#সুখ_পাখি
#Ayrah_Rahman
#part_05
চিঠিতে লেখা….
প্রিয় প্রণয়িনী….
তোমার প্রণয়ে দ’গ্ধ আমি, তোমার কাজল কালো চোখে বারবার কত বার পুরেছি,ডুবেছি তোমার অ’নন্ত মায়ায়, ভালোবাসাবাসির জন্য অ’নন্ত কাল প্রয়োজন নেই ,তোমাকে ভালোবাসার জন্য আমার একমুহূর্তেই য’থেষ্ট। ভালোবাসি প্রণয়িনী অনেক বেশি ভালোবাসি।
তোমার অপ্রিয়
মানুষ
_______________________________
চিঠিটা পরে আরু কি’ছু’ক্ষণের জন্য থমকে গেলো,আরুর রিয়াকশন দেখে দিশা কিছুটা স’ন্দেহ নিয়ে চিঠি টা হাতে নিয়ে পড়লো,এবার দু জনের মাঝেই চি’ন্তার আগমন ঘটে,
দিশা চিন্তিত মুখে জিজ্ঞেস করল,
” কিরে আরু এসব কি?”
আরু ঠোঁট ভিজিয়ে বলতে লাগলো,
” দো’স্ত বি’শ্বাস কর আমি কিছু জানিনা, এসব কে করছে আমি জানিনা”
দিশা সন্দেহের দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলল,
” সত্যি বলছিস তো নাকি আমার থেকে লুকিয়ে প্রেম টেম করছিস”
“দো’স্ত কি কস,,আমি সত্যি ই কিছু জানিনা”
দিশা চিন্তিত কন্ঠে বলে উঠলো,
“হুম বুজলাম, বাট দিলো কে”
আরু বলে উঠলো,
” এটা শুধু নবাব ই বলতে পারবে”
আরু আর দিশা পিছন ফিরে দেখে নবাব হাওয়া, নবাবের র্যাস মাত্র ও নাই
দিশা চোখ বড়ো বড়ো করে বলল,
“কিরে আরু ওই নবাব টা গেলো কই ,দুর”
“মনে হয় চলে গেছে,চল বাসায় যায় এমনি অনেক দেরি হয়ে গেছে,”
” হুু’ম চল, কাল এই বিষয়ে কথা বলা যাবে,”
“হুম”
আরু আর দিশা চলে যাওয়ার পরে ঠিক সেই জায়গায় যেখানে ওরা এ’ত’ক্ষণ কথা বলছিলো সেখানে একটা কালো রঙের BMW গাড়ি এসে ব্রে’ক করে, গাড়ি থেকে নেমে আসে একজন যুবক,মুখ পুরাটাই মা’স্কে ঢাকা,আরু দের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে যুবক টি ঠোঁ’টে ফুটে উঠলো বাঁ’কা হাসি,
” I come back to your life my girl, তুমি যতটানা পুড়িয়েছো আমাকে তার চেয়েও বেশি আমি তোমাকে পো’ড়াবো, অ’পেক্ষা করো সোনা,বলেই যুবকটি আবার গাড়িতে উঠে চলে যায়”
বাড়িতে এসেই আরু নিজের রুমে গিয়ে ফ্যান অন করে ঠাস করে বিছানায় চিৎ’পটাং হয়ে শু’য়ে পরে,এটা আরুর বদ’অভ্যেস, আরু শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলো এই চিঠির মালিক কে?নাকি কেউ মজা করে দিসে, যদি কেউ মজা করে দিয়ে থাকে আর যদি ধরতে পারে তবে তার কপালে শনি, নাহ শুধু শনি না রবি ম’ঙ্গল বৃহ’স্পতি ও আছে,
” দুর ছায়, এসব না ভেবে ফ্রেস হয়ে খেতে যাই, খিদায় পেটে হা’তির বা*চ্চা দৌড়াদৌড়ি করছে,
বলেই আরু ফ্রেস হয়ে নিচে চলে যায় খেতে”
কি’ন্তু আশেপাশে কাউকেই না দেখতে পেয়ে সোজা রা’ন্না ঘরে চলে যায়,’গিয়ে দেখে জরিনা খালা বসে কাজ করছে,জরিনা হলো ওদের বাসার কাজ করে, আরুর যখন ২ বছর বয়স তখন থেকে জরিনা এই বাসায় কাজ করে,
জরিনা কে কাজ করতে দেখে আরু গিয়ে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো
হ’ঠাৎ জরিয়ে ধরার ফলে জরিনা খালা বেশ ভয়ই পেয়ে যায়,তা দেখে আরু খিলখিল করে হেসে ওঠে,
জরিনা মিছিমিছি রাগ দেখিয়ে বলে,কি গো আম্মা আমারে তো ডর লাগাই লাইছেন, মুর যদি হে’রাট ফেল কইরা লা’ইতাম, তই কি তা করতেন?
