#প্রেমময়নেশা (The story of a psycho lover)
#পর্ব-18(বুঝবে মজা)
#Jannatul_ferdosi_rimi(লেখিকা)
পায়েল আপু আমাদের আলাদা করার এক বড় ষড়যন্ত্র নিয়ে এই বাড়িতে এসেছে। সবটায় পায়েল আপুর সাজানো এক নাটক। ছিহ মানুষ কতটা নীচে নেমে গেলো অসুস্হতা নিয়ে এক জঘন্য নাটক করতে পারে। পায়েল আপুকে না দেখলে বুঝতাম নাহ। পায়েল আপু একবার উনাকে কষ্ট দিয়ে চলে গেছে উনি এখন আবারও ফিরে এসেছেন নতুন কোনো মতলব এ। কিন্তু যাই হোক আমি কিছুতেই পায়েল আপুকে সফল হতে দিবো নাহ তার জন্য আমাকে যা ইচ্ছা করতে হয় হোক। তখনি আমার হাত দিয়ে এক্টক ফুলদানি পড়ে গেলো। ফুলদানির শব্দে পায়েল তাড়াতাড়ি করে ফোনটা রেখে দরজার দিকে যেতে যেতে বলে উঠলো-কে কে ওখানে?
এইরেএএ পায়েল আপু আসছে না আমাকে আর এখানে থাকলে চলবে না। এই বলে দ্রুত আমি নিজের ঘরের দিকে পা বাড়ায়। পায়েল দরজার কাছে এসে দেখে কেউ নেই। পায়েল চিন্তিত হয়ে বলে উঠে-
ফুলদানি তো নিজের জায়গায়-ই আছে। এখানে তো এমন কেউই নেই। তার মানে আমার মনের ভুল। পায়েল আর কিছু না ভেবে তাড়াতাড়ি নিজের ঘরে গিয়ে দরজা আটকে দিলো।
এদিকে আমি ঘরে এসে হাফাতে লাগলাম। উফফ কী বাঁচা বেঁচে গেছি। আরেকটু হলেই ধরা পড়ে যেতাম। কিন্তু পায়েল আপু যা ওর সাথে আমি এম্নে এম্নে পেড়ে উঠবো নাহ। আমাকেও বুদ্ধি দিয়েই চলতে হবে।আচ্ছা আমি যদি সব কিছু উনাকে বলে দেই তাহলে কেমনটা হবে? নাহ নাহ
উনাকে বলা যাবে নাহ পায়েল সব কিছু ব্যাবস্হা করেই মাঠে নেমেছে আমি যদি সব সত্যি সবাইকে বলেই দেই সবাই আমাকেই ভুল বুঝবে। আর পায়েল আপু সবার আরো সেম্পেথি পেয়ে যাবে। আমাকেও একেবারে তৈরি হয়ে মাঠে নামতে হবে। পায়েল আপুর মুখোশ সবার সামনে উন্মোচন করতে হবে। কিন্তু কীভাবে? তখনি একজন সার্ভেন্ট আমার দরজায় নক করে আমিও তাড়াতাড়ি গিয়ে দরজা খুলে দেই।
হ্যা বলো!
সার্ভেন্টঃ ম্যাম স্যার আপনাকে তার ঘরে ডাকছে।
আমি বলে উঠলাম- আমাকে?
সার্ভেন্টঃ জ্বী!
কি আর করার দেখি মহাসয় কেন ডাকছে
আমি উনার রুমে যাওয়ার সাথে সাথেই উনি আমাকে হেঁচকা টান দিয়ে আমাকে নিজের সাথে মিশিয়ে দেয়। আমি নিজেকে ছাড়াতে ছাড়াতে বলে উঠলাম-
এইসব কি হচ্ছে?
