নিশীভাতি #২৪তম_পর্ব

0
770

#নিশীভাতি
#২৪তম_পর্ব

“আগামীবার আমার জিনিসে হাত দেবার পূর্বে অনুমতি নিবেন। আমার ব্যক্তিগত জিনিসে সবার হস্তক্ষেপ আমার পছন্দ নয়”

ফাইজানের দিকে শ্রান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে হুমায়রা। খুব একটা অবাক হয় নি সে। এই কদিনে কেমন যেনো অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে। মানুষটি তার বিচিত্র। হুমায়রা যখন-ই তার দিকে দু কদম বাড়াবে লোকটি নিজ উদ্যোগে তার প্রতি প্রাচীর টানবে। যখন আবার হুমায়রা নিজেকে গুটিয়ে নিবে তখন এই মানুষটি-ই তাকে কাছে টেনে নিবে। তার মন বোঝাটা অষ্টাদশীকে হাপিয়ে তুলছে। ঘরময় নীরবতার আচ্ছাদন। নীরবতা ভাঙ্গলো হুমায়রা। একটু কাছে এগিয়ে গেলো ফাইজানের। তার চোখে চোখ রেখে মৃদু স্বরে বললো,
“আপনি আমার স্বামী, আমাদের মাঝে কোনো লুকোচুরি কিন্তু নেই। আইন বা শরীয়ত মোতাবেক আমি এবং আপনি সবটুকুই আমাদের অধিকারস্থ— এই কথাটা আপনি আমাকে বলেছিলেন। তাহলে আজ লুকোচুরি কেনো?”

ফাইজান চুপ করে রইলো। হয়তো কিশোরীর আকস্মিক প্রশ্নের উত্তর তার কাছে নেই। সে নিজেই তার সম্পর্কের দেওয়াল ভাঙ্গছে আবার নিজেই তিন ফুট প্রাচীর তৈরি করছে। হুট করেই শান্ত মুখবিবরে অস্থিরতা দেখলো হুমায়রা৷ দীর্ঘশ্বাস ফেললো সে। খানিকটা এগিয়ে এলো। ধীর স্বরে বললো,
“একটা পাঞ্জাবীর মাঝে কি এমন গোপনীয়তা বা নিজস্বতা আমি জানি না। তবে যেহেতু আপনার ভালো লাগে নি, আমি আর আপনার ব্যক্তিগত জিনিসে হাত নিবো না। আসলে এই লুকোচুরি খেলতে খেলতে আমিও ক্লান্ত। হ্যা, তবে অপেক্ষায় থাকবো সেদিনের যেদিন আপনি নিজ থেকেই এই লুকোচুরি খেলার ইতি টানবেন”

হুমায়রার শান্ত কন্ঠ ফাইজানের অস্থিরতা বাড়ালো। হুমায়রা বেরিয়ে যেতে গিয়েও থামলো, পিছু ফিরে বলল,
“পারলে ভাইজানের বিয়েতে উপস্থিত থাকবেন। দাদা-দাদী খুশি হবে। না থাকলেও তারা কোনো প্রশ্ন করবে না”

বলেই বেরিয়ে গেলো হুমায়রা। ফাইজান তার যাবার পানে চেয়ে রইল। ভীষণ তিক্ত অনুভূতি হৃদয়ে দলা পাকাচ্ছে। সে ভুল ছিলো, অতীত এখন তাকে তাড়া করে। চাইলেও নতুনকে বরণ করে অতীতকে ভোলা যায় না। কিছু স্পর্শ, মুহূর্ত, স্মৃতি অজান্তেই তার শান্ত চিত্তে তিতকুটে অনুভূতির সঞ্চার করবেই। দাঁপিয়ে বেড়াবে মস্তিষ্ক এবং হৃদয়ে। কপাল চেপে ধরলো ফাইজান। ঝিমঝিম করছে মাথাটা। মনে মনে আওড়ালো,
“আমার কি কখনোই মুক্তি হবে না?”

