#প্রেমময়নেশা (The story of a psycho lover)
#পর্ব-16(special part)
#Jannatul_ferdosi_rimi
পায়েল এর জ্ঞান ফিরেনি এখনো।মিসেস কলি চিন্তায় শেষ। এদিকে অয়নকেও ফোনে পাচ্ছেন নাহ তিনি।রুশনি মুখ ভেংচি দিয়ে বলে উঠেন-আমাদের হয়েছে এখন এক জ্বালা । প্রথমে এই মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তার মধ্যে এই মেয়েকে যে এই বাড়িতে এসেছেন তিনি তো তার প্রমিকার জন্য বাড়ি তছনছ করে একেবারে উধাও হয়ে গেছেন। উনাকে পাওয়াই যাচ্ছে নাহ।মিসেস কলি ধমকের সুরে বলে উঠে- আহা রুশনি তুই থামবি??
রুশনি সোফায় বসে বলে উঠে- এখন তো আমাকেই চুপ করতে বলবে।মেয়েটার জ্ঞান কী করে ফিরাবে সেইটা জানো?
মিসেস কলি তখনি পায়েল চোখ পিটপিট করে খুলে তাঁকায়।
মিসেস কলিঃ রুশনি দেখ। পায়েল চোখ খুলেছে।
পায়েল বিড়বিড় করে বলে উঠে–
অয়ন অয়ন অয়ন। কোথায় তুমি??
রুশনি মুখে হাত দিয়ে বলে- ওমাগো এই মেয়ে তো অয়ন এর নাম করছে।
মিসেস কলিঃ সেটাই তো দেখতে পারছি।।
।।।।।।।।।।।।।।
গাড়িতে,,
অয়ন ড্রাইভ করে যাচ্ছে আর আড়চোখে রিমিকে দেখে যাচ্ছে।
আমি সেইটা দেখতে পেরে বলে উঠলাম-
আমাকে দেখা শেষ?
অয়ন ভ্রু কুচকে বলে উঠে–রিমিপরী!! তুমি আমার ডায়লগ আমাকেই ফিরে দিচ্ছো? এইটা ঠিক নাহ।
রিমিঃ আমার এতো শখ ও নেই!!
কিন্তু এমা আমরা কোথায় যাচ্ছি?? এইটা তো বাড়ির রাস্তা না??
অয়নঃ এইতো এতোক্ষনে আমার বোকা রিমিপরীটা বুঝতে পারলো এইটা বাড়ির রাস্তা নাহ!
রিমিঃ এই আপনি আমাকে বোকা বললেন(রেগে)
অয়নঃ আমি কী আমার হবু বউকে বোকা বলতে পারি?
আমি চুপ হয়ে রইলাম!! উনার মুখে হবু বউ কথাটি শুনে এক অন্যরকম শান্তি পাচ্ছি!! তাও ভ্রু কুচকে বলে উঠলাম-
কিন্তু আমরা যাচ্ছি কোথায়?
অয়ন বাঁকা হেঁসে বলে উঠে-
কেন ভয় পাচ্ছো?
রিমিঃ ভালোবাসার মানুষের সাথে ভয় অন্তত পাইনা।
অয়ন আমার দিকে ঝুকে বলে উঠলো-
আমাকে অনেক বিশ্বাস করো বুঝি।
রিমিঃ হ্যা! অনেক অনেক! হয়তো ভালোবাসি বলে।
অয়ন আমার কপালের অবাধ্য চুল গুলো কানে গুজে দিয়ে বলে উঠলো-
তাহলে এখন আমাকে জিজ্ঞাসা করোনা রিমিপরী! নিজেই দেখতে পাবে।
আমিও আর কিচ্ছু বললাম নাহ।
গাড়িটা একটা নির্জন জায়গায় থামলো্। রাত হয়েছে অনেকটা। মানুষের আনাগোনা নেই৷ এখানে। আমি অনেক টায় অবাক। উনি আমাকে এখানে আনলো কেন। আমি উনাকে কিছু জিজ্ঞাসা করতে যাবো তার আগেই অয়ন সিট বেল্ট খুলে গাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেলো। আমিও বেড়িয়ে পড়লাম।
আমি বলে উঠলাম- আমরা এখানে কেন?
