#নিশীভাতি
#২২তম_পর্ব
কথা বলেই মিনহাজের মুখ আরোও শুকিয়ে গেলো। ফাইজান তখন একটা পঞ্চাশ হাজারে বান্ডিল ছুড়ে বললো,
“যদি টাকাই আপনাকে প্রেসার দেয়, তবে সেই প্রেসার আমিও দিচ্ছি। এখন ই আমার সম্বন্ধিকে ছাড়ার ব্যাবস্থা করেন। আর ওই মেয়েকে এখন ই আনানোর ব্যাবস্থা করুন। আমিও শুনতে চাই তার জবানবন্দি”
মিনহাজের মুখ রক্তশুন্য হলো। সামনের ব্যক্তিটির ক্ষুরধার দৃষ্টিতে গলা শুকিয়ে এলো যেন। এতো শান্ত মুখবিবরের মানুষের এতোটা শানিত দৃষ্টি অন্তরে ভয়ের সঞ্চার করলো যেনো। মিনহাজ ইনিয়ে বিনিয়ে বললো,
“আমি জানতাম না স্যার উনি আপনার আত্মীয়”
মিনহাজের এমন কথায় মস্তিষ্কের নিউরণগুলো যেনো উত্তেজিত হলো ফাইজানের। চোয়াল শক্ত হলো। ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেললো সে। থমথমে স্বরে শুধালো,
“আপনাকে এই পজিশনে বসিয়েছে কে? মস্তিষ্কে তো পঁচা আবর্জনা ব্যতীত কিছুই পরিলক্ষিত হচ্ছে না আমার। তাও দূর্গন্ধযুক্ত আবর্জনা, যাতে সার ও দেওয়া যায় না”
ফাইজানের এমন উক্তিতে মিনহাজ দাঁতে দাঁত পিষলো কিন্তু উত্তর দেবার ভাষ্য হারালো। ফাইজান গাম্ভীর্য্য অটুট রেখেই বললো,
“আমার সমস্যা এখানে নয় আপনি আমার আত্নীয়কে ধরে এনেছেন, আমার সমস্যা আপনি একজন নির্দোষ মানুষকে অহেতুক মিথ্যে কেসে জড়াচ্ছেন”
“স্যার, আকিব স্যার কেস ফাইল করেছেন। আমাদের হাত বাধা”
“পুলিশ হিসেবে আপনার সেখানে কি তদন্ত করা উচিত ছিলো না? তার মেয়ে তো বারবার বলছিলো সে স্বেচ্ছায় পালিয়েছে”
“এখানেও সমস্যা রয়েছে। আকিব স্যারের ভাষ্য, তার অর্থ হাতিয়ে নেবার উদ্দেশ্যে রাশেদ সাহেব তার মেয়েকে ফাসিয়েছে”
“মেয়েটির বয়স চব্বিশ, আপনি আমাকে বোকা ভাবছেন নাকি? আমার সম্বন্ধী একটা চব্বিশ বছরের মেয়েকে ফাঁসাবে? অথচ এই দেড় মাসে মেয়েটির সম্পূর্ণ ভরণপোষণ সে করেছে”
ফাইজানের শক্ত কথায় মিনহাজ চুপ করে গেলো। তার কাছে উত্তর নেই। মিনমিন করে বললো,
“আমার চাকরির ব্যাপার স্যার। তৌফিক স্যারের প্রেসার ছিলো খুব। আমি কথা দিচ্ছি আমরা তাকে আর টর্চার করবো না। তবে স্যার যতক্ষণ এই কেস সে উঠিয়ে না নিবে বেইল ছাড়া তাকে ছাড়া সম্ভব নয়”
“আপনার ফ্যাক্সটা একটু চেক করুন। দেখবেন বেইল লেটার অলরেডি সেখানে আছে”
মিনহাজ ফ্যাক্স করতেই বেইল এর কাগজ পেলো। এখন কোনোভাবেই রাশাদকে আটকে রাখা সম্ভব নয়। মিনহাজ তার জুনিয়রকে আদেশ দিলো যেনো রাশাদকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ফাইজান উঠে দাঁড়ালো। পকেটে হাতখানা ঢুকিয়ে থমথমে স্বরে বললো,
“আমি একটা ডাইরি লিখাব, কোথায় যেতে হবে?”
