#মেঘের_আড়ালে_রোদ
#পর্ব_১৪
লেখিকা #Sabihatul_Sabha
আহনাফের রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছে ছোঁয়া।
আহনাফ ওকে বেশি বকবক করার জন্য রুম থেকে বের করে দিয়েছে। দরজায় কান খাঁড়া করে দাঁড়িয়ে আছে চেষ্টা করছে ভেতরে কি কথা হচ্ছে শুনার।
মহুয়া চুপচাপ নিচের দিকে তাকিয়ে রুমের দরজা খুলে বের হতেই ছোঁয়া ধপাস করে মুখ থুবড়ে পড়লো।
মহুয়া ছোঁয়াকে ধরতে চেয়েও পারলো না।
ছোঁয়া বেচারি তো ভীষণ লজ্জা পেয়েছে সাথে ব্যাথাও।
মহুয়াঃ বেশি ব্যাথা পেয়েছো.? এই হাত ধরে উঠ।
ছোঁয়া মহুয়ার হাত ধরে উঠে দাঁড়ালো। আহনাফ ওদের দিকে তাকিয়ে আছে, ছোঁয়া আহনাফের দিকে তাকিয়ে বোকা হেঁসে নিজের রুমের দিকে দৌড় দিলো। ইসস আহনাফ এখন কি ভাবছে!.?
ছোঁয়াঃ ভাইয়া কি বলেছে..?
মহুয়াঃ দেখি পা এদিকে দাও।
ছোঁয়াঃ কিছু হয়নি পায়ে।আমি ঠিক আছি এমন একটু আধটু ব্যাথায় ছোঁয়ার কিছু হয়না। আগে বলো..?
মহুয়াঃ এই কার্ড দিয়েছে মেইল, সিভি সেন্ট করতে বললো। আর..
ছোঁয়াঃ আর.?
মহুয়াঃ ছয় মাস আগে আমি চাইলেও চাকরি ছাড়তে পারব না। কিন্তু আমি এই লোকের সাথে ছয় মাস কাজ করতে পারবো না।
ছোঁয়াঃ মেহু প্লিজ রাজি হয়ে যাওও প্লিজ প্লিজ। ছয় মাস পর আমি ভাইয়ার এসিস্ট্যান্ট হয়ে যাবো।
মহুয়াঃ তাহলে এখন কেনো হচ্ছ না.?
ছোঁয়া কিছু না বলে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
____________
শ্রাবণ মেঘলাকে ওর রুম পরিস্কার করে ভালো করে মুছে দিতে বললো।
মেঘলাঃ আমাকে দেখে কি কাজের লোক মনে হচ্ছে.??
শ্রাবণঃ একদম না, ছেলে ছেলে মনে হচ্ছে।
মেঘলাঃ আপনার চোখে সমস্যা!.
শ্রাবণঃ আমার চোখে নয় তোমার কাপড়ে সমস্যা। এভাবে শার্ট, প্যান্ট পড়ে থাকলে ছেলে মনে হবে না তো কি মেয়ে মনে হবে.?
মেঘলাঃ আমি এইগুলো পড়ি সব সময় আজ নতুন না।
শ্রাবণঃ এই বাড়িতে যতোদিন আছ এইসব আর কখনো পড়বে না। আমাদের বাড়ির মেয়েরা এইসব পড়ে না। বাড়িতে আব্বু, চাচ্চু, দাদু, ভাই সবাই আছে তোমার এইসব ড্রেসের জন্য লজ্জায় পড়তে হয়।
মেঘলা চুপ করে থাকে।
শ্রাবণঃ আমার রুম পরিস্কার করে দাও পাঁচ মিনিটে।
মেঘলাঃ আমি পারবো না।
শ্রাবণ মেঘলার দিকে এগিয়ে আসতে মেঘলা পিছিয়ে যায়।
শ্রাবণঃ তাহলে আমিও বাড়ির সবাইকে বলে দেই তুমি আমার রুমে টাকা চুরি করতে এসে ছিলে.? আমার চাচ্চু কিন্তু পুলিশ।
মেঘলা ভয় পেলেও শ্রাবণের দিকে এগিয়ে গিয়ে বলে উঠলো,’ আপনি আমার বন্ধু হবেন.? যতোদিন আছি আমরা বন্ধু হয়ে, বন্ধুর মতো থাকি। আমি আপনার রুম পরিস্কার করে দিবো। আমার আপনার প্রতি কোনো ইন্টারেস্ট নেই না আপনার আমার প্রতি আছে! আমরা শুধু ভালো বন্ধু হয়ে থাকতে পারি। বন্ধুত্ব তো সবার সাথেই করা যায়।
