#প্রেমময়নেশা(The Story of a psycho lover)
#পর্ব-38
#Jannatul_ferdosi_rimi(লেখিকা)
ইশা একেবারে মুখ থুবড়ে পড়ে গেছে।আমি হাঁসতে হাঁসতে শেষ। আয়ুশ পিছনে তাঁকায় সেও হেঁসে দেয়। ইশা রাগে ফুসতে ফুসতে আমাকে বলে উঠে–
এই মেয়ে এই! বেশি হাঁসি পাচ্ছে তাইনা?? তুমি আমাকে ইচ্ছে করে ফেলে দিয়েছো। তোমাকে তো।
আমি উনার মতো ইনোসেন্ট ফেস করে বলে উঠলাম–সরি ইয়ার! আমি ইচ্ছে করে করেনি!! ভুলে।
💕💕
রিমির এইরকম ফেস দেখে আয়ুশ ফিক করে হেঁসে দিলো। রিমি একদম তার মতো করছে। সত্যি মেয়েটাও পারে।
ইশা রাগে থরথর করে কাঁপছে।
ইশা বলে উঠে–
আয়ুশ তুমিও হাঁসছো এই মেয়েটার সাথে???
আমি এদিকে পড়ে গিয়েছি তুমি আমাকে হেল্প না করে হেঁসেই যাচ্ছো হাউ কেন???
আয়ুশ কোনোরকম নিজের হাঁসি কন্ট্রোল করে বলে উঠে–
সরি!!
এই বলে আয়ুশ কোনোরকম ইশাকে উঠায়।
আমি মুগ্ধ হয়ে উনার হাঁসি দেখছিলাম।
একেবারে আমার সেই সাইকোর হাঁসি।
একেবারে নিখুত।
এই হাঁসি শুধুমাত্র আমার সাইকোর মুখেই মানায়।
হ্যা আমার সাইকো উনি।
ইশা বলে উঠলো–
আয়ুশ এখন অন্তত চলো।
আয়ুশ ইশাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে।
আয়ুশ কি মনে করে যেনো পিছনে তাঁকায়।
রিমি তার দিকে ফ্লাইং কিস ছুড়ে দেয়।
আয়ুশ মুচকি হাঁসি উপহার দিয়ে চলে গেলো।
আয়ুশদের বাড়িতে বিভিন্ন
শপিং এর জিনিসপত্রের ছড়াছড়ি।
এলাহি ব্যাপার চলছে
মল্লিকা একের পর এক জুয়েলারি
ইশাকে পড়াচ্ছে।
মল্লিকাঃ পছন্দ হয়েছে??
ইশাঃ মল্লিকা আন্টি তুমি চয়েজ করেছো আর আমার পছন্দ হবেনা তা কী করে হয়।
ইশার মাঃ মল্লিকা ইশার এন্গেজমেন্ট এর সব ড্রসেস কিন্ত আমরা দিচ্ছি
শুধু ইশার গাউন ই
পুরো ২কোটি টাকা।
মল্লিকাঃ তোহ খান রা কি কম নাকি।
আয়ুশের একটা কোর্ট এ নিচ্ছি ১কোটিতে
ইশার মাঃ এইটাই তো আমাদের স্ট্রেন্ডার্ড
মল্লিকাঃ একদম ঠিক।
আমাদের বাড়ির বড় বউকে একেবারে এক্সক্লুসিভ জিনিসে মুড়িয়ে দিবো।
কিন্তু ইশার সেদিকে খেয়াল নেই।
সে তো আয়ুশকে খুজে যাচ্ছে।
মল্লিকা ব্যাপার টা বুঝতে পেরে বলে উঠলো–
ইশা!! আয়ুশকে খুজছো??
