#সুখ_পাখি
#Ayrah_Rahman
#part:–19
হঠাৎ…
মেঘের গুড়ুম গুড়ুম শব্দে তরু আর অভ্রের ঘোর ফেরে,,
তখন তরু আর অভ্র নদীর পাড়ে ঘাসের উপর বসে ছিল।
আকাশের পশ্চিমা কোনে কালো মেঘের আনাগোনা করতে লাগলো,,
হয়তো কিছুক্ষণের মধ্যে ই বৃষ্টি নামবে।
বৃষ্টি নামার পূর্বে পরিবেশ টা খুব সুন্দর লাগে,,
নিস্তব্ধ চারিপাশ,,হালকা বাতাস,,
সেটা যদি হয় নদীর পাড়ে তাহলে তো ব্যপার টাই আলাদা,,
অভ্র বসে আছে একদম নদীর কিনারা ঘেসে আর তরু অভ্রের কাঁধে মাথা রেখে বসে চারপাশে দেখছে,,
কারো মধ্যে ই কোন কথা নেই,,চরম নিস্তব্ধতা
,, এই নিস্তব্ধতা র প্রাচীর ভেঙে তরু বলে উঠলো,,,
তরুঃ– অনেক সময় তো হলো,,এখন যাওয়া উচিত,, বাসায় সবাই চিন্তা করবে..
অভ্রঃ- আরেকটু থাকো না তরু পাখি,,
তরুঃ– না,,এখনই বৃষ্টি নামবে,,পরে ভিজে যেতে হবে,,ভিজলে মা বকা দিবে,
অভ্রঃ- আচ্ছা চলো,আমি তোমাকে দিয়ে আসি
তরুঃ– এমা না না,,,,আপনাকে যেতে হবে না আমিই যেতে পারবো,,
অভ্রঃ- শালিক,, তুমি কিন্তু বেশি কথা বলো,,চলো আমি দিয়ে আসি,,
অভ্রের কথা শুনে তরু আর মানা করলো না,,
অভ্রের সঙ্গ তার ভালো লাগে,,
তার সাথে কথা বলতে ভালো লাগে,
, মানে সব কিছু ই তরুর ভালো লাগে,,
এই ভালো লাগার নাম যদি ভালোর হয় তাহলে সে হাজার বার বলতে রাজি,,
সে অভ্রকে ভালোবাসে,,
অসম্ভব ভালোবাসে,
,মনে মনে কথা গুলো ভেবেই তরু মুচকি হাসলো,,
অভ্র আর আরু রাস্তা দিয়ে হাঁটছে।
অভ্রের বাহু জরিয়ে তরু হাটছে,,কারো মাঝেই কোন কথা নেই,,
চার রাস্তার মোরে এসে তরু অভ্রকে বিদায় জানালো,,
প্রতিদিন রাতে তাদের ১২ টা থেকে ভোর পর্যন্ত প্রেমালাপ চলতে থাকে,,
এভাবে খুব ভালোই চলছিল তরু অভ্রের ভালোবাসা ময় সময় গুলো,
,অভ্রের কেয়ার,,শাসন,, ভালোবাসা সব কিছু ই চলতো তরুর উপর,,
আর তরুর অভিমান,,অভিযোগ সব কেবল অভ্রের জন্য ই,,
________________
হঠাৎ
করেই ফোনের রিংটোনে তরু অতীতের কল্পনা থেকে ফিরে এলো,,
শোয়া থেকে উঠে ফোন টা হাতে নাম্বার নিতেই ফোনের স্ক্রিনে জলজল করছে একটা নাম,
,””মিস্টার অভদ্র “”,,
তরু কিছু ক্ষন ফোনের দিকে তাকিয়ে ফোন টা বুকের মাঝে জরিয়ে নিলো,
,চোখ বেয়ে নেমে এলো অঝোর ধারায় বৃষ্টি,, যে বৃষ্টি তে কোন শব্দ নেই,,আছে শুধু না বলা কিছু অভিযোগ.. আর অভিমান..
