প্রেমময়নেশা(The story of a psycho lover) #পর্ব- 52,53( রহস্য সমাধান-২) #Jannatul_ferdosi_rimi( লেখিকা)

0
467

#প্রেমময়নেশা(The story of a psycho lover)
#পর্ব- 52,53( রহস্য সমাধান-২)
#Jannatul_ferdosi_rimi( লেখিকা)

মল্লিকা কফি কাপে চুমুক দিচ্ছে এবং কিছু ফাইল ঘাটছে। তখনি ইশা গটগট করে মল্লিকার কাছে আসে। ইশাকে দেখে মল্লিকা কফি কাপ টা টেবিলে রেখে বলে উঠলো–
আরে ইশা যে বসো এখানে।
ইশা বলে উঠে–
আমি এখন বসবো নাহ মল্লিকা আন্টি।
কালকে থেকে আয়ুশ কে কল করে যাচ্ছি বাট পাচ্ছিনা। শুধু বন্ধ দেখায়। এইভাবে আয়ুশ আমাকে এভোয়েড করছে কেন?অই মেয়েটার জন্য।
মল্লিকা বলে উঠে–
আয়ুশ আজকে অফিস জয়েন করেছে।
তুমি আমার
পাশে বসো।

ইশাঃ কিন্তু আয়ুশ।

মল্লিকাঃ বসো( গম্ভির কন্ঠে)

ইশা বসে পড়লো।

মল্লিকা এইবার বলে উঠলো–

আমি এখুনি দেখছি। দাঁড়াও ফোন করেনি।
এই ছেলেটাও নাহ যা হয়েছে। এতোক্ষন তো

তখনি কেউ বলে উঠে–
আপনাকে ফোন করতে হবেনা।
আমি চলে এসেছি।

ইশা ও মল্লিকা তাঁকিয়ে দেখে অয়ন চুল গুলো ঝাড়তে ঝাড়তে আসছে।

ইশা দৌড়ে অয়নের কাছে গিয়ে বলে উঠলো–

আয়ুশ কোথায় ছিলে তুমি??

মল্লিকাঃ এইসব কি বেটা?
তুমি নাকি ইশার ফোন রিসিভ করছিলেনা।

অয়ন বাঁকা হেঁসে বলে উঠে–
বলবো বলবো সব বলবো।
নিদ্র আংকেল আগে আসুক।

মল্লিকাঃ আয়ুশ নিদ্র আংকেল মানে??
উনি তোমার বাবা হয়।
(অবাক হয়ে)

অয়নঃ মিসেস মল্লিকা আপনি একটু শান্ত হোন।

ইশাঃ আয়ুশ তুমি এইসব কি বলছো??

নিদ্র নীচে নামতে নামতে বলে উঠে–

আয়ুশ! তুমি এইসব কি বলছো।
নিজের মাকে তুমি মিসেস মল্লিকা বলছো কেন।

অয়ন বলে উঠে–
সব বুঝতে পারবেন এখুনি।
উনি কিন্তু নিজেও জানেন
উনি আমার মা নন।

ইশাঃ মানে??

নিদ্রঃ এইসব কি যাতা বলছো আয়ুশ? মাথা ঠিক আছে তো??
(রেগে)

অয়নঃ আমি যে ঠিক বলছি নাকি ভুল বলছি
তা এখুনি বুঝতে পারবেন।
এদিকে,,
মল্লিকাঃ এইসব কি বলছে অয়ন??কিছু বুঝে গেলো না তো।

নাহ কী করে বুঝবে? ওর তো কিছুই মনে নেই।

অয়ন বলে উঠে–
কি মিসেস মল্লিকা কী ভাবছেন?
এইটাই ভাবছেন যে
অয়ন আবার কিছু বুঝে গেলো না তো।

ইশাঃ অয়ন??

আয়ুশ ঃ হ্যা আমি অয়ন!
অয়ন চৌধুরী!!

ইশা ও নিদ্র যেনো স্তব্ধ হয়ে যায়।

নিদ্রঃ তুমি অয়ন??

