#প্রেমময়নেশা(The Story of a psycho lover).
#পর্ব-42
#Jannatul_ferdosi_rimi( লেখিকা)
আয়ুশের চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ছে।আয়ুশ রিমিকে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়।আয়ুশ শান্ত গলায় বলে উঠে–তুমি কি করে জানলে ইশা আমার
অনামিকায় আন্টি পড়িয়েছে?? হুম
আমি বলে উঠলাম– আমি জানি তো তুই আমার আর আগের সাইকো নেই তুই অই ইশা শাকচুন্নির হয়ে গিয়েছিস। প্রতিউত্তরে আয়ুশ মুচকি হেঁসে দিলো। আয়ুশ নিজের চোখের জল মুছে বলে উঠলো–আচ্ছা তুমি কি জেলাস??
আমি বলে উঠলাম–হুসস কিসের জেলাস আমি তোকে আর একটুও ভালোবাসি নাহ হুহ!
আয়ুশ রিমিকে সোজা করে উঠে বসায়।
আয়ুশঃ তাহলে একটু আগে যে বললে ভালোবাসি সাইকো।
আমি চোখ চোঝ ছোট ছোট করে বলে উঠলাম–
আমি আবার কখন বললাম!!
আয়ুশ ঃ তুমি বলেছিলে।
রিমিঃ সত্যি???( ভ্রু কুচকে)
আয়ুশঃ একেবারে সত্যি( মাথা নেড়ে)
আমি সোজা শুয়ে পড়লাম বেডে।
রিমিঃ তাহলে মনে হয় বলেছিলাম(গাল ফুলিয়ে)
আয়ুশ ও রিমির পাশে শুয়ে পড়ে।
আয়শঃ কিন্তু ম্যাডাম গাল টা ফুলিয়েছেন কেন???
আমি বলে উঠলাম–
বলবা না তোকে যাহ!!
আয়ুশঃ কিন্তু আপনাকে এই অবস্হা যে বেশ কিউট লাগছে তা কি আপনি জানেন???
ইচ্ছে করছে!!
আমি বলে উঠলাম–
কিহ ইচ্ছে করছে???
আয়ুশঃ তোমাকে গাপুশ করে খেয়ে ফেলি।
আমি কান্নাসুরে বলে উঠলাম–
তুই আমাকে খেয়ে ফেললে তো
আমি তোকে বিয়ে করতে পারবো নাহ।
আয়ুশ গালের উপর ভর দিয়ে বলে উঠে–
আমাকে বিয়ে করতে ইচ্ছে করে বুঝি?
আমি বলে উঠলাম– তুই তো আমার সাইকো।
আচ্ছা সাইকো তুই আমাকে বিয়ে করবি???
আয়ুশ চুপ করে যায়।
আমি বেড থেকে উঠে বলে উঠি–
আমি যাইগা।
আয়ুশঃ আরে কই যাচ্ছো???
তুমি এখন ড্রাংক আগে তোমাকে হুশে আনতে হবে।
আমি বলে উঠলাম–
দরকার নাই হুহ 🤐!!
তুই আমাকে ভালোবাসিস না আমাকে বিয়েও করবিনা আমি তোর কাছে থাকবো নাহ।
এই বলে আমি যেতে নিলে আয়ুশ রিমির হাত খপ করে ধরে ফেলে—
দেখো এই অবস্হায় বাইরে গেলে কেলেংকারী হয়ে যাবে।
আমি এইবার উনার গলা জড়িয়ে বলে উঠলাম–
তাহলে তুই অই ইশা শাকচুন্নির কাছে যাবি না
কথা দে???
তাহলে আমিও যামুনাহ।।।
আয়ুশ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে উঠে–
আচ্ছা বাবা যাবো নাহ।
আমি বলে উঠলাম– আচ্ছা তোর কি মনে নেই!!
তোর এই অনামিকায় আমি আন্টি পড়িয়েছিলাম
তাহলে অই ইশা কী করে অই হাতে আন্টি পড়াতে পারে বল??
( আয়ুশের অনামিকা আজ্ঞুল দেখিয়ে)
আয়ুশ মুচকি হেঁসে বলে উঠে—
কিন্তু আমার অনামিকায় তো ইশার দেওয়া সেই আন্টি নেই!!
দেখো।
আমি কিছুটা ভাবার ভান করে বলে উঠলাম–
হ্যা তাই তো
ইশা শাকচুন্নির আন্টি নেই এখানে।
আয়ুশ এইবার বলে উঠে–
এইবার লক্ষি মেয়ের মতো অইখানে( একটি চেয়ার)
গিয়ে বসে পড়ো।
আমি আবারও সাইকোর টাই টা আমার আজ্ঞুল দিয়ে পেঁচাতে পেঁচাতে বলে উঠলাম–
।বাট একটা কথা???
