#প্রেমময়নেশা(The story of a psycho lover )
#পর্ব-35
#Jannatul_ferdosi_rimi(লেখিকা)
তার মিহি কন্ঠে একেবারে আলাদা শিহরন বয়ে যাচ্ছে। সে আমার দিকে এগিয়ে আমার হাতে কিছু একটা করে। কিন্তু আমি কিছুই দেখতে পারছিনা।ঘরটা একেবারে অন্ধকার। আমি কিছু বলবো তার আগেই ঘরের লাইট অন হয়ে যায়। 🌸🌸
আশেপাশে কেউ নেই। এইসব কি হচ্ছে। উফফ মাথা ভনভন করছে। টকোপি আমার কাছে একেবারে ঘেসে বসে পড়ে। আমি বলে উঠলাম—টকোপি তুই কি কাউকে দেখেছিস?টকোপি ফ্যালফ্যাল হয়ে আমার দিকে তাঁকিয়ে আছে।
🌸।।।।।।
তখনি টকোপি আমার ওড়না দিয়ে টান দেয়।
আমি বলে উঠলাম–
কি হয়েছে টকোপি।
টকোপি ইশারা করে পিছনে তাঁকাতে। আমি তার ইশারা অনুযায়ী পিছনে তাঁকিয়ে দেখি নীল শাড়ি।
আরো অনেক অর্নামেনটস।
এইসব কে রাখলো?? অইগুলো নিতে গিয়ে হাতের দিকে আমার খেয়াল যায়
আমার হাতে নীল চুড়ি। নীল চুড়ি আবার কে পড়ালো??
তার মানে একটু আগে যা হয়েছে তা সব সত্যি।কিছুই আমার মনের ভুল নয়।কিছুক্ষন আগে
কেউ আমার হাতে এই চুড়ি
পড়িয়ে দিয়েছে কিন্তু কে???
তখনি দেখি শাড়ির ট্রে এর পাশে একটি ছোট্ট চিরকুট তাতে লেখা—
সত্যি বলছি শাড়িতে অদ্ভুদ সুন্দর দেখা যায় তোমাকে হুট করেই যেনো তুমি ষোড়শী নারী হয়ে উঠো আর তখনোই তোমার আচলের বাঁধা পড়ে যাই আমি বার বার।
একটি কাজ করিও তার সাথে তোমার অই মায়ামিশানো টানা চোখে গাঁড়ো করে কাজল পড়ো।
আর কারো যেনো নজর না লাগে। ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা নিও।
আমাকে বেশি খুঁজতে যেওনা আমি নিজেই
তোমার কাছে ঠিক ধরা দিবো ❤️🍂!!
এদিকে আমার পুরো জটলা পেঁকে যাচ্ছে
কি হচ্ছে কি এইসব?? উফফ
।।।।।।
🍂🍂🍂🍂
আমান বই নিয়ে কিছু স্টাডি করছে। কনফারেন্স হতে এখনো কিছুটা দিন বাঁকি আছে।
তাই অনেক স্টুডেন্সরাই নিজেদের মতো লন্ডন শহর ঘুড়ে যাচ্ছে।
আমানের আবার এইসব ঘুড়াঘুড়ি ভালো লাগেনা।
তখনি তার দরজায় কড়া নাড়ে।
আমান গিয়ে দরজা খুলে অবাক হয়ে যায়।
কেননা রিমি এসেছি। সাথে টকোপিও।
টকোপি আমানকে দেখে তার কাছে দৌড়ে চলে গেলো।
আমি বলে উঠলাম–
এইযে এখন আপনাকে দেখেছে। এখন আপনাকে আর টকোপি ছাড়ছেনা।
আমান বলে উঠলো–
সেসব নাহয় বুঝলাম।কিন্তু তুমি এখানে?
আমি বলে উঠলাম–
আমি বলতে এসেছি। আপনি তাড়াতাড়ি রেডি হোন।
আমি বাইরে যাবো।
আমানঃ বাইরে?? এখন তো প্রায় ১০টা বাজে।
তুমি কি ঘুড়তে যেতে চাইছো???(ভ্রু কুচকে)
রিমিঃ খানিক্টা সেটাই।
আমান জাস্ট অবাক হয়ে রিমিকে দেখে যাচ্ছে
কালকে যে মেয়েটা এতোটা কান্না করছিলো। আজকে সে অনেকটাই হাঁসিখুশি। স্ট্রেঞ্জ।কিন্তু আমানের এতে ভালোই লাগছে। তার রিমিপাখি খুশি মানে সেও খুশি।
আমান বলে উঠলো–
আচ্ছা আমি এখনই রেডি হয়ে আসছি।
আমি বলে উঠলাম– তাড়াতাড়ি কিন্তু।
আমানঃ আচ্ছা(মুঁচকি হেঁসে)
।।।।।
সুমু কফির কাপ নিয়ে এসে দেখে
ফারহান ঘুম। কাব্য বেডে বসে একা খেলছে।
সুমু বলে উঠলো–
দেখেছো আমার জামাইটার কান্ড???