মল্লিকাঃ এইসব এর মানে কি আয়ুশ??

অয়ন বলে উঠে–
এইসব তো আপনিই শুরু করেছিলেন মিসেস মল্লিকা।
আপনিই বলুন!!

নিদ্রঃ আমি কিন্তু সত্যি কিছু বুঝতে পারছিনা।

অয়নঃ এখুনি বুঝবেন।
তার আগে।

সবাই ভিতরে চলে আসো।

অয়ন এর বলার সাথে সাথে
আমান, রিমি, ইশান ও পায়েল
সবাই চলে আসে।

মল্লিকাঃ এরা কোথা থেকে আসলো? এখন কী হবে(মনে মনে)

ইশাঃ এই মেয়েটার জন্য তুমি এইসব বলছো তাইনা আয়ুশ??

আমানঃ নাহ ও আমাদের অয়ন।
আয়ুশের খালাতো ভাই।
আপনি হয়তো জানেন অয়ন আর আয়ুশের চেহারা এক।
সেদিন বাংলাদেশে
আয়ুশ আর অয়নের একি জায়গায় এক্সিডেন্ট হয়।
ঠিক এক্সিডেন্ট নাহ। ইচ্ছাকৃত এক্সিডেন্ট।
অয়নকে সেদিন মিথ্যে খবর দিয়ে বিয়ের আসর থেকে
হসপিটালে আনা হয়। সেসব কাজ হসপিটালের কিছু ডক্টর রাই করেছিলো। টাকার লোভে
তার পর অয়নের গাড়িতে ব্রেকফেল করা হয়।
সেদিন লন্ডন থেকে আয়ুশ তার খালামনির(মিসেস কলি)সাথে দেখা করতে এসেছিলো।
আয়ুশের গাড়িতেও ব্রেক ফেল করানো হয়।
কারন আয়ুশ এমন কিছু তথ্য পেয়েছিলো
যার জন্য তাকে মেরে ফেলার প্ল্যান করা হয়।

অয়ন বলে উঠে–
তারপর আমি বলি।
আয়ুশ ও আমার গাড়ি একসাথেই সংঘর্ষ হয়।
আয়ুশের গাড়ি খাদে পড়ে যায়।
যার জন্য আয়ুশের মৃত্য হয়।
যা চাইছিলেন মিসেস মল্লিকা ও রুশান আংকেল।

ইশা চিৎকার করে বলে উঠে–
নাহহহহহহহহহহহহ

অয়নঃ মনে পড়ে ইশা তুমি সেদিন আয়ুশকে কল করেছিলে।

ইশাঃ হ্যা কিন্তু আমার ফোন ধরেনি।

অয়ন ঃ তখনি এক্সিডেন্ট হয় এন্ড

ইশা ধপ করে বসে পড়ে।

আমি তাড়াতাড়ি ইশার আপুর কাছে যাই

রিমিঃ ইশা আপু!!

ইশা আপু চুপ হয়ে রইলেন।

নিদ্রঃ নাহ আমার ছেলের কিচ্ছু হতে পারেনা।
আমার ছেলে বেঁচে আছে।

নিদ্র ও কেঁদে দেয়। এইসব কি শুনছে সে।

আয়ুশ তার বড্ড আদরের ছেলে ছিলো।

নিদ্র আর কিছু শুনতে পারছেনা।

অয়নঃ এখনো তো কিছুই শুনেন নি।
মিসেস মল্লিকা ও রুশান আংকেল আমাকে
আয়ুশ বানালো।
অর্থাৎ আমাকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হলো।
সেখানে আমাকে আয়ুশের পরিচয় দেওয়া হয়
এন্ড আয়ুশকে অয়ন বানানো হয়।

সবাইকে বলা হয় বাংলাদেশে গিয়ে আয়ুশের একটা এক্সিডেন্ট হয় এবং তার একটা বড় অপরেশনও হয়।
হ্যা সেদিন আমারও করা হয়েছিলো। এবং এইটাও বলা হয় সেই এক্সিডেন্ট এ আমার স্মৃতি শক্তি চলে গেছে।

