#সুখ_পাখি
#Ayrah_Rahman
#part:-32
হঠাৎ দরজা খোলার শব্দে আরুর ঘুমটা হালকা হয়ে গেলো,,
মিটমিট করে চোখ খোলার প্রয়াস করল কতক্ষণ,, কিন্তু ঘুম বাবাজি যে এত জোরে চাপ দিয়ে ধরে আছে যে কিছু তেই চোখ খুলতে পারছে না,,ক্লান্ত শরীর নিয়ে আবার ঘুমের দেশে চলে গেলো,,
শুভ্র ধীর পায়ে আরুর বিছানার দিকে এগিয়ে গেলো,
বিছানার এক সাইডে আরুর পাশে বসে কিছু ক্ষন আরুর দিকে তাকিয়ে আরুর হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বলতে লাগল…
দুনিয়ার সবচেয়ে আনন্দময় জিনিস গুলির জন্যে টাকার প্রয়োজন হয় না, বিনা মূ্ল্যেই পাওয়া যায়। যেমন জোছনা, বর্ষার দিনের বৃষ্টি, মানুষের ভালোবাসা। আমি শুধু তোমার ভালোবাসা চাই প্রিয়তমা।
তোমাকে মন থেকে আমি কতটা ভালোবাসি এটা প্রকাশ করার জন্য ভালোবাসি এই শব্দটা অনেক ছোট হয়ে যায়।
তোমাকে আমি যে পাগলের মতো ভালোবাসি এটা বুঝানোর জন্য আমার এক জীবন খুব ছোট হয়ে যায়।
আমি যখন নিজকে নিয়ে ভাবি তখন অনুভব হয় তুমি ছাড়া আমি অসহায়।
আজকের জন্যও তোমাকে ভালোবাসি, আগামীকালের জন্যও তোমাকে ভালোবাসি, চিরকালের জন্যও আমি তোমাকেই ভালবাসবো
।আমি চাই আমার জীবনের প্রতিটি সময় তোমার সাথে কাটাই, প্রতিটি সেকেন্ড আমি তোমার জীবনের সাথে ভাগ করতে চাই।
।জীবনথেকে হারিয়ে গেছে অনেকটা সময় । তোমাকে দুই দুটো বছর হন্যে হয়ে কোথায় কোথায় না খুজেছি,,কিন্তু পাই নি,,একটা কথা কি জানো? যে হারিয়ে যায় তাকে খুঁজে পাওয়া ও যায় কিন্তু যে আত্নগোপন করে থাকে তাকে শত চেষ্টা করে ও পাওয়া যায় না। আমি তোমাকে ভালোবাসি,, নিজের থেকেও বেশি,,তোমাকে আর কোত্থাও হারাতে দেবো না,,অনেক কষ্ট দিয়েছো,,নিজেও পেয়েছো,,হয়ত আমার ভুল ছিলো,,তবে আর না,,
কথা গুলো বলতে বলতে শুভ্রের চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়তে লাগলো,,
ছেলেরা নাকি সহজে কাদে না,, তাদের তো কাদতে মানা,, আজ সকল নিয়ম ভঙ্গ করে শুভ্র অঝোর ধারায় কাদছে যে কান্না ই কোন শব্দ নেই আর নেই কেন কষ্ট,, শুধু রয়েছে এক আকাশ পরিমান আফসোস,, কেন আগে তার ভালোবাসা বুঝে নাই,,তাহলে তো আর তার জীবন থেকে দুটো বছর হারিয়ে যেত না,,,
আরুর দিকে কিছু টা ঝুঁকে কপালে ভালোবাসার পরশ একে দিয়ে কাথা টা ভালো করে টেনে দিয়ে চলে যেতে নিলে হঠাৎ কেউ পিছন থেকে শুভ্রের হাত টেনে ধরে,
শুভ্র পিছনে তাকিয়ে দেখে আরু তার হাত ধরে আছে,, শুভ্র আরুর দিকে তাকিয়ে তার হাত ছাড়িয়ে দু হাত দিয়ে ভালো করে চোখ মুছে নেই,,,
— চোখ মুছতে হবে না,,আপনাকে ও ভাবেই কিউট লাগছে,,
শুভ্র আরুর কথায় মুচকি হাসে,,
আরুর পাশে বসে,,
— কি ব্যপার ঘুমাও নি?
