#প্রিয়_অর্ধাঙ্গীনি
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
#পর্ব_৮
,
বাইরে তখন মুষল ধারে বৃষ্টি হচ্ছে ডান হাতের আঙুলের ফাঁকে প্রায় শেষ হওয়া একটা সিগারেট ধরানো। শাহিন ক্লাব ঘরের দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসে আছে সামনেই শশীর হাত পিছনে মুড়িয়ে বাঁধা মুখেও কাপড় দিয়ে বাঁধা। নরম হাত এতো শক্ত করে বাঁধার দরুন কব্জিতে লাল দাগ পড়ে গেছে। কাঁদতে কাঁদতে চোখ লাল হয়ে ফুলে গেছে এখন আর কান্না করার মতো শক্তিটুকুও অবশিষ্ট নেই। হাতের সিগারেট টা ফেলে দিয়ে শাহিন শশীর দিকে তাকিয়ে বলল।
তোর আব্বা যদি প্রথমেই আমার কথা মেনে নিতো তাহলে আমার এইটা করতে হতো নাহ আর তোকেও এই কষ্টটা পেতে হতো নাহ। ব্যাস এখন শুধু সকাল হওয়ার পালা চিন্তা করিস নাহ তোকে আমি ছোঁবো নাহ। শুধু তোর চরিত্রে দাগ লাগাবো কাল সকালে যখন গ্রামের সবাই তোকে আর আমাকে একসাথে দেখবে তখন সবার যা বোঝার বুঝে যাবে। সালিশ বসবে জামশেদ মাস্টার এর মান সম্মান সব ধূলোর সাথে মিশে যাবে। তখন তোর গলায় কলসি বেঁধে নদীতে ডুবে মরা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে নাহ। না না আর একটা উপায় আছে আর তা হলো আমার সাথে বিয়ে যেহেতু আত্ম*হত্যা পাপ আর আত্ম*হত্যা করলে তার জানাজা পড়ানো হয় নাহ এই গ্রামে তাই জন্য তোর আমাকে বিয়ে করা ছাড়া কোনো উপায়ই থাকবে নাহ। তাই এতো কান্না না করে চুপ করে বসে থাক বাইরে যে বৃষ্টি এই বাগানের দিকে কেউ খুঁজতেও আসবে নাহ। পুকুর ভেসে এদিকে হাঁটু পানি হয়ে গেছে আর তোর স্যান্ডেল তোদের বাগানে রেখে এসেছি। তাই তোকে ওরা ওদিকেই খুঁজবে এদিকে কেউ আসবে নাহ৷ এই পথধরে তো মেইন রাস্তায় উঠতে হয় শহরে যাওয়ার পথ এতো রাতে কেই বা শহরে যাবে আর তোকে খুঁজতে আসবে। তাই তোকে খুঁজে পাওয়ার কোনো আশাই নেই চুপচাপ ঘুমায় পড় কালকে সকালে আমাগো বিয়া আমার তো খুশিতে ঘুমই আসতাছে নাহ।
কথাগুলো বলে শাহিন একটা হাসি দিয়ে গলায় থাকা গামছাটা নিচে বিছিয়ে সেখানে শুয়ে পড়ল। শশী অনেক চেষ্টা করেও হাতের বাঁধন খুলতে সক্ষম হলো নাহ। উল্টো টানাটানি করার জন্য চিকন দড়িটা হাতে আরো বসে গিয়ে ব্যাথা হচ্ছে। মুখ বাঁধা শব্দ ও করতে পারছে নাহ৷ আর শব্দ করেই বা কি লাভ এই বৃষ্টির মধ্যে তার গলার আওয়াজ কেই বা শুনবে।
,,,,,,,,,,
