#নিশীভাতি
#২১তম_পর্ব (বর্ধিতাংশ)
“রাশাদ সাহেব বাড়ি আছেন? রাশাদ সাহেব?”
মোটা শাল পেঁচিয়ে বের হলো রাশাদ। সিভিল ড্রেসের অপরিচিত মানুষগুলোকে চিনতে কষ্ট হলো। সন্দিহান স্বরে শুধালো,
“কে আপনারা?”
“আমাদের চিনবেন না, কিন্তু আমাদের কাছে আপনার বিরুদ্ধে রিপোর্ট এসেছে। ব্যাবসায়ী আকিব শাহরিয়ারের একমাত্র মেয়েকে অর্থলোভে জিম্মি করে রেখেছেন। সত্যি কি”
সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অপরিচিত মানুষটির ভারীক্কি স্বরে কপালে প্রগাঢ় ভাঁজ পড়লো রাশাদের। অবিলম্বে বলে উঠলো,
“সকাল সকাল কি ফাইজলামতির কথা শুনাচ্ছেন? আমি কাউকে কেনো জিম্মি করতে যাবো?”
“স্বাভাবিক অর্থলোভে। দেখুন রাশেদ সাহেব, আকিব শাহরিয়ারের মেয়ে ইলহা শাহরিয়ার গত এক মাসের উপরে লাপাত্তা। উনার বান্ধবীর ফোন ট্রেস করা হয়েছে। শেষ উনি এখানের বাজারের একটি ফোন দিয়ে বান্ধবীর সাথে যোগাযোগ করেছেন। সেই ছেলেটাকে একটু দানাপানি দিতেই আপনার নাম উগড়েছে। এও বলেছে ইলহাকে আপনি এই বাড়ি আটকে রেখেছেন”
“কি অদ্ভুত না? আমি উনাকে কোনো স্বার্থছাড়া আটকে রেখেছি?”
“স্বার্থ তো আছেই”
“তাহলে উনার বাবাকে একবারও টাকার জন্য ফোন দেই নি কেনো?”
রাশাদের প্রশ্নে মানুষটি তাচ্ছিল্যভরে হাসলো। তারপর গম্ভীর স্বরে উত্তর দিলেন,
“কন্যে মুঠোবন্দি হলে টাকা তো হেটে আসবে। বুঝি না মনে করেছেন, বড়লোকের মেয়েকে ভুলে ভালে ফসলিয়ে বিয়ে করলে সব সম্পত্তি তো হাতের মুঠোয়”
“মুখ সামলে কথা বলুন”
চোয়াল শক্ত করে কঠিন স্বরে বললো রাশাদ। তার শতর্কবানী তোয়াক্কা না করেই একটা ওয়ারেন্ট লেটার দেখিয়ে সামনের মানুষটি বললো,
“আমাদের কাছে সার্চ ওয়ারেন্ট আছে। আমরা আপনার ঘর সার্চ করতে চাই। যদি ইলহা ম্যাডাম এখানে না থাকে তাহলে তো আপনার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ খারিজ হয়ে যাবে। কিন্তু যদি তাকে পাওয়া যায় তবে আপনার বিরুদ্ধে হিউম্যান ট্যাফিকিং এর কেস ও হতে পারে”
এর মাঝেই ঘরের প্রতিটি প্রাণ ঘুম থেকে উঠে গিয়েছে। শামসু মিঞা মোটা শাল পেঁচিয়ে, কানটুপি লাগিয়ে বেরিয়ে এলেন। প্রবীণ মস্তিষ্ক ধারণ করতে পারলো না ঘটনাটি। অবাককন্ঠে নাতীকে শুধালেন,
“উনারা কারা রাশাদ?”
