#প্রেমময়নেশা(The story of a psycho lover)
#পর্ব-25 (প্রথম_অধ্যায়ের অন্তিম)
#Jannatul_ferdosi_rimi(লেখিকা)
(এইটা একটা সাইকো স্টোরি তাই এই গল্পের মেইন চরিত্র কে সেইটা হয়তো বলে দিতে হবেনা)
একজন নিজের গাড়ির কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলছে তখনি তার সামনে অয়নের গাড়ি চলে আসে। সে নিজেকে বের করার চেস্টা করছে কিন্তু এখন সে বুঝে গিয়েছে তার বাঁচার উপায় নেই। তখনি তার ফোনে একটা ফোন আসে সে দেখে ইশা নামটি। তার চোখ টলমল হয়ে উঠে সে বুঝে গিয়েছে আর হয়তো তার ইশা কে দেখতে পারবেনা। সে বলে উঠে-
ইশা সুইটহার্ট টেক কেয়ার ডেয়ার!
তখনি একটা বড় সংঘর্ষ হয় দুটো গাড়ির। তার পাশেই ছিলো খাঁদ। এতো বড় সংঘর্ষে একটি গাড়ি খাদের পড়ে যায়। রাস্তার মানুষ হতবাক। এইভাবে কয়েক সেকেন্ডে যে এতো বড় ঘটনা ঘটে যাবে তারা ভাবেনি। তখনি একটা গাড়ি থামে সেখানে সে কাউকে কল করে কল করার সাথে সাথে কিছু লোকজন গাড়ির সামনে চলে আসে। তাদের কথা অনুযায়ী তারা ঘটনা গ্রস্ত গাড়ির দিকে যায় যেখানে একটি গাড়ি আছে যেটা খাদে এখনো পড়ে যায়নি। তারা গাড়িতে ঢুকতে গেলে মানুষেরা এসে বলে উঠে- আপ্নারা কার?
–আমরা হসপিটালের মানুষ ভিক্টিমকে নিতে এসেছি এই লাশটির পরিবার আমাদের ইনফোর্ম করেছেন। আরেকটি গাড়িতো খাদে পড়ে গিয়েছে সেইটা পুলিশ বের করবে। সেই ভিক্টিম এতক্ষনে মনে হয় মারা গিয়েছে।
লোকজন আর কিচ্ছু বলতে পারলো না
। তারা লোকটা কে তাদের এম্বুলেন্স এ নিয়ে যায়। তারা এমনভাবে নিয়ে গিয়েছে যে লোকজন লোকটার চেহারা ও দেখতে পারলো নাহ। আদোও সে মৃত্য কিনা জীবিত তাও তাদেএ ধারণার বাইরে।
লোকজন তাড়াতাড়ি পুলিশ দের ফোন করে ব্যাপার টা জানায়। তখনি পাশের গাড়ির লোকটাকে কাউকে কল করে-
হ্যালো ম্যাম! আপনার কথামতো আমাদের লোক কাজ করে ফেলেছে।কিন্তু এখানকার লোকেরা পুলিশ কে ইনফোর্ম করছে কী করবো?
ঠিক আছে ম্যাম। আপনি কোনো চিন্তা করবেন না সব হয়ে যাবে। আরে ম্যাম আপনার নুন খেয়েছি আপনার থালায় ছিদ্র করবো নাহ। আর বাকিটার জনয় স্যার তো আছেনই।
লোকটা ফোন টা রেখে গাড়ি নিয়ে চলে যায়।
এদিকে আমার কিচ্ছু ভালে লাগছে নাহ। অয়নের ফোন এখনো অফ। রুশান আংকেল বলে উঠে-
হসপিটাল থেকে নাকি অয়ন অনেই আগেই বেড়িয়ে গিয়েছে।
সবাই অবাক!
আমি বলে উঠলাম- কিহ
ফারহানঃ তাহলে এখন অয়ন কোথায়?
আশরাফ সাহেবঃ ওটি কখন শেষ হয়েছে?
রুশানঃ অনেক আগেই নাকি ওটি শেষ করে অয়ন বেড়িয়ে পড়েছে এইটাই তে বললো ওরা।
আমি কেঁদে বলে উঠলাম- তাহলে উনি কোথায়?
রুশানঃ সেটাই তো বুঝতে পারছিনা।
একদিকে উনি নাকি অনেক আগেই হসপিটাল থেকে বেড়িয়ে গেছেন তার মধ্যে ফোন টা তো অফ।
উনি কোথায়?
সুমু আর মা মিলে আমাকে সামলাচ্ছে।।
মাঃ কাঁদেনা মা দেখবি অয়ন বাবা ঠিক চলে আসবে।
রিমিঃ কিন্তু কখন আসবে? এতোক্ষনে তো চলে আসার কথা
।।
সবাই টেনশনে শেষ যে অয়ন কোথায়?
