#প্রেমময়নেশা( The Story of a psycho lover)
#পর্ব-41
#Jannatul_ferdosi_rimi( লেখিকা)
সবাই রিমি ও আয়ুশের ডান্স মুগ্ধ হয়ে দেখছে। দুজনকে একসাথে বেশ ভালোই লাগছে।ইশা ডান্স বন্ধ করে দেয়। আয়ুশ আর রিমি অনেকটাই কাছে।
আমানেরও রিমিকে আয়ুশের এতো কাছে দেখে বড্ড কস্ট হচ্ছে। আয়ুশ ও রিমি একে অপরের চোখের গভীরতা মাপতে ব্যস্ত!!
🌸🌸🌸
হাল্কা মিউজিক!! হাল্কা আলো!! রিমির কপালের অবাধ্য চুল গুলো বড় যত্নে আয়ু্শ কানের কাছে গুজে দেয়। আমি চোখ বন্ধ করে ফেলি। আয়ুশ জানেনা সে কেন এমন করছে?? কিন্তু করতে বড্ড ইচ্ছে করছে।
🌸🌸🌸🌸🌸
তখনি মিউজিক থেমে যায়। মল্লিকা মিউজিক বন্ধ করে ফেলেছে।
মিউজিক বন্ধ হওয়াতে আয়ুশ ও রিমির ধ্যান ফিরে।
মল্লিকা ডান্স ফ্লোরে গিয়ে আয়ুশের হাত ধরে বলে উঠে–
আয়ুশ অনেক হয়েছে!!
অই দেখো ইশা মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে আছে আজ তোমাদের এন্গেজমেন্ট আর তুমি এখনো ডান্স করছো??
চলো আমার সাথে
এই বলে মল্লিকা আয়ুশের হাত ধরে স্টেজের দিকে নিয়ে গেলো।
আমার বড্ড অসহায় লাগছে। ইস একটু আগের মোমেন্ট গুলো অনেক সুন্দর ছিলো।
সময় যদি থেমে যেতো।
কিন্তু এখন আবার ভয় ঝেকে বসেছে।
উনি কি সত্যি এন্গেজমেন্ট করবে???
হায় আল্লহ কি হবে এখন???
আয়ুশের দৃসটি এখনো রিমির দিকে।
কিছুক্ষন পরেই এন্গেজমেন্ট শুরু হয়ে যাবে।
।।।।।
মল্লিকা আয়ুশ ও ইশাকে পাশাপাশি দাড় করালো।
তখনি নিদ্র বলে উঠে—
মল্লিকা!!
মল্লিকাঃ হুম বলো!!
নিদ্রঃ ইশান কি আজকের দিনেও আসবেনা??
কোথায় ও???
মল্লিকাঃ আমি কি করে জানবো? ইশান তুমি যেখানে আমিও সেখানে।
নিদ্রঃ তাহলে একটি কল করো।
আমাকে সবাই জিজ্ঞাসা করছে।
বড় ভাইয়ের এন্গেজমেন্ট অথচ ছোট ছেলে নেই।
মল্লিকাঃ আমার মনে হয়না ইশান এখন আসবে।
নিদ্রঃ মানে কি এইসব এর??।।ইশান বড্ড বাড়াবাড়ি করছেৃ
এই সিচুয়েশনের জন্য আমি তোমাকেই দায়ি করবো।
মল্লিকাঃ কি বললে??নিদ্র এইসব এর জন্য আমি দায়ি?? ইশান এইরকম করেছে তার জন্য তুমি আমাকে দায়ি করতে পারো নাহ ( খানিক্টা রেগে)
নিদ্র নিজেকে শান্ত করে বলে উঠে–
দেখো মল্লিকা একটা কাজ করো তুমি অকে একটা কল করে দেখো।
দেখো আসবে নাকি।
মল্লিকা নিজের ফোন টা বের করে ইশান কে কল করে।
ইশান নিজের শার্ট টা পড়ছে এবং বলে উঠে–
দেখো তোমার জন্য আমি এইবার তিন দিন থেকেছি
এইবার হেপ্পি??