রাশাদকে উত্তর দেবার সুযোগ না দিয়েই সামনের মানুষটি বলে উঠলো,
“চাচা আমরা দেহাইগঞ্জ থানা থেকে এসেছি। আমার নাম মিনহাজ। এখানে এসেছি একটি বিশেষ সার্চ এ। ইলহা শাহরিয়ার নামের একজন নিঁখোজ, তার বাবা মা তাকে হন্নে হয়ে খুঁজছেন। মেয়েটি একজন ব্রাইট ডক্টর। আশংকা করা হচ্ছে আপনার নাতী তাকে এখানে লুকিয়ে রেখেছেন”
“এগুলান কিতা কইতাছে রাশাদ”
উত্তেজিত হলেন শামসু মিঞা, তার পিছনে হতভম্ব স্ত্রী এগিয়ে এলেন। রাশাদের দিকে চেয়ে রইলেন উত্তরের অপেক্ষায়। কাওছার মাফলার পেঁচিয়ে বের হলো। পুলিশে ভীতি এখনো কাটে নি তার। তাই একটু পেছনেই থাকলো সে। রাশাদ দাদার পানে চেয়ে অধৈর্য্য হয়ে বললো,
“আমি কিছু করি নাই দাদা, আমি সত্যি ই কিছু করি নাই”
কিন্তু লাভ হলো না। প্রতিটি ঘরে ঢুকে পড়লো লোক। তন্ন তন্ন করে খুঁজলো প্রতিটি কোন। কিন্তু ইলহাকে পেলো না কোথাও। ফলে মিনহাজকে ইশারায় জানালো তারা। মিনহাজের শান্ত মেজাজ বিগড়ালো সাথে সাথেই। উগ্র স্বরে বললো,
“ওকে জিপে তোলো, নিশ্চয়ই কোথাও পাঁচার করেছে”
রাশাদ প্রতিবাদ করলো,
“আমি কিছু করি নি, আপনারা বিনা দোষে আমাকে ধরতে পারেন না”
কিন্তু সশস্ত্র মানুষগুলোর জোরের সামনে পারলো না সে। তার ঘাড় চেপে টানা হ্যাচড়া করে তাকে জিপে তোলার জন্য উদ্গ্রীব হলো তারা। শামসু মিঞা নাতীকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু অসক্ষম হলেন। তাগড়া পুলিশের ধাক্কায় মাটিতে পড়ে গেলেন। এমন উদ্ধত আচারণ সহ্য হলো না রাশাদের। তাকে পাকরাও করা পুলিশটিকে ধাক্কা দিয়েই সে দাদার কাছে গেলো। তাকে মাটি থেকে উঠালো, শামসু মিঞা আদ্রচোখে শুধালেন,
“রাশাদ, তুই কারে লইয়ে আইসোস ভাই? তোরে কেমনে ফাঁসায়ে দিলো”
কথাটা কানে যেতেই মিনহাজ রাশাদের মাথার চুল মুঠোবন্দি করে তাকে দাঁড় করালো। খিস্তি দিয়ে বললো,
“কই আছে মেয়েটা, শুয়ো*রের বাচ্চা সত্যি করে বল, নয়তো বুঝতেও পারছিস না কি হবে তোর সাথে”
“উনাকে ছেড়ে দিন, উনার কোনো দোষ নেই”
লাউগাছের ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ইলহা এতসময় সবটা দেখলো। বাবাকে চিনতে তার বাকি নেই। বাবা পারে না এমন কিছুই নেই। আদিবার ফোন সে ট্যাপ করেছে নিশ্চয়ই। সেখান থেকেই তার ঠিকানা খুঁজে বের করেছেন। এখন নিজের সম্মান রক্ষার্থে সব দোষ এই নির্দোষ মানুষটির ঘাড়ে চাপানোর ফন্দি এটেছে সে। যে মানুষটি তাকে আশ্রয় দিয়েছে, সুরক্ষা দিয়েছে তাকে এভাবে অপমানিত হতে দেখতে ইচ্ছে হলো না ইলহার। তাই কঠিন সিদ্ধান্ত নিলো সে। মন্থর পায়ে এগিয়ে গেলো উঠানে। তার জন্য রাশাদ কেনো অপদস্থ হবে? ইলহাকে দেখতেই রাশাদকে ছেড়ে দিলো মিনহাজ। ইলহা নির্ভীক স্বরে বললো,
“আমাকে কেউ জিম্মি করে রাখে নি। আমি এখানে নিজ ইচ্ছায় ছিলাম। আশাকরি এবার আপনাদের কোনো সমস্যা নেই”
“তা বললে তো হবে না ম্যাডাম। উনাকে জিপে তুলো। উনার বাবাকে জানাও মেয়ে পাওয়া গেছে। আর এই রাশাদকে জিপে তুলো”
“আশ্চর্য আমি তো বলছি উনি কিছু করেন নি, আপনি কেনো শুনছেন না অফিসার?”