তখনি হন্তদন্ত হয়ে মিসেস কলি ও রুশনি আসে।
ভালো মা কে দেখে আমি তার কাছে ছুটে যায় এবং তাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেই।
ভালোমাঃ কাঁদেনা আমার মা। আমি চলে এসেছি তো।
কাঁদার ফলে আমার গলা থেকে যেনো আওয়াজ ও যেনো বের হচ্ছেনা তাও বলে উঠলাম-
উনাকে ফোনে পাচ্ছিনা
ভালোমাঃ হ্যা! আমি সব শুনেছি ফোনে তাই তো ছুটে চলে এসেছি।। গার্ডসদের পাঠিয়ে দিয়েছে অয়ন এর খবর পেয়ে যাবে তারা।
আমি তাও কেঁদে যাচ্ছি
রুশনি বলে উঠে-
এখন ন্যাকা কেঁদে কি হবে? আগে স্বামীকে আটকাতে পারলেনা তা না করে আরো যেতে দিলে। যত্তসব ঢং।
মিসেস কলি ধমক দিয়ে বলে উঠে-।তুই চুপ করবি।?
রুশানঃ আমি যথাসম্ভব চেস্টা করছি। খবর পেয়ে যাবো।।
।।।।।।।
এদিকে,,,,
অচেনা কেউ বলে উঠে-
এইটাকেই বলে এক তীরে দুই পাখি মারা।।
চৌধুরী দের কাছ থেকে অনেক হিসাব বাকি ছিলো।
আজ তা শোধ হয়ে যাবে। এদিকে আমাদের পথের কাটা ও থাকলো নাহ বাহ। আমিও কি সেই সুন্দর প্লেন করি।
আরেকজন বলে উঠে-
সত্যি তোমার তারিফ না করে পারা যায়না। আমাদের রাস্তা ক্লিয়ার হয়ে যাচ্ছে।
অয়ন চৌধুরী অয়ন চৌধুরী এই নাম টা শুনলেই আমার রাগে মাথা ধপ করে জ্বলে উঠে ওর জন্য আমি সব কিছু হারিয়েছি আজ ওর কাছ থেকে ওর জান রিমিপরীকে আমি কেড়ে নিলাম।
আরেকজন বলে উঠে- সহমত। বাকিটা উনিই করে নিবেন।
আমরা এমনভাবে সবটা সাজিয়েছি কেউ আমাদের ধরতেই পারবেনা হা হা হা।
আরেকজন বলে উঠে-
অয়ন চৌধুরী কিন্তু হেরে যাওয়ার ছেলে নাহ।
সে বলে উঠে-
কিন্তু আমাদের কাছে অয়ন চৌধুরী হারতে বাধ্য হা হা হা।( শয়তানি হাঁসি দিয়ে)
(লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)
।।।।।।
এদিকে,,,
আমরা সবাই টেনশনে বসে আছি। কাজি সাহেব অপেক্ষা করে চলে গিয়েছেন। আমি এখনো বিয়ের সাজে স্টেজে বসে আছি।
ফারহান ভাইয়াকে আসতে দেখে আমি ছুটে যাই তার কাছে।
আমি বলে উঠলাম-
ভাইয়া উনার খবর পেয়েছেন কি?
ফারহান ভাইয়া চুপ।
ফারহান ভাইয়া কে চুপ থাকতে দেখে আমি অনেক টায় অবাক!
।
রিমিঃ কি হলো ভাইয়া চুপ করে আছেন কেন?
আশরাফঃ অয়ন এর খবর পেয়েছো কি?
ভালোমাঃ কোথায় আমার ছেলে কোথায়?
হঠাৎ ফারহান ভাইয়া কেঁদে উঠলেন। ভাইয়া এইভানে কেঁদে উঠায় আমাদের মনে একপ্রকার ভয় ঢুকে গেলো।
আমি বলে উঠলাম-
কি হলো আপনি কাঁদছেন কেন?
রুশান আংকেলও চুপ।
আমি ফারহান ভাইয়ার কলার চেপে ধরে বলে উঠি-
আপনি শুনছেন না আমার কথা? বুঝতে পারছেন না???
আমার অয়ন কোথায়?
ফারহান ভাইয়া কেঁদেই যাচ্ছেন।
সুমুঃ কি করছিস কি ছেড়ে দে
সানাঃ জুনিয়ার ভাবি শান্ত হও।
সুমু আমাকে বারবার ছুটানোর চেস্টা করছে কিন্তু আমি বলেই যাচ্ছি–কি হলো বলুন আপনার বন্ধু কোথায়??
ফারহান ভাইয়া হাত জোড় করে বলে উঠে-।আমি বলতে পারবো নাহ আমার বলার ক্ষমতা নেই।
মিসেস কলি রুশান এর কাছে গিয়ে বলে উঠে-
আমার ছেলে কোথায়???
রুশান ও কেঁদে উঠে-
আশরাফ সাহেব ও উনার স্ত্রী অনেক কস্টে রিমিকে আটকায়।
তখনি কিছু পুলিশ ঢুকে তাদের দেখে আশরাফ সাহেব বলে উঠে- অফিসার আপ্নারা এখন এখানে?
অফিসার ঃ আসলে একটা দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে।
আমি বলে উঠলাম- কিসের ঘটনা?
রুশনিঃ হ্যা কি হয়েছে?