“জি স্যার?”
“বললাম কমপ্লেইন, জিডি কোথায় ফাইল হয়?”
“বাহিরে স্যার”
“ধন্যবাদ, আর এই টাকাটা রাখুন, মিষ্টি কিনে খাবেন”
বলেই বেড়িয়ে পড়লো সে। টাকার বাণ্ডেলটা সেখানেই পড়ে রইল। ফরিদ বাহিরেই অপেক্ষা করছিলো। নির্লিপ্তস্বরে বললো,
“রাশাদ সাহেবকে হাসপাতালের পাঠানোর ব্যাবস্থা করো। আমি একটা কাজ করে আসছি”
“ফাইজান…”
“কিছু বলবে?”
বাসা থেকে রওনা দেবার সময় থেকেই ফরিদ উশখুশ করছে। কিন্তু ফাইজানকে কথাটা বলার সুযোগ পাচ্ছে না। এখন সুযোগ হাতছাড়া করলো না। শুষ্ক ঠোঁট জিভ দিয়ে ভিজিয়ে বললো,
“তুমি কি চিন্তা করছো? মানে এখন বাসায় গেলেই তো হয়”
“আগে ইলহা শাহরিয়ার এবং আকিব শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে কমপ্লেইনটা করে আসি”
“তুমি একটু বাড়াবাড়ি করছো না?”
ফরিদের প্রশ্নে কপালে প্রগাঢ় ভাঁজ পড়লো ফাইজানের। কপট অবাক স্বরে শুধালো,
“সেটা কেন মনে হলো?”
“তৌফিক আহমেদ পার্টির যুগ্ম সম্পাদকদের একজন। বিগত দুই সেশন যাবৎ বিমান প্রতিমন্ত্রী সে। কেতাব চৌধুরীর সাথে বেশ সখ্যতা। দ্বিতীয়ত তোমাকে এবারও মনোনয়ন টিকিট দেওয়ায় কিছু মানুষ কিন্তু অখুশী। এদিকে বিক্ষোভ জানাচ্ছে তারা। কেনো শত্রু বাড়াচ্ছো? তুমি তো এতটা উগ্র মেজাজের মানুষ নও। তোমার এই রাজনৈতিক জীবনটা তিলে তিলে গড়া। তাশের ঘরের মতো ভেঙ্গে ফেলতে যাচ্ছো কেনো?”
“ফরিদ ভাই, আমি কিছু না ভেবে আগাই না কিন্তু। আমার পেছনে কি কি ষড়যন্ত্র হচ্ছে খুব ভালো করে জানা আমার”
“তাহলে কেনো করছো এগুলো?”
ফাইজান উত্তর দিলো না, একবার শুধু বাহিরে রাখা নিজের গাড়ির পানে চাইলো। ফরিদ তার দৃষ্টি অনুসরণ করলো। বিড়বিড়িয়ে বললো,
“তুমি কি বদলে যাচ্ছো ফাইজান?”
ফাইজান ছোট্ট একটি নিঃশ্বাস গোপন করলো। শক্ত গলায় বললো,
“আমি না ভেবে কাজ করি না, তুমি রাশাদ সাহেবকে হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যাবস্থা কর”
সে এক মুহূর্ত অপেক্ষা করলো না। ইলহা এবং আকিব শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে রিপোর্ট লিখালো। ফরিদ ততসময়ে রাশাদকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করলো। যেভাবে ক্ষতবিক্ষত করেছে, ইন্টার্নাল ড্যামেজ হবার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। লৌহ দরজা খুলে দিতেই চোখ খুলে চাইলো রাশাদ। সারা দেহে অসহনীয় ব্যাথা। রক্তের ছিটে জমে কালচে হয়ে আছে। পাঁজরের হাড়ের দিকে লাল দাগ প্রমাণ দিচ্ছে তার উপর হওয়া অন্যায়ের। পিঠ ক্ষতবিক্ষত হয়ে আছে। ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে এই চিড় থেকে। ফরিদ নিজেই ভেতরে প্রবেশ করলো। তাকে ভর দিয়েই উঠে দাঁড়ালো রাশাদ। ক্লান্ত স্বরে শুধালো,
“বাড়ি যাচ্ছি?”