বেডে চাঁদরে আবৃত একজন মেয়েলি কন্ঠ বলে উঠে–
নাহ আমার ইচ্ছে করে সারাক্ষন তুমি আমার সাথে থাকো আমি ভালো থাকি!
ইশান বিরক্ত হয়ে বলে উঠে–
এখন অন্তত বলো নাহ আরো কয়দিন তোমার কাছে থাকতে।
সে বলে উঠে–।
আমাকে তোমার বাড়িতে কবে নিয়ে যাবে??
ইশান শার্টের হাতা ফল্ড করতে করতে বলে উঠে–
আগে নিজেকে সেটেল করেনি।তারপর
সে এইবার খানিক্টা তাছিল্যের সুরে বলে উঠে–
সেটেল তাও আবার তুমি???
হুহ
সারাদিন নাইট ক্লাব ছাড়া কি করো?.
ইশান খানিক্টা রেগে বলে উঠে–
তোহ কি করবো???
আমার সবকিছুই তো ও শেষ করে দিয়েছে।
কেউ না জানুক তুমি তো জানো
আমি কোনোদিন ডক্টর হিসেবে জয়েন করতে পারবো না্হ।
ও আমার সব কিছুই কেড়ে নিয়েছে
তুমি জানো নাহ?? পুরো শেষ করে দিয়েছে।
সে এইবার দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে উঠে–
ইশান প্লিয!! নিজেকে সাম্লাও!!
ইশান আয়নায় গিয়ে নিজের চুল সেট করতে করতে বলে উঠে–
কয়দিন একটু বিজি থাকবো।
জানোই তো ভাইয়ের বিয়ে।
আজ শুধু তোমরার জন্য এন্গেজমেন্ট টা এটেন্ড করতে পারিনি
মা বার বার ফোন করছিলো।
সে বলে উঠে–
হুম!! দয়া করেছো আমার উপর!
ইশানঃ প্লিয এখন আবার ইমোশোনাল হওয়ো নাহ।
আচ্ছা এখন আমি যাই বরং।
সে নিজেকে চাঁদরে ঢেকে আবারও শুয়ে পড়ে।
ইশান বেড়িয়ে পড়ে।
এদিকে ইশা ও আয়ুশের হাতে এক একটি করে ডায়মন্ড কেসিলের আংটি দেওয়া হলো।
আদিও এসেছে আজ!!
নিজের বন্ধুর জন্য আজ সে খুশি।
তখনি তার কলে ফোন আসে।
অজান্তেই তার মুখে হাঁসি ফুটে উঠে।
মল্লিকাঃ কিরে আয়ুশ আংটি টা পড়ায়।
আমান ঃ এইটা কী করে হতে পারে??
আল্লাহ কিছু একটা করো।
ইশার মাঃ আগে ইশা পড়াক।
মল্লিকাঃ অবশ্যই!!
আমার মনে পড়ে গেলো।
উনি কীভাবে আমার অনামিকায় আংটি পড়িয়েছিলাম।
আমিও উনার সেই আজ্ঞুলে আংটি পড়িয়েছিলাম।
আজ সেই হাতে অন্য কেউ আংটি পড়াবে???
শুধুমাত্র জীবনসজ্ঞীই সে অনামিকায় আংটি পড়াতে পারে।
যেই আংটি আমি উনার হাতে পড়িয়েছিলাম
আজ কি সেই হাতে অন্য কেউ পড়াবে।
উনি তো বলেছিলেন অয়ন শুধুই রিমির!!
তাহলে???
