#প্রেমময়নেশা(The Story of a psycho lover)
#পর্ব-32(আয়ুশ কে??)
#Jannatul_ferdosi_rimi(লেখিকা)
স্পর্শটা গভীর হয়ে যাচ্ছে। আমি চোখ খুলতে গিয়েও পারছিনা। আস্তে আস্তে স্পর্সটা হারিয়ে যাচ্ছে। আমি চট করে চোখ খুলে ফেলি। কেউ নেই।
রাত প্রায়-২টো চারদিকে রাতের নিস্তব্ধতা। টকোপি নিজের কেট বেড এ আরামের সাথে ঘুমাচ্ছে। কিন্তু আমার চোখে ঘুম নেই। লন্ডেনে প্রথম রাতেই এইরকম অভিজ্ঞতা হবে ভাবিনি। এইটা কি শুধুই আমার মনের ভুল নাকি অন্যকিছু?? জানিনা আমি। কিন্তু কেউ তো নেই।
।।।।।।।।।।।
ল্যাম্পোসট আলোয় কারো মুখে ফুটে উঠছে বাঁকা হাঁসির রেখা।
।।।।
নানা কলপ্নার মধ্য দিয়ে রাত পার করলাম..।।
সকালে,,,
টকোপির জন্য বিস্কুট নিয়ে আসলাম । তখনি কলিং বেল বেজে উঠলো-
আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে দরজা খুলে দেখলাম একটা বড় প্যাকেট। আমি তাড়াতাড়ি তুলে নিলাম। এইটা আবার কি??
কার এইটা?? ওয়েটারকে ডাক দিলাম।
ওয়েটার বলে উঠলো–জ্বী ম্যাম কিছু বলবেন??
রিমিঃ এইটার কার???
ওয়েটারঃ আপনার রুমের সামনে তখন মেইবি আপনার ই হবে।
আমি বলেে উঠলাম–
কিন্তু কে দিয়েছে কিছু জানেন???
ওয়েটারঃ সেটা তো বলতে পারবো নাহ ম্যাম।
আমি কিছু বললাম নাহ।।
পেকেট টা নিয়ে ঘরে আসলাম।
এক্টা বড় বক্স এর মতো পেকেট টা। খুলে দেখি অনেক বড় ট্যাডি। এতো বড় টেডি দিলো??
আজব। ওমা আবার হ্যাপি টেডি ডে লেখা। আজকে টেডি ডে। কিন্তু এইসব মানে কি আজব।
কিন্তু টেডি টা অনেক কিউট। টকোপি আমার কোলে উঠে টেডিটা দেখে যাচ্ছে।
আমি বলে উঠলাম- কিরে তোর পছন্দ হয়েছে??
টকোপি কি বুঝলো কে জানে??
টেডি টা নিয়ে খেলে যাচ্ছে।
আমান দূর থেকে দেখে যাচ্ছে। অনেক ভয়ে ছিলো সে। যত দূর জানে সে দিলে রিমি গিফট টা নিতো না। তাই এই ব্যাবস্হা। যাক বাবা। রিমিপাখি শেষমেষ গিফট টা নিলো।
আমান মুচকি হেঁসে চলে গেলো।
আয়ুশ নিজের ঘরে বসে কিছু একটা করছিলো।
তখনি নিদ্র প্রবেশ করে।
নিদ্রঃ আমার বেটা কি করছে??
আয়ুশ নিজের সু এর ফিতা লাগাতে লাগাতে বলে উঠলো-
তেমন কিছুনা ড্যাডি!!জাস্ট বাইরে যাবো একটু প্যাক্টিস আছে।
নিদ্র বলে উঠলো-
কালকে স্টিক হসপিটালে বড় কনফারেন্স আছে। তুমিও যাবে আমার সাথে।
আয়ুশ বলে উঠলো-
কেন???
আমার কাজ আছে।
নিদ্রঃ দেখো আয়ুশ তুমি অন্তত ইশানের মতো হয়ো নাহ।
তুমি বলেছিলে অফিস জয়েন করবে তাই।
আর অই হসপিটালে আমাদের কম্পানি বড় ইনভেস্টমেন্ট করেছে তাই।।
তোমাকেও যেতে হবে।
আয়ুশ বলে উঠলো–
ঠিক আছে আমি যাবো।
নিদ্রঃ আমি নিশ্চিন্ত হলাম( মাথা নাড়িয়ে)
।।।।।।
রুশনি ব্রেডে বাটার নিচ্ছে। রুশান এসে বলে উঠে-
আজকে কোমপানির বড় ডিল বাইরে থাকবো।
রুশনিঃ তোমার কি হয়েছে বলো? তো??
