প্রেমময়নেশা(The story of a psycho lover ) #পর্ব 48 ( বিপাকের মায়াজালে) #Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)

0
375

#প্রেমময়নেশা(The story of a psycho lover )
#পর্ব 48 ( বিপাকের মায়াজালে)
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)

অয়ন আমার কাধে নিজের থুতনি রাখে।অয়ন বলে উঠে-রিমিপরী! আমি লজ্জা মাখা হাঁসি দিয়ে বলে উঠলাম–হুম! অয়ন বলে উঠলো– আমাকে এইবার যেতে হবে। আমি বলে উঠলাম– আমার কেন জেনো প্রচন্ড ভয় করছে। আবার যদি কোনো বিপদ আসে।
অয়ন আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে উঠে-
আমি আছিতো রিমিপরী!তোমার সাইকো তোমার সাথে আছে সো নো টেনশন।
আমি চুপ হয়ে রইলাম। উনি আমার গলায় নিজের ঠোটের উষ্ম ছোয়া দিতে লাগলেন। হঠাৎ এইরকম আক্রমন এ আমি হচকিয়ে গেলাম। সারা শরীর কাটা দিয়ে আসছে। আমি কিছু বলবো
তার আগেই উনি বলে উঠেন—

হুসসসস রিমিপরী জাস্ট ফিল করো।

আমিও পরম উষ্মতায় চোখ বন্ধ করে ফেললাম।

হঠাৎ সব লাইট অন হয়ে যায়।

আমি বুঝতে পারলাম উনি চলে গেছেন

এইবার মনে খানিক্টা শান্তি পেলাম। আমার সাইকো আমারই আছে।

।।।।।
মিসেস কলি নিজের শাড়ির আচলটা দিয়ে মুখ মুছে নিলো। মার্চ মাসেই একেবারে গরম এসে পড়েছে।

তখনি রুশান রুমে ঢুকতে ঢুকতে বলে উঠলো–
কলি রেডি হয়ে নাও!!

মিসেস কলি বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলে উঠলো–

রুশান এইসব কি???
আমি তোমার সম্পর্কে কি হই তা ভুলে গেছো???

(ধমক দিয়ে)
রুশান এর মুখে খানিক্টা বাঁকা করে বলে উঠলো–
সরি!! আসলে পুরনো অভ্যাস তোহ!!

মিসেস কলিঃ আমরা দুজন কলেজ থেকে ফ্রেন্ড বাট এখন তুমি আমার ছোট বোনের স্বামী তাই আমাকে আপু বলেই ডাকলেই ভালো হবে।
তাছাড়া বাইরের সবার সামনে তো ঠিকই আপু বলো।

রুশানঃ আচ্ছা বাদ দাও!! যে কাজের জন্য এসেছি চলো।

কলিঃ কোথায়???

রুশানঃ তুমি নাকি অসু্স্হ তাই ডক্টরের কাছে নিয়ে যাবো।

কলিঃ আমি যেতে পারবো নাহ!!
তাছাড়া আমি এখন সুস্হ আছি।

রুশানঃ কেন( ভ্রু কুচকে)
রুশনি তো বললো
তোমার শরীর নাকি ঠিক নেই।

কলি কিছু বলবে তার আগেই রুশনি এসে বলে উঠে–

আচ্ছা আপু!! রুশান যখন বলছে তখন যাওনা।
পরে আবার সবাই বলবে আমরা তোমাকে হেলা করে রাখি এতো দায় ভার আমরা কেন নিবো বাপু???

অনিচ্ছা সত্ত্বেও কলি রাজি হয়।

সুমু হাতে ঘড়িটা পড়ছে। আজ ইন্টারভিউ।
চাকরি টা পেলে তারও নিজের একটা পরিচিতি গড়ে উঠবে।

আজ সকাল থেকেই কাব্য শুধু কেঁদেই যাচ্ছে।
সুমু কাব্যকে কলে নিয়ে বলে উঠে–

ওরেএএ আমার মানিক কি হয়েছে আমার বাচ্ছাটা???