ইশা শয়তানি হাঁসি নিয়ে রিমির দিকে তাঁকায়.।
ইশা আন্টি টা হাতে নিয়ে আয়ুশকে পড়াতে যায়।
আমার বুক ফেটে যাচ্ছে।
আমি পারবো নাহ এই দৃশ্য দেখতে আমার সাইকো অন্যকারো হয়ে যাবে এ আমি কী করে মেনে নিতে পারি??
আমি ছুটে চলে গেলাম।
মল্লিকা অনেক খুশি।
ইশা আয়ুশকে রিংটা পড়াতে যাবে তার আগেই
আয়ুশ হাত সরিয়ে।
আমান মুখে ফুটে উঠে হাঁসি।
মল্লিকাঃ আয়ুশ হাত টা সরিয়ে নিলে কেন???
আয়ুশ বলে উঠলো–
আসলে আমার হাতে ব্যান্ডিজ
ইশা অবাক হয়ে বলে উঠে—
ব্যান্ডিজ মানে??
আয়ুশঃ আসলে আমার হাত টা কেটে গিয়েছিলো।
নিদ্রঃ আয়ুশ তুমি আগে এইসব বলবে নাহ???
মল্লিকাঃ আজকে তোমার এন্গেজমেন্ট আর তুমি হাত কেটে বসে আছো???
আয়ুশঃ আমার সত্যি খেয়াল ছিলো নাহ।
ইশাঃ এখন কী হবে??( ছলছলে চোখে)
ইশার বাবা ঃ এখন আমার মেয়ের কী হবে??
এতো আয়োজন সব বৃথা যাবে??
আয়ুশ পকেটে হাত রেখে বলে উঠ–
অনামিকা আজ্ঞুল শুধু কেটে গেছে।
বাকি গুলো তো ঠিক আছে নাকি।
ইশার মাঃ কিন্তু অনামিকা আজ্ঞুলেই
রিং পড়াতে হয়।
মল্লিকা এইবার বলে উঠলো–
আয়ুশ তো ঠিক ই বলেছে
অন্য আজ্ঞুলেই রিং পড়ানো হোক।
এক প্রকার বাধ্য হয়েই ইশা অন্য আজ্ঞুলে আংটি পড়াই।
আয়ুশ অন্য আজ্ঞুলে পড়েছে তাই আয়ুশও ইশাকে
অন্য আজ্ঞুলে পড়ায়।।
আমানঃ সত্যি??
জীবনসাথি ছাড়া কারো সাধ্য নেই অনামিকায় আংটি পড়ানোর।
যার সাথে যার জোড়ি সেই শুধু অনামিকায় আংটি পড়াতে পারে।
আচ্ছা রিমিপাখি কোথায়???
রিমিপাখি জানলে খুশি হবে কত(মনে মনে)
।।।।।
অনুসঠান প্রায় শেষের দিকে,,
আমান রিমিকে খুজে যাচ্ছে কিন্তু পাচ্ছেনা
আমানঃ রিমিপাখি আবার কোথায় গেলো???
আয়ুশ কিছু একটা ভেবে শয়াতানি হাঁসি দিচ্ছে ঠিক তার প্লান মতোই সবকিছু হচ্ছে।
আয়ুশ বারে যায়। সেখানে গিয়ে তার চোখ কপালে
রিমি একের পর ড্রিংক করেই যাচ্ছে।।
আয়ুশঃ আরে এই মেয়ে এখানে ড্রিংক করছে
ওহ মাই গড।
আয়ুশ রিমির কাছে যায়।
ততক্ষনে রিমি মাতাল।
আয়ুশ রিমির কাছ থেকে ড্রিংক কেড়ে নেয়।
এইভাবে হাত থেকে ড্রিংক কেড়ে নেওয়ায় রিমি উপরে তাঁকিয়ে দেখে আয়ুশ।
আমি মুচকি হাঁসি দিয়ে বলে উঠলাম–
আরে সাইকো তুমি???
আয়ুশঃ এই মেয়ে তুমি এইসব কি খেয়েছো??