“হ্যা”
ফরিদের উত্তরে মৃদু হাসলো সে। অবশেষে তবে মুক্তি পেলো। কিন্তু ইলহার চিন্তা মস্তিষ্ক থেকে সরলো না। মেয়েটি কি ভালো আছে? বাবা কি অত্যাচার করছে তার প্রতি? জানা হবে কি এই প্রশ্নের উত্তর! নাকি তাদের যাত্রা এখন ভিন্ন! আদৌ দেখা হবে কি!
*****
ফাইজান কাজ সেরে গাড়িতে বসলো। হঠাৎ মনে পড়লো তার বউকে সে গাড়িতে বসতে বলেছিলো। পাশে থাকাতেই গ্লাসে মাথা ঠেকানো হুমায়রার ঘুমন্ত মুখশ্রী পরিলক্ষিত হলো। চোখের কাছটা এখনো সিক্ত। কাঁদতে কাঁদতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে হয়তো। ফাইজান এক মুহূর্ত সময় নিলো নিজের বউকে দেখতে। মেয়েটির তৈল চিপচিপে মুখখানাও অপরুপ লাগছে। সে আজ যে কাজ করছে এতে তার পেশাগত জীবনে বিশাল ঝড় আসতে পারে। কেস কাচারি, অন্তর্দ্বন্দে তার নির্বাচনে খারাপ একটা প্রভাব পড়তে পারে। ফরিদ ভাইয়ের চিন্তা অহেতুক নয়। বরং চিন্তাটা যথার্থ। সে আজ অনেক পাগলামী করেছে, যা অন্য সময় হলে করতো না। কিন্তু আজ করেছে। শুধুমাত্র এই পাশের ঘুমন্ত কিশোরীর জন্য। অহেতুক কারণে তার কান্নাসিক্ত মুখখানা ভালো লাগছিলো না। তার থেকেও অবাক করেছে, যখন মেয়েটি তার সকল সম্মান আত্মহুতি দিয়ে তার কাছে সাহায্য চেয়েছে। সে তাকে ফিরিয়ে দিতেই পারতো। কিন্তু অসাড় হৃদয়টা চাইলো না। নিজের এমন কাজ নিজেকেই অবাক করছে। মেয়েটির হাত খুবই অযত্নে রাখা। তার বেখেয়ালীপনায় কপাল কুচকালো ফাইজান। মাথাটা সোজা করতেই হুমায়রা চমকে উঠলো। ফ্যালফ্যালিয়ে তাকিয়ে রইলো ফাইজানের পানে। প্রথম বাক্য যা বের হলো,
“ভাইজান কোথায়?”
ফাইজান তার থেকে সরলো না। একটা মোটা শাল তার গায়ে জড়িয়ে বললো,
“ফরিদ ভাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে”
হুমায়রা ব্যতিব্যস্ত কণ্ঠে শুধালো,
“কেনো?”
বিকারহীন স্বরে ফাইজান উত্তর দিলো,
“এতো ব্যস্ত হবার কিছু হয় নি। তাকে যেভাবে মেরেছে সেটার ট্রিটমেন্ট দরকার তাই”
“আমি যাবো”
“আপনি এখন বাসায় যাবেন, সকাল গড়িয়ে এখন দুপুর। ঔষধ আছে আপনার”
“কিন্তু”
“আমি কথা দিচ্ছি, আপনার ভাইজান সুস্থ হওয়া অবধি আপনার চোখের সামনেই থাকবে”
“ওরা আর ওকে ধরবে না তো”
মেয়েটির কাতর স্বরে কিছু একটা ছিলো। ফাইজান মৃদু হেসে উত্তর দিলো,
“না। আচ্ছা একটা প্রশ্ন করি?”