******

মধ্যাহ্নের ক্লান্ত সূর্যের ঝিমিয়ে আসা আলোকরাশি আছড়ে পরছে মসজিদের প্রাঙ্গনে। শান্ত, নিরিবিলি মসজিদের পরিবেশ। সমীরের গতি মন্থর। সাদা মেঘেরা নীলাম্বরময় ছুকিতকিত লেখছে। কিশলয়েও জমে আছে স্নিগ্ধতা। যেমনটি ইলহার মুখশ্রীময় লেপ্টে আছে। লাল শাড়িতে নববধুকে অপরুপা লাগছে। যে দেখছে সেই মুগ্ধ হচ্ছে। রাশাদের সাথে যেনো খুব যত্ন করে মেয়েটিকে বানিয়েছেন আল্লাহ তা’আলা। মহিলাদের আলাদা কক্ষে সকল মহিলাদের মাঝে নববধু বসে রয়েছে। নামায পড়া শেষ হলেই বিয়ের কার্যক্রম শুরু হবে। এই অনুভূতিটা খুব অদ্ভুত। কোথাও শান্তির ছোঁয়ার সাথে ঈষৎ বেদনাও লুকিয়ে আছে। আজকের দিনটাতে মা কে খুব মনে পড়ছে। নিজের সুখের জন্য মাকে ওই জারিত সংসার নামক নরকে ফেলে এসেছে সে। বাবা কি তার উপরের আক্রোশ মায়ের উপর দিয়ে মেটাচ্ছে! জানা নেই। অবশ্য সে তো এমন কিছুই বলেছিলো। ভালো করে বুঝিয়ে দিয়েছিলো তার অবাধ্য হলে কি কি হতে পারে। তবুও অবাধ্য হলো ইলহা। আর পারছিলো না। ওই শেকল বাধা স্থানে দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো। পরিবার মানুষের আশ্রয়স্থল হয়। কিন্তু ইলহার জন্য তা কেবল ই একটি খোলশ। ভালোবাসা নামক মরীচিকার পেছনে ছুটন্ত মা-ই তার একমাত্র সম্বল। এতোকাল সেই মানুষটির জন্যই এই খাঁচায় সে বন্দি ছিলো। কিন্তু কত দিন! মা কখনোই বাবাকে ছাড়বেন না। কারণ শত লাঞ্চনা, অপমানের পরও সে তার কাছেই নিজেকে সপে দিবে বারে বার। ইলহা জানে তার বাবার কাছে মা কেবল ই নিজের আক্রোশ, হীনতা লুকানোর স্থান। বাহিরের দুনিয়ায় টিপটপ পার্ফেক্ট মানুষটির মাঝে যে পশুটি লুকিয়ে আছে সে বের হয় তার মার সামনে। আকিব শাহরিয়ার, অতি শিক্ষিত, মার্জিত ব্যক্তি। কিন্তু মদ গিলে অশ্রাব্য ভাষায় যখন গালাগাল করেন তখন তার আসল মানুষরুপী কিটসত্ত্বাটা বের হয়। এরপরও ভালোবাসা নামক মিথ্যে ছলনায় মা তার কাছেই পড়ে রয়েছে। আর সে নিজেকে সর্বেসর্বা ভেবেই চলেছে। কারণ তার কাছে ইলহা প্রতিবাদ, বিদ্রোহ থামানোর অস্ত্র আছে। সেদিন রাতেও মা তার ঘরে এসেছিলো, যেদিন অমানুষের মতো বাবা তাকে মেরেছিলো। সে মলম দিতে আসে নি। বুঝাতে এসেছিলো, ইলহার হাতজোড়া ধরে আকুতিভরে বলেছিলো,
“তুই না আমার সোনা মেয়ে, বাবার কথা মেনে নে। ছেলেটা খুব ভালো। ওই দোকানদার থেকে তো হাজারগুন ভালো। তুই সুখী হবি মা”
“তোমার মত সুখী হবো মা?”

ইলহার দলাপাকানো স্বর শুনে ঈষৎ কাঁপলো মায়ের ঠোঁট। মৃদু স্বরে বললো,
“আমি কি সুখী নই?”