সেইদিন হসপিটালের ডক্টর এবং নার্সদের বলা হয়
আমাকে এমন একটা ইঞ্জেকশন পুশ করতে যাতে আমার স্মৃতি শক্তি চলে যায়। এবং মিসেস মল্লিকা যাতে সহজেই আমাকে আয়ুশ প্রমান করতে পারে।

এবং মিসেস মল্লিকা আমাকে যেমন ইচ্ছে নিয়ন্ত্রন করতে পারে।
কিন্তু অয়ন চৌধুরীকে হারানো কি এতো সোজা?পাসা সেদিন পাল্টেছিলো।

🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸
আমার সেদিন কিছুটা সেন্স ছিলো।
একজন ডক্টর হয়ে আমি জানি কোন ইঞ্জেকশন কোন কাজে লাগে। অনেক গোলমাল আছে। একটা বড় গেল খেলক হচ্ছে সেটা আমি বুঝতে পারছিলাম। তাই
হসপিটালে আমার কিছু লোকদের দিয়ে
ইঞ্জেকশন আমি পাল্টে দিয়েছিলাম। ডক্টর রা কিছুই বুঝতে পারেন নি।
মিসেস মল্লিকাও মনে করেছেন সত্যু বোধহয় আমার
কিছু মনে নেই।
আমি ইচ্ছে করেই আয়ুশ সেজে থাকি।
কেননা এইসব এর পিছনে আসলে কে কে আছে
তা আমাকে জানতে হলে আয়ুশ সেজেই থাকতে হবে।

মল্লিকা
তততর করে ঘামছে।

অয়নঃ আর কে কোথায় আছো??
মিসেস মল্লিকা কেও একটু জল দাও।
কীভাবে ঘামছেন।
এতো এসির মধ্যে থেকেও।

ইশান বলে উঠে—

বোধহয় মিসেস মল্লিকা।
আশা করেননি উনার কীর্তি এতো সহজে ফাঁস হয়ে যাবে।

মল্লিকাঃ সবকিছু মিথ্যে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।

নিদ্রঃ ইশান তুমিও??
উনি তোমার মা হয়।

ইশানঃ হ্যা সৎ মা।
আর সৎ মা কোনোদিন আপন হয়না বাবা। সেটা তুমিও জানো।
সেদিন সায়েরী মিথ্যে বলেছিলো আমাকে ফাঁসানোর জন্য যাতে আমার লাইসেন্স ক্যানসাল লরা হয়। আর সায়েরী কার কথায় করেছিলো??জানো এই মিসেস মল্লিকার কথায়

মল্লিকা কাঁদতে কাঁদতে নিদ্র এর কাছে গিয়ে বলে উঠে–
সবকিছু মিথ্যে নিদ্র।
তোমার তো মনে আছে নিদ্র
এই সংসার এর জন্য আমি কি কি করেছি।

নিদ্রঃ ইশান ভুলে যেওনা।
সুপ্তি(ইশানের মা) আমাদের ঠকিয়ে নিজের প্রেমিক এর সাথে পালিয়ে গিয়েছিলো তখন এই মল্লিকা ই তোমাকে আয়ুশ কে এমনকি আমাকেও সামলিয়েছে।

মল্লিকাঃ চরিত্রহীন মহিলা ছিলো।

ইশানঃ নাহহহহহ আমার মা কোনো চরিত্রহীন নাহ।

অয়ন বলে উঠে—

সত্যি কি সুপ্তি আন্টির কোনো প্রেমিকা ছিলো।

মিসেস মল্লিকা এখানেও একটা গেম খেলেছিলো।

নিদ্রঃ এইসব এর মানে কি??

