প্রেমময়নেশা(The Story of a psycho lover) #পর্ব-34(প্রমিজ) #Jannatul_ferdosi_rimi( লেখিকা)

0
460

#প্রেমময়নেশা(The Story of a psycho lover)
#পর্ব-34(প্রমিজ)
#Jannatul_ferdosi_rimi( লেখিকা)

আমি একেবারে থমকে গেলাম।এতো আমার অয়ন। আমান ও নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছেনা। আমার কিরকম এখন রিয়েক্ট করার উচিৎ আমি ঠিক বুঝতে পারছিনা। আয়ুশ নিজের আসনে বসে পড়লো। আমাদের প্রফেসর আমাদের সামনে এসে বলে উঠলো-
ডক্টর আমান আপ্নারা নিজেদের আসনে বসে পড়ুন।

🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸
আমানের এখন খেয়াল আসলো। কনফারেন্স শুরু হয়ে গিয়েছে। সে পাশে খেয়াল করে দেখে রিমি নেই। রিমিপাখি কোথায়?? ওমা রিমি তো স্টেজের দিকে যাচ্ছে। আমান ও রিমির দিকে ছুটে যায়।এদিকে আমি কিছু না ভেবে স্টেজের দিকে ছুটে চলেছি।
নিদ্র মাইক হাতে নিয়ে কিছু বলবে আমি চিৎকার করে বলে উঠলাম–
অয়ন!!
কন্ঠস্বর টা শুনে আয়ু্শ সহ সবাই পিছনের দিকে ঘুড়ে যায়। একটি মেয়ে গাঁয়ে তার মেডিকালের এপ্রোন। চোখ গুলো একেবারে লাল হয়ে রয়েছে মেয়েটি কাঁদছে। মেয়েটিকে দেখে আয়ুশের হার্টব্রিট ফাস্ট হতে লাগলো। কিন্তু কেন??
আর তাকেই বা মেয়েটি অয়ন বলছে কেন.?
মল্লিকার মেয়েটিকে সুবিধার লাগছেনা। এই মেয়েটি কে?

🌸🌸🌸🌸

আমি তাড়াতাড়ি স্টেজে উঠে গেলাম। আমান ও এসে পড়লো।

আমি নিজের চোখ কে বিশ্বাস করতে পারছিনা।
যেই মানুষটার জন্য আমি এতো বছর অপেক্ষা করেছি। আজ সে আমার সামনে।
আমার অয়ন। আচ্ছা এইটা কোনো স্বপ্ন নয়তো??ইচ্ছে করছে উনাকে একটু ছুয়ে দেখি। যেই ভাবা সেই কাজ উনার গাল ছুয়ে দিলাম। আয়ুশ যেনো রিমির মায়াবি চোখে হারিয়ে গেলো।
এদিকে বাকিরা বুঝতে পারছেনা মেয়েটি কি করছেকি এইসব।
হ্যা উনি তো সত্যি আমার সাইকো।

আমি শব্দ করে কেঁদে দিলাম।

আমান ও ছলছলে চোখে বলে উঠে–
অয়ন দোস্ত।

আমি কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠলাম–
আপনি বড্ড স্বার্থপর কিভাবে আপনার রিমিপরীকে ছাড়া থাকতে পারেন।
আপনি জানেন না?? আপনার রিমিপরী
তার সাইকো কে কতটা ভালোবাসে
হ্যা।

আয়ুশ অফুস্টস্বরে বলে উঠলো-
রিমিপরী!!!

এই ডাক টা শুনার জন্য আমার কান অপেক্ষা করছিলো।
আমি আরো জোড়ে কেঁদে দেই।

রিমির হাত এখনো আয়ুশের গালে

আয়ুশ কি বলছে কিছুই সে নিজেও যেনো বুঝতে
পারছেনা।

মল্লিকা প্রচন্ড রেগে যায়। এতো ড্রামা তার সহ্য করতে পারছেনা।

মল্লিকা তাড়াতাড়ি গিয়ে আয়ুশের থেকে রিমিকে সরিয়ে দেয়।

মল্লিকাঃ ইউ স্টুপিড গার্ল এইসব কি করছো???

