প্রেমময়নেশা( The Story of a psycho lover) #পর্ব-46( আপনিই সেই অজানা) #Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)

0
444

#প্রেমময়নেশা( The Story of a psycho lover)
#পর্ব-46( আপনিই সেই অজানা)
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)

দুইবছর আগে আয়ুশ খানের বাংলাদেশে এক বড় এক্সিডেন্ট হয়। সেদিন সেই জায়গায় অয়ন চৌধুরীরও বড় এক্সডেন্ট হয়। ভাগ্যের খেলায় অয়ন চৌধুরী আর আয়ুশ খানের চেহারা এক। দুটো গাড়ির একসাথে ধাক্কা হয় লাগে বড় সংঘর্ষ হয়। এক্টি গাড়ি খাদে পড়ে যায়। যেই গাড়িটি খাদে পড়ে যায়। সেই গাড়িটির মালিক মৃত। কিন্তু যেই গাড়িটি খাদে পড়ে যায়নি সেই গাড়িটির মালিক বেচে রয়েছে। আয়ুশ খান –নার্স বলল।

আমি বলে উঠলাম–
এইসব কি বলছেন আপনি
??
উনি বেঁচে আছেন ওকে???

আমান বলে উঠে–
রিমিপাখি শান্ত হোও!!

আমি বলে উঠলাম–
কিভাবে শান্ত হবো??
উনি বলতে চাইছেন
আমি উনাকে চিনতে ভুল করেছি
উনি আমার অয়ন নাহ???

আমার অয়ন বেঁচে নেই??

আমান বলে উঠে– আমি কথা বলছি তো তুমি একটু শান্ত হোও রিমিপাখি!!

আমানঃ আপনি তো বললেন
দুজনের চেহারা এক!!
দুজনের একি জায়গায়
এক্সিডেন্ট হয়।।

তোহ এমনও তো হতে পারে আয়ুশ খানের গাড়ি খাদে পড়ে গেছে আর অয়ন চৌধুরীর গাড়িই পড়ে যায়নি।

নার্স বলে উঠে–
আসলে হসপিটাল থেকে এই ইনফরমেশন ই আমরা পেয়েছি।
তখন যেই ডক্টর আয়ুশ খানের অপারেশন করেছে তিনিই আমাদের বলেছে এইসব।

আমান বলে উঠলো–
কোন ডক্টর!

নার্সঃ ডক্টর কুক!!

আমি বলে উঠলাম– উনাকে কোথায় পাবো??

নার্সঃ উনি এখন লন্ডনে নেই!!

আমানঃ আচ্ছা সেদিন ঠিক কি হয়েছিলো???

নার্সঃ আমি যতটুকু শুনেছি ডক্টর কুক এবং আমাদের হসপিটালের একটি নার্স নিজেদের মধ্যে কিছু গোপন একটা কথা বলছিলো।

কিন্ত আমি সবচেয়ে অবাক হয়ে যাই।
যখন আয়ুশ খানের শরীর এমন একটা ইঞ্জেকশন পুশ করা হচ্ছিলো। যেই ইঞ্জেকশন এর মাধ্যমে মানুষ সবকিছু ভুলে যায়।

আমরা বলে উঠলাম– ওয়াট??

নার্সঃ হ্যা!!

আমানঃ অনেক বড় একটা গেম চলছে এইসব এর পিছনে।

আমি বলে উঠলাম– হুম আচ্ছা সেই ডক্টর নাহয় এখন লন্ডনে নেই কিন্তু সেই নার্সটা তো এখনো এই হসপিটালেই চাকরি করে তাই না???

আমানঃ হুম আমাদের এখনি হসপিটালে যাওয়া উচিৎ!!

—-
রাফিয়া কিছু ওয়ার্ডে কাজ করছে
তখনি তার ফোন বেজে উঠে–

-রাফিয়া-হ্যালো ম্যাম স্যারকে তো সব বললাম ই
ডক্টর আমান আর অই রিমি ম্যাম এসেছিলো হসপিটালে।

——

রাফিয়াঃ কি এখন ওরা আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আসছে?

—-///+-

রাফিয়াঃ ম্যাম প্লিয আপনি কিছু একটা করুন!!
আমার চাকরি টা আর থাকবেনা

—-++++

রাফিয়াঃ ওকে ম্যাম!!
আমি এখুনি পালাচ্ছি!!

