প্রেমময়নেশা(The story of a psycho lover) #পর্ব-44 #Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)

0
462

#প্রেমময়নেশা(The story of a psycho lover)
#পর্ব-44
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)

উনাকে ঘুমন্ত অবস্হায় এইভাবে দেখতে পাবো ভাবিনি। আমি উনার দিকে ঝুকে আরো ভালো করে পর্যবেক্ষন করতে লাগলাম। কতদিন পরে উনাকে এইভাবে দেখলে পেলাম। আপনা আপনি চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়লো। হঠাৎ উনাকে দেখতে দেখতে খেয়াল করলাম উনার কাধেঁ কিসের একটা দাগ যেনো। অনেক পুরোনো ক্ষত মনে হচ্ছে ঠিক ২-১ বছর আগের। যেহুতু আমি একজন মেডিকেলের স্টুডেন্ট এই বিষয় কিছুটা হলেও আমি জানি।

আমি আরেকটু ঝুকে উনার কাঁধ থেকে শার্ট টা সামান্য সরিয়ে দেখতে লাগলাম। দাগটা কোনো একটা বড় ওটির!!
উনার কি কোনো অপারেশন হয়ে ছিলো???

হুহ!! অনেক বড় রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি।।

তখনি আয়ুশের ঘুম বেজ্ঞে গেলো।।

রিমিকে এতো কাছে দেখে সে ভরকে গেলো।

রিমির নিঃশ্বাসে তার কাধে পড়ছে।।

আয়ুশঃ আরে তুমি এখানে??

আমি কিছু একটা ভাবছিলাম উনার ডাকে ভাবনা থেকে ফিরে আসি।।

আমি খানিক্টা নিজেকে শান্ত করে বলে উঠলাম–
আপনি ঘুম থেকে উঠেছেন???

আয়ুশঃ আগে প্লিয আপনি আমার থেকে উঠুন!!

রিমিঃ ওহ সরি সরি।

আমি তাড়াতাড়ি উনার থেকে উঠে বসলাম।।

উনি উঠে বসে কিছুটা ভাব নিয়ে বলে উঠলেন-+
জানি আমি হ্যান্ডসাম তাই বলে ঘুমন্ত অবস্হায় সুযোগ নিবে।

আমি চোখ পাকিয়ে বলে উঠলাম–।

আমার এতো শখ ও নেই!!

আচ্ছা আমি এই রুমে আপনার সাথে কেন??
এই টা কোন জায়গা?? তাও আপনার এন্গেজমেন্ট রেখে!!
আচ্ছা আপনি এখানে ইশা তা জানে??

আয়ুশঃ কালকে ড্রিংক করে কি অবস্হা নিজের করেছিলেন।

আমিই তোমাকে এই রুমে নিয়ে এসেছিলাম যাতে কেউ না জানে নাহলে কেলেংকারী হয়ে যাবে।

আর ড্রিংক করে কিসব বকে গেলে তুমি নাকি দেবদাস হয়ে গেছো।

হা হা হা।।

ইসস প্রচন্ড লজ্জা লাগছে কাল মাতাল হয়ে কি কি করেছি আল্লাহ ই জানে।

আয়ুশ বাঁকা হেঁসে বলে উঠলো–
আর কি বলেছে জানো??
তোমার নাকি আদর লাগবে।

এইবার তো আমার লজজায় মাটিতে ঢুকে যেতে ইচ্ছে করছে।।

আমি এইসব কি করেছি।

কিন্তু আমি তো শাড়ি পড়ে ছিলাম আমার গাঁয়ে গাউন কেন??

আমি প্রশ্ন ছুড়ে দিলাম।

আয়ুশ শয়তানী হাঁসি দিয়ে বলে উঠলো-+
একটি রুমে একজন অবিবাহিত ছেলে ও একজন অবিবাহিত মেয়ে

তার মধ্যে মেয়েটি ড্রাংক।
তাহলে তুমি বুঝে নাও আমাদের মধ্যে কি হতে পারে

আয়ুশ রিমিকে জাস্ট ভয় দেখাতে চেয়েছিলো।

কিন্তু আয়ুশকে অবাক করে দিয়ে রিমি বলে উঠলো–

আমার ড্রেস কোনো হোটেলের মেয়ে সাটফ পাল্টে দিয়েছে।

কেননা আমার ভালোবাসার প্রতি আমি দৃঢ় বিশ্বাস আছে সে এমন কাজ করবে নাহ যাতে তার রিমিপরীর অসম্মান হোক!!