আমানঃ এখুনি বুঝতে পারবেন।

আপ্নারা আসুন প্লিয।

তখনি দুইজন নার্স একজন
একজন কে উইল চেয়ারে করে নিয়ে আসে।

তাকে দেখে যেনো মল্লিকা এইবার প্রচন্ড শকড।
কি করবে সে এখন।

এদিকে নিদ্র কি রিয়েক্ট করবে বুঝতে পারছেনা।

এতো সুপ্তি। তার প্রথম ভালোবাসা। যাকে প্রচন্ড ভালোবাসতো সে।

সুপ্তি যখন তাকে ছেড়ে চলে যাওয়ায় সে একেবারে ভেন্গে পড়েছিলো।
কিন্তু নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে এইভাবে দেখে বুকের ভিতর মোচর দিয়ে উঠলো নিদ্র।

ইশান তাকে দেখে ছুটে গেলো।

তাকে জড়িয়ে তার হাতে চুমু খেতে লাগলো।

সুপ্তিও ছেলেকে জড়িয়ে কেঁদে দিলো।

ইশানঃ আমার মায়ের জন্য আমি অই মিসেস মল্লিকার সবকিছু সহ্য করেছি।
সব দোষ নিজের মাথায় নিয়েছি।

পায়েলঃ কারন এই মহিলা ইশান কে ব্ল্যাকম্যাইল করতো যদি ইশান উনার কথা অনুযায়ী কাজ মা করে তাহলে উনি সুপ্তি আন্টিকে মেরে ফেলবে।
কিন্তু উনি যে আয়ুশ কে সরিয়ে দিবে।
সেইটা আমরা জানতাম নাহ।

ইশানঃ প্রথমে তো আমি বিশ্বাস ই করিনি আমার মা বেঁচে আছে।

আমি বলে উঠলাম–
উনি এতোটাই জঘন্য
সুপ্তি আন্টিকে মেডিসিন দিয়ে অসুস্হ করে রাখতো।

নিদ্রঃ কিহ?

অয়নঃ রিমিপরী একদম ঠিক বলছে।

মল্লিকাঃ মিথ্যে সব মিথ্যে

অয়নঃ আপনি আর কত মিথ্যে বলবেন??
রুশান আংকেল আর আপনি দুই ভাই বোন।

সুপ্তিঃ নিদ্র সেদিন আমি কারো সাথে পালিয়ে যাইনি। আর নাহ আমার কোনো প্রেমিক ছিলো
সব মল্লিকার সাজানো নাটক।
সেদিন কি হয়েছিলো এইবার আমি বলবো তোমাদের।

অতীত,,,,,,

সুপ্তি ও নিদ্রদের একটি সুখি পরিবার ছিলো।

দুই ছেলে আয়ুশ ও ইশান কে নিয়ে ভালোই চলছিলো
তাদের সংসার। খান ইন্ডস্টির নাম ও ভালো ছিলো।

কিন্তু একদিন মল্লিকা নিদ্রদের অফিসে জয়েন করে।
সুপ্তির সাথে তার ভালো সম্পর্ক ছিলো।

সে প্রায় সুপ্তির সাথে চৌধুরী বাড়ি আসতো।

একদিন নিদ্র অফিসের কাজে অন্য দেশে গিয়েছিলো।
তখন আয়ুশের বয়স ৪ আর ইশানের বয়স ২ ছিলো।

সেদিন সুপ্তির সাথে মল্লিকা খান বাড়িতে ছিলো।

মল্লিকাঃ নিদ্র ভাইয়া তোকে খুব ভালোবাসে তাইনা রে??

সুপ্তিঃ তা যা বলেছিস
প্রচন্ড ভালোবাসে।

মল্লিকাঃ তোদের কম্পানিও ভালো চলছে।

সুপ্তিঃ আল্লাহ রহমতে সব ই ভালো চলছে।

তখনি কেউ ফোন করে–

সুপ্তিঃ কলি আপু ফোন করেছে।

কলির নাম শুনে মুহুর্তেই মধ্যেই চোখ লাল হয়ে যায়
মল্লিকার।

মল্লিকাঃ তুই তোর কলি আপুর খুব আদরের?ম

সুপ্তিঃ হুম রে রুশনি আমার ছোট বোন তার থেকেও
আমাকে বেশি ভালোবাসে কলি আপু।
ছোট বেলা থেকে আমাকে আএ রুশনিকে নিজের মায়ের মতো স্নেহ করেছে কলি আপু।
আমাদের কোনো ভাই ছিলো নাহ। আমরা তিন বোন আমাদের বাবা-মার আদরের ছিলাম।
সব থেকে বেশি দুস্টু ছিলো রুশনি।