আমরা সবাই হসপিটালে আসলাম!!

আমান নার্সকে বলে উঠলো–
অই নার্সকে কোথায় পাবো??

আমরা??

সিয়া( নার্স)ঃ আমার যতটুকু মনে হয়
রাফিয়া ওর্য়াডে আছে

রিমিঃ তাহলে চলুন! আমরা সেখানেই যাই।

আমানঃ চলো।

আমরা ওয়ার্ডের দিকে গেলাম
কিন্তু সেখানেও
অই নার্স টাকে পেলাম।

সিয়াঃ আমার মনে হয় পালিয়েছে।

আমান বলে উঠলো–
পালিয়েছে মানে???

সিয়াঃ ও অনেক কিছু জানতো তাই।

আমি মাথায় হাত দিয়ে বলে উঠলাম–
হায় আল্লাহ কী হবে এখন??

আমরা যা একটু ক্লু পাচ্ছি
সবকিছুই হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে।




আয়ুশ আবার ও চাকু ধার করতে লাগলো।

আদিঃ অইদিন কনফারেন্স যে চারটি ছেলে রিমিকে নিয়ে বাজে কথা বলছিলো
তাদের তুই খুন করেছিস।

খেলার দিন জনি রিমিকে নিয়ে বাজে কথা বলেছিলো বলে জনিকেও মেরে দিলি
কেন আয়ুশ কেন?

তুই কেমন যেনো একটা হয়ে গেলি।
মানুষ খুন করতেও তোর হাত কাঁপলো নাহ??
শুধুমাত্র অই মেয়েটার জন্য??

অই মেয়েটা কে তোর আয়ুশ ???
যার জন্য তুই এতো ডেস্পারেট???

আয়ুশ খানিক্টা উচু গলায় বলে উঠে—

কেন করি??
জানতে চাস???
অই মেয়েটার পায়ের দিকেও কারো বাজে দৃস্টি গেলে আমি তার চোখ উপড়ে ফেলবো।

আমি নিজের জিনিসে অন্য কারো দৃসটি
সহ্য করি নাহ।।
আচ্ছা ডক্টর আমান আজকাল একটু বেশিই
অই মেয়েটার সাথে থাকে যা আমার একটুও সহ্য হয়না!!

আদিঃ আয়ুশ!!!
(অবাক হয়ে)
তোর মাথা ঠিক আছে??
ইউ এক্ট লাইক আ সাইকো।

আয়ুশের হাঁসিটা বাঁকা করে বলে উঠে–
এখন তুই যেতে পারিস।

আদিঃ তুই আমান ভাইয়ার কোনো ক্ষতি করবি নাহ!!
এই আমি বলে দিলাম।।

আদি গটগট করে চলে যায়।

আয়ুশ বাঁকা হাঁসি দেয়।৷

উনি আমার অয়ন। সেদিন এক্সিডেন্ট এ উনি না আয়ুশ মারা গেছে। এখন আয়ুশের পরিচয়ে যে আছে সে আয়ুশ না আমার অয়ন।
উনাকে অই মেডিসেনের মাধ্যমে স্মৃতিশক্তি কেড়ে নিয়েছে।

আমার কথা শুনে আমান বলে উঠলো—
কিন্তু আমাদের কাছে কোনো প্রুফ নেই!!

আমি বলে উঠলাম– কীভাবে থাকবে?
আমরা যেই প্রমান জোগাড় করি সেটাই আমাদের হাত-ছাড়া হয়ে যায়।

আমামঃ অনেক বড় ষড়যন্ত্র চলছে! রিমিপাখি!!
যেই এইসব কাজ করছে সে অনেক কিছু নিয়েই মাঠেই নেমেছে। এতো সহজে সে আমাদের প্রমান পেতে দিবেনা।

রিমিঃ এখন কী হবে?? আমাদের বাংলাদেশ যাওয়ার সময়ও ঘনিয়ে আসছে।

আমানঃ আমি দেখছি কিছু করা যায় নাকি।

আমি কফি মগটার রাখতে যাবো।
কিন্তু ফ্লোরে কিছু একটা তৈলাত্তক ছিলো।

আমি পা পিছলে পড়তে যাবো তার আগেই আমান
স্যার আমাকে কোমর পেচিয়ে ধরলো।

এক্টু হলেই আমি পড়ে যেতাম।

এই দৃশ্য দেখে কারো রাগে হাত পা কাঁপছে।
তার চোখ দিয়ে যেনো আগুন জ্বড়ছে।
নিজেকে সামলানো যেনো দায় হয়ে পড়েছে।

আমানঃ রিমিপাখি তুমি ঠিক আছোতো??