তাচ্ছিল্যভরে হাসলো ইলহা। মায়ের কাঁটা ঠোঁটে হাত বুলিয়ে বললো,
“এমন সুখ আমি চাই না মা। চলো না পালিয়ে যাই?”
“পাগল তুই। ওই দোকানদার তোর মাথা খারাপ করে দিয়েছে। পালানো, পালানো—এই কথাই মুখে লেগে আছে। কই পালাবি তুই? খাবি কি? ছোটবেলা থেকে যে ঐশ্বর্যে বড় হয়েছিস সেটা বাদে থাকতে পারবি? অভাব কি জিনিস জানিস? সবসময় যা চেয়েছিস হাতের মুঠোতে পেয়েছিস। কখন হিসেব করেছিস তোর জামা, জুতোগুলোর দাম কত? কখনো হিসেব করেছিস কত টাকা তোর বাবা তোর পেছনে খরচ করেছে? কেনো পাগলামি করছিস মা। মেনে নে না”

ইলহা আবার ব্যর্থ হলো। চেয়েও বুঝাতে পারলো না মাকে। যখন মিনহাজের অফিসে যাচ্ছিলো, আকিব সাহেব খুব স্পষ্টস্বরে বুঝিয়ে দিলেন,
“তুমি বুদ্ধিমতী মেয়ে, নিশ্চয়ই ওই দোকানদান তোমার মার থেকে প্রিয় না”

এতোকিছুর পরও ইলহা সেই দোকানীকেই বেছে নিলো। কারণ সে দু দন্ড শান্তি চায়। একটু খোলা আকাশ চায় যেখানে ডানা মেলতে পারবে সে। হাতে নরম স্পর্শ পেতেই স্বম্বিত ফিরলো ইলহার। পাশে তাকাতেই হুমায়রার শান্ত মুখখানি নজরে পড়লো। মৃদু হেসে বললো সে,
“আজ একটা ভালো দিন, নববধুর চোখের পানিতে দিনটা সিক্ত করো না। সব ঠিক হয়ে যাবে দেখো”
“কিছুই ঠিক হবে না গো। আমি স্বার্থপর সন্তান। যে নিজের সুখের জন্য নিজের মার কষ্টগুলো বাজি রাখলো। মা আমায় বুঝলো না”
“উনি ঠিক বুঝেছেন, মায়েরা সবসময় সন্তানের সুখ ই চায়”

বলেই থেমে গেলো হুমায়রা। সত্যি কি সব মায়েরা সন্তানের সুখ চায়? তার মা তো চায় নি। তার মা কখনো তাকে সন্তান রুপেই স্বীকার করে নি। হয়তো এজন্য চায় নি। হুমায়রা নিজেকে সামলে নিলো। আজ ভাইজানের জীবনের শুভদিন, নিজের আক্ষেপে এই দিনে মলিনতা আনতে চায় না। নামায শেষে বিয়ের কার্যক্রম শুরু হলো। শান্ত নিরিবিলি মধ্যাহ্নে কবুল বলে এক অবিচ্ছেদ্য বন্ধনে বাঁধা পড়লো ইলহা এবং রাশাদ। রাশাদকে যখন হুজুর শুধালেন, নির্দ্বিধায় সে বললো,
“আলহামদুলিল্লাহ, কবুল”

বিয়ে শেষে খেঁজুর বিতরণ হলো। দাদী চুমু খেলেন ইলহার কপালে। কোমল স্বরে বললেন,
“আমগোর গরিবের ঘোরে তোমার স্বাগতম”

হুমায়রা একবার চাইলো মসজিদের প্রাঙ্গনে। না মানুষটি আসে নি। সে খুব আশা নিয়ে বসেছিলো এমনটা নয়। কিন্তু হয়তো এলে ভালো লাগতো। দাদা এরমাঝে দুবার শুধালো,
“জামাই বাবা আসবে না?”
“উনার তো আজ মিটিং, না আসার সম্ভাবনাই বেশি”