আমি বলে উঠলাম–উনি আমার অয়ন।

আয়ুশঃ অয়ন??(অবাক হয়ে)

মল্লিকাঃ কিসের অয়ন। ও আমাদের বড় ছেলে। খান
ইন্ড্রাস্টির এক মাত্র উনার নিদ্র খানের ছেলে আয়ুশ খান।

আমান অবাক হয়ে যায়।
আমানঃ হ্যা একেবারে আমাদের অয়নের মতো দেখতে( মাথে নেড়ে)

আমি বলে উঠলাম–
অয়নের মতো মানে?? আমি জানি উনিই অয়ন।

এই বলে আমি উনার কাছে গিয়ে বলে উঠি–
আমাকে দেখুন না। আপনার রিমিপরী। চিনতে পারছেন না?? আপনার ভালোবাসা।
যাকে আপনি নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসতেন।

আয়ুশঃ দেখুন মিস। আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে।
আমি আয়ুশ খান। অয়ন নই।।

নিদ্র এইবার বলে উঠে–
আপ্নারা কি সেরা হার্ট সার্জন অয়ন চৌধুরীর কথা বলছেন??
আমান বলে উঠলো–
হ্যা।
।নিদ্রঃ আপনি নিশ্চই অয়ন চৌধুরী হবু বউ ছিলেন(রিমিকে উদ্দেশ্য করে)

(লেখিকা ঃ জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)

আমি বলে উঠলাম– হবু বউ ছিলাম মানে কি??
এখনো আছি। এইসে উনি আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে।

নিদ্রঃ আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে। আয়ুশ আমাদের বড় ছেলে। তার চেহারা হয়তো অয়ন চৌধুরীর সাথে মিলে গিয়েছে। কিন্তু তার পিছনেও বড় কাহিনী

নিদ্র কে বলতে না দিয়ে মল্লিকা বলে উঠলো–
নিদ্র অইসব বাদ দাও!!
অইসব ড্রামা আর টলারেট করা যাচ্ছেনা। যতটুকু শুনেছি অয়ন চৌধুরীর মারা গিয়েছে।
আমি বলে উঠলাম–।নাহ উনি বেঁচে আছেন আমাদের সাম্নেই আছেন।

এই আপনি বলুন না??? আপনি আমার অয়ন।
আমি উনার কাছে গিয়ে বলে উঠলাম।
আয়ুশ রিমির দিকে তাঁকিয়ে আছে।
সত্যি এই মেয়েটার হবু স্বামি এই পৃথিবী নেই সেটা জানা স্বত্তেও এই মেয়ের নিজের ভালোবাসার মানুষের প্রতি বিশ্বাস।

।।।।।🌸🌸🌸🌸🌸🌸
মেয়েটার প্রতি এক অদ্ভুদ টান অনুভব করছে
আয়ুশ কিন্তু কেন???
জানে না আয়ুশ।

আয়ুশ নিজেকে সাম্লে নিয়ে বলে উঠলো–
দেখুন আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে।
আমি আয়ুশ খান।

আমি দুপা পিছিয়ে যাই। এ কি বলছেন উনি?
আমি কীভাবে ভুল করবো। নাহ আমার সাইকো কে অন্তত আমি চিনতে ভুল করতে পারিনা।

আয়ুশ এক্সকিউজ মি চলে যায়। আমি ধপ করে চেয়ারে বসে পড়ি।

আমান আমার কাছে এসে বলে উঠে–
রিমিপাখি।
আমি কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠলাম–
উনি কি করে আমাকে ভুলে যেতে পারে??
উনি আমার সাইকো আমি জানি।

মিসেস মল্লিকা বলে উঠে–
আজকে কি এইসব ড্রামাই হবে???
এতো বড় কনফারেন্স? একটা ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স কি এইভাবে নস্ট হয়ে যাবে???

প্রফেসারঃ ডক্টর আমান। আপনি আমার স্টুডেন্ট কে সামলান।

আমানের ইশারা অনুযায়ী লিসা ও রিয়া আমাকে ধরে নিয়ে যায়। স্টুডেন্টস রুমে।

এদিকে আমার মাথা ফাকা হয়ে রয়েছে। কি করবো কি আমি।

আমান বলে উঠলো-
আমি ক্ষমাপ্রার্থি। আসলে আপনার হয়তো বুঝতে পারছেন যে।

নিদ্র বলে উঠে-
আমরা বুঝতে পেরেছি। এইটা স্বাভাবিক।
আমরা কিছুক্ষন বিরতি নেই।
আমাদের মনে হয় কমেটির সাথে কিছু কথা বলার দরকার।
এই কনফারেন্স টা যদি অন্য একদিন করা হয় ভালো হবে।
মিস রিমিও নিজেকে সামলাতে পারবে।

আমান কৃতজ্ঞতার সুরে বলে উঠে–
অনেক অনেক ধন্যবাদ।।

🌸🌸🌸🌸🌸

এদিকে,,
আমার চোখ থেকে জল গড়িয়েই পড়ছে।

আমার ভালোবাসা আমার সাইকো আমাকে চিনলো নাহ।

কীভাবে???