ফোনটা বাজতে বাজতে শেষে বন্ধ হয়ে গেলো,,পুনরায় আবার বাজতে লাগলো,
, কিন্তু তরু ফোন ধরছে না,,
এভাবে প্রায় ১০ বার ফোন বাজতে বাজতে শেষে কেটে গেলো,,
হঠাৎ করে ফোনে মেসেজ টোন বেজে উঠলো,,
তরু মেসেজ অন করে দেখে অভ্র মেসেজ দিয়েছে,,
— তরু প্লিজ একটু বারান্দায় আসো,,শুধু একবার তোমাকে দেখবো,,প্লিজ, দেখো আকাশে মেঘের আনাগোনা আবার বৃষ্টি নামতে পারে,,প্লিজ আসো না তোমাকে একপলক দেখেই চলে যাবো,,না হলে আজ যা কিছু ই হোক আমি যাবো না..
তরু মেসেজ টা দেখে ফোন অফ করে বিছানায় শুয়ে পরলো,,
যা কিছু ই হয়ে যাক সে যাবে না,,
তরু শুয়ে শুয়ে অতীতের কথা চিন্তা করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে গেলো বুঝতে পারলো না,,
হঠাৎ আকাশের তুমুল গর্জনে তরুর ঘুম ভেঙ্গে গেল,, তরু জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখে বাইরে প্রচুর বৃষ্টি,,
তরুর মনে পরে গেলো,,অভ্র তাকে মেসেজ দিয়ে ছিলো,,
যে সে নিচে দাড়িয়ে আছে,,
— সে কি এখন ও বাইরে দাড়িয়ে আছে নাকি?
আবার ভাবলো,,
নাহ সে কেন এত সময় এই বৃষ্টি তে শুধু মাত্র তার জন্য দাড়িয়ে থাকবে?
মনে মনে প্রশ্নটা আওড়ে তরু তাচ্ছিল্য
পূর্ণ হাসি হাসলো,,
তরু বিছানা ছেড়ে নেমে সোজা বারান্দায় চলে যায়,,
গিয়ে দেখে,,
অভ্র এখন ও তার বারান্দার নিচে গাড়ির ডিকির উপর বসে তরুর বারান্দার দিকে তাকিয়ে আছে,,
তরুর চোখ অটোমেটিক বড় হয়ে গেলো
,,সে সোজা ছাতা নিয়ে বাইরে বের হলো,
,কি করছে তরু নিজেই বুঝতে পারছে না,,শুধু এই টুকুই মাথায় আছে,,আরেক টু বৃষ্টি তে ভেজলে বড় রকমের ক্ষতি হতে পারে অভ্রের
..না হলেও ২ ঘন্টা তো হবেই,,
সে বৃষ্টি তে ভেজছে..
তরু ছাতা নিয়ে অভ্রের দিকে অগ্রসর হচ্ছে,,
এই ঝুম বৃষ্টি তে তরুকে দেখতে পেয়ে অভ্র গাড়ির ঢিকির উপর থেকে নেমে ধীর পায়ে তরুর সামনে যায়,,
তরুও ধীর পায়ে অভ্রের কাছে আসে,,
কিন্তু দুজনের মুখে কোন কথা নেই,,শুধু একজন আরেকজন কে দেখতে ব্যস্ত..
হঠাৎ অভ্র তরুকে আষ্টেপৃষ্ঠে জরিয়ে ধরে,,এমন ভাবে ধরে যেন ছেড়ে দিলে আবার হারিয়ে যাবে,,
এতক্ষণ বৃষ্টি তে ভেজার কারণে অভ্রের শরীর বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে আছে,,চোখ গুলো লাল হয়ে আছে,,কেমন বিভৎস দেখা যাচ্ছে আজ অভ্রকে..
অভ্রের ছোয়া পেয়ে তরুর মনে হলো,,বিদ্যুৎ এর কয়েক হাজার ভোল্টের শক খেয়েছে,,
তরু শুনতে পেলো,,
অভ্র বিরবির করে জেনো কি বলছে,,
তরু একটু মন দিয়ে শোনার চেষ্টা করলো যে সে কি বলছে,,
— শালিক প্লিজ মাফ করে দাও,,আমি আর কক্ষনো তোমাকে ভুল বুঝবো না,,কষ্ট দেবো,,গড প্রমিস,,এবারের মতো মাফ করে দাও,,আমি আর কিছু করবো না,,বারবার একই বুলি আওড়ে যাচ্ছে,,
[📌📌প্রিয় রিডার্স আপনারা ই বলেন তরু আর অভ্রের কি মিল করে দিবো নাকি আরো চলবে অভিমানের পালা?]