাভের কর্ণকুহরে এসে পৌঁছাতেই আরাভের সমস্ত শরীর শীতল হয়ে আসলো। পুরো শরীর রীতিমতো কাঁপছে। গলা শুকিয়ে কাট হয়ে আসছে। অনুভূতিরা কাজ না করার আনদোলন শুরু করে দিয়েছে। শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। এই বুঝি মনে হচ্ছে তাকে কেউ মিথ্যা কথা বলছে। সে নিদ্রা দেশে তলিয়ে আছে। নিদ্র ভেঙে গেলেই সবকিছু আবার ঠিক হয়ে যাবে। পাথরের ন্যায় আরাভ বসে আছে। আরাভকে শান্ত হয়ে যেতে দেখে অভ্র আরাভের কাছে এগিয়ে আসলো। আরাভের কানের কাছে ফিসফিস করে বলল,

–এত বড় সোফা মোটা মানুষের মতো একাই এত জায়গা দখল করে বসে আছিস কেন? তুই যদি একাই সব জায়গা দখল করে নিয়ে বসে থাকিস। তাহলে ইমন আর স্মৃতি বসবে কোথায়? তুই একটু স্মৃতিকে যাওয়ার জায়গা দে। স্মৃতি গিয়ে ওখানে বসুক। একদম স্মৃতির গা ঘেঁষে বসবি না। মাঝখানে ইমনের জন্য জায়গা রাখবি। শুনলাম ইমনরা রওনা দিয়ে দিয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে। ভাইয়ের কথায় আরাভের দু’নয়ন ছলছল করে উঠল। চিৎকার করে কান্না করতে ইচ্ছে করছে। আজ যদি সে ছেলে না মেয়ে হত৷ এখানে গড়াগড়ি খেয়ে কান্না করে শেষ করে ফেলত। মানুষ তাকে এতটা অসহায় কেন বানালো। তাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে কেন শেষ করে দিল৷ কাউকে গভীর ভাবে আলিঙ্গন করে ভিষণ করে বলতে ইচ্ছে করছে। তোমরা কেন আমার ওপরে স্বার্থপর হয়েছিলে। আমার ভেতরের খবর কি তোমরা রাখনি। একটা মানুষ মারা গেলে সবাই জিজ্ঞেস করে, কিভাবে মারা গেল। অথচ কত শত জীবিত লা’শ আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়। তোমরা কেনো জিজ্ঞেস কর না। সে কিভাবে বেঁচে আছে। আজ সে কাঁদবে না কিছুতেই কাঁদবে না। এত সহজে দুর্বল হবে না। সে-ও সবাইকে দেখিয়ে দিবে। সে দুর্বল হবার মতো ছেলেই না। না চাইতেও বারবার আঁখি জোড়ার কোণে অশ্রুকণা গুলো এসে হানা দিচ্ছে।

চলবে…..

(কালকে একটা ধামাকা আছে। রেসপন্স না করলে সবকিছু ল’ন্ড ভ’ন্ড করে দিম হু।😒)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here