#প্রেমময়নেশা(The story of a psycho lover)
#পর্ব-10( একি হলো?)
#Jannatul_ferdosi_rimi(লেখিকা)
আমি মুগ্ধ হয়ে উনাকে দেখতে লাগলাম উনি মনোযোগ সহকারে আমাকে পড়া বুঝিয়ে যাচ্ছে মৃদু বাতাসে উনার তামিল হিরোদের মতো চুলগুলো উড়ছে বেশ সুন্দর লাগছে উনাকে।। উনার সব কাজেই আমার এক আলাদা মুগ্ধতা কাজ করছে। কেন?? তবেই এটাকেই ভালোলাগা নাকি অন্যকিছু।। আমাকে এইভাবে তাঁকিৈয়ে থাকতে দেখে অয়ন বলে উঠলো–
কি হলো কিছু বুঝেছো?
আমি অপ্রস্তত হয়ে বললাম–
হ্যা হ্যা!!
অয়নঃ কি পড়াচ্ছিলাম?? আমি(সন্দেহ এর চোখে)
রিমিঃ অইযে বায়োলোজি
অয়নঃ কোন চ্যাপ্টার??
এইরেএ আমি তো এতোক্ষন উনাকেই দেখছিলাম বলবো কীভাবে??
রিমিঃ কোষ এর চ্যাপ্টার(আন্দাজে ঢিল মারছি🙃)
অয়নঃ গুড ভালো করে দেখো
।এই বলে অয়ন আবারো পড়ানো শুরু করলো।। আমিও এইবার ভালো করে মনোযোগ দিলাম।।
।।।।।🌸🌸
হঠাৎ ব্রেক কষায় সুমাইয়া খানিক্টা ঝুকে পড়লো!!
ফারহানঃ তুমি ঠিক আছো তো?
সুমাইয়া ঃ জ্বী!!
কিন্তু আপনি আমাকে কোথায় নিয়ে এসেছেন??
ফারহানঃ ভালো করে দেখো তোমার ভার্সিটি চলে এসেছি!!
সুমাইয়া খেয়াল করে সে তার। ভার্সিটি ই চলে এসেছে। এতোক্ষন সে অন্য ধ্যানে ছিলো
সুমাইয়া আর কিছু না বলে গাড়ি থেকে নামতে যাবে তখনি সে হাতে টান পড়লো সে তাঁকিয়ে দেখে ফারহান তার হাত ধরেছে।
সুমাইয়া রাগান্বিত সুরে বলে–
এইসব কোন ধরেনের অসভ্যতা মিঃ ফারহান অনেক্ষন ধরে আপনাকে সহ্য করছি এইবার কিন্তু করবো নাহ!!
ফারহানঃ তুমি আমাকে এই কথা বলতে পারলে? সুমাইয়া
ভুলে যেও না তুমিই একদিন বলেছে তোমার হাত ধরার একমাত্র অধিকার আমার!!
সুমাইয়া ঃ ওহ প্লিয সেইটা অতীত ছিলো। আর অতীত অতীতই।।
ফারহানঃ ফিরে এসোনা প্লিয আমি মানছি আমি ভুল করেছি
কিন্তু দেখো আমি কিন্তু ভালো নেই
ভালো নেই তোমাকে ছাড়া।।
সুমাইয়াঃ আপ্নার কথা শেষ এইবার হাত ছাড়ুন। আপনার অনেক নাটক সহ্য করেছি আর না আমার ভার্সিটির জন্য লেট হচ্ছে।।
ফারহানঃ আমি নাটক করছি?
(অসহায় কন্ঠে)
সুমাইয়া আর কিছু না বলে ফারহান এর থেকে নিজের হাত
ছাড়িয়ে নেয় চলে যায়।একবারো ফিরে তাঁকায় না কেননা তার চোখের জল সে ফারহান কে দেখাতে চায়না। সে চায়না তার দুর্বলতা ফারহানকে দেখাতে।।কেন ফিরে এসেছে ফারহান??সে তো একাই ভালো ছিলো তাহলে কেন??