“কি?”
“যদি আমার কখনো কিছু হয়, আপনি আমার জন্যও এভাবে চিন্তিত হবেন?”
হুমায়রা ফাইজানের মুখপানে চেয়ে রইলো। সে প্রশ্নটি খুব ধীরে সুস্থে হুমায়রারকে করলো। তার নিখাদ, নির্নিমেষ দৃষ্টি এখনো হুমায়রাতেই আবদ্ধ। হুমায়রা চট করে উত্তর দিতে পারছে না। মানুষটি সেটা জানে বিধায় দৃষ্টি সরাচ্ছেও না। এমন ভাবে অপেক্ষা করছে যেনো এই উত্তরের উপর অনেক কিছু নির্ভরশীল। হুমায়রা পালটা প্রশ্ন করলো,
“এমন অহেতুক প্রশ্ন কেনো?”
“ইচ্ছে হলো”
হুমায়রা বেশ কিছুক্ষণ চুপ রইলো। ফাইজান ততটা সময় তার পানেই চেয়ে ছিলো। অতঃপর মৃদু হেসে বলল,
“ভাবলাম, আপনি নিঃসন্দেহে হ্যা বলবেন। কিন্তু আশাহত হলাম। আপনার জন্য আমি আমার পেশা বাজি রেখেছি, এটুকু তো পাপ্য ছিলো আমার”
হুমায়রার নিষ্পাপ স্বীকারক্তি,
“আমি অভিনয় জানি না, মিথ্যে বলা আমাকে ভাইজান শিখায় নি। তাই “হ্যা” বলতে পারছি না। আবার “না” টাও বলতে দ্বিধা হচ্ছে”
ফাইজানের হাসি কি প্রসারিত হলো। সে আর কথা বাড়ালো না। গাড়ি চালককে বললো,
“বাড়ি চলো”
*****
শ্বৈত্যপ্রবাহের সাথে সাথে শীতের প্রকোপ গাঢ় হচ্ছে। গ্রামের দিকটায় যেনো একটু বেশিই শীত। শামসু মিঞা হারিকেনের গায়ে হাত ছেকছেন। শরীরটা ভালো নেই। সকালে রাশাদকে নিয়ে যাবার পর একেবারে শয্যাশায়ী হয়ে গিয়েছিলেন। স্ত্রী যখন তার ছাড়া পাবার খবর জানালো, তখন একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। খাওয়া দাওয়া করলেন। এখন একটু উঠে বসেছেন। কিন্তু প্রবীন হাড়ে শীত মানিয়ে নেবার ক্ষমতা নেই। মনটা রাশাদকে দেখতে আনচান করছে। এর মাঝেই তার দরজায় কড়া নাড়ালো কাওছার।
“আব্বা ঘুমাইছেন?”
“আও, কিছু কইবা?”
কাওছার বসলো ঠিক তার বিপরীতে। হাত ঘষতে ঘষতে বললো,
“আব্বা, ভুলডা আপনার আছিলো। রাশাদ কারে না কারে আনিছে আপনে তারে কেন আশ্রয় দিলেন?”
শামসু মিঞার মুখে ছলকালো রাজ্যের বিরক্তি। কড়া ধমকের সুরে বললেন,
“কি কইবার চাও তুমি?”
