প্রেমময়নেশা(The Story of a psycho lover) #পর্ব-26 ( দ্বিতীয় অধ্যায়ের সূচনা) #Jannatul_ferdosi_rimi(লেখিকা)

0
555

#প্রেমময়নেশা(The Story of a psycho lover)
#পর্ব-26 ( দ্বিতীয় অধ্যায়ের সূচনা)
#Jannatul_ferdosi_rimi(লেখিকা)

২বছর পর,,
হসপিটালের করিডোরে পাইচারি করে যাচ্ছি আমি।ফারহান ভাইয়া মাথা নিচু করে বসে আছে। বাবা-মায়ের মুখেও চিন্তার ভাজ। ফারহান ভাইয়ার বাবা-মা ফারহানক ভাইয়াকে সান্তনা দিচ্ছে। আমি অপেরশন থিয়েটার এর লাল বাতির দিকে তাকিয়ে আছে। তখনি লাইট অফ হয়ে যায়। ডক্টর বেড়িয়ে আসে। ফারহান ভাইয়া হন্তদন্ত হয়ে ডক্টরের কাছে যায় আমরাও যাই। ফারহান ভাইয়া বলে উঠে-
ডক্টর আমার স্ত্রী! ডক্টর মুচকি হেঁসে বলে উঠে-
মিঃ ফারহান আপনার মিসেস ভালো আছে এবং আপনার ছেলে হয়েছে।
আমরা সবাই বলে উঠি-
আলহামদুলিললাহ!
আমি বলে উঠলাম- আমরা সুমুকে কখন দেখতে পাবো?
ডক্টরঃ একটু পরেই পেশেন্টকে কেবিনে দেওয়া হবে।তখনি একটি নার্স তোয়ালে মুড়িয়ে একটা ছোট্ট নবাজাতক শিশুকে ফারহান ভাইয়ার কোলে দিয়ে দেয়। ফারহান ভাইয়া খুশিতে কান্নাই করে দেয়। এই সন্তান যে তার আর সুমাইয়ার ভালোবাসার চিহ্ন।
আমি বলে উঠলাম- আমি খালামনি তাই আমি আগে কোলে নিবো।
এই বলে আমি বাচ্ছাটিকে কোলে নিলাম। ইসস কত্ত কিউট হয়েছে একেবারে কিউটের বক্স।ছোটবেলা থেকেই আমার বাচ্ছা অনেক পছন্দ। আমি ওকে আদর করতে লাগলাম প্রান ভরে। সবাই আমাকে দেখে যাচ্ছে।
রিমির মা বলে উঠে-
আমার মেয়েটার সেদিন বিয়ে হলে আজ আমার ছোট মেয়েটার কোল জুড়েও কেউ আসতো।
এই বলে তিনি কেঁদে দেন।
আশরাফ সাহেবঃ এইভাবে বলো না। মেয়েটা শুনলে আবার কান্নাকাটি করবে। এই দুই বছরে আমাদের মেয়েটা তো কম কস্ট পায়নি।
অনেক কস্টে আমরা তাকে সামলিয়েছি।
রিমির মাঃ হ্যা ঠিক বলেছো।
( ওহ আপনাদের তো বলাই হলো নাহ সুমাইয়ার আর ফারহান এর বিয়ে হয়েছে ১ বছর আগে।
রিমির অবস্হা দেখে সুমাইয়া অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলো অয়নের মতো ফারহান ও যদি সুমাইয়াকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে যায় তাহলে?
তাই সুমাইয়া ফারহানকে ফিরিয়ে দিতে পারেনি তাদের সুখের সংসারে আজ নতুন অতিথিও চলে এসেছে তাদের ছেলে)
সুমুকে কেবিনে শিফট করা হয়েছে।
সুমু তার ছেলেকে ইচ্ছেমতো আদর করে যাচ্ছে।
ফারহান বাবা -মা ও অনেক খুশি।
আমি বলে উঠলাম-।শুধু কি বাবুকে আদর করলে হবে তোমার জন্য বাবুর আব্বু তো একেবারে টেনশনে শেষ হয়ে যাচ্ছিলো বাবুর আব্বু কি পাবে?