আয়ুশঃ কি( ভ্রু কুচকে)
রিমিঃ তার মানে তুই এখনো আমার সাইকো আছিস
হি হি হি কি মজা!!
এই বলে আমি বেডে দাঁড়িয়ে জোড়ে জোড়ে হাত তালি দিতে থাকি!!
আয়ুশ মুগ্ধ হয়ে রিমিকে দেখে যাচ্ছে।
মেয়েটার মুখে হাঁসি বড্ড মানায়।
কিন্তু ভাগ্যের খেলায় মেয়েটার জীবনে কস্টের শেষ নেই।
হঠাৎ বুকে ভাড়ি কিছু অনুভব করায় আয়ুশ ভাবনা থেকে বের হয়।
রিমি আয়ুশের বুকে মাথা রেখে আছে।
আয়ুশঃ কি হয়েছে??তোমার?
।
।
।
আদি মুচকি হেঁসে ফোনটা রিসিভ করে বলে উঠলাম–
আমার ছোঁয়ামনির আমার কথা মনে পড়ছে বুঝি??
অইপাশ থেকে ছোয়া বলে উঠে–
আমার কথা তো তোমার একটুও মনে পড়েনা।
ভালোইবাসো নাহ!!
আদিঃ আরে ছোয়ামনি তোমার কথার সনসময় মনে পড়ে। এতো মনে পড়ে যে
আজকেত বন্ধুর এন্গেজমেন্টেও তোমার ভাইয়াকে পটানোর চেস্টা করছি।
ছোয়াঃ আমান ভাইয়া অইখানে কি করে??( অবাক হয়ে)
আদিঃ মেইবি নিদ্র আংকেল ইনভাইট করেছে।
ছোয়াঃ রিমিয়াপু ও এসেছে???
আদিঃ হুম!!
ছোয়াঃ আপু তো আয়ুশ ভাইয়াকে অয়ন ভাইয়া
মনে করছে।
আদিঃ তোমার ভাইয়াও দেখি মেয়েটাকে সাপোর্ট করছে।
ছোঁয়াঃ৷ ভাইয়া যে রিমিয়াপুকে বড্ড ভালোবাসে।
রিমিয়াপুর ভালোবাসা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সবকিছু করতে পারে।
আদিঃ আমান ভাইয়ার ভালোবাসা নিঃশ্বার্থ।
হুম সেটা তো আমিও জানি।
কিন্তু আমরা তো জানি আয়ুশ ডক্টর অয়ন নাহ।
আজ ইশার সাথে আয়ুশের এন্গেজমেন্ট হয়ে গেছে
হয়তো দুজনের চেহারা এক।
কিন্তু সত্যি এইটাই যে ডক্টর অয়ন চৌধুরী বেঁচে নেই।
ছোঁয়াঃ কিন্তু রিমিয়াপু সেটা বিশ্বাস করতে পারছেনা।
আদি ঃ সত্যিটা মেনে নিতেই হবে।
রিমির উচিৎ অতীতকে পিছনে ফেলে আমান ভাইয়ার সাথে বাকি পথ চলা।
ছোঁয়াঃ রিমিয়াপু যে কবে বুঝবে আমার ভাইয়ের ভালোবাসা টা!
আমার ভাইয়ার যে এইভাবে তিলে তিলে শেষ হয়ে যাচ্ছে।
আদিঃ হুম!! ঠিক বুঝবে।
( আদি ও ছোয়ার পরিচয় ফেসবুক থেকে।
আমান যখন এক্টি টুরে লন্ডনে এসেছিলো
তখন ছোঁয়াও এসেছিলো। আদি ও ছোঁয়া একে অপরের সাথে দেখা করে ঘুড়াঘুড়ি করে।
এবং একে অপরকে ভালোবেসে ফেলে।
ছোঁয়া সব কথা আদিকে শেয়ার করে।
আদিও সব কথা ছোঁয়াকে সব শেয়ার করে।
দুজন দুজনকে বড্ড ভালোবাসে)
এদিকে আমানের বড্ড ভয় হচ্ছে তার রিমিপাখির কোনো বিপদ হলো না তো??
কিচ্ছু মাথায় ঢুকছেনা আমানের কি হবে??
আমানঃ রিমিপাখি কোথায় থাকতে পারে??
আচ্ছা ওর যদি কিছু হয়ে যায়। নাহ
আমান তুই নেগেটিভ কিছু ভাবিস নাহ।
সব ঠিক হবে হ্যা সব ঠিক হবে।
আমান ঃ আচ্ছা রিমিপাখি হোটলে ফিরে যায়নি তো??