মাস্টার বাড়ি পেরিয়ে প্রায় অনেকটা দূরেই চলে এসেছে সমুদ্র। মাটির রাস্তা কাঁদায় একেবারে মাখামাখি বৃষ্টিও নেমেছে মুষলধারে কিছুদূর যাওয়ার পর হটাৎ গাড়ি থেমে গেলো। হাজার চেষ্টা করেও সামনে এগোচ্ছে নাহ। সমুদ্র রেগে স্টিয়ারিং এর উপর থাবা মেরে স্টার্ট বন্ধ করে চাবিটা পকেটে ভরে গাড়ি থেকে নামলো। ততক্ষণে বৃষ্টির পানিতে গায়ের শার্টটা শরীলে আস্টেপিস্টে মিশে গিয়েছে। চাকার দিকে তাকাতেই দেখলো চাকা কাঁদার মধ্যে আটকে গিয়েছে। সমুদ্র গাড়িতে লাত্থি মেরে আশেপাশে তাকালো। মাঠের মধ্যে দিয়ে এই মাটির রাস্তাটা চলে গেছে। আরো বেশকিছু দূর পরেই হাইওয়ে, এখানেই প্রথম সমুদ্র শশীর কাছে জিগাস করেছিলো জামশেদ মাস্টার এর বাড়ি কোনটা। হঠাৎ সমুদ্রের শশীর কথা মনে আসলো মেয়েটাকে কি পেয়েছে? পাক না পাক তাতে ওর কি। এমন আরো অনেক কিছু চিন্তা করে গাড়ির মধ্যে গিয়ে বসলো। ভিজা হাতে ফোনটা হাতে নিয়ে রোদ্রকে কল দিলো৷ বৃষ্টির জন্য নেটওয়ার্ক ও তেমন পাচ্ছে নাহ। অনেক চেষ্টার পর ফোনগেলো তবে রোদ্র ধরলো নাহ৷ পরের বার আবার দিতেই ফোনটা রিসিভ হলো। ওপাশে বৃষ্টির ঝুম ঝুম শব্দে কথা কিছুই শোনা যাচ্ছে নাহ। রোদ্র কি বলছে সেটাও বোঝা যাচ্ছে নাহ সমুদ্র কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,
মেয়েটাকে কি খুঁজে পেয়েছে?
নাহ ভাইয়া শশীকে এখনো কোথাও খুঁজে পায়নি। আমিও খুঁজতেছি কি আজব গ্রাম ভাই বললাম পুলিশে খবর দিতে কিন্তু কেউ রাজি হলো নাহ বলে মেয়ের বদনাম হবে এটা কোনো কথা? ভাই শুনতে পাচ্ছো আমার কথা তুমি কোথায় এখন?
সমুদ্র ফোনটা কেটে গাড়ির সিটে ছুঁড়ে মারল খানিকক্ষণ ভেবে গাড়ির ডোর লক করে মাটির রাস্তা ছেড়ে ক্ষেতের মধ্যে নেমে গেলো। পায়ের নিচে থেকে প্যান্ট ফোল্ড করে হাঁটুর নিচে অবধি ভেঙে রাখা। হাঁটু পযন্ত কাঁদায় মাখামাখি মাঠ পেরিয়ে ক্ষেতের শেষ মাথায় আসতেই শশীদের পুকুর আর পুকুরের ওপাশে ওদের বাড়ি। পুরো বাড়ি অন্ধকারে ডুবে আছে কারেন্ট নাই সেই জন্য পুরোটা অন্ধকার। সমুদ্র সামনে তাকালে দেখলো বেশদূরে লাইটের আলো হয়ত সবাই শশীকে খোঁজাখুঁজি করছে। সমুদ্র নিজের হাতে থাকা ছোট টর্চটা বন্ধ করে সেদিকে যেতে গিয়ে আবার কি মনে করে টর্চটা জ্বালালো। পুকুর ভেসে হাঁটু পানির বেশি হয়ে গেছে সমুদ্র তারমধ্যে দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সামনেই সেদিনের সেই ক্লাবঘর, পুরো অন্ধকার সমুদ্র ক্লাবঘরের কাছাকাছি যেতেই পানি কমে আসতে লাগল। উপরে টিন দিয়ে পুরোটা ইটদিয়ে গাঁথা টিনের চালের উপর বৃষ্টির পানি পড়ায় বেশ জোরে শব্দ হচ্ছে। সমুদ্র ক্লাবঘরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আশেপাশে তাকালো চারপাশে কেউ নেই সমুদ্র হাতের টর্চটা জ্বালিয়ে আবার সামনের দিকে গেলো।কিন্তু তখনি মনে হলো কানে কোনো ক্ষীণ শব্দ ভেসে আসলো। হয়ত হবে কোনো কিছুর সমুদ্র সেদিকে কান না দিয়ে সামনে যেতে লাগল।