সুপ্তি কিছু বলবে তার আগেই।








বর্তমান,,
এদিকে,,,

সানার অবস্হা ক্রমশ খারাপ হয়ে যাচ্ছে।

রুশান সানার কাছে আসতে যাবে তার আগেই সানা বলে উঠে–
দয়া করো। আমি অন্তত মরার আগে তোমার অই মুখ
দেখতে চাইনা।

রুশানঃ আমার মা।
ওমা তুই এইসব কি বলছিস
তোর কিচ্ছু হবেনা। কে কোথায় আছো?? এম্বুলেন্স ডক্টর কোথায়?? আমার মেয়েটা তো কস্ট পাচ্ছে

(চিৎকার করে)

সানাঃ বাপি অইসব দিয়ে কি হবে?

রুশান বলে উঠে-
এইসব কিছু তো আমি তোর জন্যই করছি। যাতে ভবিষ্যৎ তুই ভালো থাকিস।

সানা তাছিল্যের হাঁসি দিয়ে বলে উঠে–
হুম! আমার জন্য এতো করতে গিয়ে আমাকেই তুমি খুন করে ফেললা বাবা! যার জন্য এতো অন্যায় করলে এতো পাপ করলে এখন তো সেই থাকবেনা গো।
(কাঁদতে কাঁদতে)

সুমু ও কেঁদে যাচ্ছে।

রুশান ধপ করে বসে পড়ে।

রুশানঃ এইভাবে বলিস নাহ মাহ।
তুই তো আমার একমাত্র সন্তান।

এদিকে,,
তখনি
ফারহান এর গাড়ি জোড়ে ব্রেক করলো।

সাথে পুলিশও আছে।

লেখিকাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি

সুমু ফারহান কে ফোন করেছে।

ফারহান গিয়ে সুমুকে জড়িয়ে ধরলো।

ফারহানঃ সুমু তুমি ঠিক আছো তো??

সুমুঃ আমি ঠিক আছি কিন্তু সানা।

ফারহান সানার কাছে গিয়ে বলে উঠে–
সানা তুই এইসব কি করেছিস?

সুমুঃ আমাকে বাঁচাতে গিয়ে ও নিজে ঝাপিয়ে পড়লো।

সানাঃ আমি যদি ঝাপিয়ে না পড়তাম তাহলে
সুমাইয়ার গুলি লাগতো সেইটা আমি কি করে মেনে নিতাম বলো?
তাও আমার নিজের ই বাবার জন্য
ভাবতেই ঘৃনা করছে আমার নিজের বাবা একজন খুনি।
আজ সে নিজের মেয়েকেই গুলি করে দিলো

ফারহান এর প্রচন্ড রাগ হচ্ছে লোকটার উপর।
এক্টা মানুষ এতোটা জঘন্য কী করে হতে পারে?
লোকটাকে জেন্ত পুতে ফেলতে ইচ্ছে করছে।
কিন্তু এখন আগে সানাকে নিয়ে ভাবতে হবে।

ফারহান বলে উঠে
অনেক টাইম লস্ট হয়ে গেছে এখুনি হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে।

ফারহান যেতে নিলে সানা খপ করে তার হাত ধরে ফেলে–

সানাঃ নাহ ফারহান ভাইয়া।
তুমি কোথাও যাবেনা।।
আমি চাই তুমি অন্তত কিছুক্ষন আমার সাথে থাকো।
তাহলেই আমি শান্তিতে মরতে পারবো।