শ্রাবণ হাসলো মুগ্ধ হলো মেঘলা কিন্তু সে বুঝতেই পারলো না এই হাসির পেছনে কতোটা যন্ত্রণা লুকিয়ে আছে। শ্রাবণ সব কিছুর জন্য কাউকে দোষ দেয় না। এটা ওর ভাগ্যে লেখা ছিলো। সে নিজের ভাগ্য মেনে নিয়েছে এখন আর মেঘলার প্রতি রাগ হয় না।
শ্রাবণঃ আমার সাথে কেনো বন্ধুত্ব করতে ইচ্ছে হলো.? আমি তোমাকে পছন্দ করি না। সব কিছুতেই মুগ্ধত্বা, ভালো লাগা, পছন্দ, এইসব একটু হলেও থাকতে হয় না হলে কোনো সম্পর্ক হয় না, হোক সেটা ভালোবাসার কিংবা বন্ধুত্বের টান অনুভব করতে হয়। কিন্তু আমার তোমার প্রতি কিছুই নেই৷
মেঘলাঃ ওহ্ আচ্ছা ঠিক আছে। আস্তে আস্তে হয়েও যেতে পারে।
শ্রাবণঃ কখনো হবে না এটা অসম্ভব।
মেঘলাঃ হবে, হবে সব কিছুই হবে ভালোবাসাও।বলেই
মেঘলা পিছিয়ে যেতে গিয়ে পড়ে যেতে নেয় শ্রাবণ মেঘলার কোমর জড়িয়ে ধরে সামনে টেনে নেয়।
মেঘলা ভয়ে চোখ বন্ধ করে নিয়ে ছিলো। হঠাৎ কোমরে ঠান্ডা হাতের স্পর্শ পেতেই একদম জমে যায়। চট করে চোখ খুলে শ্রাবণের দিকে তাকায় সে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে শ্রাবণের দিকে। আজ ওর কি হয়েছে.? শ্রাবণ কে দেখলেই কেনো এমন ফিল হচ্ছে.? কেমন বুকের ভেতর হার্ট বিট ফার্স্ট হয়ে যাচ্ছে। অদ্ভুত ফিলিংস হচ্ছে।
শ্রাবণঃ দেখে চলতে পারো না..?
মেঘলাঃ আসলে.. বলেই সে আবার শ্রাবণের দিকে তাকিয়ে থাকে।
শ্রাবণ মেঘলা কে ছেড়ে দূরে সরে যায়।
মেঘলা এই প্রথম লজ্জা পেলো তাও কোনো ছেলের স্পর্শে। অন্য কোনো ছেলে হলে এতোক্ষনে রেগে বোম হয়ে যেতো, হাত ভেঙে গলায় ঝুলিয়ে দিতো। এই হঠাৎ আশা অনুভূতির মানে জানা নেই ওর!!
______
ড্রয়িং রুমে সবাই বসে ছিলো মহুয়ার চাকরির কথা শুনে নিরুপমা ছাড়া সবাই খুশি।
আমেনা বেগম মহুয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে, কিছু দোয়া পড়ে ফুঁ দিয়ে দিলো৷ আনোয়ার চৌধুরী মহুয়ার দিকে তাকিয়ে হাসলেন। এতো স্ট্রং মেয়ে উনি কখনো দেখেননি। ভেবে ছিলেন মেয়েটা অন্য মেয়েদের মতো কিন্তু এখন দেখছেন একদম ভিন্ন। নিজেকে কি সুন্দর সামলে নিয়েছে। এক মাত্র আনোয়ার চৌধুরী মহুয়ার অতীত জানেন।
মহুয়া আজ দ্বিতীয় বারের মতো আফরোজা বেগমের রুমে প্রবেশ করলো।
আফরোজা বেগম রুম থেকে বের হননা।উনার রুমে অনেক বড় আর সুন্দর একটা বুকশেলফ আছে৷ এখানে বিভিন্ন বই আছে। মহুয়ার প্রথমেই বইগুলোর দিকে নজর গেলো। বই ওর ভীষণ পছন্দ।
আফরোজা বেগম অসুস্থ। বিছানায় শুয়ে আছে।
মহুয়া ধীর পায়ে গিয়ে টুলে বসলো। নিজের ডান হাত দিয়ে উনার হাতটা আলতো করে ধরলো। আসতে করে মিষ্টি কন্ঠে বলে উঠলো, ‘ আমার প্রথম চাকরির আজ প্রথম দিন। আমার জন্য দোয়া করবেন দাদি। আর আপনি জলদি সুস্থ হয়ে উঠুন।’