,,,,,,,
শাহিন ঘুমিয়ে গেছে পুরো রুম জুড়ে অন্ধকার বাইরে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে তার আলো রুমে আসায় মাঝে মাঝে রুমটা আলোকিত হচ্ছে। মাথাটা কেমন ঝিমঝিম করছে শশী টেনে চোখটা খুলতেই দরজার বাইরে শব্দ পেলো। দরজার নিচের দিকে তাকাতেই বাইরে আলো দেখতে পেলো হয়ত তার খোঁজেই কেউ এসেছে। বাঁচার ক্ষীণ আশায় মুখ দিয়ে শব্দ করতে লাগলো তবে মুখ বাঁধা থাকায় তেমন কোনো শব্দই হলো নাহ। মাথা ডানেবামে নাড়াতেই বাঁধন ঢিলে হয়ে গেলো তাতেই নিজের শরীলের সমস্ত শক্তি দিয়ে চেঁচালো তবে সেটা একবারই। কারণ ততক্ষণে শাহিন এর ঘুম ভেঙে গেছে আর সেও বুঝতে পেরেছে বাইরে কেউ আছে নিজের আসন্ন বিপদ বুঝতে পেরে আবার শশীর মুখ বেঁধে দিলো। বাইরে থাকা মানুষ টাও ততক্ষণে চলে গেছে শশী নিরাশ হয়ে চোখ বুজে নিলো বন্ধ চোখের কোণ থেকে এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ল। বাঁচার বোধহয় আর কোনো আশায় নেই সারাজীবন মরার মতো বেঁচে থাকতে হবে। তার নিয়তিতে হয়ত এটাই লেখা ছিলো, আব্বার কথা খুব মনে পড়ছে না জানি কেমন আছে। বাড়ির সবাই হয়ত অনেক চিন্তা করছে মনে মনে একটাই প্রার্থনা কালকের সকালটা যেনো না আসে।
শাহিন সস্তির একটা শ্বাস ফেলে আবার নিজের জায়গায় গিয়ে বসতেই বিকট শব্দে ঘুণে খাওয়া দরজাটার সিটকেনি ভেঙ্গে খুলে গেলো। শাহিন চমকে উঠে দাঁড়াতেই নাক বরাবর শক্ত হাতের একটা ঘুষি পড়ল। সোজা নিচে পড়ে গিয়ে ব্যাথায় কাতরাতে লাগলো নিজের বাম হাতটা নাকে ছুঁইয়ে সামনে আনতেই দেখলো রক্ত। শাহিন ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে এককোণে বসে পড়ল। সমুদ্র কিছু সময় শাহিনের দিকে চেয়ে শশীর দিকে তাকালো মেয়েটার অবস্থা খুবি করুন৷ সমুদ্র একটা শ্বাস নিয়ে শশীর দিকে এগিয়ে গেলো। ওর কোথায় থাকার কথা ছিলো আর কোথায় আছে, হাতের বাঁধন টা খুলে দিতেই গড়িয়ে নিচে পড়তে গেলো। সমুদ্র শশীকে ধরে বুকের সাথে ঠেকিয়ে মুখের বাঁধন ও খুলে দিলো। শশী সমুদ্রের বুকে মাথা ঠেকিয়ে কুটুর কুটুর চোখে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে। সমুদ্র শশীর দুই কাঁধে ধরে দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসায়ে বলল।
বাইরে অনেক বৃষ্টি আপাতত এখানেই অপেক্ষা করতে হবে। তোমার শরীলের এই অবস্থায় যদি বৃষ্টির মধ্যে বাড়ি নিয়ে যায় তাহলে তোমাকে বাঁচানোই মুশকিল হয়ে যাবে।
শশী কিছু বললো নাহ শুধু নিজের হাতটা আলতো করে ধরে ওতে ফুঁ দিচ্ছে আর কাঁদছে। সমুদ্র আবার শাহিনের দিকে তাকালো সমুদ্রের তাকানো দেখে শাহিন পড়িমরি করে দৌড়ে বাইরে চলে গেলো।
