#সুখ_পাখি
#Ayrah_Rahman
#part_07
________________
রাতে….
আরু আর তরু বসে বসে টিভিতে খবর দেখছে,
দেখছে বললে ভুল হবে,
তারা টিভি অন করে নিজেদের মধ্যে গ’ল্প করছে,
এমন সময় টিভিতে একটা খবরে আরু আর তরু দুই জনই স্ত’ব্ধ হয়ে গেছে,
একবার টিভিতে তাকায় আবার দুই জন দুই জন এর দিকে তাকাই,
কারণ টিভিতে একটা মেয়ে খবর পড়ছে খবরে বলা হচ্ছে,
দেশের নাম করা বি’শিষ্ট ব্যবসা মির্জা শাহেদ
, যিনি মির্জা গ্রু’পের মালিক, আজ সকালে মহাসড়কের পাশে তার লা*স পাওয়া গেছে,
কেউ তাকে নি*র্মম ভাবে হ*ত্যা করেছে,
চোখ দুটো উ’পরে ফেলা হ’য়েছে,
তার গো*প *না*ঙ্গ কে*টে ফেলা সহ হাত ও পায়ের অ’বস্থা তো বলাই বা’হুল্য,
মুখ’ম’ণ্ডল এমন ভাবে থেঁ*তলে দেওয়া হয়েছে যেন তার পরিবারের মানুষের চিনতেই বেশ বে’গ পেতে হয়েছে,
গো*পন সু’ত্রে জানা গেছে তার ছিলো বে*আ*ইনি ব্য*বসা,মা*দ*ক-দ্র*ব্য, ই*য়া*বা
, তাছাড়া ও নারী পা*চার সহ নারী ধ*র্ষ*নের মতো নি*কৃ*ষ্ট কাজেও তার নে*শা ছিল প্র*খর,
তার লা*স কে কখন মহা*সড়কে রে’খে গেছে কেউ সেই ত’থ্য স’ঠিক ভাবে জানাতে পারে নি,,
শুধু তার লা*সের উপর সাদা কাগজে তারই র*ক্ত দিয়ে লে’খা
“” একজন নারী পা*চার কারী,নারী অস’ম্মানকারী এবং ধ*র্ষ*নের শা*স্তি এমনই হওয়া উচিত, আমাকে দেখে সবাই শি*ক্ষা নাও””
তা ছাড়া আর কোন ত’থ্য ই পাওয়া যায় নি,
এটুকু দেখেই আরু তা’ড়াহুড়ো করে টিভি অফ করে দিলো,
চোখে মুখে তার চরম আ*তঙ্ক,
, তরুও যে অবাক হয় নি তেমন টাও না,
মিনিট পাচেক নিরবতা ভে’ঙে আরু বলে উঠলো,
“আপু এটা কি হলো?”
তরু স্বাভাবিক ভাবে ই বলে উঠলো,
“- কি হবে! অ*পরাধী শা*স্তি পেয়েছে,। ”
” কিন্তু কেমন জানি র*হস্য র*হস্য লাগছে আমার কাছে”
তরু খানিকটা ভেবে বলল,
“র*হস্য জনক তো আমার কাছেও লাগছে”
” সেটাই তো ভাবছি ওই দিনের নারী পা*চারের দল নিজে এসে আ’ত্ম’সমর্পণ করেছে আজ একজন কে নি*র্ম*ম ভাবে হ*ত্যা করা হয়েছে কেমন জানি ধো’য়াসা লাগছে! ”
“হুম”
“আচ্ছা আপু,, দুই কাজই একজনের না তো?”
তরু খানিকটা ভেবে বলল,
” হতেও পারে, আচ্ছা বাদ দে ,যা হবে দেখা যাবে,এখন চল খাবি।’
আরু ও সায় জানিয়ে বলল,
” হুম.”
ততক্ষণে দুই জনেরই খাবারের ডাক পরেছে,
,আয়েশা রাহমান টেবিলে খাবার দিয়ে দুই বোনকে ডাকছে
আর কোন উপায় না পেয়ে আরু আর তরু খাবার খেতে চলে যায়,
_______________________
খান ভবনে…..