ছেলে কখন উঠে গেছে আর বাপ মরার মতো ঘুমাচ্ছে।
সুমু ফারহান এর কাছে গিয়ে বলে উঠলো–
এই আপনি ঘুম থেকে উঠবেন?? নাহ
ফারহানঃ আরেকটু ঘুমাতে দাওনা।
সুমু কিছু বলবে তার আগেই ফারহান এর মা এসে বলে উঠলো–
সুমু মা তুমি এখনো কি করছো এখানে??
তাড়াতাড়ি পড়তে বসো তোমার তো আবার কয়েকদিন পর ইন্টারভিউ আছে।
সুমু ঃ পড়বো কীভাবে মা?? আমার ছেলেটাকে নিয়েও আমার এতো কস্ট করতে হয়না যতটা আপনার ছেলেকে নিয়ে করতে হয়। আমার মনে হয় আজকে উনার অফিস যেতেই হবেনা।
ফারহান এর মা হেঁসে বলে উঠে–
আচ্ছা তুমি যাও।
আমি আমার ছেলেকে উঠাচ্ছি।
সুমু কাব্যকে কোলে নিয়ে চলে যায়।
।।।।।।
সানা মিসেস কলির জন্য ওষুধ এনেছে।
মিসেস কলিঃ আমি আর খেতে পারবো নাহ
সানাঃ খালামনি তুমি যদি এই ওষুধ না খাও
তোমার অই মেয়ে আমার অবস্হা টাইট করে দিবে।
।আমাকে আজকেও ফোন করেছিলো তুমি ঠিক মতো ওষুধ খাচ্ছো নাকি।
মিসেস কলি হেঁসে বলে উঠ–
সত্যি অই দূর বিদেশ থেকেও আমার খবর নিতে ভুলেনা।
সানাঃ আমাদের জুনিয়ার ভাবি মানুষটাই এমন।
মিসেস কলিঃ
সত্যি অই দূর বিদেশ থেকেও আমার খবর নিতে ভুলেনা
সানাঃ তা যা বলেছো।
মিসেস কলিঃ আজকে আমার ছেলেটা বেঁচে থাকলে আমাদের কত্ত সুন্দর সংসার থাকতো।ফারহান সুমুর ছেলের মতো আমার অয়ন-রিমিরও কোল আলো করে কেউ আসতো।
( এই বলে মিসেস কলি কেঁদে দেয়)
সানা মিসেস কলিকে জড়িয়ে ধরে সেও কেঁদে দেয়।
সানা যত ফারহানকে ভুলতে চায় ততই সে নামটা আবারও চলে আসে।।।
🍂🍂🍂🍂🍂🍂।।।।।
।।।
আজকে ফাইনাল ম্যাচ। আদি ও অন্যরা নিজেদের মতো প্রেক্টিস করে যাচ্ছে।
আয়ুশ এসে এখনো পৌছায়নি।
জনি ও তার টিমেরাও নিজেদের মতো প্রেক্টিস করে যাচ্ছে।
আজকে তারা আয়ুশকে কিছুতেই জিততে দিবেনা।
মেয়েরা ম্যাচ এর থেকে আয়ুশকে দেখার জন্য বেশি এক্সাইটেড। তাদের ড্রিম বয় বলে কথা।
।।।।।
🍂🍂
আয়ুশ আয়নায় নিজের চুলে জেল লাগিয়ে সেট করে নিলো।
নীল কোট পড়ে বাঁকা হেঁসে ড্রয়িং রুমে চলে গেলো।
নিদ্র আর মল্লিকা নিজেদের মধ্যে কিছু কথা বলছিলো।
আয়ুশকে দেখে মল্লিকা বলে উঠে–
আমার বেটা কাম
আয়ুশ গিয়ে মল্লিকা ও নিদ্রোর পাশে বসে।
আয়ুশ বলে উঠে–
বাপি মম আমার জন্য দোয়া করো। আজকের ম্যাচটা যেনো আমি জিতে যাই।
নিদ্র বলে উঠে–
আমাদের দোয়া সবসময় তোমার সাথে আছে।
মল্লিকাঃ আমি জানি আমার চ্যাম্প জিতবেই।
আয়ুশ দুজনকে জড়িয়ে ধরে বলে উঠে–
থ্যাংকস
মম ড্যাড!!
এই বলে আয়ুশ যেতে নিলে মল্লিকা বলে উঠে–
ইশাকে বলেছ??