কাব্য কেঁদেই যাচ্ছে।

সুমু কাব্যের গাঁয়ে হাত দিয়ে দেখে জ্বর আছে নাকি।

সুমুঃ জ্বর ও তো নেই।
তাহলে কাঁদছে কেন???

ফারহান এর মা রুমে এসে বলে উঠে–
বৌমা তোমার ইন্টারভিউ শুরু হয়ে যাবে।

তুমি এখনো রেডি হওনি।

সুমু ঃ মা আমি পুরো রেডি।

বাট দেখুন না মা কাব্য কত কান্না করছে।

ফারহান এর মা হাল্কা হেঁসে বলে উঠেন—

চিন্তা করো নাহ।
মা। সন্তান তো মাকে ছেড়ে থাকতেই চায়না।

আমাকে দাও তুমি রেডি হয়ে নাও।

এই বলে মিসেস শিলা কাব্যকে কোলে তুলে নিলো

শিলাঃ ওরে আমার দাদুভাই কাঁদে না।।
কাব্য শুধু সুমুর দিকেই তাঁকিয়ে কেঁদে যাচ্ছে।

তখনি ফারহান আসে—
সুমু তুমি রেডি??

সুমুঃ হুম!!

শিলাঃ ফারহান শুন বৌমাকে তুই ড্রোপ করে দিয়ে আয়।

ফারহানঃ মাহ আজকে ড্রাইভার কে বলে দিচ্ছি ড্রাইভার দিয়ে আসবে কেমন??

শিলাঃ কেন??

সুমু ঃ তুমি যাবেনা???

ফারহানঃ অফিসে একটা মিটিং আছে এটেন্ট করতে হবে।

শিলাঃ বৌমা একা যাবে???

সুমুঃ মাহ আপনি টেনশন করছেন কেন???

ড্রাইভার কাকু যাবে তোহ!!

ফারহানঃ সেরকম হলে আমি নাহয় আসার সময় তোমাকে ড্রপ করে দিবো।

সুমুঃ আমি ফিরে আসবো। তুমি চিন্তা করোনা।
মিটিং কন্সাট্রেন্ট করো।

।।।।।

আমান স্যার আর আমরা আজকে লন্ডন শহর ঘুড়বো।

মুলত স্টুডেন্টস দের রিকুয়েস্ট এইটা।

আমিও আজকে প্রানখুলে ইঞ্জয় করতে চাই।
কেননা আমার সাইকোকে পেয়ে গেছি

এখন কিসের চিন্তা???

তাছাড়া লন্ডন শহর টা দেখার মতো।

টকোপি আমার কোলে শুয়ে আছে।

আমান আজকে লক্ষ করছে অন্যদিনের তুলনায় রিমি আজকে একটু বেশিই হাঁসি খুশি।

কালকে যে মেয়েটা সারাদিন কেঁদে যাচ্ছিলো।

আজ তার মুখে কি সুন্দর হাঁসি বেশ ভালো লাগছে
আমানের।

টিনা, লিসা আমি বাকিরা সবাই বাসে উঠবো।
হসপিটাল থেকে আমাদের জন্য আলাদা বাস রয়েছে।
উদ্দেশ্য আজকে যতদুর পারি ঘুড়বো।
উনাকে মেসেজ করেছি।

উনি বলেছেন পিক তুলে পাঠাতে।

আচ্ছা উনি একটু আসলে কি হতো।

অভিমান হচ্ছে যে আমার। আমি যে উনাকে কত মিস করি বুঝেন না উনি।

টকোপি আমার দিকে তাঁকিয়ে আছে।

আমি বলে উঠলাম–

উনি আমাকে একটুও কেন বুঝে না বলতো??