শুভ্র ও এতক্ষণ বসে বসে টিভিতে খবর দেখছিলো,শুধু শুভ্র নয় বাড়ির অ’ধিকাংশ ই উ’পস্থিত ছিলো, খবর দেখা শেষে শু’ভ্র টিভি অফ করে দিলো, পাশে তাকিয়ে দেখে সকালের মুখেই একটা আ*তঙ্কের ছাপ ,সাথে রয়েছে প্র’শান্তির আভা ও
রাহেলা খান বলে উঠলো,
” কি যে হচ্ছে দেশে”
শুভা এক পলক মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল,
“কি হবে!যা হয়েছে বেশ হ’য়েছে,অপরাধী দের এভাবেই শা*স্তি দেওয়া উচিত ”
রাহেলা খান চিন্তিত স্বরে বলল,
” সে কথা বাদ দে, দেখ কত নি*র্ম*ম ভাবে মা*রা হয়েছে”
শুভা বলে উঠলো,
“যে মে*রেছে না, তাকে যদি আমি পেতাম,, শত বার সেলুট জানাতাম ”
“কে মা*রলো বলতো?”
“আমি কি জানি? ”
“তা ও কথা, আচ্ছা বাদ দে চল খাবি।”
অনেক রাত হয়েছে, শুভ্র তুই ও আয়।
শুভ্র এ’তোক্ষণ মা আর বোনের কথা শুনছিলো,তারা চলে যেতেই শুভ্র র’হস্য জনক ভাবে হাসে,,
–
– এখনো তো শেষ হয়নি মাত্র তো শুরু হয়েছে আরো তো বাকি আছে,দেখতে থাকো কি হয় সামনে”
মনে মনে কথাটা ভাবতেই শুভ্রের ঠোঁটের কোনে ভেসে উঠে বাঁকা হাসি,
শুভ্র ও খাওয়া দাওয়া করে নিজের ঘরে চলে যায়।
__________
আরু, তরু, আয়েশা রাহমান একসাথে বসে খাচ্ছে, এটা তাদের নি’ত্যদিনের কাজ,
সারাদিন যায় করুক না কেন খাবার সকলে একসাথে টেবিলে বসেই খায়,
তবে আজ মাহমুদ রাহমান কে দেখতে না পেয়ে আরু তার মাকে জিজ্ঞেস করে,
” আম্মু, বাবা কোথায়?”.
আয়েশা খাবার দিতে দিতে বললেন,
“অফিসে কি একটা কাজে আটকে গেছে,আসতে দেরি হবে তোরা খেয়ে নে”
” তুমিও বসে পরো”
আয়েশা মুচকি হেসে বলল
“- না তোরা খা, তোর বাপ এলে তারপর একসাথে ই খাবো”
আরু আর কোন কথা বাড়ায় না,
,জানে বলেও লাভ নেই, তরু এ’তক্ষণ মা আর বোনের কথা শুনছিলো তবে খাবার খেতে বসে কোন কথা বলা তরুর পছন্দ না,
,সে যত দরকারি কথায় হোক না কেন,
খাবার শেষ করে আরু আর তরু নিজ নিজ রুমে চলে যায়,
আয়েশা রাহমান সোফায় বসে মাহমুদ রাহমান এর জন্য অপেক্ষা করে,এরকম প্রায়ই হয়,
কখনো তিনি একা খান না।
আরু তার রুমে গিয়ে দরজাটা অফ করে বিছানায় বসে,
জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখে আকাশে মিটমিটে তারা জ্বলজ্বল করছে,
তাই সে বেলকনির দরজা খুলে বেলকনিতে এসে দাড়ায়,
বাইরে বেশ ঠা’ন্ডা বাতাস বইছে,,
শীত শীত ভাব আরুর চুল বাতাসের তালে তালে উড়ছে, আরুর চুল গুলো বেশ ল’ম্বা এবং হালকা কুঁকড়ানো যার দরুন আরুকে ভিষণ কিউট লাগে,
তবে সে বাইরে কখনোই চুল ছেড়ে যায় না,
,
খুব কম মানুষ ই আরুর চুল দেখেছে,
প্রায় বেশ সময় বাতাসে থেকে আরুর বেশ শীত করছে তবুও সে চুল পরিমান ও নড়ছে না, হ’ঠাৎ তার চোখ যায় দুরে একটা প্রাইভেট কার এর দিকে,
গাড়িটি কে বেশ খানেক সময় আরু গাড়িটি কে ল’ক্ষ করছে,,গাড়িটির হেড লাইট জ্ব’লছে,মনে হচ্ছে গাড়িটির ভেতরে কেউ আছে এবং সে এদিকেই তাকিয়ে আছে, আরু এক দৃ’ষ্টি তে গাড়িটির দিকে তাকিয়ে আছে কিন্তু কিছু ই ধরতে পারল না,
আরু মোবাইলে সময় টা দেখে নিলো, রাত তখন ১১ টা প্রায়, আরু আর কিছু না ভেবে ভেতরে চলে যায়, লাইট অফ করে বিছানায় শুয়ে ভাবতে থাকে,গত কয়েক দিনের ঘটনা গুলো, কেমন জানি সব কিছু র*হস্য জনক ঠেকছে তার কাছে,
এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেলো সেই খেয়ালই নেই
হঠাৎ সে তার মোবাইলের রিংটোনের শ*ব্দে ঘুম কিছু টা ভে*ঙে গেলো,
এক আকাশ সমান বিরক্তি নিয়ে সে মোবাইল রিসিভ করে কানে নিলো..