( রেগে)
রিমি ঃ কেন আমি এখন থেকে দেবদাশ তাই দেবদাশ এর মতো
ড্রিংক করবো। কারন আমার সাইকো আমাকে ছেড়ে দিয়েছে
(হেঁসে)
আয়ুশ রাগে চেচিয়ে বলে উঠে–
ওকে ড্রিংক কে সার্ভ করেছে???
একজন ওয়েটার কাচুমাচু হয়ে বলে উঠে–
আসলে ম্যাডাম নিজ ইচ্ছায় একের পর এক ড্রিংক করে যাচ্ছিলো।।
আয়ুশ দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে এখন
রেগে লাভ নেই।
আগে রিমিকে হুশে আনতে হবে।
আয়ুশ আর কিছু না ভেবে রিমিকে
কোলে তুলে নেয়।
আমি হাত-পা ছুটাছুটি করে বলে উঠলাম–
এই সাইকো ছাড় আমাকে ছাড় তুই তোর ইশার কাছে যাহ।।
আয়ুশঃ বাবারে আপনি থেকে তুমি আর তুমি থেকে
ডাইরেক্ট তুই.?
(মুচকি হেঁসে)
এদিকে সবাই নিজেদের মধ্যে কথা বলছে।
কিন্তু অনেক্ষন ধরে ইশা আয়ুশকে দেখা যাচ্ছেনা
ইশাঃ আয়ুশ আবার কোথায় গেলো।
।।।।
এদিকে আমানের বড্ড চিন্তা হচ্ছে রিমিপাখি কোথায়???
।
।
।
আয়ুশ কোনোরকম রিমিকে হোটেলের একটি রুমে আনে।
রিমি বেডে বসে নিজে নিজে বিড়বিড় করে যাচ্ছে।
আয়ুশ রুমের দরজা টা আটকে দেয়
।
আয়ুশ; এখন এই মাতাল কে তালে আনতে হবে।
একটা কাজ করি সার্ভেনট কে ডাকি।
আয়ুশ যেতে নিলে রিমি তার হাত খপ করে ধরে ফেলে।
রিমিঃ এই সাইকো এই কোথায় যাচ্ছিস??
আয়ুশঃ আমি এখনি আসছি।
রিমি একেবারে আয়ুশকে নিজের কাছে টেনে নেয়।
তারপর আয়ুশের কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে।
আয়ুশঃ আরে এইসব কি করছো??
আমি এখনি আসছি।
রিমিঃ আমি জানি রে সাইকো তুই আসবিনা।।তুই অনেক বার বলেছিস তুই আসবি কিন্তু তুই আসিস না বড্ড খারাপ তুই। আমাদের বিয়ের সময়ও আসিস নি।
আমাকে বিয়েও করলিনা তুই।
আমাকে না বলেছিলি আমাকে মিস্টি বউ করে নিয়ে যাবি কই তুই তোর কথাও রাখলি না।
তুই শুধু অই ইশা শাকচুন্নির কাছে যেতে চাস।
রিমি আয়ুশের কোমর জড়িয়ে বলে উঠে–
এই সাইকো তুই না বলতি তুই শুধু আমার।
তাহলে তোর অনামিকায় অই ইশা শাকচুন্নি
কী করে আংটি পড়াতে পারে বল??
তোর কি একটুও তোর রিমিপরীর কথা মনে পড়েনা??
এই বলে রিমি কেঁদে দেয়। ভালোবাসিরে সাইকো
রিমির জলে আয়ুশের শার্ট ভিজে যাচ্ছে।
আয়ুশের চোখ থেকেও টুপটুপ করে জ্বল গড়িয়ে পড়ছে। রিমির প্রত্যেকটি কথা তার হ্রদয়ে ক্ষতবিক্ষত করে দিচ্ছে।
।#দ্বিতীয়_অধ্যায়
চলবে কি???
42 part
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=122122569926106573&id=61553197202722&mibextid=Nif5oz