উনি বাঁকা হেঁসে বলে উঠে-
আপনি বলে বুঝতে পারছেন না ম্যাডাম রোমান্স হচ্ছে। অইসময় একটা বাঁধা পড়েছিলো কিন্তু এখনো নো ছাড়াছাড়ি।।
আমি উনার থেকে নিজেকে ছাড়াতে ছাড়াতে হঠাৎ আমার চোখ আয়নায় যায়। পায়েল আপু দরজায় উকি মেরে দাড়িয়ে আছে। উনার যে রাগে একেবারে শরীর জ্বলে যাচ্ছে তা পরিলক্ষিত।। অয়ন নিজের মুখটা আমার দিকে আনতেই আমি বলে উঠি-
ওকে বাট দরজা টা বন্ধ করে আসি।
অয়ন মুচকি হেঁসে বলে উঠে-
বাহ আমার রিমিপরীর আজ রোমান্স এর মুড আছে দেখি
আমি বাঁকা হেঁসে
তাড়াতাড়ি গিয়ে ঠাসস করে দরজা আটকে দিলাম।
পায়েল এর মুখের সামনে এইভাবে রিমি দরজা আটকে দেওয়ার পায়েল রাগে ফুসছে। কত বড় সাহস অই রিমির। দুইদিনের একটা মেয়ে পায়েল এর মুখের সামনে দরজা বন্ধ করে দেয়। ভাবতেই শরীর রাগে কাটা দিয়ে উঠে।
পায়েলঃ খুব বেশি সাহস না? আমার সামনে দরজা বন্ধ করে আমারই অয়নের সাথে ভাবতেই আমার শরীর জ্বলে উঠছে।
আরেএ অইদিন যদি আমি না যেতাম আজ কিন্তু অয়ন আমার থাকতো। তোমার থার্ড ক্লাস মেয়ে অয়নের নাগালোও পেতে নাহ। ( মনে মনে)
এই বলে পায়েল গটগট করে বেড়িয়ে যায়।
এদিকে অয়ন আমার কোমড় পেচিয়ে ধরলো।
অয়নঃ এখন তুমিই যখন ব্যবস্হা করলেই তো শুরু করা যাক।
অয়নকে কিছু বলতে না দিয়ে আমি তার গালে একটা কিস করে দেই।
অয়ন অবাক হয়ে বলে উঠে-
রিমিপরী!!
আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলি।
অয়ন আমাকে আরো কাছে টেনে বলে উঠলো-
আজকে তো আমাকে একেবারে পাগল করে দিচ্ছো। আজ আর ছাড়াছাড়ি নেই।।
।।।।।।।।।।
পায়েল রাগে থরথর করে নিচে নামছে। তখনি রুশনি হাত ভাজ করে বলে উঠে- কি গো কোথা থেকে আসলে?
পায়েলঃ উপর থেকে।
রুশনিঃ তা কি দেখলে উপরে?অয়ন আর রিমির প্রেমকথন
(তাচ্ছিল্যের সুরে)
পায়েলঃ আর ইউ কিডিং উইথ মি(আপনি আমার সাথে মজা করছেন)
রুশনিঃ নো আম নট কিডিং উইথ ইউ আই জাস্ট সেইড ট্রুথ( আমি তোমার সাথে মজা করছি নাহ শুধু সত্যি টা বললাম)
পায়েল আর কিছু না বলে তাড়াতাড়ি চলে যায়। এদিকে
রুশনি বলে উঠে-
চৌধুরী বাড়ি এইবার যুদ্ধক্ষেত্র তো পরিনত হচ্ছে।
মিসেস কলির ফোন বেজে উঠে-
সে তাড়াতাড়ি ফোন রিসেভ করে বলে উঠে-
আসসালামু আলাইকুম আশরাফ সাহেব।
আশরাফ সাহেব(রিমির বাবা)
ঃ ওলাইকুমুসসসালাম ভাবি!
মিসেস কলিঃ আমার কি সৌভাগ্য আপনি আমাকে ফোন করেছেন!!
আশরাফ সাহেবঃ এইভাবে বলবেন না ভাবি!