ফারহানঃ আমার শালি সাহেবা একেবারে বুঝে গিয়েছে। বুঝাও তোমার বোনকে একটু বাবুর আব্বুকে আদর করতে হয়।

সুমু লজ্জায় শেষ।
ফারহান আব্বুঃ এইযে বাবা আছে সেইটা কি আপনি ভুলে গিয়েছেন।

সবাই মিটিমিটি হাঁসছি।

আমি বলে উঠলামঃ আচ্ছা আমরা একটু বাইরে যাই। বাবু বাবুর আম্মু ও আব্বুকে একটু আলাদা থাকুক।

সবাই আমার কথামতো চলে যাই। আমি যেতে যেতে থেমে গেলাম

ফারহান ভাইয়া সুমাইয়া ও বাবুকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়েছেন।
আমার চোখে জল এসে পড়লো।
একেবারে হ্যাপি ফ্যামিলি৷ আজ উনাকে খুব মনে পড়ছে আচ্ছা আজ আমাদের তো একটি ছোট্ট ফ্যামিলি থাকতো।

ওহ আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম ভালোমার কাছে যেতে হবে। খুশির খবরটা দিতে হবে।

চৌধুরী বাড়ি,,
রুশান গাড়ি নিয়ে ঢুকার সাথে সাথেই দাড়োয়ান তাকে সালাম দিলো। রুশান কে দেখে গার্ডসরা মাথা নিচু করলো। রুশান তার টাই ঠিক করতে করতে বাড়িতে ঢুকলো। তার ভাব ই আলাদা। চৌধুরী বাড়ি রুশনি চালাচ্ছে আর চৌধুরী ফ্যাকটরী
রুশান। মিসেস কলি এখন প্রায়-ই অসুস্থ থাকে।
একটি মাত্র ছেলে ছিলো তার। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে সে ৫ দিন অজ্ঞান-ই ছিলো।
রিমি আগে ঘর থেকেই বের হতো নাহ কিন্তু বাবা-মায়ের জন্য নিজেকে সামলিয়েছে

রুশান ঢুকার সাথে সাথেই সার্ভেন্ট তার কোট নিয়ে যায়।
(লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)

রুশানঃ রুশনি কোথায়??

সার্ভেন্টঃ ম্যাম তো পার্লারে। আজ পার্টিতে যাবেন

রুশানঃ ওহ হ্যা আমাকে ও যেতে হবে আজকে

এইবলে রুশান উপরে চলে যায়।

।।।।
মিসেস কলি ঘুমের মধ্যে পানি পানি করে উঠে
কিন্তু কারোই দেওয়ার সময় নেই।।
সবাই তো রুশান আর রুশনির ফরমাইশ খাটতে বয়স্ত।

তখনি আমি ঢুকে তাড়াতাড়ি ভালোমাকে পানি খাওয়ায়।

ভালোমাঃ রিমি মা তুই এসেছিস??

আমি বলে উঠলাম-
এরা কি মানুষ ভালো মা?? তোমাকে পানি দেওয়ার সময় ও কি এদের নেই???

ভালো মা বলে উঠে-
অসুস্থ মানুষকে দেখার কি তাদের সময় আছে??
তারা তো পার্টি-ক্লাব নিয়েই ব্যস্ত।

রিমিঃ এই বাড়িটা কেমন যেনো হয়ে গিয়েছে সানাও
তাই হোস্টেলে থাকে।
তুমি চলে এসো না আমার সাথে এই বাড়িতে কেউ তোমার খেয়াল রাখেনা যখন উনি ফিরে আসবেন তখন সবাইকে মজা দেখাবে। তখন আবার আমরা উনার সাথে এই বাড়িতে ফিরবো।

ভালোমা বলে উঠে-
পাগলি মেয়ে একটা। এই বাড়িতে অয়নের স্মৃতি আছে অয়নের বাবার স্মৃতি আছে আমি কি করে যাই??
আর তুই এতো জানিস কি করে অয়ন ফিরবে?

আমি বলে উঠলাম- আমার বিশ্বাস আমার সাইকো ঠিক ফিরবে।

।।।।।।।।।
In London.,,,.

সিড়ি দিয়ে নেমে যাচ্ছে মল্লিকা। হাতে তার অফিসের কিছু জরুরী ফাইল।
নীচে নামার সাথে সাথেই সার্ভেন্টস তাকে স্পেশাল স্যালাড সার্ভ করে। মল্লিকা জুসের গ্লাস হাত নেয় এবং ফাইল চেক করতে থাকে। তখনি নিদ্র খান আসে খান ইন্ডাস্ট্রির মালিক সে।লন্ডনে তার বিরাট ব্যাবসা। তার স্ত্রী মল্লিকা। খান ইন্ডাস্ট্রির এমডি।
সময়ের কাজ পারফেক্টলি হওয়া তার চাই।

নিদ্র এসে বলে উঠে-
গুড মর্নিং ডার্লিং!!