জরিনার কথা শুনে আরুর হাসির মাত্রা আরও বেড়ে গেলো,আরু কোন রকমে হাসি থামিয়ে বলল
“,খালা ওইটা হেরাট না হা’র্ট হবে,আর বাকিরা কই,, তাদের তো দেখছি না,,আর কাজের বেটি সখিনা ই বা কোথায়,”
জরিনা খালা বলে উঠলো,
“কাজের বেটি সখিনা কেডা গো আ’ম্মা,তরু আ’ম্মার কথা কইতাছেন,হেই তো অহনো আইছেনা”
” ওহ,আর আম্মু?”
” আফাই তো ঘুমাইতাছে,আমারে কইছে আমনে আইলে খাওন দিতাম,আমনে গিয়ে টেবিলো বইন আমি খাওন লাইয়া আইতাছি”
” আচ্ছা খালা,আমি গেলাম তুমি আসো”
“আইচ্ছা আম্মা,”
আরু গিয়ে টেবিলে বসার পর জরিনা খালা খাবার বেড়ে দেয়,
আরু খেতে খেতে জিজ্ঞেজ করলো,
“খালা তুমি খাইছো?”
“হহ আ’ম্মা আমি খাইছি,,তুমি খাও”
” সত্যি তো?”
” হহ হাছা কথা কইছি গো আম্মা,”
আরু আর কথা না বাড়িয়ে নিজের খাওয়া শেষ করে,রুমে চলে যায়,সারাদিনের ক্লা’ন্তি এসে চোখে ভর করে আরুর,আর উপায় না পেয়ে আরু শুয়ে একটা ঘুম দেয়,
———————————————-
খান ভিলাতে…..
শুভা আর, রাহেলা খান বসে ড্রয়িং রুমে কথা বলছে এর মাঝে শু’ভ্র নিচে নেমে এলো,শুভ্র কে দেখে রাহেলা খান বেশ অবাক ই হলেন কারণ এই অসময়ে শুভ্র কখনোই বাসায় থাকে না আর থাকলেও নিজের ঘর থেকে বের হয় না, তাই রাহেলা খান শুভ্র কে জিজ্ঞেস করলেন,এই সময় শুভ্র নিচে কেন?
রাহেলা র কথা শুনে মুচকি হেসে মায়ের কাছে গিয়ে মাকে জরিয়ে ধরে কোলে শুয়ে পরলো,
রাহেলা খান তো এবার হার্ট অ্যাটাক করার জোগার,কারণ শেষ কবে শুভ্র মাকে জরিয়ে ধরেছিলো সেটা শুভ্র ও বলতে পারবেনা,
রাহেলা খান বুঝতে পারলেন তার ছেলে কোন কারণে বেশ খুশি আর কারণ টাও তার অজানা নয়,তাও তিনি জিজ্ঞেস করলেন,
“আমার আ’ব্বা কে আজ বেশ খুশি খুশি লাগছে কারণ টা কি জানতে পারি?”.
শুভ্র ভ্রু কুচকে বলল,
“ওফফ মা,তুমি তো জানোই আমার খুশি থাকার কারণ আবার প্রশ্ন করার কি দরকার”
“জানি তো, তবুও শুনি আমার ছেলের মুখ থেকে, ”
শুভ্র মুচকি হেসে বলল,
“শুনবা?”
” হুম শুনবো তো,শোনার জন্য ই তো বললাম”.
“কাল থেকে না আমি আমার চড়ুই পাখিকে অল টাইম দেখতে পারবো”.
রাহেলা ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করল,
” কিভাবে?”
” আমাদের মেডিক্যাল থেকে যাবো ওদের সাথে কাজ করার জন্য, মেডিক্যাল এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী,”
” এটা কি শুধুই মেডিক্যাল এর সিদ্ধান্ত?
প্রশ্ন টা করেই রাহেলা খান চাপা হাসি হাসলেন
রাহেলা খান এর প্রশ্ন শুনে শুভ্র কিছুই বলল না,শুধু হাসলো,রাহেলা খান ও আর কথা বাড়ালেন না,
চুপচাপ ছেলের মাথায় হাত বুলাতে লাগলেন আর মনে মনে দোয়া করলেন যাতে সব কিছু আগের মতো প্রা’ণোজ্জল হয়ে উঠে,,সব ঠিক হয়ে যায়,,
শুভা এত’ক্ষণ মা আর ভাইয়ের কথা গালে হাত দিয়ে মনোযোগ দিয়ে শুনছিলো, কিন্তু কোন কথার আগা মাথা কিছু ই বুঝতে না পেরে মাকে অর্থাৎ রাহেলা খান কে বলল,
“মা তোমরা কার কথা বলছো,কিছুই তো বুঝতে পারছিনা”
মেয়ের কথা শুনে রাহেলা খান বললেন,
“সেটা তোর জানা দরকার নেই,বড় হ নিজেই বুঝবি এখন যা পড়তে বস আর ১ মাস পর এ’ক্সাম সেই খেয়াল আছে আপনার?”