“আপনার বাবার মত তো অন্যটা বলছে”
মিনহাজের কথা মুখ থেকে কেড়েই উত্তর দিলো ইলহা,
“কিন্তু বাবার মতে কি যায় আসে, আমি একজন প্রাপ্ত বয়স্ক নারী। আমার ইচ্ছে ছিলো না বিয়েতে। তাই নিজ ইচ্ছাতে আমি পালিয়েছি”
“প্রেমিকের সাথে?”
“রাশাদ সাহেব আমার প্রেমিক নন”
“হাসালেন ম্যাডাম, একজন পুরুষের সাথে অহেতুক আপনি পালিয়ে আসবেন? তার বাড়ি থাকবেন, কোনো সম্পর্ক ছাড়া”
এবার ভাষাহারা হলো ইলহা, সত্যি তো! সে কোনো মানুষের সাথে সম্পর্কহীন এগুলো দিন কেনো ছিলো! কেনো এই মানুষটিকে সে এতোটা ভরসা করেছে? সত্যি কি তাদের মাঝে কোনো সম্পর্ক নেই। ইলহা যুক্তিবাদী মেয়ে, তাই অহেতুক আবেগপ্রবণ না হয়ে সে উত্তর দিলো,
“সে আমার বন্ধু”
“কিন্তু এই বন্ধুই যে কখন পিঠে ছু’রি বসাবে সেটা আপনি কি জানেন? দেখুন ম্যাডাম আপনি গাড়িতে উঠুন। আপনার বাবা অপেক্ষা করছে। আর এই ল/ম্পটকে আমাদের হ্যান্ডেল করতে দিন”
“উনি ল/ম্পট নন”
কিন্তু ইলহার আহাজারি শুনলো না। টেনে হিচড়ে তাকে এবং রাশাদকে তুললো জিপে। শামসু মিঞা নাতীকে বাঁচাতে ছুটলেন। কিন্তু বৃদ্ধের সেই কাতর স্বর যেনো কানেও গেলো না তাদের। সজোরে জিপ হাকিয়ে ছুটলো তারা। শামসু মিঞা হাটু ভেঙ্গে বসে রইলেন সেই পথেই_____
****
হুমায়রার যত্নে কোনো কমতি রইলো না। সে ফাইজানের সাথেই থাকছে। এবং তার যত্নে ত্রুটি রাখছে না রষকষহীন দাম্ভীক মানুষটি। বরং তাকে বাথরুমে যেতেও সে সহায়তা করছে। তার জন্য যে আলাদা ঘর তৈরি হয়েছে সেটা এখন মানবশুন্য। হুমায়রা প্রথম প্রথম বেশ বিব্রত এবং জড়তা প্রকাশ করতো। লজ্জা মিশানো স্বরে বললো,
“মাকে একটু ডেকে দেন না”
ফাইজান তখন বিকারহীন স্বরে উত্তর দেয়,
“আমি আপনার স্বামী হুমায়রা, আমাদের মাঝে কোনো লুকোচুরি কিন্তু নেই। আইন বা শরীয়ত মোতাবেক আমি আপনি সবটুকুই আমার অধিকারস্থ। তাই মা বা আমার মাঝে কিন্তু পার্থক্য নেই”
“আছে, আপনি আমাকে শুধুই নাম কামাতে বিবাহ করেছেন”
“সেটা কেনো মনে হয়েছে?”