মল্লিকাঃ গুড মর্নিং!! ( ফাইল দেখতে দেখতে)

নিদ্রঃ আহা একটু আমাকেও টাইম দাও সারাদিন অফিস এন্ড অফিস।

মল্লিকাঃ তা কি করবো?? তোমার ছেলে ইশান তো অফিস দেখছেইনা।

নিদ্রঃ আয়ুশ ও তো দেখতে পারে।

মল্লিকাঃ আয়ুশ?? সে তার মনমর্জি মতো চলতে পছন্দ করে।

নিদ্রঃ আর ইশান ক্লাব পার্টি।

মল্লিকাঃ ওদের বয়স-ই তো এইটা তাই না??
আর আয়ুশ একটা বড় ট্রমা থেকে ফিরছে একটু টাইম তো লাগবেই তারপর না হয় বিস্নেজ এ মন দিবে।

নিদ্রঃ তা ঠিক বলেছো। তা আমাদের আয়ুশ কোথায়??

মল্লিকাঃ যেখানে থাকার কথা!!

——-😇😇😇
লন্ডনের বিট্রিশ মিউজিয়াম এর সামনে দাড়িয়ে আছে আদি। বলা ভালো লন্ডনে প্রায় ১০০টির ও বেশি জাদুঘর রয়েছে। লন্ডন নিজেই একটি বড় জাদুঘর এর মতে।

আদি কাউকে ফোন করে বলে উঠে-
কই তুই?? আচ্ছা আয়ুশ কোথায়?? সেইটা বল

লন্ডন ইইউনিভার্সিটি তে মেয়েরা আয়ুশ আয়ুশ করে যাচ্ছে। আদি কোনোরকম দৌড়ে চলে আসে।

আদিঃ এইরেএএ মেয়েদের ভীর মানে আমাদের হিরো আসছে।

তখনি কেউ( KTM 790 Duke)(বাইক) নিয়ে। এন্ট্রি করে সব মেয়েরা মিলে ঝাপিয়ে পড়ে তার উপর।
সে তার হেল্মেট বের করে চুল গুলো আরেক হাত দিয়ে সাইড করে দিয়ে চোখে সানগ্লাস পড়ে বাইক টা সাইডে রেকে বেড়িয়ে পড়ে।
সে আর কেউ না নিদ্র খানের এক মাত্র ছেলে আয়ুশ খান। সব মেয়েরা তার জন্য পাগল। পাগল হবেনা কেন? আয়ুশ তো তাদের ড্রিম বয়।
আয়ুশ ভার্সিটির স্টুডেন্ট। সে আগে এই ভার্সিটিতে পড়তো। এখন মাঝেমাঝে সবা বন্ধুরা মিলে আসে
মেয়েরা বলে উঠে-
ওয়াটস আপ আয়ুশ??(কি খবর)
—-সেভেন আপ(আয়ুশের স্টাইলে)
আয়ুশ একটা কিলার স্মাইল দেয়। সবাই তো একেবারে ফিদাহ।
তখনি আয়ুশ খেয়াল করে আদি তার দিকে রক্তচক্ষু নিয়ে তাঁকিয়ে আছে।
আয়শ বলে উঠে-

বাট গার্লস গিভ মি সাম টাইম নাও ( আমাকে কিছু সময় দাও)

–ওকেএএ

আয়ুশ যাওয়ার সাথে সাথেই আদি তাকে টেনে নিয়ে আসে।

আদিঃ তোকে কখন ধরে ফোন করেছিলাম ফোন ধরছিলা না কেন??

আয়ুশ বিরক্তি মাখা কন্ঠে বলে উঠে–

In Bangladesh,,,
হসপিটালের সামনে একটি গাড়ি আসে। একজন গাড়ি থেকে বের হয়ে আসে। সবাই তাকে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে। সে তার সাদার এপ্রোন হাতে নিয়ে চোখের চশমা টা ঠিক করে হসপিটাল এর গেটে ঢুকে।

নার্স রা বলে উঠে-
ডক্টর আমান চলে এসেছে।

রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলো তখনি দেখি একটি ছোট্ট বাচ্ছা বিড়াল একেবারে কাহিল হয়ে রয়েছে বড্ড মায়া হলো। আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে বিড়াল ছানাকে তুলে নিলাম।

।#দ্বিতীয় অধ্যায়
চলবে কি?

27 part
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=122122555196106573&id=61553197202722&mibextid=Nif5oz

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here