অয়নঃ রিমিপরী! তোমাকে আগেও বলেছি এখন জিজ্ঞাসা করোনা আস্তে আস্তে বুঝতে পারবে।
রিমিঃ কিন্তু এতোটা নির্জন জায়গায় কেন এসেছি।
অয়নঃ আমার সাথে চলো।তাহলেই বুঝতে পারবে।
এই বলে অয়ন সাম্নের দিকে হাঁটা ধরে আমি আর কি? আমি হাঁটা ধরলাম। অয়ন আমাকে একটা কুটিরের সামনে নিয়ে আসে।
রিমিঃ এইখানে কি হবে?
অয়নঃ তুমি নিজেই গিয়ে দেখো আমি ওয়েট করছি।
আমি আর কি কুটিরের ভিতরে গেলাম। কিন্তু আমি একেবারে অবাক হয়ে গেলাম কুটিরের মতো এইটা বাইরে থেকে দেখতে হলেও ভিতরে একটা আস্ত ম্যাকাপ রুম। বিভিন্ন ড্রেস- জুয়েলারি। দেখলাম দুটো মেয়ে হাঁসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে।আমি কিছু বলবো তার আগেই মেয়ে দুটো বলে উঠে- ম্যাম প্লিয এখন কিছু বলবেন না স্যার আপনাকে রেডি করতে বলেছে।
রিমিঃ মানে রেডি করতে বলেছে মানে?(অবাক হয়ে)
মেয়েঃ আপনি নিজেই দেখতে পাবেন
এই বলে মেয়েগুলো আমাকে রেডি করাতে লাগলো।
একটা বড় গোলাপি স্টোন এর গাউন যেখানে বিভিন্ন কাজের ডায়মন্ড এর রিং বসানো আছে ড্রেসটা দেখে আমি জাস্ট হা হয়ে রইলাম। অনেক বিউটিফুল।
আমাকে হাল্কাই সাজানো হলো।
আমার চুল্গুলো একটু বেশিই সিল্কি তাই সেইগুলো ছেড়ে দিলো।
সব শেষে মেয়ে দুটো বলে উঠলো-
ম্যাম নিজেকে একবার আয়নায় দেখুন!!
আমি সাথে সাথেই আয়নায় তাঁকালাম সত্যি নিজেকে চিনতে পারছিনা।
মেয়েগুলোর থেকে একজন বলে উঠলো-
সত্যি ম্যাম আপনাকে একেবারে পরীর মতো লাগছে।।
স্যার আজকে পাগল হয়ে যাবে।
আমি লজ্জায় মাথ নিচু করলাম।
মেয়েগুলো আমাকে নিয়ে কুটির থেকে বের করে আনলো।
কিন্তু উনি কোথায়??
মেয়েগুলো হয়তো আমার কথা বুঝতে পেরেছে।তাই বলে উঠলো–
ম্যাম স্যার আপনার জন্য অপেক্ষা করছে চলুন।
আমিও মেয়েগুলোর কথা অনুযায়ী যেতে লাগলাম।মেয়েগুলো আমাকে একটি বড় ঘরে নিয়ে আসলো!!
ওদের ইশারা অনুযায়ী আমি ঢুকে পড়লাম। ঘরটা অনেক অন্ধকার। আমি অয়ন অয়ন বলে ডাকতে লাগলাম কিন্তু উনাকে দেখছিনা। তখনি ছোট্ট আলোয় লেখা উঠলো- শুভ জন্মদিন আমার রিমিপরী! ও আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম আজ আমার জন্মদিন। ঘড়িতে ১২ঃ০০ টা বাজে। আমি মুখে হাত দিয়ে দিলাম তারপর ঘরের ছাদে ফানুশে উড়তে লাগলো শুভ জন্মদিন আমার ভালোবাসা। একটা বড় গাছের পাতার মতো দেখতে লাইট এর মধ্যে জন্মদিন লেখা ভাসছে। তখনি হূট করে ঘরের লাইট জ্বলে উঠলো আশ্চর্য এর ব্যাপার ঘরে অনেক সুন্দর ডেকোরেশন করা। ফুলের পাপড়ি দিয়ে করা রাস্তা। সেই রাস্তা দিয়ে আমি হেঁটে যেতে লাগলাম। আরেকটা ঘরে পৌছে গেলাম সেখানে উনি দাঁড়িয়ে আছে। উনাকে দেখে আজ সত্যি আরেকবার ক্রাশ খেলাম। উনি উল্টো দিকে ঘুরে আছেন। ব্লাক স্টোনের নীল একটা পাঞ্জাবি পড়েছেন উনি। এমনিই উনি সুন্দর।আজকে আরো ভয়ংকর সুন্দর লাগছে উনাকে 🥰।
