#সুখ_পাখি
#Ayrah_Rahman
#part:– 29
এই যে আইরাহ,,শুনতে পাচ্ছো,,একটু দাড়াও,,
পিছন থেকে কারো ডাক শুনতে পেয়ে আরু পিছনে তাকালো,,দেখে রিহান দৌড়ে আসছে….
— হেই আইরাহ,,কতক্ষণ যাবত তোমাকে ডাকছি,,শুনতে পাচ্ছো না?
— সরি মিস্টার রিহান,, আমার কানের সমস্যা আছে,, তাই শুনতে পাই নি,,
— ইট’স ওকে,,
— আপনি হঠাৎ আমাদের মেডিক্যাল এ? কি ব্যপার কারো সাথে দেখা করতে আসছেন নাকি?
— আসলে,,হয়েছে কি….( মাথা চুলকাতে চুলকাতে)
— কি হয়েছে মাথা চুলকাচ্ছেন কেন ,,
— এখানে দাড়িয়ে ই কথা বলবেন নাকি? চলেন
ক্যান্টিনে,,
— ওকে চলেন,,ক্যান্টিন ওই দিকে।,,
আরু আর রিহান ক্যান্টিনে গিয়ে বসতে যাবে অমনি কেউ এসে আরুর হাত শক্ত করে ধরে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে আসে,,বেচারা আরু আর রিহান কিছু বুঝে উঠার আগেই ঘটনাটি ঘটে গেলো,,,
সেকেন্ড পাঁচেক পর আরু বুঝতে পারলো কি হচ্ছে,, বেচারি চোখ বড় বড় করে শুধু শুভ্রের দিকে তাকিয়ে ই আছে,,,
— এই এই কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে? হুম? সমস্যা কি আপনার? ছাড়েন আমার হাত ছাড়েন..
আরু খেয়াল করলো মেডিক্যাল এর অনেকেই তাদের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,,
— চুপ একদম চুপ একটা কথাও না,,
শুভ্র আরুকে একটা ক্লাস রুমে এনে ছেড়ে দেই,,,
— আমাকে এখানে আনলেন কেন?
— আমার ইচ্ছে ( ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)
–ইচ্ছে মানে কি? আপনি কি দেখতে পাননি আমি কথা বলছিলাম,,কথার মাঝখানে থেকে তুলে আনার মানে কি এটা কোন ধরনের সভ্যতা( রেগে)
— সভ্যতা না অসভ্যতা সেটা পরের বিষয় তুমি ওই ছেলের সাথে কথা বলবে না,,
— কেন? আমি বলবই,,আপনার কি?
— যেটা জানো না সেটা নিয়ে তর্ক করো না পিচ্চি,,
— ওই আপনি আমাকে পিচ্চি বললেন কেন? আমি কি পিচ্চি আর না আমাকে দেখে আপনার পিচ্চি মনে হয়? কোনটা?
— তুমি তো পিচ্চি ই,,, ( মজা করে)
— আপনি আগেও আমাকে পিচ্চি বলে খেপাতেন এখন ও,, কি পেয়েছেন টা কি? ( রাগের বসে আরু মুখ ফসকে বলে ফেলে)
–আগেও খেপাতাম নাকি?
এক ভ্রু উচু করে আরুর দিকে তাকিয়ে প্রশ্নটা করলো শুভ্র,,,
এতক্ষণে আরুর খেয়ালে আসে সে কি বলে ফেলেছে,,,
— আবব… না মানে আগেও খেপাতেন বলে বুঝাতে চেয়েছি মেডিক্যাল ভর্তির পর ও তো আপনি আমাকে পিচ্চি ডেকেছেন সেটাই তো…
শুভ্র খানিকটা এগিয়ে এসে আরুর মুখোমুখি দাঁড়ায় ,আরুর হাত টা নিজের বুকের বা পাশে রাখে
– – কেন এমন করছো চড়ুই,,আমাকে প্লিজ বলবে? তোমার কথা গুলো মনে হলে না আমার ঠিক এই জায়গাটা ই প্রচন্ড ব্যথা করে,,আমি তো জানি আমি ভুল করেছি,,তার জন্য আমি বারবার শত বার হাজার বার তোমার কাছে ক্ষমা চাইতে রাজি আছি,,প্লিজ তাও এমন অচেনা বিহেভিয়ার করো না প্লিজ।
কাতর কন্ঠে কথা গুলো বলেই শুভ্র আরুর হাত ধরেই নিচে মাটিতে বসে পরে,,,আরুর আরুর হাতে বার কয়েক চুমু খেয়ে তার হাতে নিজের দু হাত ধরে কপাল ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে থাকে,,
আরু খেয়াল করে মাঝে মাঝে শুভ্র কেঁপে কেঁপে উঠছে,,শুভ্র কাঁদছে….