মায়ের কথা শুনে শুভার মুখ মলিন হয়ে গেলো কারন তার কাছে দুনিয়ার সবচেয়ে বির’ক্তিকর জিনিস এই পড়ালেখা, তবে শুভা যে খারাপ ছাত্রী তা কিন্তু নয়,য’থেষ্ট ভালো,তবে পড়া তার মোটেও ভা’ল্লাগে না, অ’গত্যা কিছু বলতে না পেরে উঠে নিজের রুমে গিয়ে পড়তে বসলো শত হোক সামনে তার এঃক্সাম,,
রাত প্রায় ১০ টা ছুঁই ছুঁই,,
একটা অন্ধকার রুমে না না অন্ধকার বললে ভুল হবে বিশাল এই ঘরের মাঝে লাল বাল্বটা টিম টিম করে জ্বলছে তার ঠিক বরাবর নিচে মির্জা শাহেদ দড়ি দিয়ে বাধা হাত পায়ের বিভিন্ন অংশ কা*টা ছে*ড়া বোঝাই যাচ্ছে তাকে খুব ভালোই মেহমানদারি করা হয়েছে,পাশেই একটা চেয়ারে সিয়াম বসে বসে ঝি’মাচ্ছে, ঘুমাতেও পারছেনা,ভাইয়ের কড়া হু’কুম ঘুমানো যাবে না,
হঠাৎ দরজা খোলার আওয়াজে সিয়ামের ঘুম পুরোপুরি ছুটে গেছে,
শুভ্র ধীর পায়ে মির্জার কাছে এসে দাড়ালো,,এবং সামনে রাখা চেয়ার টাই বসে পায়ের উপর পা তুলল,
মির্জা তার দুর্বল চোখ দিয়ে শুভ্র কে একবার পরখ করে আবার চোখ বন্ধ করে ফেললো, যদিও শুভ্রের চোখ ছাড়া কিছুই দৃশ্যমান নয়
মির্জার অবস্থা দেখে শুভ্র বাকা হাসলো
শুভ্র মির্জা কে দেখে বলতে লাগলো,
” মিস্টার মির্জা কখনো ভেবেছেন আপনার জীবনে এমন একটা দিন আসবে? ”
মির্জা কিছু ই বলল না শুধু শুভ্রের দিকে এক পলক তাকালো,,
শুভ্র ফের বলল,আচ্ছা যা হোক,, এবার বলেন ,আপনি কি বলবেন কিছু নাকি মৃত্যুর জন্য প্রস্তুুত?
মির্ হুংকার ছেড়ে বলল,
” আমি মরে গেলেও কি’চ্ছু বলবো না”
মির্জার কথা শুনে শুভ্র শুধুই হাসলো,
হঠাৎ করে শুভ্র সিয়াম কে ডাক দিলো,সিয়াম কাছে আসার পর শুভ্র বলল,
“মির্জা কে যেন এমন মৃত্যু দেওয়া হয় যাতে পরবর্তী তে কেউ একই ভুল করার আগে শত বার ভেবে নেয়, এবং মারার পর লা*স টাকে জনসমাগম এ ফেলে রেখে আসবে আর তার র*ক্ত দিয়ে লিখবে,একজন রে*পিস্ট আর নারী পা*চার এর শা*স্তি এমন ই হওয়া উচিত,”
শুভ্র কখনোই নিজ হাতে কাউকে মারে না,,তার কথা, মাছি মেরে হাত ন*ষ্ট করার কোনই মানে নেই,
সিয়াম কে কাজ বুঝিয়ে দিয়ে সে বেড়িয়ে যায়,বাড়ির উদ্দেশ্যে,বাড়িতে গিয়ে ফ্রেস হয়ে শা’ন্তি র এক ঘুম দেই, একটু আগে যে একজন কে নি*র্মম ভাবে মারার কথা বলে এসেছে যেন কিছুক্ষন আগে কিছু ই হয় নি,
পরদিন সকালে……
চলবে?….
[📌📌বিঃদ্রঃ আমার আগের পার্টে একজন রিডার কমেন্ট করেছেন যে পরিচয় গুলো যেন পরিষ্কার করে দেই,,
গল্পে (নায়ক শুভ্র খান,, বাবা আহনাফ খান আর মা রাহেলা খান,, ছোট বোন শুভা খান,) আর (নাইকা আইরাহ রাহমান,বাবা মাহমুদ রাহমান মা আয়েশা রাহমান বড় বোন তরু রাহমান,,) ( আরু,দিশা,রাকিন,আহান আর রিয়া পাঁচ বন্ধু)গল্পে আরো অনেক পার্ট আছে আরো অনেকেই এন্ট্রি নিবে,, পরিচয় নিয়ে আরো কোন সমস্যা থাকলে বলতে পারেন আমি ক্লি’য়ার করার চে’ষ্টা করবো,,ধন্যবাদ সকলকে]📌📌