,,,,,,,,,
আব্বা বিশ্বাস করো আমি নিজের চোখে ওদের দুজনকে খারাপ অবস্থায় দেখেছি। আর আমি যেনো কাউকে না বলতে পারি এই জন্য আমাকে মেরেছেও দ্যাখো।
ভরা সালিশে শাহিন কথাটা বলে নিজের ব্যান্ডেজ করা নাকটা দেখালো। চেয়ারম্যান নিজের ছেলের মুখে কথাটা শুনে বাঁকা হেসে জামশেদ মাস্টার এর দিকে তাকালো। সে যেনো মনে মনে বেশ খুশি হয়েছে বিয়ের প্রাস্তাব নিয়ে যাওয়াই তাকে বেশ কথা শুনিয়েছিলো এখন কোথায় গেলো সেই দেমাগ কেমন মাথা নিচু করে বসে আছে। সকালের আলো ফুঁটতেই শাহিন গ্রামের লোকজন নিয়ে ক্লাবঘরের সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলো। সবাইকে বুঝিয়েছে শশী শহরের এক ছেলের সাথে এখানে খারাপ কিছু করছিলো। মেয়েকে পাওয়া গিয়েছে শুনেই মাস্টার বাড়ির সবাই চলে এসেছে মেয়েরা শশীকে ধরাধরি করে বাড়ি নিয়ে গিয়েছে। সমুদ্র ও বাইরে তাকিয়ে কিছু না বলে বাড়ির দিকে চলে গিয়েছে। ঘড়ির কাঁটা নয়টার ঘরে পড়তেই গ্রামের চেয়ারম্যান সহ আরো বয়স্ক ব্যক্তিদের নিয়ে মাস্টার বাড়ি সালিশ বসিয়েছে। চেয়ারম্যান ব্যাঙ্গ করে জামশেদ মাস্টার কে বলল।
কি মাস্টার এখন কি করবা তুমিই কও এই মাইয়া বিয়া দিবা কেমনে আর এমন মেয়েকে আমরা গ্রামে রাখতেও দিবো নাহ। কি বলেন আপনারা?
চেয়ারম্যান এর কথার সাথে প্রায় সবাই তাল মেলালো। সমুদ্র শার্ট পাল্টে দূরেই দাঁড়িয়ে ছিলো এদের কথাশুনে কিছুটা অবাকই হলো বটে এগিয়ে এসে জামশেদ মাস্টার এর পাশে দাঁড়িয়ে বলল, মানে আমিতো কিছুই বুঝলাম নাহ আপনারা কিসের ভিত্তিতে একটা মেয়ের চরিত্রে এমন দাগ লাগাচ্ছেন। আর আপনি এখানকার চেয়ারম্যান না কি আপনার ছেলেই শশীকে কালকে সন্ধ্যায় ওই ক্লাবঘরে বেঁধে রেখেছিলো আমি না গেলে নাজানি কি করতো।
আব্বা দেখছো কেমনে মিথ্যা কথা কইতাছে।
শাহিন এর কথাশুনে সমুদ্র রেগে শাহিনের দিকে তাকিয়ে বলল, একটা মাড়ে কিছুই হয়নি দেখছি আরো কয়েকটা দিলে ভালো হতো।
সমুদ্রের ঠান্ডা হুমকিতে শাহিন ভয়ে একপাশে সরে গেলো। পরিবেশ ঠান্ডা করতে চেয়ারম্যান বলল, থামো তোমরা কি শুরু করছো। এখানে আমরাও আছি, শোনো মানলাম শাহিন এই কাজ করছে কিন্তু তবুও একটা যুবতি মাইয়া এমনে আরেকটা যুবকের সাথে এক ঘরে রাত কাটানো মানুষ মোটেও ভালো চোখে দেখবো নাহ। তাই মাস্টার হয় তোমার মাইয়ারে এই পোলার সাথে বিয়া দেও নয়ত অন্য কারো সাথে। এমন মাইয়াকে ঘরে রাখলে আমরা মানবো নাহ গ্রামেতো আরো মাইয়া আছে।
সমুদ্র ভ্রু কুঁচকে বলল, আজব তো আমি কেনো ওকে বিয়ে করবো। আপনাদের তো উচিত আমাকে ধন্যবাদ জানালো তা না করে এসব কোন ধরনের বিচার করেন আপনারা।