আয়ুশ বিষয়টা এড়ানোট জন্য বলে–
আমার দেড়ি হয়ে যাচ্ছে।
এই বলে আয়ুশ চলে যায়।
মল্লিকাঃ দেখেছো?? আমাকে এড়িয়ে গেলো।
নিদ্রঃ তুমি এতো চিন্তা করোনা। কাল-পরশু তো ওদের এন্গেজমেনট সব ঠিক হয়ে যাবে।
মল্লিকাঃ আই হোপ সো।
।।।।।।।
আয়ুশ নিজের স্টাইলে চুল্গুলো ঝাকাতে ঝাকাতে বাস্কেট বলটা লাফাতে লাফেতে কোট এ নিয়ে আসলো।
মেয়েরা হা হয়ে আয়ুশের স্টাইল দেখছে।
সত্যি সবাই ফিদাহ।।।
সবাই আয়ুশ করে চেচিয়ে যাচ্ছে।
।।
আদিঃ এইতো আমাদের কিং চলে আসলো।
রকি বলে উঠলো–
বাট আমার একটু টেনশন হচ্ছে।
রুপ ঃ তোর আবার টেনশন হচ্ছে কেন??
আদিঃ তাও আমাদের আয়ুশ থাকতে।
রকিঃ জনি যা ছেলে ও সহজে আমাদের জিততে দিবেনা।
আয়ুশ বাঁকা হেঁসে বলে উঠে–
জনি যা ইচ্ছে করুক ইয়ার।
আয়ুশ খান কে সে আটকাতে পারবেনা
।।।।।
এদিকে জনি মনে মনে শয়তানী হাঁসি দিচ্ছে।
সে নিজের পকেটে গুড়ো মরিচের স্প্রে রেখেছে।
আয়ুশ বলটা বাস্কেটে রাখতে গেলেই সে স্প্রে করে দিবে। আয়ুশের গুড়া মরিচে এলার্জি আছে।
।।।।।।
এদিকে ভার্সিটির সামনে রিমি গাড়ি থামাতে বললে
আমান অনেকটাই অবাক হয়।
আমান বলে উঠলো–
আমরা এই ভার্সিটির সামনে কেন??
আমি বলে উঠলাম–
আজকে এই ভার্সিটিতে অনেক বড় বাস্কেট টুর্নামেন্ট।
আমানঃ তাহলে কি আমরা এখানে খেলা দেখতে এসেছি রিমিপাখি??
(অবাক হয়ে)
রিমিঃ বলতে পারেন। বাট একজন কে চিয়ার করতে এসেছি।
এই বলে আমি টকোপিকে নিয়ে বেড়িয়ে যাই।
আমানও বেড়িয়ে যায়।
আমানঃ কিন্তু কাকে চিয়ার করতে এসেছি।
এখানে তোমার কোনো বন্ধু আছে কি??
রিমিঃ উফদ আপনি বড্ড কথা বলেন।
এই বলে আমি আমান স্যার এর হাত ধরে ভিতরের দিকে নিয়ে যেতে লাগলাম।
আমানের ভালোই লাগছে এই প্রথম রিমিপাখি নিজের ইচ্ছায় তার হাত ধরেছে।
ভিতরে গিয়ে আমরা অবাক।
মেয়েরা শুধুই আয়ুশ আয়ুশ করে যাচ্ছে।
মানে আমার সাইকোটার নাম করে যাচ্ছে।
বাস্কেট কোটে উনাকে দেখি উফফ কি লাগছে আমার সাইকো কে 😍😍
আমানঃ এখানে রিমিপাখি আয়ুশের জন্য এসেছে(মনে মনে)
এদিকে আমি হিংসায় জ্বলে যাচ্ছি। ধলা শাকচুন্নিগুলো উনাকে গিলে খাচ্ছে।
যতই আমার সাইকো আমাকে না চিনুক। আমি তো জানি উনিই আমার সাইকো
আয়ুশ বাস্কেট বলটা হাতে নিবে।।
তখনি আমি চিৎকার করে বলে উঠি–।
বেস্ট অফ লাক আমি জানি আপনি জিতবেন।
আমার চিৎকার শুনে সবাই আমার দিকে তাঁকিয়ে আছে।
আয়ুশঃ এতো হসপিটালে মেয়েটা ও এখানে কীভাবে??(অবাক হয়ে)
আদিঃ এ আবার কে??
আয়ুশ রিমির দিকে আবার তাঁকালে
রিমি তার দিকে ফ্লাইং কিস ছুড়ে দেয়
এবং চোখ টিপ দেয়।
আয়ুশ ভরকে যায়।
এতো ভারি অসভ্য মেয়ে।
আয়ুশের অনেক লজ্জা লাগছে।
#দ্বিতীয়_অধ্যায়
চলবে কি??
36 part
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=122122567886106573&id=61553197202722&mibextid=Nif5oz