আমি আসার সাথে সাথেই উনি ঘুরে তাঁকালেন।অয়ন যেনো রিমির প্রতি আরেকদফা প্রেমে পড়লো। সত্যি আকাশ থেকে এক পড়ি নেমে এসেছে 🥰
অয়ন আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। আমিও উনার দিকে হাত বাড়িয়ে দিলাম। অয়নের চোখ ছলছল হয়ে রইলো।
অয়ন ঃ হয়তো আমি অন্য প্রেমিকদের মতে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ করতে পারিনা। কিন্তু আমি তোমাকে নিজের থেকেও অনেক অনেক বেশি ভালোবাসি রিমিপরী!! হয়তো সাইকো আমি। আমার ভালোবাসায় পাগলামো বেশি। কিন্তু তোমাকে আমি অনেক অনেক ভালোবাসি। পায়েল যখন আমাকে ছেড়ে গিয়েছিলো তখনি তুমিই আমার জীবনে আল্লাহর রহমত রুপে এসেছো আমার রিমিপরী৷ তুমি জানতে চাইতে না আমি তোমাকে কেন রিমিপরী বলি? তুমি আমার লাইফে এঞ্জেল হয়ে এসেছো যে আমার লাইফটা চেঞ্জ করে দিয়েছো তাই তোমাকে আমি রিমিপরী বলে ডাকি।
আমার মুগ্ধ হয়ে উনার কথা শুনতে লাগ্লাম।
অয়ন আবারো বলে উঠে-
পায়েল আমার জীবনের প্রথম ভালোবাসা।
ওকে যতই আমি ঘৃনা করিনা কেন ওর প্রতি আমার মনের এক কোণে সুপ্ত এক অনুভুতি থাকবেই।
আমি চুপ হয়ে রইলাম
অয়ন আবারও বলে উঠে-
কিন্তু আমার জীবনে তুমিই এখন
সব থেকে বেশি ইম্পোর্টেন্ট। আমার জান। তুমি আমাকে কেনোদিন ছেড়ে যাবেনা তো?
আমি উনার হাত আরো শক্ত করে ধরে বলে উঠলাম-
আমিও যে আপনার পাগলামোতেই আশক্ত হয়ে গিয়েছি। কেননা আমি আমার সাইকোটা কে বড্ড বেশি ভালোবাসি।
অয়নঃ আজ তোমার ১৮ বছর পুরণ হলো আমাকে বিয়ে করবে রিমিপরী?
অয়ন আকুতি ভরা এক অনুরোধ করলো আমার কাছে। আমি চুপ হয়ে রইলাম। অয়ন অপেক্ষা করে আছে আমার উত্তরের। আমি উনাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে উঠে–
হ্যা হ্যা করবো আপনাকে বিয়ে।
অয়ন খুশিতে আমাকে কোলে নিয়ে ঘুরাতে লাগলো।তখনি আমাদের উপরে লাল গোলাপ ফুলের বর্ষন হতে লাগলো। আকাশে আতশবাজি ফুটতে লাগলো আমিও খুশি আজ।
অয়ন আমার হাতে শব্দ করে চুমু খায়। আমার হাতে একটি ডায়মন্ড এর রিং পড়িয়ে দেয়।
রিমিঃ এইসব কেন?
অয়নঃ এইটা আমাদের এংগেজমেন্ট রিং।
রিমিঃ কিন্তু আমার তো কোনো রিং নেই।
অয়ন আমার হাতে এক বক্স দিয়ে বলে উঠলো-
তোমার জন্যও আছে। এইবার আপনিও পড়িয়ে দিন আমাকে ম্যাডাম।
আমি মুচকি হেঁসে অয়নকে রিং পড়িয়ে দিলাম।
।। অয়ন ঃ যাক বাবাহ আসল জিনিস কেক টাই কাটা হলোনা
চলো কেটে নিবে।
অয়ন আমার হাত ধরে অয়ন একটা বড় কেকের কাছে নিয়ে গেলো। আমি প্রথমে কেক কেটে অয়নকে খায়িয়ে দিতে নিলে অয়ন বাঁধা দেয় আমি ভ্রু কুচকে তাঁকাতে অয়ন দুস্টু হেঁসে বলে উঠে-
আমি এইভাবে খাবো নাহ
চলবে কি?