ছেলের জন্য বারেবারেই বিপাকে পড়েন শরীফা। ছেলেটা আদ্যোপান্ত অসামাজিক। নিজ সম্বন্ধীর বিয়ে অথচ সে মিটিং করছে। রাগে ফরিদকে ফোন দিলেন সে। ফরিদ তিনবারের মাথায় ফোন ধরলো,
“ফুফু, বলেন”
“রাখ ফুফুর বাচ্চা, ওই খবিশের বাচ্চা কই”
“মিটিং এ গ্যাঞ্জাম হচ্ছে মেলা। আমি পড়ে ফোন দিচ্ছি”

ফোনের ভেতর থেকে উচ্চবাচ্যের ধ্বনি শোনা গেলো। শরীফার ভেতরটা কেঁপে উঠলো অজানা ভয়ে। ছেলেটা ঠিক আছে তো।

*****

মনোনয়ন পাবার পরও টিকিট বদল হলো তৌফিক সাহেবের। সে দুবার মন্ত্রী পদে ছিলেন। অথচ আজ তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এটা পার্টি অফিস থেকেই কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই দু দিনে তার নামে নানা খবর ছাপানো হয়েছে। বড় একখানা পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক তার বিরুদ্ধে কারচুপি এবং অর্থ পাচারের সংবাদ ছাপিয়েছেন। ব্যাপারটা বেশ আলোড়ণ তৈরি করেছে। একে একে সব পত্রিকা তার বিরুদ্ধে খবর ছাপিয়েছে। সরকারের ক্যান্সার ফান্ড থেকেও বেনামে অর্থ পাঁচার হয়েছে। ফলে ব্যাপারটা দুদকের আন্ডারে চলে গিয়েছে। এই নিয়েই পার্টি অফিসে বেশ হাঙ্গামা হচ্ছে। শেষ অবধি, তার মনোনয়ন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। এসবের মাঝে ফাইজান শান্ত। স্থির দৃষ্টিতে দেখছে রঙ্গ। তৌফিক সাহেব বড় নেতা। তার রাজনৈতিক জীবন এতটা প্রশস্থ যে এমন কিছু সে মেনেই নিতে পারছে না। বড় বড় মানুষের সাথে তার উঠাবসা। তাই নিজের মানুষগুলো গাদ্দারি করলো, মানতে পারছে না। তিনি হুংকার ছাড়লেন,
“মামদোবাজী নাকি, দুদক আগে বের তো করুক আমার দোষ। তার আগেই কেনো আমাকে দোষ দেওয়া হচ্ছে”
“দেখুন তৌফিক ভাই। আমরা রিষ্ক নিবো না”
“কিন্তু আমার এতবছরের ক্যারিয়ার। কত কিছু এই দলে জন্য আমি করেছি”
“আমরা তো তা ভুলছি না। আপনি একটু শান্ত হন”

কিন্তু তৌফিক সাহেব শান্ত হলেন না। অনেক শাষালেন, হুমকি দিলেন। সবার হাড়ি ভেঙ্গে দেবার হুমকি। যাবার সময় চোখাচোখি হলো ফাইজানের সাথে। ফাইজানের মুখে তখন দূর্বোধ্য হাসি। যা টনক নাড়িয়ে দিলো তৌফিক সাহেবের। এর পেছনে এই চুনোপুটির হাত নেই তো।

*****

ফিরতে রাত হলো ফাইজানের। ক্লান্ত শরীরের সর্বাঙ্গে ব্যাথা। মাথা ঝিমঝিম করছে। ক্ষুদা লেগেছে। কিন্তু ঘরে আজ উৎসবের ঢল। হুমায়রা ভাইজান এবং ইলহার বাসর ঘর সাজাতে ব্যস্ত। মাও সেই তালে গা ভাসিয়েছে। তা নিঃশব্দে রান্নাঘরে প্রবেশ করলো সে। কিছু খাওয়া প্রয়োজন। তখন ই চামেলীর সাথে দেখা হলো। মেয়েটি তাদের বাড়ি কাজ করে। তাকে দেখেই সে বলল,
“ভাইজান, এই যে আপনের খাবার। ভাবীসাব আগ থেইক্যাই উঠায়ে রাখছে”

ফাইজান অবাক হলো। কিছুসময় নিষ্প্রভ নয়নে দেখলো প্লেটের দিকে। বিমূঢ় স্বরে শুধালো,
“তোর ভাবীসাব উঠিয়ে রেখেছে”
“হয়”