আয়ুশ অবাক হয়ে তাঁকিয়ে রইলো রিমির দিকে রিমির জায়গায় অন্য কেউ হলে কেঁদে কেটে একশেষ হয়ে যেতো।

আয়ুশ আর কিছু না বলে ওয়াশরুমে চলে গেলো।

এদিকে
আমিঃ কি হলো মিঃ আয়ুশ খান ওরফে অয়ন চুপ হয়ে গেলেন যে আপনার প্রতিটা স্টেপ আমাকে বুঝিয়ে দেয় আপনিই অয়ন।

এখন আর কিছু কাজ শুধু বাকি।
তাহলেই প্রমান হয়ে যাবে আপনিই আমার অয়ন।
তখন দেখবো আপনি কি করে অস্বীকার করেন।।

তখনি আয়ুশ ওয়াশরুম থেকে বের হলো।

আমি বলে উঠলাম–

আমাকে হোটেলে ফোন করতে হবে!!

আয়ুশ
রিমির দিকে তাঁকিয়ে বলে উঠলো–আগে
ফ্রেশ হয়ে আসো!!

আমি কিছু না বলে চলে গেলাম!!

আয়ুশ ফোন টা হাতে নিয়ে রিমির হোটলের নাম্বারে ডায়াল করলো।

আমি বের হতে হতে বললাম–

দিন আমাকে ফোনটা

আয়ুশঃ আমি ডায়েল করছি!!

আমি বলে উঠলাম–

আমাদের হোটেলের নাম্বার কোথায় পেলেন??
(ভ্রু কুচকে)

আয়ুশ হয়তো এইরকম প্রশ্ন আশা করিনি।

আয়ুশ বলে উঠলো–

সিম্পাল!!
এইসব নাম্বার আমার কাছে থাকেই!

আমি সন্দেহের চোখে বলে উঠলাম–

তাই???

আয়ুশঃ হ্যা!!

আমি বলে উঠলাম–
আমাকে ফোনটা টা দিন আমি আমান স্যার কে ফোন করবো।
আসলে আমার মনে হয় আমান স্যার অনেক টেনশন করছে আমার জন্য।

আমানের নাম শুনে আয়ুশের মাথায় ধপ করে আগুন জ্বলে গেলো।।

রিমি কেন?? অই আমানের নাম নিবে কেন?
আর অই আমানের বা কেন??
রিমিকে নিয়ে এতো টেনশন কেন??

আয়ুশ মনের কথায় মনেই রেখে

রিমির দিকে ফোন এগিয়ে দিলো।

আমি তাড়াতাড়ি স্যার এর নাম্বারে কল দিলাম।

আমান মাথা নিচু করে ড্রাবিং সেট এ বসে ছিলো।

ফোন এর শব্দে সে তাড়াতাড়ি ফোন রিসিভ করে।

যদি রিমিপাখির কোনো খবর পাওয়া যায়।

আমানঃ হ্যালো।

রিমিঃ আমান স্যার!

রিমির কন্ঠ শুনে আমানের যেনো জান ফিরে এলো।

আমানঃ রিমিপাখি তুমি ঠিক আছেতো??

কোথায় ছিলে তুমি??
কত্ত টেনশন হচ্ছিলো আমার!!

আমি বলে উঠলাম–

শান্ত হোন আমার স্যার!!

আমানঃ কীভাবে শান্ত হবো রিমিপাখি??
তুমি জানো
আমি কতটা চিন্তায় ছিলাম
সারারাত তোমায় খুৃজেছি!!
ফোনটাও অফ ছিলো তোমার

(শেষের কথাটা আমান খানিক্টা রেগে বলে)

আমি বলে উঠলাম–
আমান স্যার আপনি চিন্তা করবেন নাহ!!
আমি আপনাকে একটা এড্রেস পাঠিয়ে দিচ্ছি!!