আমান ফোন বের করে রিমির নাম্বারে কল করে নাম্বার অফ।
আমানঃ নাম্বার তো অফ!!
আচ্ছা বাকি স্টুডেন্টস দের
ফোন করে দেখি।
।।।।
ইশাকে চারপাশে এইভাবে তাঁকাতে দেখে
মল্লিকা বলে উঠে–
কি হয়েছে ইশা??
ইশাঃ দেখো নাহ আন্টি আয়ুশকে কোথাও দেখছিনা।
ইশার মা বলে উঠে–
আয়ুশ তো এখানেই ছিলো কোথায় গেলো??
নিদ্র বলে উঠে–
আয়ুশ যা ছেলে দেখ মনে হয় বাড়িতেই চলে গেছে।
ইশার বাবাঃ কিন্তু আমাদের না বলে এইভাবেই চলে গেলো??
মল্লিকাঃ মনে হয় কোনো ইম্পোর্টেনট কাজ আছে তাই!!
নিদ্রঃ আয়ুশ তো ফোন ও রিসিভ করছেনা।
ইশাঃ আমার বড্ড টেনশন হচ্ছে।
মল্লিকাঃ টেনশন করো না ইশা।
আয়ুশ তো এমনই করে।
মেইবি কোনো কাজ আছে।
ইশাঃ তাও আমার টেনশন হচ্ছে।
মল্লিকাঃ এতো টেনশন করার কি আছে??
এইযে আজকে এন্গেজমেন্ট হয়ে গেলো
এখন থেকে আয়ুশ তোমার।
মল্লিকার কথায় ইশা বোধহয় অনেক টা নিশ্চিন্ত হলো্।
এদিকে,৷
আয়ুশঃ কি হয়েছে সরুন( কিছুটা কাঁপা কন্ঠে)
রিমি আয়ুশের অনেকটাই কাছে।
এরুপ অবস্হায় আয়ুশের কতবার হার্টব্রেক হয়েছে
তার ঠিক নেই।
আয়ুশঃ কি হচ্ছে কি??
আমি বলে উঠলাম– অই সাইকো আমি সুন্দর নাহ(ঠোট উল্টিয়ে)
সজ্ঞে সজ্ঞে আয়ুশ পিছনে ঘুড়ে যায়।
আমি বাঁকা হেঁসে বলে উঠলাম– কিরে সাইকো বলনা???
আমি সুন্দর নাহ
দেখ আজকে শাড়িও পড়েছি।।
।
আয়ুশ নিশ্চুপ!!
আমি এইবার কান্নার সুরে বলে উঠলাম–
আমি তো সুন্দর নাহ! অই ইশা শাকচুন্নি সুন্দর পুতুলের মতো তাই তুই ওর দিকে তাঁকিয়ে ছিলি।
আর আমি দেখতে বাজে তাই আমার থেকে তাঁকাচ্ছিস ও নাহ।।
আয়ুশ এইবার রিমির দিকে ঘুড়ে
রিমির গালে হাত দিয়ে বলে উঠে–
কে বলেছে তুমি দেখতে খারাপ???
আচ্ছা নিজেকে কোনোদিন ভালো করে আয়নায় দেখেছো??
শাড়িতে তোমাকে কতটা সুন্দর লাগে তুমি কি তা জানো?? উহু জানো না একটুও না জানো নাহ।বোকা তুমি!!
আমি কান্নারসুরে বলে উঠলাম–
আমি বোঁকা??
আয়ুশঃ বোঁকাই তো। নাহলে অই ম্যাকাপের প্রলেপের আধুনিকতায় শুধু সাময়ীক সুন্দর হওয়া য়ায়। যাতে রয়েছে শুধুই ভেজাল।
কিন্তু
হাল্কা কাজল পড়া চোখে শাড়ি পরিহিতা তুমি যে বড্ড সুন্দর। যাতে নেই কোনো ভেজাল আছে শুধুই মায়া।
আমি বলে উঠলাম–
উফফ বাবা রে বাবা এতো ভারি কথা সব মাথার উপর দিয়ে গেলো।
আয়ুশ হেঁসে দেয়।
আয়ুশঃ আচ্ছা তুমি থাকো আমি দেখছি লেবুর শরবত এর ব্যবস্হা করি।
আমি বলে উঠলাম–
নাহ!! তুই যাবিনা
আয়ুশঃ তাহলে কী করবো?( বিরক্ত হয়ে)
রিমি ঃ আমাকে আদর করবি
আয়ুশঃ কিহ??
( এতো পুরোই মাতাল হয়ে গেছে)
।
চলবে