আফরোজা বেগম চোখ খুলে মহুয়ার দিকে তাকালো।
মহুয়াঃ সরি দাদু আমার জন্য আপনার ঘুম ভেঙে গেলো।
আফরোজাঃ তুমি ভীষণ মিষ্টি একটা মেয়ে। আমি তো চোখ বন্ধ করে ছিলাম ঘুমাইনি। তোমার সৌন্দর্য তুমি লুকিয়ে রেখো। আমি প্রথম যেদিন তোমাকে দেখি ভীষণ অবাক হয়ে ছিলাম। আমিও তোমার মতোই সুন্দরী ছিলাম। সব সুন্দর জীবনে সুখ ভয়ে আনে না কিছু সৌন্দর্য জীবনে অন্ধকার ডেকে আনে। আমি তোমার মধ্যে সেই অন্ধকার দেখতে পাচ্ছি।
মহুয়া হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে আফরোজা বেগমের দিকে।
পেছন থেকে আহনাফের কথায় চোখের পলক ফেলে মহুয়া।
আফরোজা বেগম একদম ঠিক বলেছেন। মহুয়া একটা অন্ধকার! ও যেখানে যায় সেখানেই অন্ধকার ডেকে আনে। সৌন্দর্য অভিশাপ নয় অভিশপ্ত ওর ভাগ্য, তা না হলে ওর জন্মের পরেই কেনো ওর পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়!! ! সে নিজেই বলতে লাগলো।
মহুয়া ঘোমটা টেনে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
____________
শ্রাবণ সোফায় বসে আছে। সে যখন থেকে শুনেছে মহুয়া আহনাফের এসিস্ট্যান্টের জব নিয়েছে ওর ভালো লাগছে না৷
তিন কাপ চা খেয়েছে তাও শান্তি লাগছে না, অফিসেও যেতে ইচ্ছে করছে না। মহুয়ার যদি চাকরির প্রয়োজন হতো তাহলে শ্রাবণ কে বললেই হতো ও নিজের এসিস্ট্যান্ট বানিয়ে দিতো যদিও মহুয়ার পড়াশোনা এখন খুব কম।
শ্রাবণ চায়ের কাপ রেখে সামনে তাকাতে স্তব্ধ হয়ে যায়।
শুধু শ্রাবণ নয় সবাই হ্যাঁ করে তাকায়।
মেঘলা শাড়ি পড়েছে। নীল কালার শাড়ি সাথে নাকে নথ, কানে ছোটো ঝুমকো,হাতে নীল চুড়ি।
মেঘলা এসে শ্রাবণের পাশে বসলো।
নির্জন বলে উঠলো, ‘ এতো দিনে আপনাকে বউ বউ মনে হচ্ছে সাথে আমাদের ভাবি।’
মেঘলাঃ তোমার ভাইয়ার নাকি আমাকে শাড়ি পড়া অবস্থায় দেখার খুব সখ যদিও আমাকে সব কিছুতেই উনার চোখে সুন্দর লাগে।
শ্রাবণের মোবাইল দেখছিলো মেঘলার কথা শুনে অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালো। সে কখন এইসব বলেছে.?? সে তো ভালো করে কখনো মেঘলার দিকেও তাকায়নি।
শ্রাবণ সবে মাত্র পানিটা মুখে দিয়ে ছিলো মেঘলার মুখে এমন কথা শুনে তা আর গলা দিয়ে নামলো না সবটা গিয়ে ছোঁয়ারউপর পড়লো।
ছোঁয়াঃ ছিঃ নির্জনের বাচ্চা এটা কি করলি কুত্তা!!..?? বেয়াদব ছেলে।
নির্জন ছোয়াকে পাত্তা না দিয়ে মেঘলার দিকে তাকিয়ে বললো, ‘ ভাই আর কি কি বলেছে.???
মেঘলাঃ তোমার ভাই বললো উনার শ্যামবর্ন মেয়ে পছন্দ, চঞ্চল মেয়ে পছন্দ, যেমন আমি, শাড়ি পড়া মেয়ে পছন্দ, আমার হাসি পছন্দ, আমার কন্ঠ নাকি ভীষণ মিষ্টি।
নির্জনঃ আর..??
ছোঁয়াঃ নির্লজ্জ ছেলে আর কি শুনতে চাস..?