মিসেস কলি ঃ আমার ছেলে ঠিক আছে তো?
রুশানঃ মায়ের মন তো ছেলের জন্য ছটফট করেছে।
অফিসারঃ আসলে আজকে দুপুরের দিকে দুটো গাড়ির সংঘর্ষে বিরাট বড় এক্সিডেন্ট হয় খাদের কাছে। একটি গাড়ি খাদে পড়ে যায়।
এবং আমাদের ইনফোর্মেশন অনুযায়ী খাদে যে গাড়িটি পড়েছে সে গাড়িটি অয়ন চৌধুরীর। এবং আমাদের মতে অয়ন চৌধুরী ইজ ডেইড
সবাই স্তব্ধ হয়ে যায়।
আমি দুপা পিছিয়ে যাই।।
নাহ এইটা হতে পারেনা। মিসেস কলি অজ্ঞান হয়ে যায়। সানা আর রুশনি মিলে মিসেস কলিকে ধরে তারাও কেঁদে দেয় কেউ এইটা আশা করেনি।
আমি পাথর হয়ে রয়েছি।
আশরাফ সাহেব ও তার স্ত্রীও এমনটা মোটেও আশা করেননি।
আমি বলে উঠলাম- নাহ এই উনার কিচ্ছু হয়নি কিচ্ছুনা
আশেপাশের সবাই বলাবলি করছে
আহারে আজকে মেয়েটার বিয়ে ছিলো কতই স্বপ্ন ছিলো নতুন জীবন নিয়ে মেয়েটা সহ্য করতে পারবে তো?
—হুম দেখ এখনো বিয়ের সাজ রয়ে গেছে এখনো
আমি চিৎকার করে বলে উঠলাম- বললাম নাহ আমার অয়নের কিচ্ছু হয়নি।
ফারহান কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠলো-
আজ বন্ধুর বিয়ের দিনে এসে তার মৃত্য দিন দেখতে হবে তা কোনোদিন ভাবেনি।
আমি বলে উঠলাম- এই আপনার এইসব কি বলছেন? আজকে আমাদের বিয়ে ছিলো
উনি বলেছেন রিমিপরী তোমাকে আমার মিস্টি বউ করে নিয়ে যাবো। উনি উনার কথা রাখবেন না? আমাদের তো একসাথে সংসার করার কথা ছিলো।
রিমির মা রিমির কথা শুনে চোখের জল ফেলছেন
আশরাফ সাহেব ও একেবারে ভেজ্ঞে পড়েছেন।
নিজের আদরের ছোট মেয়ের বিয়ের দিন তার স্বপ্ন একেবারে ভেজ্ঞে যাবে তা তিনি কল্পনা করেননি।
আমি আবারও বলে উঠলাম-
এই দেখো আমাকে সুন্দর লাগছেনা?? লাগারি তো কথা। উনির পছন্দ মতো আজ আমি সেজেছি। বিয়ের বেনারশীতে। উনি তো আমাকে ভালো করে দেখলেন ও নাহ
সবার চোখে জল চলে আসলো রিমির কথা শুনে। একটা মেয়ের কত স্বপ্ন ই না থাকে এই বিয়ে নিয়ে।
প্রেস-মিডিয়া জোড়ো হয়ে যায়। ডক্টর অয়ন চৌধুরীর মৃত্যুর খবর পেয়েছে তাই। ফ্রন্ট পেজে আসবে।
রিমি কাউকে কিছু না বলে বেড়িয়ে গেলো।
রিমিকে বেড়োতে দেখে রিমির বাবা-মা ফারহান ও সুমু ও ছুটলো।
রিমির সেই হাল্কা গোলাপী বেনারশী আগোছালো সাজে পায়ে আলতা। একটি লাইন খুব মনে পড়ছে,,
লাল শাড়ি পড়িয়া কন্যা,,
রক্ত আলতা পায়ে 💔🥀
রিমি রাস্তার মাঝবরাবর চলে আসে
সবাই তাকে সড়ে যেতে বলছে কিন্তু সে নড়বার পাত্রি নয়।
রাস্তার লোকজন জোড়ো হয়ে যায়।
আমি কোনোরকম কাঁপাকাঁপা কন্ঠে বলে উঠি-
আজ সারা রাস্তায় সকলের সামনে আমি রিমি বলছি আমার সাইকো ফিরবে। আমার সাইকো যদি আমাকে ভালোবেসে থাকে আমাদের ভালোবাসা যদি সত্যি হয়ে থাকে এক আল্লাহ ছাড়া পৃথিবীর কোনো শক্তি অয়ন চৌধুরীকে আটকাতে পারবেনা। সে ঠিক ফিরবে তার রিমিপরীর কাছে।
সবাই রিমির দিকে চেয়ে থাকে।
।আমি ধপ করে বসে পড়ি চোখ থেকে অশ্রু গড়িয়েই পড়ছে
।
।
।।।
।চলবে।
(পর্ব-২৬ থেকে শুরু হবে দ্বিতীয় অধ্যায়)
(আমি আপনাদের প্যাচের রানি আপু আমার গল্পে প্যাচ থাকবেনা তা কি করে হয়😁)