“এটাই স্বাভাবিক নয় কি? আমি কিন্তু পড়াশোনা জানি, পত্রিকাও পড়তে জানি”
ফাইজান কঠিন দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো কিছু সময়। তারপর কোনো বাক্যবিহীন হুমায়রাকে কোলে তুলে বাথরুম অবধি নিয়ে গেলো। জামার নিচে হাত দিয়ে তার পায়জামার ফিতেটি ঢিলে করে বললো,
“আমাকে ডাকবেন, আমি বাহিরে আছি। আর সব সময় মাকে ডাকবেন না। কারণ তার মতে আমাদের সম্পর্কটা স্বাভাবিক”
ফাইজানের এই রাগের কারণ ভেবে পেলো না হুমায়রা। সে তো ভুল বলে নি। ফাইজানের কাজগুলোই তো তার মনে সন্দেহের জন্ম দেয়। শুধু তাই নয়, সেদিন জুতো প্যাঁচাতে যেয়েই সেই সংবাদের পৃষ্ঠাটি হাতে পড়েছিলো। ফলে আমানকে দেখানোর জন্য ফাইজানের কাজগুলোর স্মৃতি আবার জীবন্ত হলো। ফাইজান তাকে কেনো বিয়ে করেছেন, এই প্রশ্নটি তীক্ত বিষের মতো লাগে অষ্টাদশীর। এদিকে শরীফা কোনো কমতি রাখলো না নিজ পুত্রবধুর যত্নে। নিয়ম করে ঔষধ খাওয়ানো, ব্যায়াম করানো এই সব নিজ তদারকিতেই করছেন। সে সুবাদেই ফাইজানের ঘরের ভেতরের ছোট্ট ঘরের নকশা বদলানো রুপ তার নজরে পড়লো। প্রশ্ন ছুড়লেন ছেলে বউকে,
“কি রে ফাইজান, তোর কাজের ঘরে খাট কেনো?”
“হুমায়রার জন্য করা মা”
“আলাদা খাট কেনো?”
সন্দিহান স্বরে শুধালেন তিনি। ফাইজান বিনাভনীতায় উত্তর দিলো,
“তোমার বউমার যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য করা”
“কি সমস্যা হবে?”
“আমার সাথে ঝগড়া হলে যেনো তোমার ঘরে না যেতে হয় অথবা আমাকেও নিচে না ঘুমাতে না হয়”
“তুই ঝগড়া করবি কেন?”
“আমি ঝগড়া করি না মা, তোমার বউমাই আমার স্বভাবে বিরক্ত”
ফাইজানের এমন নির্লজ্জ উত্তরে বিষম খায় হুমায়রা, ফলে পরিস্থিতি সামলাতে বলে উঠে,
“না মা, আসলে আমি ই বলেছি। পড়তে পড়তে আমার ঘুম আসে। তাই আরকি। আর পরীক্ষার সময় যেনো আলাদা করে পড়তে পারি”
শরীফা বেগম না চাইতেই বিশ্বাস করলেন। এর মাঝেই তার মনে পড়লো, আতিয়া খাতুনের কথা। ফোনটা এগিয়ে বললেন,
“তোমার দাদী ফোন করেছিলেন। নাও কথা বলো”
দাদীর কথা শুনতেই উৎফুল্ল হলো মন। সাথে সাথেই নাম্বার বসালো। দুবারের মাথায় ফোন ধরলেন আতিয়া খাতুন। কান্না মিশ্রিত স্বরে বললেন,
“বুবুরে, রাশাইদ্দারে পুলিশ ধরি লয়ে গেছে”
*****
উৎকুন্ঠিত, ছটফট করতে কিশোরীকে নিয়ে পুলিশ স্টেশনে এসেছে ফাইজান। রাশাদুল ইসলামের কথা শুধাতেই কন্সটেবল সেলের দিকে চিহ্নিত করলো। মারতে মারতে রাশাদকে জখমি করে দেওয়া হয়েছে। স্বীকারক্তি নেবার নামে ইচ্ছে মতো মারা হয়েছে। মুখের খানিকটা ফুলে গেছে। চোখ খুলতে পারছে না। একচোখ ফুলে গেছে। ঠোঁটে কালচে দাগ। শরীরের প্রতিটি রন্ধ্রে অসহনীয় ব্যাথা। হাটছেও খুঁড়িয়ে। বোনকে দেখেই অধৈর্য হলো সে। এতো সময়ের ব্যাথাটা উপলদ্ধি না করলেও বোনের হাতে কালো বেল্টটি দেখেই চিন্তিত স্বরে শুধালো,
“তোর হাতে কি হয়েছে?”