এদিকে ফারহান মনে করেছিলো একবার হলেও সুমাইয়া তাঁকাবে কিন্তু যখন দেখলো আর সুমাইয়া ফিরে তাঁকায়নি।হতাশ হলো সে।
।।।।🌺🌺
উনি আমাকে ভালো করে পড়া বুঝিয়ে চলে গেলেন রেডি হতে
হসপিটাল যেতে হবে। আজ উনার একটা ওটিও আছে।।।
আমি আর কি করবো ভাবলাম বাগানে ঘুরে আসা যাক!!এই বাড়ির বাগানটা অনেক সুন্দর।
বিভিন্ন ফুলের সমাহার।শুনেছি ভালোমা ফুলের বাগানের বেশ শৌখিন তাই অয়ন তার মায়ের জন্য আলাদা করে নানা দেশ-বিদেশ এর ফুলের গাছ আনিয়েছে।।যা বাগানটিকে আরো বিশেষ করে তুলেছে।।বাগান আমারোও বেশ ভালো লাগে
যেই ভাবা সেই কাজ।। বাগানে দিয়ে পরিচর্যা দেখতে লাগলাম খেয়াল করলাম অইখানে খালামনিও আছে আমাকে দেখে তিনি যেনো অনেকটায় বিরক্ত।।
ভ্রু কুচকে তিনি বললেন–
তুমি এখানে কেন???
রিমিঃ এইতো বাগানে এসেছিলাম একটু।।
রুশনিঃ ওহ।।
এই বলে রুশনি চলে যেতে নিলে কি চিন্তা করে যেনো থেমে যায়।।
রুশনিঃ আচ্ছা বাগানের পিছনের জায়গাটা তুমি দেখেছো??
রিমিঃ কই না তো??
রুশনিঃ এমা তুমি জানো না।।
বাগানেত পিছনের দিকে একটা ঘর আছে অইখানে কত আগেরকার দিনের জিনিসপত্র আছে তুমি দেখবে??
রিমিঃ তাই? আসলে পুরোনো দিনের জিনিসপ্ত্র দেখতে আমার ভালোই লাগে কিন্তু উনি যদি
রুশনিঃ আরে বাবা অয়ন কি বলবে তুমি যাও অইঘরে অনেক জিনিস দেখতে পাবে।
রিমিঃ আচ্ছা আমি তাহলে যাই
এই বলে আমি বাগানের পিছনের দিকটায় যেতে লাগলাম
।
।।
রুশনিঃ এইবার হবে আসল মজা
রুশনি শয়তানি হাঁসি দিয়ে অয়নের ঘরের দিকে গিয়ে দেখে অয়ন কিছু ফাইল নিয়ে বের হচ্ছে।।
রুশনিকে দেখে সে বলে উঠে–
আরে খালামনি তুমি হঠাৎ এখানে??
রুশনিঃ এমনি এমনি আমি আসেনি
তারপর রুশনি অয়নকে এম্ন কিছু বলে যার কারনে রাগে একেবারে তার চোখ লাল হয়ে উঠে—
এদিকে আমি বাগানের পিছনের ঘরটায় ঢুকলাম ঘরটা বেশ সাজানো।।
আমি খেয়াল করে দেখলাম জায়গাটাতে অয়নের অনেক পুরোনো ছবি-জিনিসপত্র।।
আমি এক এক করে সব দেখতে
লাগলাম সব থেকে বেশি মজার কথা উনার কলেজ লাইফে উনি দেখতে বেশ ইনোসেন্ট টাইপের ছিলেন চুল গুলো আছড়ানো চোখে মোটা ফ্রেম এর চশমা আর ঠোটে একাবারে নিস্পাপ হাঁসি বাবাগো বাবা তখন কে জানতো এইরকম ইনোসেন্ট টাইপ ছেলে এখন সাইকোতে পরিনত হবে।। তখন উনি ইনোসেন্ট ছিলেন আর এখন একেবারে চকলেট বয়🥴।
তখনি বাতাসে একটা ছবি আমার হাতে এসে পড়লো
আমি ছবিটাতে দেখে বেশ অবাক হোলাম উনি আর একটা মেয়ের ছবি মেয়েটা বেশ মডার্ন দেখেই বুঝা যাচ্ছে সম্ভবত এইটা উনার কলেজ লাইফেরই ছবি মেয়েটা ফোন এর দিকে তাঁকিয়ে আছে আর উনি মেয়েটার দিকে অজান্তেই কেন জানি ছবিটা দেখে বেশ খারাপ লাগলো আমার কাছে।।তখনি কেউ খপ করে আমার থেকে ছবিটা কেঁড়ে নিয়ে যায়
আমি তাঁকিয়ে দেখি অয়ন আমার দিকে অগ্নি দৃস্টিতে তাঁকিয়ে আছে।।তার চোখ দিয়ে যেনো আগুন ঝড়ছে।।
আমি ভয়ে শুকনো ঢুক গিললাম—!!