ফাইজানের নিলীন চোখজোড়া খুজলো হুমায়রাকে। কিন্তু পেলো না। মেয়েটি এখন মহাব্যস্ত। ফাইজান ধীর স্বরে তাই চামেলীকেই শুধালো,
“তোর ভাবী খেয়েছে”
“হয়”
“ঔষধ?”
“হেইডা আম্মায় জানে”

ফাইজান আর কিছু শুধালো না। সকালের কান্ডে মেয়েটি আবার অভিমান করে আছে। এখন তার ধারে কাছেও ঘেষা যাবে না। তাই চুপচাপ খেতে বসলো সে। খাওয়া শেষে চামেলীকে বলল,
“একটা কাজ আছে করতে পারবি?”
“কন”

*******

রাত গাঢ় হলো। আড্ডার উল্লাসে সবাই ব্যস্ত। কাওছার এর মাঝে ঢুকলো না। সে ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো ফাইজানের বাসা। একটু নেশা করার মন করছিলো। কিন্তু উপায় নেই। আব্বা দেখলেই আবার শুলে চড়াবেন। তাই ফাঁক পেতেই বাগানের এক কোনায় চলে গেলো সে। পকেটের ভেতর থেকে ছোট বোতলটা বের করতে নিতেই পেছন থেকেই কেউ বলল,
“শীত অনেক, ভেতরে যান”

মিহি স্বরে কেঁপে উঠলো কাওছার। পেছনে ফিরতেই হুমায়রাকে দেখতে পেলো সে। আমতা আমতা করে বলল,
“আম্মাজী যে, কিছু কইবা”
“এটা আমার শ্বশুরবাড়ি, আমার শাশুড়ি মা দাদা-দাদী, ভাইজানকে খুব ভালো জানে। তাই সম্মানটা খোয়াবেন না”

কাওছার জোর করে হাসলো। নির্লজ্জের মতো বললো,
“এডা কি কও, এইডা তো খেজুরের রস”
“দেখি”
“তুমি আমারে সন্দেহ করো?”

তাচ্ছিল্যভরে হাসলো হুমায়রা। বিদ্রুপ স্বরে বললো,
“হাসালেন, আপনাকে সন্দেহ না করার কারণ তো দেখছি না। যাক গে। ভেতরে যান। সবাই খেতে বসবে”

কাওছার আর কথা বাড়ালো না। চোরের মতো ভেতরে চলে গেলো। মনে মনে দু তিনবার গালিও দিলো হুমায়রাকে। কিন্তু এখন একটু ভালো হয়ে থাকা প্রয়োজন। যতই হোক মেয়ের জামাইয়ের অর্থ আছে, সেই সাথে ক্ষমতা। গ্রামে এখন তাকে এই বদৌলতেও দু একজন মানুষ সম্মান করে। সেটা হারানো বুদ্ধিমানের হবে না।

হুমায়রা ফুল তুললো। খাট সাজাবে সে ভাইজানের। তখন ই নজরে পড়লো, চামেলী দূরে কিছু পুড়াচ্ছে। কৌতুহল বশত এগিয়ে গেলো। চামেলীর ঘাড়ে হাত দিতেই সে কেঁপে উঠলো। আমতা আমতা করে শুধালো,
“কি ভাবীসাব?”
“কি করছো তুমি চামেলী আপু?”
“ঠান্ডা তো খুব তাই আগুন পোহাই”

চামেলীকে একটু সরিয়ে ভালো করে দেখতেই দেখতে পেলো লেলিহান শিখার মাঝে জ্বলছে সকালের সেই পাঞ্জাবীটি। চামেলীর দিকে তাকাতেই সেই ইনিয়ে বিনিয়ে বলল,
“ভাইজান দেসে, কইছে পুড়ায় লাইতে। কি দামী পাঞ্জাবী। বিয়ার দিন হাফসা আফায় নিজে কিনছিলো এই পাঞ্জাবীডা”…………

চলবে

(ভালো লাগলে রেসপন্স করবেন)

মুশফিকা রহমান মৈথি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here