তখনি আমার ফোনে ম্যাসেজ এলো।

— আমার রিমিপরী!! মন খারাপ করো নাহ।
আজকে আমাকে অফিসে জয়েন করতে হচ্ছে।
যদিও আমি অয়ন। কিন্তু এখন আমাকে আয়ুশ হয়েই থাকতে হচ্ছে তাই তার কাজও আমাকেই করতে হচ্ছে।
ভালো করে ঘুরো এবং সেফে থেকো।
লাভ ইউ রিমিপরী!!

অজান্তেই আমার মুখে হাঁসি ফুটে উঠলো।

আমান একঝলক রিমিকে দেখে
বইয়ে মুখ গুজে দিলো।

তখনি আমার মনে পড়লো আরে
আমার ফোনে তো চার্জ নেই।
এখনি গিয়ে চার্জার টা নিয়ে আসি।

আমি
টকোপিকে আমান স্যার এর কাছে দিয়ে বলে উঠলাম–

ওকে একটু দেখুন! আমি আসছি।।

আমানঃ এখন আবার কোথায় যাবে রিমিপাখি??
(অবাক হয়ে)

আমি বলে উঠলাম–
চার্জার টা নিয়ে আসি।

আমানঃ
চলো আমিও যাই।

আমিঃ আপনি এখানেই থাকুন আমি আসছি।

রিমি বাস৷ থেকে বের হওয়ার সাথে সাথেই

কিছু দূরে থাকা একটা গাড়িতে বসে থাকা
লোক কাউকে ফোন করে–

রিমি মিস বাস থেকে নেমেছেন।

——–

—ওকে বস। সব কাজ হয়ে যাবে।

আমি বাসের দিকে যাবো
তখনি কেউ আমার
মুখে রুমাল চেপে ধরে
আমি চিৎকার করতে যাবো তার আগেই

আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম।।

তীব্র আলো আমার মুখে এসে পড়ায়

আমি চোখ মেলে তাঁকায়।

একটা অপরিচিত রুম। এ আমি কোথায়
এলাম?.

তখনি কেউ মেয়েলি কন্ঠে বলে উঠে–

বাহ কতদিন পরে তোমাকে দেখলাম রিমি!!

কন্ঠ টা বেশ পরিচিত।

আমি তাকে দেখেই অবাক হয়ে যাই

এ আমি কাকে দেখছি।

অফুস্টস্বরে বলে উঠলাম–

পায়েল আপু!!

পায়েল শয়তানি হাঁসি দিয়ে বলে উঠলো–

যাক আমাকে মনে রেখেছো তাহলে আমিতো ভেবেছি আমাকে ভুলেই গেছো।

আমি বলে উঠলাম–
তুমি এখানে এতো বছর পর।

পায়েলঃ আমাকে আশা করোনি বুঝি???

রিমিঃ আমাকে এখানে কেন আনা হয়েছে???

— বেশি বুঝলে যা হয়!!
যেমন ছিলে তেমনি ভালো ছিলে শুধু শুধু এতো অতীত ঘাটতে গিয়েই যে ফেঁসে গেছো।

এই বলে পকেটে হাত রেখে কেউ রুমে আসে।

পায়েলঃ ইশান বেইবি!!

আমি এইবারেও চমকে গেলাম।

এতো আয়ুশের ছোট ভাই ইশান খান।

কোনোদিন৷ দেখিনি কিন্তু নাম শুনেছি।

আমি বলে উঠলাম–

ইশান?

পায়েলঃ আমার স্বামী ইশান

রিমিঃ স্বামী????

ইশানঃ ওহ তুমিতো সেই ব্রেব গার্ল রিমি।

তাই না সত্যি তোমাকে দেখার অনেক শখ ছিলো।
যে কিনা নিজের ভালোবাসার টানে বাংলাদেশ থেকে সুদুর লন্ডনে চলে এসেছে।

আমি এইবার রেগে গেলাম
আমি বলে উঠলাম–

আমাকে এখানে কেন আনা হয়েছে????

পায়েলঃ এই একদম আস্তে!!
কাকে রাগ দেখাও হ্যা???