আপনি তো সব-ই জানেন কীভাবে অয়ন রিমিকে নিয়ে গিয়েছে
মিসেস কলি ককন্ঠস্বর নিচু করে বলে উঠে-
আমি সত্যি লজ্জিত আশরাফ সাহেব! আমার ছেলেটাও যা পাগল নাহ
আশরাফ সাহেবঃ আরে ভাবি অইভাবে বলবেন প্লিয!! ছেলেটা আমার মেয়েটাকে বড্ড ভালোবাসে। অয়নের থেকে আমার মেয়েকে আর কেউ এইভাবে ভালোবাসতে পারবেনা। আর সব থেকে বড় কথা আমার মেয়েটাও ওকে খুব ভালোবাসে।
মিসেস কলিঃ এইতো ভাই! আপনি বুঝতে পেরেছেন এইটাই অনেক!
আশরাফ সাহেবঃ তা যেইকারণে ফোন করেছিলাম ভাবি আমার মেয়েটার ১৮ বছরে পা রাখলো তাহলে এখন ওদের বিয়েই দেওয়ায় যায়।
মিসেস কলিঃ অতি উত্তম প্রস্তাব!!
আশরাফ সাহেবঃ তাহলে ভাবি আপনি আসুন আমাদের বাড়িতে কিংবা আমরা আপনার বাড়িতে গিয়ে পাঁকা কথা বলে আসি!!
মিসেস কলি ঃ নাহ ভাই আমরা কোথাও আলাদা কথা বলি!!
আমরা একেবারে সব ঠিক করে ওদের সারপ্রাইজ দিবো!
আশরাফ সাহেবঃ এইটা তো আরো উত্তম ব্যাপার!! হা হা হা
মিসেস কলিও হেঁসে দেয়!!
রাতে,,,
সবাই ডাইনিং টেবিলে বসে খাবার খাচ্ছে রিমি এখনো বসেনি।
অয়নের চেয়ারটা খালি আছে পায়েল বসতে যাবে তার আগেই আমি বসে পড়ি!!
রিমিঃ এইটা আমার সিট
পায়েল মুখে হাসি ফুটিয়ে অন্য সিটে বসে।
পায়েলঃ এই মেয়েটা অতিরিক্ত করছে!
নাহ আমাকে এমন কিছু করতে হবে যাতে অয়ন আজ আমার সাথে থাকে(মনে মনে)
সবাই খাচ্ছিলো তখনি পায়েল শ্বাসকষ্টের নাটক করে।
অয়নঃ পায়েল কি হয়েছে?
পায়েলঃ জানি না অয়ন। আমার ভিষন খারাপ লাগছে
রুশনিঃ একটা কাজ করো!
তুমি ঘরে যাও!!
পায়েল ইচ্ছা করেই অয়নের কাছে ঢলে পড়ে বলে উঠছে-
আমার সত্যি আজ খারাপ লাগছে!
অয়নঃ তুমি ঠিক আছোতো?
এদিকে আমি
আহারে কি সুন্দর নাটক করছে রাক্ষুসিটা আমার সাইকোটার সাথে ইচ্ছা করছে দুইটাকার বিষ এই পেত্নিকে খাইয়ে আমি নিজে থুরি অই পেত্নিটাকে মেরে ফেলি🙄!!
রুশনিঃ অয়ন পায়েলকে ঘরে দিয়ে আয়!
অয়ন কিছু বলবে তার আগেই আমি বলে উঠি-
আমি আর সানা আপু মিলে পায়েল আপুকে ঘরে নিয়ে যাই!!
সানাঃ হ্যা অবশ্যই!!
পায়েলঃ ঢং দেখলে বাঁচি না
ভেবেছিলাম অয়নের কাছে যাবো (মনে মনে)
পায়েল দাঁত কিড়মিড় করে বলে উঠলো–
আরে নাহ নাহ আমি ঠিক আছি কোনো প্রব্লেম নেই!!