আপনি আসুন আপনাকে সব বলছি।।

এদিকে,,

আয়ুশঃ কত দরদ ( মনে মনে)

আয়শের চোখ একেবারে লাল হয়ে গেছে।

(লেখিকাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)

আমান হন্তদন্ত হয়ে হোটেলে আসে।

আমানঃ আরে রিমিপাখি এই হোটেলেই ছিলো আর আমি শুধু শুধু বাইরে খুঁজলাম!!

আমি সোফায় বসে ছিলাম।

আমান স্যার কে দেখতে পেয়ে আমি বলে উঠলাম–

আমান স্যার!!

আমান তাড়াতাড়ি রিমির কাছে গেলো।

রিমিকে দেখে আমান বোধহয় জান ফিরে পেলো।

আমানঃ রিমিপাখি তুমি ঠিক আছো তো??
কিছু হয়নি তো তোমার!!
আমাকে জানাবে না? এতোটা কেয়ারলেস এর মতো কেউ এমন করে???

আমার বুঝি টেনশন হয়না??

আয়ুশ পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো।

আয়ুশঃ রিমিপাখি??বাহ!!
(মনে মনে)

আমি বলে উঠলাম–
আসলে আমি কিছুটা অসুস্হ হয়ে পড়েছিলাম(আমান কে এখন বলতে চাইনা কালকের কথা)

আমান কিছু বলবে তার আগেই আয়ুশ বলে উঠে–

কিন্তু আমি ঠিক সময় উনার কেয়ার নিয়েছি
এখন উনি সুস্হ ( দাঁতে দাঁত চেপে)

আমান এতোক্ষন আয়ুশকে খেয়াল করেনি।

আমান বলে উঠে–
আপনি এখানে??

আয়ুশ ঃ কেন আমার থাকার কথা ছিলো নাহ বুঝি

আমান ঃ আসলে

আমি বলে উঠলাম–
তার জন্য আপনাকে অনেক থ্যাংকস!!

আমান স্যার আমি এখন অনেক টায়ার্ড।

চলুন আমরা হোটেলে ফিরে যাই!!

আমানঃ তুমি কি যেতে পারবে নাকি আমি ধরবো।

এই কথা শুনে আয়ুশ নিজের হাত মুষ্ঠিবদ্ব করে নেয়।

আমি বলে উঠলাম–

নাহ আমি পারবো।

এই বলে আমি গাড়ির দিকে যেতে নিলাম।

আমানঃ আপনাকে আবার ও থ্যাংকস

আমান ও চলে গেলো।

আয়ুশ তাদের যাওয়ার পানে তাঁকিয়ে বাঁকা হাঁসলো।

তারপর শিষ বাঁজাতে বাঁজাতে

নিজের গাড়ির দিকে চলে গেলো।

এদিকে,,
টকোপিকে নিয়ে হসপিটালের করিডোরে বসে আছি আমি!!

তখনি আমান বের হলো।

আমান রিমির কাছে এসে বলে উঠলো–

একটা ইনফোরমেশন পেয়েছি

খান বাড়ির প্রায় সবাই লন্ডন
হসপিটালেই নিজেদের ট্রিটমেন্ট করায় বেশিরভাহ!!

রিমিঃ তাহলে চলুন সেই হসপিটালে

আমান বলে উঠলো–

সিটি হসপিটালে গিয়ে কী হবে রিমিপাখি??

আমি বলে উঠলাম–

অনেক ইনফোরমেশন আমরা পেতে পারি।

আমার মনে হচ্ছে উনার অনেক বড় একটা অপারেশন হয়েছিলো।

আমানঃ কিন্তু তুমি কি করে জানলে??

(অবাক হয়ে)

আমি বলে উঠলাম–
উনার কাঁধে আমি দাগ দেখেছি খানিক্টা বড় অপারেশন হলে যে দাগ হয় সেইরকম..!!
সেই দাগ যে খুব পুরনো কিংবা খুব নতুন তা নয়।

দুই বছর আগের দাগ!!

আমানঃ তার মানে ২ বছর আগে আয়ুশের অনেক বড় অপারেশন হয়েছিলো??
কিন্তু কেন?

রিমিঃ সেইটাই তো আমাদের বের করতে হবে।

#দ্বিতীয়_অধ্যায়

চলবে কি??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here