— ঘুমিয়ে ছি তো..
— তাহলে জেগে গেলে কিভাবে?
— আপনার গন্ধে
— কিহ?
— হ্যা তো,,আপনার শরীরের গন্ধ না আমার খুব চেনা,,পারফিউম টা ভালো,,
— মজা করা হচ্ছে আমার সাথে?
— না তো,,( কিউট ফেস করে) আপনি যখন রুমে ঢুকলেন তখনই তো আমি জেগে গিয়ে ছিলাম,,
— তারমানে আপনি সব শুনেছেন তাই তো?
— হুম,একটা কথা বলি?
— একটা কেন হাজার টা করো,,আমি তোমার কথা শুনার জন্য ই তো হাজার বছর অপেক্ষা করতে প্রস্তুত,,
— আপনি আমাকে এত কেন ভালোবাসেন?
— ভালোবাসার কোন কারণ হয়না, ছাদে যাবে?
— হুম চলেন,,,
_______________
আরু আর শুভ্র ছাদের দোলনাই বসে আছে,,কারো মুখে কোন কথা নেই,,,
নিরবতা ভেঙে শুভ্র বলে উঠলো,,
– পিচ্চি,,
— হুম?( সামনের দিকে তাকিয়ে আরু উত্তর দিলো)
— সপ্তম আশ্চর্য ( অবাক হয়ে)
— মানে? ( ভ্রু কুচকে আরু শুভ্রের দিকে তাকালো)
— মানে তোমাকে পিচ্চি বললাম আর তুমি কোন রিয়েক্ট করলে না,,অবাক করা বিষয়…
— ইচ্ছে হয় নি তাই করি নি..
— চড়ুই পাখি,,
— হুম বলেন শুনছি,,
–তোমার কোলে মাথা রাখি?
আরু অবাক হয়ে শুভ্রের দিকে তাকিয়ে রইলো,, শুভ্র আরুর উত্তরের অপেক্ষা না করে ঠাস করে আরুর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো,,
— চড়ুই পাখি আমাটা একটু ব্যথা করছে,,চুল গুলো একটু টেনে দাও না
আরু কাপা কাপা হাতে শুভ্রের চুলে হাত দেই,,
শুভ্রের চুল গুলো অনেক সিল্কি,,
বেশ কিছুক্ষণ পর,,
— এই আরু পাখি,,,
— হুম?
— তুমি আমাকে ভালোবাসো?
— আপনার কি মনে হয়?
— না আমি তোমার মুখ থেকে শুনতে চাই,,
শুভ্রের বাচ্চাদের মতো আবদার শুনে আরু হেসে দেই,
আরু চোখ বন্ধ করে..
কিছুক্ষন পর বলতে শুরু করে…
প্রথম ভালোলাগা হয় তারপর বহুদিন ধরে একটু একটু করে ভালো দিকগুলো আকর্ষণ করে এবং পরে তা ভালোবাসায় পরিনত হয়, তার প্রতি মায়া হয় এবং সবকিছু মিলিয়ে ভালোবাসা।
আপনার প্রতি আমার অনুভূতি গুলো ঠিক এমনই,,
ভালোবাসা শব্দটা সবসময় নতুন, কখনোই তা মলিন হয় না, এর রং ধূসর নয় কিংবা বর্নহীনও নয়, যা আছে তা রংধনুর রঙে রাঙ্গানো। হোক না সেটা অনেক বিভেদ, তারপরেও ভালোবাসা শুধুই ভালোবাসা। সবকিছুর পর বলবো শুধুই ভালোবাসি।আপনি আমার চোখে সব সময় সুন্দর,,, আপনার দু চোখের দিকে তাকিয়ে আমি নিজেকে কোথায় নে হারিয়ে ফেলি।সবকিছু শেষে আমি আপনাকেই ভালোবাসি।
আরু বলছে আর শুভ্র মুগ্ধ হয়ে শুনছে,,,,
চলবে….
[আমি আগেই বলে রাখি,, আমি কিন্তু এতো টাও রোমান্টিক না গো,,এই টুকু লিখতে গিয়ে আমার অবস্থা করুন 🤧]