আজকাল বাইরে একটু বেশিই থাকছো।।
রুশানঃ অফিসের অনেক কাজ থাকে। তাই
তুমি এইসব বুঝবেনা।।
রুশনিঃ আমি বুঝতে চাই রুশান।
মেয়েটা বাড়িতে তোমার এতো কাজ ওকে কি একটু সময় দেওয়া যায়না???
রুশানঃ এতো কৈফিয়ত আমি দিতে পারবোনা(খানিক্টা ধমকের সুরে)
রুশান নিজেকে সামলে বলে উঠলো-
অফিস থেকে এসে সানার সাথে কথা বলবো আসছি।
রুশান বেড়িয়ে গেলো।
রুশনি কিছুই বলতে পারলো নাহ।
।।।।।।
In London,,,
আমরা সবাই ব্রেকফাস্ট করছি। আমান বলে উঠলো–
আমাদের সবাইকে কিন্তু আজকে প্রস্তুতি নিতে হবে ওকে???
আমরা সবাই বলে উঠলাম- জ্বী।
আমানঃ কালকে সবাই কনফারেন্স টা ভালোভাবে করতে পারবেন আশা করি( চশমা টা ঠিক করে)
আমানঃ কিন্তু রিমি মানে আপ্নারদের সবার এখানে অসুবিধা হচ্ছেনা তো??
লিসা বলে উঠলো-
অনেক বড় এলাহি আয়োজন করা হয়েছে স্যার।আমাদের সমস্যা নেই।
টিনা সুপ খেতে খেতে বলে উঠলো-
আমান স্যার আমরা প্রথমবার লন্ডনে এসেছে শহরটা ঘুড়ে দেখবো নাহ???
আমান টিসু দিয়ে ঠোটের কোনায় মুছতে মুছতে বলে উঠলো–
অবশ্যই কিন্তু কালকে আমাদের কনফারেন্স শেষ হোক তারপর।
তাছাড়া আমরা আছি তো অনেকটা দিন।
কিন্তু এইসব কিছুই আমি শুনছি না।
কিসব ঘটে যাচ্ছে আমার সাথে লন্ডনে আসার সাথে সাথে।
আমান বলে উঠলো-মিস রিমি আপনি ঠিক আছেন??তো??
আমি খানিক্টা থতমত খেয়ে গেলাম
রিমিঃ জ্বী
আমানঃ এতো চুপচাপ যে।
রিমিঃ না আসলে এমনিই।
আমানঃ ওহ আচ্ছা।।।
আমানঃ তো যা বলছিলেন আপনার প্রিপেইড হয়ে থাকবেন। আশা করি আপ্নারা আমাদের সম্মান রাখবেন।
রিমিঃ আপনি কোনো চিন্তা করবেন নাহ আমরা নিজের সবোর্চ্চ চেস্টা করবো।
আমানঃ সেই আশা রয়েছে আমার।
যেহুতু কালকে একটা ইন্টারনেশনাল কনফারেন্স।
অনেক বড় একটা দিন আমার জন্য।
আমাকে নিজের সবোর্চ্চ চেস্টা করতে হবে।
টকোপি আমার কোলে রয়েছে। টকোপিকে আদর করে যাচ্ছি আর কিছু রিপোর্টস দেখছি।।।
সকালে,,,
কালকে রাতে অন্তত তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি আমার সাথে। কিন্তু সকাল থেকে আমার কেমন যেনো একটা ফিলিং হয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু কেন??
জানি না আমি। আজকে এতো বড় কনফারেন্স তাই.??
নাহ কিচ্ছু বুঝতে পারছিনা।
আমান সাদা এপ্রোন হাতে নিয়ে এসে বলে উঠে-
রিমিপাখি তুমি তৈরি?
আমি নিজের এপ্রোন টা নিতে নিতে বলে উঠলাম- চলুন!!