ইশাঃ তুমিতো জানো আন্টি অই মিডিল ক্লাস মেয়েটার জন্য আমি সবসময় আয়ুশকে নিয়ে চিন্তায়
থাকি।
মল্লিকাঃ উফফ বেবি আয়ুশ তো তোমারই।
পরশু ইন্গেজমেনট তারপর অর্ধেক তোমার হয়ে যাবে।
ইশাও যেনো শান্তি পেলো।
।।।।।।
In hospital,,
আমান স্যার আমাদের কিছু ইম্পোর্টেনট টপিক দেখিয়ে দিচ্ছে।
এই হসপিটালেই প্রতিবছর অনেক বড় কনফারেন্স হয়।
এইবারেও হবে।
অনেক বড় বড় ডক্টরের সাথে আমরা দেখা করার সুযোগ পাচ্ছি।
টিনা বলে উঠে–।ইসস উনারা কতকিছু জানে।
আমানঃ তোমরাও আস্তে আস্তে জানতে পারবে।
অনেক বড় ডক্টর হবে তোমরা এই আশা রাখি এবং
আমাদের বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করবে।
আমরা সবাই ঘুড়ে দেখছি। হসপিটাল টা।
আজকে টকোপিও এসেছে আমাদের সাথে
ইশা একটা কাজে হসপিটালে এসেছিলো
কি যেনো মনে করে আবারোও ফিরে এসে রিমিকে দেখে থেমে যায়।
ইশাঃ আরে এইতো অই অসভ্য মেয়েটা।
আমাকে ইচ্ছে করে ফেলে দিয়েছিলো।
দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা।
ইশা রিমির কাছে এসে বলে উঠে–
হেই!
রিমিঃ আরে এতো ইশা শাকচুন্নি
(মনে মনে)
ইশাঃ তুমি আমার উপর রাগ করে আছো।
আসলে আমার অইসময় মাথা ঠিক ছিলোনা সরি!!
রিমিঃ আরে আইভাবে বলবেন না ইটস ওকে।
ইশাঃ আওও তুমি অনেক সুইট একটা মেয়ে।
নিজের ব্যাগ থেকে একটি কার্ড বের করে
রিমির হাতে দিয়ে বলে উঠে–
এইটা আমার আর আয়ুশের এন্গেজমেন্ট কার্ড।
আগামী পরশুদিন আমাদের এন্গেজমেন্ট।
তুমি কিন্তু আসবে।
আমি যেনো মুহুর্তেই থমকে গেলাম
ইশা বলে উঠলো–
আরে আসবে কিন্তু আমাকে যতটা খারাপ মনে করছো আমি ততোটাও খারাপ নই।
তাছাড়া তোমাকে আমার বেশ ভালোই লেগেছে।
আমান ও ততক্ষনে টকোপিকে নিয়ে চলে আসে।
ইশাকে দেখে আমান বলে উঠে–
আপনারা এখানে?
ইশা বলে উঠে–
ডক্টর আমান! কিছুক্ষন এর ব্যবহার এর জন্য আমি লজ্জিত।
আমানঃ এতো তাড়াতাড়ি চেঞ্জ( মনে মনে)
ইশা আরেকটি কার্ড আমানের দিকে এগিয়ে বলে উঠে–
এই নিন
আমাদের এন্গেজমেন্ট পরশুদিন অবশ্যই আসবেন কিন্তু।
।।
আমান কিছুই বুঝতে পারছেনা। আসলে হচ্ছে টা কি
ইশাঃ আমি কিন্তু আপনাদের জন্য ওয়েট করবো।
এই বলে ইশা চলে গেলো।
আমি ছলছলে চোখে আমানের দিকে তাঁকালাম।
আই উইশ সবকিছু যেনো মিথ্যে হয়।
আমি মুখে হাত দিয়ে কেঁদে দিলাম।
রিমিকে দেখে আমানের বুকের ভিতর তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে।
আমান রিমির কাছে গিয়ে বলে উঠলো–
রিমিপাখি প্লিয শান্ত হোও!!
আমি নিজের হাতের অনামিকা সেই আংটির দিকে তাঁকালাম।
রিমিঃ আমাদের তো এন্গেজমেন্ট হয়ে গিয়েছিলো।
আর একজন মানুষের তো একবারই এন্গেজমেন্ট হয় তাই না??
তাহলে উনার সাথে কি করে অই মেয়েটার এন্গেজমেনট করতে পারেন।
(কাঁদতে কাঁদতে)
আমাকে আমান বুকে আগলে নিলো।
আমি হিচকি দিয়ে কেঁদে যাচ্ছি।
আমান ঃ রিমিপাখি তুমি আমার স্ট্রং গার্ল এইভাবে ভেজ্ঞে পড়লে চলে?.