ফারহানঃ এইসব কি বলছিস সানা
তোর কিচ্ছু হবেনা

সানাঃ আমার সময় হয়ে গেছে ফারহান ভাইয়া।
ভেবেছিলাম তোমাকে বোধহয়
দেখতে পাবো নাহ। কিন্তু এখন তোমাকে দেখেছি
এইটাই শান্তি।

সানার প্রচন্ড
কস্ট হচ্ছে তাও সে বলে উঠে–
আমার মতো ভাগ্য কয়জন এর বা হয়?
যে নিজের
বাবার হাতে খুন হয়।

রুশান
কেঁদেই যাচ্ছে।

সানাঃ বাপি তুমি কাঁদছো কেন??
তুমি এইটাই ডিসার্ব করো।
তুমি অন্য কাউকে মারতে গিয়ে
নিজের মেয়েকেই মেরে দিলে।
এখন বুঝবে নিজের সাথে হলে কেমনটা লাগে

সানা নিজের রক্তমাখা হাত দিয়ে ফারহান এর হাত ধরে বলে উঠে–
মরে যাওয়ার আগে
একটা কথা না বলে যেতে পারবো নাহ।

ভালোবাসি ফারহান ভাইয়া অনেক ভালোবাসি।

সেই ছোট বেলা থেকে যখন তুমি অয়ন ভাইয়ার সাথে বাড়ি আসতে তখন
থেকেই

কিন্তু কখনো বলতে পারিনি
আজ বললাম।

কিন্তু যখন বুঝতে পারলাম।
তুমি আমার ভাগ্যে নেই তুমি তো সুমাইয়ার।
তখনি নিশব্দে তোমাদের মাঝখান থেকে চলে আসি।
সুমুর কিছু হলে তুমি তো মরে যেতে ফারহান ভাইয়া
তাই আমি নিজে ঝাপিয়ে পড়ি।

সুমু ফারহান অবাক হয়ে যায়।

সানাঃ তোমাকে পাইনি তো কি হয়েছে তোমার ভালোবাসা সুমাইয়া কে তো আমি বাঁচাতে
পারলাম এইটাই অনেক।

এইবার ফারহান ও কেঁদে দেয়।

সানাঃ কেঁদো
নাহ ফারহান ভাইয়া আমার যে বড্ড কস্ট হয়
তুমি কি তা বুঝো?

সানা ফারহান এর হাত আর সুমাইয়ার হাত একসাথে রাখে।

সানাঃ সুখে থেকো তোমরা।

ভালো থেকো।

ফারহানঃ তুই ঠিক হয়ে যাবি(কাঁদতে কাঁদতে)

সানাঃ আমার শেষ একটা কথা রাখবে?

ফারহানঃ বল।

সানাঃ খুব শখ ছিলো তোমার বউ হবো
তোমার অই বুকে আমার জায়গা হবে তা তো হওয়ার নয়।
আমাকে শেষবার এর মতো একটু বুকে জড়িয়ে নিবে
ফারহান ভাইয়া।

সুমু ঃ সানা তুমি এতোটা সেক্রিফাইজ করলে আমাদের জন্য

সানা বলার সাথে সাথেই ফারহান সানাকে শক্ত করে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়।

ফারহান ঃ কিচ্ছু হবেনা তোর।

সানাঃ এইবার আমার শান্তি।
এইবার আমি শান্তিতে মরতে পারবো।
ভালোবাসি!

এই বলে
সানা চুপ হয়ে যায়।

হ্যা সানা মারা গেছে।

সুমুও কেঁদে দেয়।
ফারহান সানাকে বুকের সাথে জড়িয়েই কেঁদে দেয়।

রুশান একেবারে অনুভুতি শুন্য হয়ে বসে আছে।

সত্যি একটা মানুষকে এতোটা নিশ্বার্থ ভাবে ভালোবাসা যায় সানাকে না দেখলে হয়তো বুঝা যেতো নাহ।

সানার রক্তে ফারহান এর শার্ট ভিজে যাচ্ছে।

সানা এখনো ফারহান এর বুকে।





।।




।।#দ্বিতীয়_অধ্যায়
চলবে কি?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here