আমার প্রচন্ড অসস্হি লাগছে।

আমার অবস্হা বুঝতে পেরে আমান বলে উঠলো–

আমি এখন আসছি!!

টকোপিকেও নিয়ে যাই।

আমার সাথে কিছু খেয়ে নিবে।

আমান দ্রুত ঘর ত্যাগ করলো।

আমি বারান্দার গ্রিল ধরে আপনমনে
ভাবছি উনাকে কিভাবে ফিরে পাবো।
আমার যে আর ভালো লাগছেনা।

সব প্রমান ই হাত থেকে চলে যাচ্ছে।

এদিকে৷,,,

একজন বলে উঠলো–
সব রেডি???

—হ্যা সব রেডি।।

–//গুড এইবার কালকে এই খেলার শেষ দেখবো আমরা হা হা হা!!

।।।।।
আমি এইদিকে কিছু ভাবছিলাম তখনি হঠাৎ কেউ আমাকে হেচকা টান দিয়ে একেবারে দেঁয়ালের সাথে মিশিয়ে দেয়।

আমার ভয়ে হাত-পা কাঁপছে। ঘরের লাইট অফ হয়ে যায়।

আমার ঘরের দরজা অটোমেটিক বন্ধ হয়ে যায়।

আমরা সামনে থাকা মানুষের মুখটা অন্ধকারে দেখা যাচ্ছে।

সে আমার দিকে ঝুকে পড়ে।

তার গরম নিঃশ্বাস আমার কাঁধে পড়ছে।

আমি বলে উঠলাম–

অয়ন আপনি এসেছেন।

আমার কথায় যেনো ব্যক্তিটি অবাক হয়ে গেলো।

আমি আবার ও বলে উঠলাম–অবাক হচ্ছেন?ম
আমি তো সেদিনই আপনাকে চিনি ফেলেছিলাম।

যেদিন আপনি আমার হাতে চুড়ি পড়িয়েছিলেন

আপনার ছোঁয়া যে আমার বড্ড চেনা।
আমি আমার অয়নকে চিনতে ভুল করতে পারি?
আমি জানি আপনিই সেই অজানা

উনি আমার গাল গুলো হাতে দিয়ে ধরে বলে উঠেন—

রিমিপরী!!

রিমিপরী এই ডাক কতদিন পরে উনার৷ মুখে শুনলাম।

অয়নঃ তুমি তাহলে আমাকে চিনেই ফেললে।

রিমিঃ বড্ড ভালোবাসি তাই!।
কেন আপনি সামনে আসছেন না?
নিজের পরিচয় প্রকাশ করছেন না অয়ন।
কেন আয়ুশ হয়ে আছেন???কেন এতো লুকোচুরি??
কেন আয়ুশ হয়ে আছেন??
আপনি কি জানেন না আপনার এই অবহেলা বড্ড পোড়ায়।

অয়ন এইবার মিহি কন্ঠে বলে উঠে–
সব জানতে পারবে রিমিপরী!!
এমন কিছু সত্য লুকিয়ে আছে যার জন্য আমাদের জীবন থেকে ২ বছর বিচ্ছেদময় কেটেছে।
কিন্তু আমি খুব শীগ্রই অয়ন হয়ে ফিরে আসবো।

আমি বলে উঠলাম—
হয়তো আপনার ভালোবাসার টানেই।
বাংলাদেশ থেকে সুদুর লন্ডনে চলে এলাম।
আর আপনাকে ও পেয়ে গেলাম।

অয়ন আমার কপালে গভীরভাবে ভালোবাসার পরশ একেঁ দিলো।

।#দ্বিতীয়_অধ্যায়
চলবে কি??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here