রিমিঃ এখন তো ঠিক থাকবেই পেত্নি আমরা নিয়ে যাবো নাহ!! দাঁড়া দেখাচ্ছি মজা!!
মিসেস কলি বলে উঠলে-
সুপটা কোথায়?
আমি বলে উঠলাম-
ভালোমা আজকে সুপ আমি রান্না করেছি
অয়নঃ তুমি শুধু শুধু রান্না করতে গেলে কেন বাড়িতে কি সার্ভেন্ট দের অভাব আছে?
মিসেস কলিঃ হ্যা তাই তো!!
আমি বলে উঠলাম- আরে ভালেমা জাস্ট সুপ ই তো রান্না করেছি আমার কি ইচ্ছা করেনা তোমাদের জন্য একটু রান্না করতে।
পায়েলঃ সব-ই পটানোর ধান্ধা
ধান্ধাবাজ মেয়ে একটা(মনে মনে)
রুশনিঃ সেই সুপ খেতে পারবো তো?
রিমিঃ খেয়েই দেখবেন খালামনি
এই বলে আমি তাড়াতাড়ি রান্নাঘরে চলে আসলাম
সার্ভেন্ট দের বললাম
আপ্নারা অন্য মেনু গুলো সার্ফ করুন আমি সুপ নিয়ে যাচ্ছি।
সার্ভেন্ট দের যাওয়ার সাথে সাথেই আমি তাড়াতাড়ি মরিচের গুড়া পায়েল পেত্নি টার সুপে মিশিয়ে দিলাম ইচ্ছামতো মিশাচ্ছি খুব শখ না শাকচুন্নি আমাদের আলাদা করার? তোর জন্য এই বাড়ি ছেড়েও আমি গিয়েছি আমাকে কি স্টার জলসার শ্রীময়ী মনে করেছিস নাকি? যে আমার হবু স্বামীর প্রাক্তন প্রেমিকাকে সহ্য করবো।তোর মতো জুন আন্টির হাওয়া কীভাবে পাঞ্চার করতে হয় সব ভালো করে জানা আছে।।
এই বলে আমি সুপ নিয়ে সবাইকে সার্ফ করা শুরু করলাম
সবাই খেয়ে বেশ প্রশংসা করছে।
এদিকে পায়েল জ্বালে শেষ
পায়েল জোড়ে চিৎকার করে উঠলো–
আম্মু আব্বু জ্বাল ওমাগো জ্বলে গেলো মুখ জ্বলে গেলো!!
সবাই অবাক!
অয়নঃ মানে জ্বাল মানে আমরা সবাই তো খাচ্ছি তোমার জ্বাল লাগলো কীভাবে?
মিসেস কলিঃ সবাই তো একই সুপ খাচ্ছি তাহলে তোমার লাগছে কীভাবে?
রিমিঃ আমার মনে হয় পায়েল আপুর মনের ভুল অসুস্হ মানুষ!
পায়েল আপু তাড়াতাড়ি খেয়ে ফেলো
অনিচ্ছা সত্ত্বেও পায়েল এর সুপ্টা খেতে হচ্ছে
জ্বালে পায়েল একেবারে শেষ
মুখটা একেবারে লাল হয়ে গিয়েছে
শেষমেষ না পেরে পায়েল দৌড়ে উপরে চলে গেলো
কেউ কিচ্ছু বুঝতে পারছেনা
এদিকে আমি মনে মনে হাঁসছি
খা খা আরো খা পেত্নি সব শখ না তোকে জন্মের খাওয়া খাওয়াবো(মনে মনে)
এদিকে পায়েল জ্বালে কিচ্ছু দেখছেও না সে ঠাসসস করে বাথ্রুমে পড়ে যায়।
পায়েলঃ ওমাগো😭😭
🤣🤣🤣
।বাকিটা আগামী পর্বে
চলবে কি?