ইশানঃ কেন আনা হয়েছে৷
অইযে বললাম নাহ অতি চালাকি ভালো নাহ।

অয়ন চৌধুরী আয়ুশ খান এদের ইনফরমেশন কালেক্ট করাও শুরু করে দিয়েছো।

আমাদের কি বোকা মনে হয়???

আমি বলে উঠলাম–
তার মানে তোমরা
এইসব এর পিছনে???(অবাক হয়ে)
আর পায়েল আপু তুমি এতোটা নীচ।
উনার ভালোবাসার মর্যাদা তো দিতেই পারোনি কোনোদিন এখন আবার এতো খারাপ কাজও করে যাচ্ছো।

পায়েলঃ এই মেয়ে একেবারে চুপ বুঝিছিস।

রিমিঃ নাহ আমি চুপ থাকবো নাহ!!

( চিৎকার করে)

তোমরা আয়ুশকে খুন করেছো।
আর উনার যাতে স্মৃতি শক্তি চলে যায় সেই ব্যবস্হাও করেছো।
জানোয়ার গুলো

ইশানঃ এই মেয়ের তো ঝাচ আছে দেখি।

পায়েল এইবার ঠাসস করে রিমির গালে চর বসিয়ে দেয়।

পায়েলঃ কি বললি??
তুই।

রিমিঃ ঠিক বলেছি। একটা মেয়ে হয়েও এতোটা খারাপ কী করে হতে পারো???

পায়েল এইবার আমার গলা চেপে ধরে
–বেশি বুলি ফুটেছে না মুখে।

ইশান কোনোরকম পায়েল এর থেকে আমাকে ছাড়িয়ে নেয়।

আমি গলা ধরে কাঁশতে থাকি।

ইশানঃ কি করছো মরে যাবে তো।

আমাদের খেলা কিন্তু শেষ হয়ে যাবে।

আমি কোনোরকম বলে উঠলাম–
অয়নের হাতেই তোমাদের পতন নিশ্চিত।

পায়েল আবারও আমার চুলের মুঠি ধরে বলে উঠে–

আমাদের অয়ন শাস্তি দিবে তাই না

এই বলে দুজনেই হু হা করে হেঁসে দেয়।

ইশানঃ যার কয়দিন পরে ইশার সাথে বিয়ে।

পায়েল আরো জোড়ে আমার চুলের মুঠি ধরে বলে উঠে-
আমিও দেখতে চাই।
অয়ন আমাদের কি করতে পারে।

এই বলে আমার চুলের মুঠি ধরে আমাকে জোড়ে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়

আমার মাথা দেয়ালের সাথে জোড়ে ভারি খায়
আমি আহ করে উঠি।

কপাল থেকে গড়গড় করে রক্ত গড়িয়েই পড়ছে।

পায়েলঃ এই কে আছো।

একে সম্পুর্ন বেধে দাও
একটা দানাও একে দিবেনা
আমাদের জানোয়ার বলা।
ততক্ষনে
ম্যমও চলে আসবে।

কিছু মেয়ে এসে আমাকে চেয়ারের সাথে বেঁধে দেয়।

কপাল থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে এখনো।

চেয়ারের পাশেই কাঁচের টুকরো ছিলো।

আমি নড়াচড়া করতেই কাঁচ গুলো পায়ে ঢুকে যায়।

প্রচন্ড ব্লিডিং হচ্ছে হায় আল্লাহ!!

সহায় হোও।

আমি জানি উনি আসবেন উনার রিমিপরীর জন্য।

আমার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। কপালেও প্রচন্ড ব্লিডিং হচ্ছে।

আমার চোখ ঝাপ্সা হয়ে যাচ্ছে।

রিমি ঃ অয়ন কোথায় আপনি???
আমি যে আর পারছিনা
বড্ড কস্ট হচ্ছে। এ কোন বিপাকের মায়াজালে ফেঁসে গেলাম।

।#দ্বিতীয়_অধ্যায়
চলবে কি??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here