” হ্যালো!কে বলছেন?”.
—অপর পাশে নিশ্চুপ
আরু খানিকটা বিরক্তি নিয়ে বলল,
“আরে মিয়া কথা বলেন,কে বলছেন আর এত রাতে কল করেছেন কেন?”
—অপর পাশ তখন ও নিশ্চুপ,, শুধু মাত্র নিশ্বাস এর শব্দ শোনা যাচ্ছে,
” আরে ভাই কথা যখন কইবেন ই না তাইলে কল দিছেন কিল্লায়,মশা*লা আমার ঘুমের ১২ টা বাজাইয়া উনি মজা নিতাছে,রাখ তো*র ফোন”
বলেই আরু লাইন কেটে দিলো,
মোবাইলের দিকে তাকিয়ে দেখে রাত তখন আড়াইটা,
আরুর মেজাজ তো আরো খারাপ হয়ে গেছে,,
বেটাকে যদি সামনে পাইতো পানি ছাড়া কা*চাই গিলে খাইতো এমন টাই মনে হচ্ছে তার
ঠিক তখনই আরুর ফোনে একটা মেসেজ আসে,,
আরু মেসেজ টি অপেন করে পড়ে,,
মেসেজ টি পড়ে ই আরু বেশ চিন্তিত হয়ে যায়,
আরুর ঘুম পুরোপুরি ছুটে গেল,
আরু বুঝতে পারলো না মেসেজ টির মানে কি? কি বোঝাতে চেয়েছে অপর পাশের সেই লোকটি,
আর এসব মেসেজ কে দিলো,কেনই বা দিলো,
হাজারো প্রশ্ন এখন আরুর মনে,,
মেসেজে লেখা ছিলো……
————————————–
অপর দিকে শুভ্র এতোক্ষণ গাড়ির ভেতর থেকে আরুর বেলকনিতে ই তাকিয়ে ছিলো,
আর চলে যাওয়ার পর সে নিজেও বাড়িতে চলে যায়,
রাতে আরুকে অনেকটা জালানোর জন্য ই সে আরুকে কল করে,
আরুর নাম্বার টা সে ভার্সিটি থেকেই নিয়েছে
সে জানে আরু ঘুমে কতটা দুর্বল,
ঘুমের ডিস্টার্ব আরু কখনোই মেনে নিবে না,
ঘুম পাগলি তো তার চড়ুই পাখি,
শুভ্র জানে এখন ফোন দিলে আরু দুনিয়ার সব আজগুবি বকা দিবে, আজগুবি কথা বলবে আর শুভ্র তো সেটাই শুনার জন্য ফোন দিলো,,
আর হলোও তাই,,,
—————–
আরু রেগে ফোনটা কেটে দেওয়াই শুভ্র কান থেকে ফোন টা নামিয়ে কিছু ক্ষন ফোনের দিকে তাকিয়ে বেশ শব্দ করেই হেসে ওঠে,
শুভ্রের এই কাজে শুভ্র নিজেই অবাক,
কারণ আজ প্রায় ২ বছর পর শুভ্র এমন মন খুলে হেসেছে,
এই কথা চি’ন্তা করে আবারো শুভ্র খানিকটা হাসলো,,
আবার মোবাইল টা নিয়ে আরুকে কে একটা মেসেজ সেন্ট করে,,
” তুমিই আমার একমাত্র ভালো থাকার কারণ চড়ুই, খুব তাড়াতাড়ি ই নিজের অধিকার নিয়ে তোমার সামনে দাড়াবো,পাখি।”
মনে মনে বলে শুভ্র একটা শান্তির ঘুম দেয়
সকালে………
চলবে?…..
[📌আপু এবং ভাইয়ারা প্লিজ সবাই গঠন গত মন্তব্য করবেন 📌]