“ওরা তোমাকে এভাবে মেরেছে কেনো ভাইজান? তোমার খুব কষ্ট হচ্ছে তাই না?”
বোনের কান্নাজড়িত প্রশ্নে মলিন হাসি হেসে বলল,
“আমার কিছু হয় নিরে পাগলি। আসলে আমাদের হাত তো বাঁধা। আইন তো অন্ধ, শুধু টাকাই তাকে পথ দেখায়”
ভাইজানের কথায় হুহু করে কেঁদে উঠলো সে। দেখা করার সময়টি ছিলো স্বল্প। সময় শেষ হতেই কিশোরী অসহায় হয়ে পড়লো। ফলে সাহায্য চাইলো, অপছন্দের মানুষটির কাছে,
“আমার ভাইজানকে বাঁচান। ওরা ওকে মেরে ফেলবে। ওকে দয়া করে বাঁচান”
ফাইজান নিষ্পলক নয়নে তাকিয়ে রইলো কিশোরীর অশ্রুস্নাত মুখশ্রীর পানে। মেয়েটি কাঁদছে৷ তার মুখখানা শুকনো লাগছে। ফাইজানের শুধাতে মন চাইলো, “কেনো? আপনার ভাইজানকে বাঁচিয়ে আমার কি লাভ? আপনার মতে আমি তো শুধু নাম কামানোর জন্য বিয়ে করেছি”
কিন্তু প্রশ্নটা করা হল না৷ ফাইজান থমথমে স্বরে বললো,
“যদি আপনার ভাইজান নির্দোষ হয় তবে তাকে অহেতুক জেলে পঁচতে হবে না। কিন্তু মাথায় রাখবেন এখানে আমার ক্যারিয়ার জড়িত। আশা রাখছি তাতে আঁচ লাগবে না”
সামনে ইলেকশন। এর মাঝে এই কেস কাঁচারি ব্যাপারটি খুব ই ক্ষতিকর ফাইজানের জন্য। কিন্তু হুমায়রার এই কাতর নিবেদন উপেক্ষা করতে পারলো না সে। সরাসরি মিনহাজের কেবিনে প্রবেশ করলো। চেয়ারে বসতে বসতে বললো,
“আমার সম্বন্ধিতকে কেনো ধরে আনা হয়েছে জানতে পারি?”
ফাইজানকে প্রথমেই চিনে নিলো মিনহাজ। দুতিন বার তার সুরক্ষার কাজ করেছে সে। অনুগত স্বরে বললো,
“স্যার, মেয়ে পাঁচারের কেস। অর্থলোভে জিম্মি। বিষয়টা জটিল। উনি স্বীকার করলে হয়তো এভাবে মারতাম না”
“কিন্তু মেয়ে তো বলছে সে স্বেচ্ছায় পালিয়েছে”
“কিন্তু রিপোর্ট তো বলছে না স্যার”
“কোথায় জবানবন্দি? কোনো হস্তসই তো আছেই। কারণ অন্তত পঞ্চাশ জনের বেশি মানুষ সাক্ষী দিবে যে মেয়েটি বলেছে রাশাদ সাহেবের এখানে কোনো দোষ নেই”
এবার একটু দমলো মিনহাজ। আমতা আমতা করে বললো,
“স্যার আকিব শাহরিয়ারের মেয়েকে নিয়ে পালিয়েছেন, তার উপরে জনাব তৌফিক আহমেদের হবু পুত্রবধু। চাপ আছে”
ফাইজান হাসলো তাচ্ছিল্যের হাসি। একটা ফোন এগিয়ে বললো,
“কথা বলুন”
কথা বলেই মিনহাজের মুখ আরোও শুকিয়ে গেলো। ফাইজান তখন একটা পঞ্চাশ হাজারে বান্ডিল ছুড়ে বললো,
“যদি টাকাই আপনাকে প্রেসার দেয়, তবে সেই প্রেসার আমিও দিচ্ছি। এখন ই আমার সম্বন্ধিকে ছাড়ার ব্যাবস্থা করেন। আর ওই মেয়েকে এখন ই আনানোর ব্যাবস্থা করুন। আমিও শুনতে চাই তার জবানবন্দি”…………
চলবে
মুশফিকা রহমান মৈথি