তোমার ভালোবাসা ঠিক জিতবে।
আমি এখনো কেঁদে যাচ্ছি।
আমি যে আর পারছিনা
কিন্তু একটা ভরসার হাত তো পেলাম।
আমান আমাকে শান্তনা দিয়ে যাচ্ছে।
।।।।।।।।
আয়ুশের আজ প্রচন্ড বিরক্ত লাগছে
তার কিছুতেই এন্গেজমেন্ট এ মন নেই।।শুধুমাত্র মল্লিকার কথায় রাজি হয়েছে।
বার বার অই মেয়েটি( রিমির মুখ) ভেসে উঠে।
আয়ুশও আজকে একটি কাজের জন্য হসপিটালে এসেছিলো।
রিমিকে আমানের এতোটা কাছে দেখে আয়ুশের মাথায় হ্যাং হয়ে গেলো।
আয়ুশ আড়ালে দাঁড়িয়ে
নিজের কপাল স্লাইড করতে করতে বলে উঠলো–
আচ্ছা অই মেয়েটা অই ডক্টরের এতোটা কাছে কেন??
অই মেয়েটার কাছে তো আমি থাকবো এই আয়ুশ খান থাকবে। (খানিক্টা কান্নার সুরে)
আয়ুশ প্রচন্ড জোড়ে ড্রাইভ করছে।
।।।।।।।।।।।।।
আমি বলে উঠলাম– এখন কী হবে??
আমান বলে উঠলো–
আমরা যাবো এন্গেজমেন্ট দেখবো
সাইকো কীভাবে তার রিমিপরী ছাড়া অন্যকাউকে আংটি পড়ায়
(লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)
আমানে কথায় আমি যেনো অনেকটা ভরসা পেলাম।
আমিও মাথা নাড়ালাম
।।।।।।
এদিকে জনিকে পাওয়া যাচ্ছেনা।
সবাই অনেক চেস্টা করছে।
থানা-পুলিশ করেও জনিকে পাওয়া যাচ্ছেনা
ম্যাচ এর পরে একটা ছেলে কীভাবে এতো তাড়াতাড়ি নিখোজ হতে পারে???
জানেনা কেউ।
আয়ুশের মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে।
সে নিজের ফার্ম হাউসে গিয়ে সবকিছু ভেজ্ঞে ফেলছে।
যেখানে অই মেয়েটার সম্পর্কে বাজে কথা বলাতে
জনিকে এতো নির্মম ভাবে মারলো আয়ুশ সেখানে অই ডক্টর কীভাবে রিমিকে স্পর্শ করলো???
হাউ!!
আয়ুশ অনেকটা পাগলের মতো করছে।
আচ্ছা অই ডক্টরকেও যদি আয়ুশ মেরে ফেলে
তখন কি হবে?
আয়ুশ শয়তানি হাঁসিতে মেতে উঠে–
আয়ুশঃ আচ্ছা একটি সিক্রেট বলি???
হুহ কাউকে বলবেন না তো??
অই জনিকে আমি মেরেছি একেবারে শেষ।
ফুসসস।
হা হা হা।
অনেক নির্মমভাবে।
আয়ুশকে অনেকটা সাইকোর মতো লাগছে।
হিংস্র একেবারে হিংস্র সাইকো।
এদিকে আমি ভেবে যাচ্ছি
কি করে উনাকে ফিরিয়ে আনবো।
পরক্ষনে কিছু একটা ভাবে মুচকি হাঁসলাম
।।।।
আয়ুশঃ অই মেয়েটার সব কিছুতেই এই আয়ুশ খান থাকবে।
আয়ুশ প্রচন্ড ড্রিংক করে যাচ্ছে।
সবকিছু ঝাপ্সা দেখছে।
তার কলে বার বার ইশা ফোন করে যাচ্ছে সেদিকে তার হুশ নেই।
আয়ুশ ফোনটা আছাড় মেরে ফেলে দেয়।
সে তো শুধু রিমিতে আশক্ত।
আজ রিমিকে বড্ড কাছে ছাইছে আয়ুশ।
এইসব নেশা অই মেয়েটার থেকে নিছক তুচ্ছ।
আয়ুশ বাঁকা হাঁসি দিচ্ছে।
তার মাথায় শুধু একটা প্ল্যান ঘুড়ছে।
আয়ুশ ও রিমি দুজনের মাথায় দুই প্ল্যান ঘুড়ছে।
কী হবে আয়ুশ রিমির ভবিষ্যৎ?
#দ্বিতীয়_অধ্যায়
চলবে