“নাতী নাতী কইরা তো মাথায় তুলছেন ওরে। জীবনে আমারেও হম্মান দেলো না। অথচ কি এক্কান কাম করিলো, ছে ছে। শেষ পর্যন্ত জেল। ভাগ্য ভালা আছিল জামাই বাচাইছে। কিন্তু ভাইবা দেহেন তো, ওই বাড়ি কি মাইয়্যাডার হম্মান থাকলো। ছে ছে। এবার আপনার কিছু করা উচিত আব্বা। রাশাইদ্দারে একটু জব্দ করার দরকার। নিজেরে হ্যাডা ভাবতাছে ওয়। এডি আপনের আর আম্মার মাথায় তোলার ই ফল। এখন কি মুখ রাখলো সে”
কাওছারের কথাগুলো শান্তচিত্তে শুনলেন শামসু মিঞা। কিছুসময় নীরব থেকে বললেন,
“একটা কথা কই কাওছার। কান ছুলি হুনো”
“কন আব্বা”
“যে মানুষের নিজের তল ছেড়া, তারে অন্যের কাপড় ছেড়ায় হাসা মানায় না। তুমি আমারে শিখাও না হম্মানের কতা। নিজে আমার কোন মুখ রাখিছো। এই রাশাদ না থাকলি পরে এইহানে আমি হারিকেনের তলেও বসে থাকতুম না। রাত হইছে। ঘুমাতে যাও। আর জামাই জামাই করছো। এই জামাইও রাশাদের জন্যই তোমার মাইয়্যারে বিয়া করিছে। যাও এখন ঘুমাতি যাও”
শামসু মিঞার কথায় মুখ ভোতা হলো কাওছারের। সে মিয়ে যাওয়া মুখেই বেরিয়ে গেলো ঘর থেকে।
******
আজ আবহাওয়া বৈরি। সকাল থেকেই ক্ষণে ক্ষণে মেঘমতন হচ্ছে। মিনহাজের ঘরে নিস্তব্ধতা। আকিব শাহরিয়ার গম্ভীর মুখে বসে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে কেস করেছে ফাইজান। সেজন্য তাকে এখানে আসতে বাধ্য হতে হয়েছে। সেই সাথে তার উকিলও রয়েছে। কিন্তু তার ঠিক বিপরীতে বিকারহীন ভাবে বসে রয়েছে ফাইজান। দৃষ্টি শান্ত। স্থির চাহনি নিবদ্ধ আকিব শাহরিয়ারের মাঝে বসে থাকা মেয়েটির দিকে। শ্যাম শুষ্ক মুখের কালচে দাগ। শুষ্ক ঠোঁট ফুলে আছে। চোখের নিচে হালকা ফোলা ভাব, বিনিদ্র রাত তার সাক্ষী যেনো। উশখো খুশকো চুল। উদাসীন, প্রাণহীন চোখজোড়া এক দৃষ্টিতে চেয়ে রয়েছে মাটিতে। আকিব শাহরিয়ারের মাঝে পাথরের ন্যায় বসে আছে ইলহা। ফরিদের সাহায্যে সতর্কতার সহিত ধরে আনা হয়েছে রাশাদকে। ইলহাকে দেখতেই বুকখানা অস্থির হয়ে উঠলো যেনো। তার রক্তশূন্য ফোলা ঠোঁটের দিকে নজর যেতেই রক্তশিরা ফুলে উঠলো। মিনহাজ তখন সবিনয়ে শুধালো,
“ম্যাডাম, উনার সাথে কি আপনি নিজ ইচ্ছেতে গিয়েছিলেন?”
মাথা তুললো ইলহা। পাথর চোখজোড়া হঠাৎ যেনো জলে ভরে উঠলো। মানুষটির এই অবস্থা আজ শুধু মাত্র তার জন্য। তবুও স্বার্থপর সে। বাবার নিঃশ্বাসের সতর্কবানী সম্পূর্ণরুপে অবজ্ঞা করে স্বার্থপর মনের প্রশয়ে ছুটে গেলো সে রাশাদের কাছে। সকলের তীব্র দৃষ্টি উপেক্ষা করে নির্লজ্জের মতো জড়িয়ে ধরলো সে রাশাদকে, আদ্র স্বরে অনুরোধ করল,
“আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলুন, দয়া করে আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলুন………………
চলবে
মুশফিকা রহমান মৈথি