আপনি???
অয়নঃ এই ছবি তুমি কোথায় পেলে???(রেগে)
আমি কোনোরকম বলে উঠলাম–
এই ঘরে
অয়নঃ তুমি এই ঘরে কোন সাহসে ঢুকেছো(হুংকারে)
উনার চিৎকারে যেনো আমার কলিজা পুরো শুকিয়ে যাচ্ছে
আমাকে চুপ থাকতে দেখে তিনি যেনো আরো রেগে গিলেন—
তিনি আমাত বাহু শক্ত করে চেপে ধরে বলে উঠলেন–
তোমাকে আমি ভালোবাসি বলে এইনা যে তুমি আমার অতীত নিয়ে ঘাটাঘাটি করবে সেই সাহস তোমাকে আমি দেইনি।। রিমি(চিল্লিয়ে)
এই প্রথম উনি আমায় রিমি বলল অজান্তেই আমার চোখ থেকে নোনাজল গড়িয়ে পড়লো
এতো শক্ত করে বাহু চেপে ধরায়
প্রচন্ড ব্যাথা পাচ্ছি।।
অয়নঃ কি হলো উত্তর দাও
(চিল্লিয়ে)
রিমিঃ আমি আসলে বুঝতে পারিনি আমাকে ক্ষমা করে দিন
(কান্নার সুরে)
অয়নঃ ক্ষমা এই ক্ষমা দিয়েই তুমি সবসময় আমার থেকে বাঁচতে পারবেনা।এইগুলো নিয়ে ঘাটাঘাটি করে তুমি আমার ইমোশন এ আঘাত দিয়েছো রিমিপরী যা তুমি মোটেও ভালো করোনি।।
এই বলে অয়ন রাগে বেড়িয়ে পড়ে।।
আমি সেখানেই কাঁদতে থাকি আমি তো জানতাম না এই ঘরে কারো আসা
বারণ। তাহলে কখনো আসতাম নাহ।
কাঁধে কারো স্পর্শ পেয়ে ফিরে তাঁকায়
ভালোমাকে দেখে তার বুকে মুখ গুজে কাঁদতে থাকি।।
ভালোমাঃ কাঁদিস না তুই।।
রিমিঃ বিশ্বাস করো ভালোমা আমি ইচ্ছা করে আসিনি
ভালোমাঃ আমি জানি তুই ইচ্ছা করে আসিসনি তুই অনেক কিছুই জানিস না কিন্তু এইবার তোকে সব জানতে হবে
ছবিতে যেই মেয়েটাকে দেখলি সেই মেয়েটার নাম পায়েল।
ও ছিলো অয়নের পাক্তন।।
কথাটা শুনে আমি অবাক হয়ে ভালোমার দিকে তাঁকালাম।।
।।।।।
।।।।।
।।
অয়ন রাগে জোড়ে গাড়ি ড্রাইভ করছে।। এতোদিন পর আবার সেই অতীত তার সামনে পড়বে সে ভাবতে পারেনি।।
হঠাৎই কেউ গাড়ির সামনে এসে পড়ায় অয়ন জোড়ে ব্রেক কষায়।।
অয়ন তাড়াতাড়ি বের হয়ে দেখে
একটা মেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে তাকে দেখে যেনো মুহুতেই অয়নের পৃথিবী থমকে যায় এ কাকে দেখছে সে
অজান্তেই সে বলে উঠে—
পায়েল।এখন কী হবে?
চলবে কি?