নির্জনঃ তুই চুপ থাক, তোর নাম ছোঁয়া কে রাখছে হে!?? ছোঁয়াছুঁয়ি দেখলেই তোর এলার্জি শুরু হয়ে যায়।
ছোঁয়াঃ আমি তোর মতো নির্লজ্জ ছেলে আর একটাও দেখিনি।
শ্রাবণঃ থাম তোরা যে বলছে তার লজ্জা নেই আর ও শুনতে কেনো লজ্জা পাবে!?
মেঘলা শ্রাবণ দিকে তাকিয়ে চোখ মে’রে বলে উঠলো, ‘ আপনি তো জানেনি আমার এক চিমটি লজ্জা কম।
শ্রাবণ বার বার অবাক হচ্ছে মেঘলার আচরণ দেখে। সকালের মেঘলা আর এখানের মেঘলার মধ্যে অনেক তফাত। এতোদিন মেঘলা শ্রাবণ কে ভয় পেতো আর এখন এই মেয়ে কি বলছে!? কি করছে.??
শ্রাবণ গলা যেরে বলে উঠলো, ‘ এই মেয়ে তুমি কি উল্টা পাল্টা কিছু খেয়ে এখানে এসেছো!.??
মেঘলা শ্রাবণের আরও ঘা ঘেঁষে বসলো।
ছোঁয়া আর নির্জন চোখ বড় বড় করে মেঘলার কাহিনী দেখছে।
মেঘলা মুখটা শ্রাবণের একদম মুখের কাছে নিয়ে ফিসফিস করে বলে উঠলো, ‘ আমি কি আপনার মতো মাতাল নাকি! আপনি ওইসব খান। আমি মাতাল হওয়ার জন্য আপনার মুখটাই যথেষ্ট। ‘
শ্রাবণ দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলো, ‘ আমার থেকে দূরে থাকো আর দ্বিতীয় বার আমাকে মাতাল বললে ধাক্কা দিয়ে ছাঁদ থেকে নিচে ফেলে দিবো। উল্টা পাল্টা কথা না বলে এখানে থেকে যাও।
নির্জনঃ ভাই কি বলছো তোমরা.? আমাদেরও একটু শুনিয়ে বলো, তোমাদের থেকেই তো আমরা শিখবো।
শ্রাবণের সামনে একটা বই ছিলো। শ্রাবণ বইটা নির্জনের দিকে ছুঁড়ে মারলো।
ছোঁয়া মেঘলার দিকে তাকিয়ে বললো,’ শ্যামবর্ন মেয়ে আমাদের আহনাফ ভাইয়ার পছন্দ। ‘
নির্জন হেঁসে বললো, ‘ শ্রাবণ ভাইয়ার সুন্দরী মেয়ে পছন্দ সেই জন্য শ্যামবর্ন মেয়ে পেয়েছে আর আহনাফ ভাইয়ার শ্যামবর্ন মেয়ে পছন্দ সে পাবে ভীষণ সুন্দরী মেয়ে।
মেঘলা চোখ ঘুরিয়ে শ্রাবণের দিকে তাকিয়ে বললো,’ আপনাদের বড় ভাই বেশি ফর্সা সেই জন্য শ্যামবর্ন মেয়ে পেয়েছে আর ছোটো ভাই শ্যামলা তাই সুন্দরী বউ পাবে।
নির্জনঃ আর আমি.??
ছোঁয়াঃ তোর কপালে মোটা, কালো কুচকুচে পাতিলের তলা বউ আছে।
নির্জনঃ আর তোর কপালে..? তোর কপালে তো মাথা নেড়া, ফুকরা দাঁত ওয়ালা, আধা বুড়া বেডা।
” আমার বড় ছেলের জন্যও আমি ভীষণ সুন্দরী মেয়ে বউ করে নিয়ে আসবো”
সবাই পেছন ফিরে তাকালো।
আমেনা বেগম রাগী দৃষ্টিতে মেঘলার দিকে তাকিয়ে কথাটা বললো।
আমেনা বেগমঃ আমার বড় ছেলের বউ দেখে সবাই মুগ্ধ হবে, এই বাড়ি উজ্জল হয়ে উঠবে, প্রান ফিরে পাবে। শুধু অন্ধকার জিনিসটা আমার ছেলের জীবন থেকে দূর হওয়ার অপেক্ষা।
মেঘলা খুব ভালো করেই বুঝছে আমেনা বেগম কথা গুলো ওকে মিন করেই বলছে।
আমেনা বেগম মেঘলার দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্যের সুরে বলে উঠলো, ‘ কাক কখনো ময়ূর হতে পারে না যতোই চেষ্টা করুক, কাক কাকেই থাকে। ‘
মেঘলার চোখ জ্বলতে শুরু করে আজ কতোগুলো বছর পর ওর চোখ জ্বলছে! এখনি বুঝি পানি গড়িয়ে পড়বে। সে আমেনা বেগম কে কিছু বলতে চায় না। সে চাইলেই কথার পিঠে কথা ফিরিয়ে দিতে পারে কিন্তু ইচ্ছে করলো না যদি উনি কষ্ট পেয়ে যায়।
মেঘলা শাড়ির আঁচল টেনে সিঁড়ি দিয়ে দুপদাপ পা ফেলে মহুয়ার রুমের দিকে চলে গেলো।
মেঘলাকে মহুয়ার রুমের দিকে যেতে দেখে আমেনা বেগমের রাগ আরও বাড়লো। এই মেয়ে মহুয়াকে খারাপ বানিয়ে ছাড়বে!.