আমান ঃ চলো।
বাই দা ওয়ে তোমাকে আজকে অনেক সুন্দর লাগছে।
আমি অবাক হয়ে আমান স্যার এর দিকে তাঁকিয়ে আছি।
তিনি হয়তো নিজেও জানেন না কি বলেছেন তাই তাড়াতাড়ি গাড়ির দিকে রওনা হলেন।
আমরা সবাইও গাড়িতে উঠে বসলাম।
গাড়ি বললে ভুল হবে একটা মিনি বাস।
সব মেয়েরা আমানের দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি জানালার দিকে তাকিয়ে আছি।
।।।।।।
আয়ুশ চুলগুলো জেল দিয়ে সেট করে নিলো।
গায়ে কালো সুট। ডেশিং লুক। মুখে টেডি স্মাইল।
মল্লিকাঃ বেটা তুমি রেডি??
আয়ুশঃ হুম মম।
নিদ্র হাতে ঘড়ি লাগাতে লাগাতে বলে উঠে-
তাহলে চলো যাওয়া যাক। বেশি সময় নেই।
আয়ুশঃ চলো।
।।।।।।
আমরা সবাই অকোডোরিয়াম এ চলে এসেছি।
অনেক বড় কনফারেন্স হবে। ভিন্ন দেশ থেকে ভিন্ন ডক্টরস এসেছে। সবাই হার্ট সার্জন।
উনি তো এইসব বড় বড় শো তেই আসতেন। উনাকে টিভিতে দেখা যেতো আহা।
আচ্ছা এখানে যদি উনি চলে আসেন আর আমাকেও এই পোষাকে দেখেন তখন???
।।।।।
আয়ুশ গাড়ি থেকে নেমে গেলো।
আয়ুশের টেডি স্মাইলে মেয়েরা যেনো শেষ হয়ে যাচ্ছে। কালো সুট এ ওয়াও।।।
মল্লিকা ও নিদ্র ও নেমে যায়।।।
আয়ুশের এক অদ্ভুদ ফিলিং হচ্ছে কিন্তু কেন সে জানে না।।
এইরকম হওয়ার তো কথা নয়।
একজন বড় প্রফেসর বলে উঠলো-
প্রথমেই সবাইকে থ্যাংকস এন্ড কিছুক্ষন পরেই আমাদের কনফারেন্স শুরু হবে।
আমার নার্ভাস লাগলেও কেন যেনো একটা অন্যরকম ফিলিং হচ্ছে।।
আমান বলে উঠে-
আর কিছুক্ষন এর মধ্যে শুরু হবে।
আশা করি সবাই প্রস্তুত।
আমরা বলে উঠলাম- হ্যা।
আমানঃ এখন সবাই বসে পড়ুন
আমান এর কথামতো সবাই নিজেদের জায়গা বসে পড়লো।
।।।।।।।।
ইশার একটুও ভালো লাগছেনা
আয়ুশ নাকি কনফারেন্স ও গিয়েছে তাকে কেন বলেনি??
তাহলে সেও চলে যেতো আজকাল আয়ুশ কেমন যেনো হয়ে গিয়েছে ভালো লাগেনা।
হুহ।।।
প্রফেসর মাইক টা হাতে নিয়ে বলে উঠলো-
এখন আসছেন আমাদের হসপিটালের কন্ট্রিবিউটার
নিদ্র খান মল্লিকা খান ও আয়ুশ খান।
সবাই জোড়ে হাত তালি বাজালো।
আয়ুশ খান নামটা শুনে কেন জানি আমার হার্টব্রিট ফাস্ট হতে লাগলো।
উফফ কিজন্য??
আয়ুশ স্টেজের দিকে যত যাচ্ছে তার কেমন একটা ফিলিং হচ্ছে
।।
মল্লিকা নিদ্র তারা স্টেজে প্রবেশ করলো।
আয়ুশ নিজেকে সামলে স্টেজে উঠে গেলো।
আমরা সবাই স্টেজে তাকাতেই আমি থমকে গেলাম
এ কাকে দেখছি আমি।
আমান যেনো নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছেনা।।
আমি কাঁপাকাঁপা কন্ঠে বলে উঠি—
অয়ন আপনি ।।।।।।।।।।
।#দ্বিতীয়_অধ্যায়।।
চলবে কি??
33 part
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=122122561940106573&id=61553197202722&mibextid=Nif5oz