সমুদ্রের কথা শুনে শাহিন সুযোগ পেয়ে বলল, আব্বা তুমি অনুমতি দিলে শশীরে আমিই বিয়া করমু। গ্রামের ছেলে হিসাবে তো আমার একটা দায়িত্ব আছে।
ছেলের এমন কথাশুনে চেয়ারম্যান খুশি হয়ে বলল, এই না হলে আমার পোলা এমনেই সকলের পাশে খাড়াইবা বাপ। তা মাস্টার তুমি কি কও।
জামশেদ মাস্টার কিছু না বলে বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলল, আমাকে একটু সময় দেন আমি বিকালে বলব।
মাস্টাররের এমন কথায় রাগ হলেও চেয়ারম্যান কিছু না বলে সায় দিয়ে বলল, তাহলে বিকালে আবার বসবো সবাই এখন সবাই চলো।
,,,,,,,,,
মা তুমি এসব কি ধরনের কথা বলো আমি ওকে বিয়ে করতে যাবো কেনো। তাছাড়া আমি ওর থেকে বয়সেও অনেক বড়। একটা হাঁটুর বয়সী মেয়েকে কীভাবে বিয়ে করতে বলো।
শাহানারা ছেলের পাশে বসে বোঝানোর সূরে বলল, বয়স তেমন কিছু না তুই রাজি হয়ে যা নয়ত ওই চেয়ারম্যান এর ছেলের সাথে ওই ফুলের মতো মেয়েটার বিয়ে দিয়ে দেবে ওর জীবনটা শেষ হয়ে যাবে
এখানে আমার কি করার আছে মা এখন তো মনে হচ্ছে আমার কালকে চলে যাওয়াই ভালো ছিলো। ওকে বাঁচিয়েই দেখছি ভুল হয়েছে। তোমরা যা খুশি করো কিন্তু আমাকে বাদে আমি এখনি ঢাকা যাবো।
তুই এই কথা কীভাবে বলতে পারিস তুই ভালো করেই জানিস ওই ছেলেটা কেমন। আচ্ছা তুই কি সত্যিই চাস শশীর জীবনটা নষ্ট হয়ে যাক?
মায়ের কথায় সমুদ্র কিছু একটা ভেবে বলল, ওকে ফাইন তুমি ওই মেয়েটাকে তোমার ছেলের বউ বানাতে চাও তাইতো? তো ঠিক আছে রোদ্রতো আছে ওর সাথে বিয়ে দাও। তাহলে তো আর কোনো সম্যসা নেই এবার অন্তত আমাকে ছাড়ো।
এটা কী ধরনের কথা বড় ছেলেকে রেখে মোজো ছেলের বিয়ে দেবো? লোকে কি বলবে?
লোকের কথা তোমায় কে শুনতে বলেছে মা আমি বিয়ে করবো নাহ। তাই তুমি রোদ্রের সাথে বিয়ে দিবে হয়ে গেলো এতো কথার কি আছে। এখন সরো আমি বের হবো।
কথাটা বলে সমুদ্র রুম থেকে বেরিয়ে গেলো, শাহানারা হতাশ হয়ে দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে রোদ্রের ঘরের দিকে গেলো। গিয়ে দেখলো রোদ্র বিছানায় বসে আছে হয়ত কিছু একটা ভাবছে। শাহানারা ছেলের পাশে গিয়ে বসে বলল, তোর কাছে একটা আবদার নিয়ে এসেছি আশা করি তুই রাখবি।
এভাবে বলছো কেনো মা তুমি আমায় আদেশ করো।
শাহানারা ছেলের হাত ধরে নরম কন্ঠে বলল, তুই শশীকে বিয়ে কর বাবা এই বিপদ থেকে ওকে বাঁচা।
মায়ের কথায় রোদ্র অবাক হয়ে কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে মায়ের হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে আলতো হেসে বলল, তুমি যেটা চাইছো সেটাই হবে আমি রাজি।
#চলবে?