শ্রাবণের ব্যাস খারাপ লাগে আমেনা বেগমের এমন কথায়।
শ্রাবণঃ আম্মু কিছু মনে করো না। তুমি আমার মা আর মেঘলা আমার স্ত্রী। বিয়েটা যেভাবেই হোক সে এখন আমার অর্ধাঙ্গিনী ওকে অসম্মান, অপমান করে কথা বলা মানে আমাকে অসম্মান, অপমান করা। যতোদিন ও এই বাড়িতে আমার পরিচয়ে আছে আমি চাইনা ওর সাথে কেউ বাজে ব্যাবহার করুক।
আমেনা বেগম রাগী দৃষ্টিতে শ্রাবণের দিকে তাকিয়ে বললো, ‘ তুমি ভুলে যাচ্ছে মেয়েটা আমাদের সাথে কি করেছে! তোমার জীবন ধ্বংস করে দিয়েছে।
শ্রাবণঃ আমি আমার ভাগ্য কে মেনে নিয়েছি আম্মু।
আমেনা বেগমঃ মেয়েটা তোমার উপর জাদু করেছে।
শ্রাবণ আমেনা বেগমের হাতে হাত রেখে বলে উঠলো, ‘ এই আধুনিক যুগে ও আপনি এইসব বিশ্বাস করেন!.?
আমেনা বেগম দোয়া দুরুদ পড়ে ছেলেকে ফুঁ দিতে শুরু করেন। আজই উনি একটা বড় হুজুরের সাথে জাদু টুনা নিয়ে কথা বলবেন। যেভাবেই হোক এই মেয়ের কাছ থেকে ছেলেকে দূরে রাখতে হবে।
__________________
মহুয়া হসপিটাল এসেছে। সে তো আগে থেকেই আহনাফের কেবিন চিনে তাই আর অসুবিধা হলো না।
আহনাফের কেবিনের সামনে করিম চাচা এসে বললো একটা মেয়ে এসেছে যে এখন থেকে আহনাফের এসিস্ট্যান্ট বলছে।
আহনাফ ভেতরে পাঠিয়ে দিতে বললো।
মহুয়া সাথে করে কিছু একটা নিয়ে এসেছে যেভাবেই হোক পলাশের কাছে পৌঁছাতে হবে আর ওর জন্য স্পেশাল ট্রিটমেন্ট নিয়েও এসেছে। জিনিসটা হাত ব্যাগের ভেতর রেখে আহনাফের কেবিনে এক পা রাখতেই ধপাস করে নিচে পড়ে গেলো। দরজায় মেডিসিন পড়ে ছিলো আর সেটায় পিছলে পড়েছে মহুয়া।
বেচারি শুধু আহনাফের সামনেই এখানে সেখানে ধপাস করে পড়ে যায় আর আজ তো একদম হসপিটালেও।
আহনাফ মহুয়ার দিকে হাত বাড়িয়ে বলে উঠলো, ‘ আপনি কি জব করবেন! আপনার তো পায়ে সমস্যা পায়ের ডাক্তার দেখানো দরকার। যেখানে সেখানে পড়ে যাওয়ার রোগ আছে আপনার!!.?।
চলবে…
( সরি আবারও আমি ভীষণ অসুস্থ, জ্বর, ঠান্ডা সাথে মাথা ব্যাথা চোখ খুলে মোবাইলের দিকে তাকালেই যন্ত্রণা বাড়ছে সেই জন্য সময় মতো গল্প দিতে পারছি না। সাথে বাসায় অনেক মেহমান। দুই দিনে অনেক কষ্ট করে একটা পার্ট লেখলাম 🙂)
ভুলত্রুটি মার্জনীয়।