লিসা বলে উঠলো- দোস্ত একটু শান্ত হোও।
এইভাবে কাঁদিস না।

আমি বলে উঠলাম–
নাহ উনি কীভাবে পারলো???

আমি তাড়াতাড়ি উঠে দাড়িয়ে বলে উঠলাম–আমি এখুনি যাবো। উনার কাছে( কাঁদতে কাঁদতে)

রিমি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যেতে নিলে
আমান এসে রিমিকে ধরে ফেলে।

আমান কে দেখে বাকিরা বাইরে চলে যায়।

আমানঃ কোথায় যাচ্ছো?? রিমিপাখি(উদ্নিগ্ন হয়ে)

আমি বলে উঠলাম–আমাকে যেতে হবে উনার কাছে।।(কোনোরকম উঠে দাঁড়িয়ে)

আমানঃ নিজের দিকে তাঁকিয়েছো???
রিমিপাখি ??
কতটা দুর্বল হয়ে পড়েছো???(ধমক দিয়ে)

রিমিঃ নাহ নাহ আমাকে যেতেই হবে উনার কাছে
কেউ আমার কথা বিশ্বাস করবেনা।
আমি তো জানি উনি আমার অয়ন।(আহত কন্ঠে)

আমানঃ হুম যাবে কিন্ত আগে নিজেকে সুস্হ করতে হবে।

আমি অবাক হয়ে উনার দিকে তাঁকায়।

আমি বলে উঠলাম-
আপনি বিশ্বাস করেন উনি আমার অয়ন???

আমান বলে উঠলো-
আমার রিমিপাখির উপর বিশ্বাস আছে যে তার ভালোবাসার কখনো মিথ্যে হতে পারেনা

আমার অনেক শান্তি লাগছে যে উনি অন্তত আমাকে বিশ্বাস করেন।

আমি বলে উঠলাম- এখন আমার যাওয়া উচিৎ।

আমান বলে উঠলো-
তুমি যাবে কিন্তু এখন না।

রিমিঃ কিন্তু কেন??

আমানঃ দেখো রিমিপাখি। অনেক কিছুই আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। সে আমাদের অয়ন কিন্তু
কেন সে আমাদের চিনতে পারছেনা। বিশেষ করে তোমাকে।

রিমিঃ এখন কি করবো??

আমানঃ আমরা অনেকদিন লন্ডনে আছি। সুতরাং
আমাদের আগে সব ভেবে নিতে হবে।
এখন আমাদের হোটেলে ফিরে যেতে হবে।

রিমিঃ কিন্তু উনাকে ছাড়া।

আমান আমাকে কাছে এসে আমার হাত নিজের মুঠোয় নিয়ে বলে উঠলো–
আমার উপর ভরসা আছে তোমার??

আমি বলে উঠলাম- হুম!!

আমান বলে উঠলো–
তোমার সাইকো কে তোমার কাছে ফিরিয়ে দিবো।
আজ প্রমিজ ডে টে আমার প্রমিজ।

আমি বলে উঠলাম– সত্যি???

আমানঃ তিনি সত্যি(মুচকি হেঁসে)

।।।।।।🌸🌸🌸🌸🌸🌸🌸

আমান ও বাকিরা গাড়িতে আগে আগে উঠে পড়ছে।
লিসা আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
রাস্তায় কিছু বিদেশি স্মোকার রা স্মোক করছিলে
রিমিকে দেখে একজন বলে উঠলো-
হাও সেক্সি সি( বাজেভাবে তাঁকিয়ে)

কথাটা আমার কানে আসতে লিসার হাত ধরে দ্রুত গাড়ির দিকে চলে এলাম।

।।।।।।🌸🌸
ছেলেটা ও বাকিরা বাজে ভাবে হেঁসে যাচ্ছে
তখনি ছেলেটার হাত একটা চাকু এসে গেথে যায়।
ছেলেটা ব্যাথার চিৎকার করে দেয়।
ছেলেটার হাত থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।

কালো হুডি পড়া একজন বলে উঠে–
আমার জিনিসে কেউ নজর দিলে এর থেকেও ফল খারাপ হবে আমার প্রমিজ!!(বাঁকা হেঁসে)

#দ্বিতীয়_অধ্যায়
চলবে কি??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here