#সুখ_পাখি
#Ayrah_Rahman
#part:-31
রাত প্রায় ১১ টা,,
তরু,শুভ্র আর অভ্র সোফায় বসে আছে,,,
বেশ কিছুক্ষণ নিঃস্তব্ধতার পর তরু বলে উঠলো,,
— শুভ্র ভাই এখন কি করব? কিছুই তো মাথায় আসছে না,,এদিকে আরুর কোন খোঁজ ও পাচ্ছি না,, আর তুমি তো নিশ্চন্তে বসে আছো? আরুকে কি তুমি সত্যি সত্যি ই ভালোবাসো তো? আজ সারাটা দিন মেয়েটার কোন খোঁজ পেলাম না,,
প্রচন্ড উত্তেজনা নিয়ে তরু কথা গুলো বললেও তার কথা শুভ্র বিন্দু মাত্র কর্নপাত করেছে কি না সন্দেহ,
শুভ্র সোফায় হেলান দিয়ে মোবাইল দেখছে,,
শুভ্রর কোন হেলদোল না দেখে তরু প্রচন্ড ক্ষেপে যায়,,
— এই যে মিস্টার শুভ্র খান,,আপনি কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছেন,,দাঁতে দাঁত চেপে তরু কথা গুলো বলার পর শুভ্র খানিকটা নড়েচড়ে বসলো,,
চোখের দৃষ্টি মোবাইলে সীমাবদ্ধ রেখেই অভ্র কে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো,,,
— অভ্র তোর শালিক পাখিকে নিয়ে একটু পার্ক থেকে ঘুরে আয়,,বেচারি মনে হয় অনেক দিন ঘুরতে যায় না,,তাই মাথা হট হয়ে আছে,,
শুভ্রর কথা গুলো কর্ণগোচর হওয়ার সাথে সাথে ই অভ্র সোজা হয়ে বসে একবার তরুর দিকে একবার শুভ্রের দিকে তাকালো,,
তরুর চোখ দিয়ে পারে না দুই ভাই কে ভষ্স করে দেই,,
বেচারা এতক্ষণ তরু আর শুভ্রের কথোপকথন শুনছিলো,,
গলা ভালো করে ঝেড়ে,,
— দেখ ভাই,,এই আগুনের মধ্যে আমারে ধাক্কা দিস না,,আমি ভালো আছি,,বোমা যেকোনো সময় ফাটতে পারে,,
এমন খেয়ালিপনার কথা শুনে তরুর মনে হচ্ছে মাথা দিয়ে আগুন বের হবে,,,,
তরুর অবস্থা দেখে শুভ্র মুচকি হাসলো,,
তরুকে আরো রাগানোর জন্য শুভ্র বলে উঠলো,,
— তরু তুমি কি খাবে চা না কফি?
শুভ্রর কথা শুনে তরু শুভ্রের দিকে তাকালো,, তরুর চোখ প্রচন্ড রকমের লাল হয়ে আছে,,,
শুভ্র তার হাতের ফোনটা তরুর দিকে এগিয়ে দিলো,,
— নাও দেখো,,তোমার বোন,,
তরু খপ করে শুভ্রের ফোনটা নিয়ে নেই,,
ফোনের দিকে তাকিয়ে তরুর চোখ আপনাআপনি বড় হয়ে গেলো,,
তরু ফোনে দেখতে পেলো,,
আরু একটা রুমে খাটে বসে বাচ্চাদের মতো বসে বসে চকলেট খাচ্ছে আর টিভি দেখছে,,সারা খাট জুরে চকলেটের ছোকলায় ভরপুর,,,
তরু বিশ্বয় দৃষ্টিতে শুভ্রর দিকে তাকালো,,
তরুর মনের প্রশ্ন শুভ্রের অজানা নয়,,
— কি ভাবছো? আরুর এই অবস্থা কেন?
তরু শুধু মাথা নাড়ায়,,,
শুভ্র একটা হাসি দিয়ে বলল..
— তুমি ভাবলে কি করে যে আমি আমার প্রান পাখি কে রিস্কে রেখে আমি এভাবে শান্তি তে বসে থাকব?
যারা আরু কে কিডন্যাপ করেছে তারা শুধু মাত্র আমাকে ভয় দেখানোর জন্য ই করেছে,,তারা আমাকে চেনে,, আর আমার পাওয়ার সম্পর্কে ও জানে,,আমার পক্ষে আরু কে বের করা তেমন কঠিন নয় সেটাও ওরা ভালো করে ই জানে,,
আরুকে কিডন্যাপ করার আধা ঘণ্টা র মাঝে ই আমি জেনে গিয়ে ছিলাম আরু কোথায় আছে,,
তারপর যা হলো তা শুনার তোমার দরকার নেই, তরু,,
কিন্তু যে আরু কে কিডন্যাপ করেছিল তার অবস্থা দেখাতে পারি,,দেখবে নাকি?…
— হুম দেখাও তো দেখি….
তরু আগ্রহ প্রকাশ করার সাথে সাথে ই অভ্র বলে উঠলো..
— এই না না তরু তোমাকে কিছু দেখতে হবে না,, শুভ্রর টা শুভ্র ই দেখুক…
— না না আমি দেখব,,শুভ্র ভাই তুমি দেখাও,,,
— না শুভ্র তুই দেখাবি না,,,
— না আমি দেখব বললাম তো,,
তরু আর অভ্রের কথা শুনে শুভ্র মুচকি হাসলো,,
শুভ্র তার সামনে থাকা ল্যাপটপ অন করে তরুর দিকে ধরে,,,
তরু ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে,, এক চিৎকার দিয়ে দাড়িয়ে যায়,, তরুর সারা শরীর কাপতে থাকে,,
ল্যাপটপে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে,,
একটা ছেলেকে কোন ফুটন্ত কিছুর উপরে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে,, সারা শরীর থেকে চুইয়ে চুইয়ে র*ক্ত পড়ছে,, হাত গুলো মনে হচ্ছে ভারী বস্তু দিয়ে থে*তলে দেওয়া হয়েছে,,
অভ্র অসহায় চোখে শুভ্র র দিকে তাকায়,,
অভ্র তরু কে টান দিয়ে বসিয়ে এক হাতে জড়িয়ে ধরে,,
— তোমাকে বলেছিলাম তো,,দেইখো না তাও জেদ করে দেখলে,,এখন ভয় পাচ্ছো কেন হুম?
তরু মুখে কোন কথা নেই,,বেচারি এমনি তেই শকে আছে,,,
তরুর অবস্থা দেখে শুভ্র মুচকি হাসে,,,
বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে অভ্রকে উদ্দেশ্য করে বলে,,,
— তুই তোর শালিক পাখির কাছে থাক অভ্র বেচারি কান্না করে দেবে,,আমি বরং আমার হবু বউয়ের কাছে যাই,,,
বলেই শুভ্র শিস বাজাতে বাজাতে বের হয়ে যায়,,
অভ্র শুভ্রের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে,,,
এই ছেলে যে তরুকে ভয় দেখানোর জন্য ই এটা দেখিয়েছে অভ্র সেটা ভালো ই বুঝতে পারছে…
চলবে……
[ পিলিজ সবাই গঠন গত মন্তব্য করবেন 🥺🥺পিলিজ]