— শুভ্র ভাইয়া,, কি করছেন কি উঠেন…কেউ দেখে ফেললে সমস্যা হবে,, উঠুন,,
শুভ্রের কোন নরচর না দেখে আরু নিজেও নিচে হাটু গেড়ে বসে,,
— কি হলো,, উঠুন
আরুর হাত ধরে ই শুভ্র উঠে দাড়ায়,,
আরু ও উঠে দাড়ানোর সাথে সাথে ই শুভ্র আরুকে
নিজের সাথে জরিয়ে ধরে,,,
— আরু প্লিজ, ডোন্ট লিভ মি প্লিজ,,,আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচব না প্লিজ,,তুমি চলে আসার পর ই আমি ধীরে ধীরে বুঝতে পারি আমি তোমার প্রতি কতটা দুর্বল,,তোমাকে ছাড়া আমার একটা মুহুর্ত ও চলবে না,,আমি রিয়েলাইজ করি,, আমি তোমাকে ভালোবাসি,, ভিষণ ভালোবাসি,, তবে আমি খুব দেরি করে ফেলি,,তোমাদের বাসায় গিয়ে দেখি তোমাদের বাসায় অন্য কেউ,,তোমরা নেই,,তারপর খোঁজ নিয়ে জানতে পারি,,সেদিন তোমার গুরুতর এক্সিডেন্ট হয়েছিল,, তখন নিজেকে কতটা অসহায়,, কতটা ছোট মনে হয়েছিলো আমি তোমাকে বোঝাতে পারব বা,,চড়ুই,,এই দুইটা বছর আমার কিভাবে কেটেছে শুধু আমি জানি,,প্লিজ চড়ুই আমাকে ছেড়ে যেও না,,কোথায় কোথায় না খুজেছি তোমাকে কোথ্থাও পাইনি,,,
আরু তার ঘাড়ে ভিজে ভিজে অনুভব করলো,,হয়তো এটা শুভ্রের চোখের পানি,,ছেলেরা নাকি সহজে কাঁদে না,,তারা খুব শক্ত প্রকৃতির হয়,,আরু তার নিজের বাবাকেও কখনো কাঁদতে দেখে নাই,,অথচ আজ শুভ্র কত সহজেই কাঁদছে,, আদও কি এটা সহজ নাকি কাউকে হারানোর ভয়,,আরু তা বুঝতে পারছে না,,
— শুভ্র ভাইয়া ছাড়েন,,
শুভ্র আর কথা না বাড়িয়ে আরু কে ছেড়ে দিলো,,আরু খেয়াল করে দেখলো শুভ্রর চোখ লাল হয়ে ফুলে আছে,, ইনফেক্ট পুরো মুখ লাল হয়ে আছে নাকটা আরো বেশি কিছু ক্ষন পর পর নাক টানার ফলে পুরো বাচ্চাদের মতোই লাগছে,,ফর্সা মুখ হওয়ায় লাল টা আরো বেড়ে গেছে,,আরুর ইচ্ছে হলো শুভ্রের নাক টা একটু টেনে দিতে,,নিজের ইচ্ছে নিজের কাছেই ধামা চাপা দিয়ে আরু বলে উঠলো,,
— আমার মতো ফালতু একটা রাস্তার মেয়ের জন্য এত কষ্ট কেন মিস্টার শুভ্র খান….
— স্টপ আইরাহ প্লিজ স্টপ,,তুমি কোন রাস্তার মেয়ে নও,,আমার ভালোবাসা কখনো রাস্তার মেয়ে হতে পারে না,,
— আমি ত আপনাকে ভালোবাসি না,, হুদাই আমার পিছনে সময় নষ্ট করে লাভ নাই,,,
— মিথ্যা কথা,, তোমার ওই যে অন্য কথা বলছে,,
শুভ্র আরুর চোখের দিকে তাকিয়ে কথাটি বলে উঠলো…
সাথে সাথে ই আরু চোখ নামিয়ে এদিক ওদিক তাকাই,,
— আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে,, আমি আসি…
বলেই আরু চলে যেতে নিলে শুভ্র তার হাত ধরে আটকে দেই,,
অমনি শুভ্রের ফোনে কল আসে,,
— হ্যালো আংকেল,, কেমন আছেন?
–………………
— আমিও ভালো আছি,,কি হয়েছে আংকেল কোন সমস্যা? আপনার কন্ঠ টা কেমন জানি লাগছে?
–…………………
— ওহ সেট… কবে?
—……………….
— আচ্ছা আপনি টেনশন করবেন না,, কিচ্ছু হবে না,,আমি এক্ষুনি আসছি….
–…………………
— ডোন্ট ওয়ারি.. আংকেল,,
শুভ্র ফোন রেখে আরুর দিকে তাকালো,,
— জান পাখি, আমার এক্ষুনি চট্টগ্রাম এ যেতে হবে,,সাবধানে থাকবে কেমন?
বলেই শুভ্র আরুর কপালে নিজের ঠোঁট ছোঁয়াল,,
আরু এতক্ষণ হাবলার মতো শুভ্রের দিকে তাকিয়ে ছিলো,,ফোনের ওপাশের কোন কথা শুনতে না পেলেও বুঝতে পারলো গুরুতর কিছু হয়েছে,,
— আমি আসছি আরু পাখি,,
বলেই শুভ্র রুম থেকে বের হয়ে চলে যায়,,
আরু সেখানে দাড়িয়ে ভাবতে থাকে…
এই লোকটা আর কত নামে তাকে ডাকবে,!!!
চলবে…..
[ কেউ নাইস/ নেক্সট না বলে প্লিজ গঠন গত মন্তব্য করবেন,, কারণ আপনাদের মন্তব্য আমাদের প্রেরনা জোগায় ধন্যবাদ,, সবাইকে ]