#দৃষ্টির_আলাপন
#পর্বঃ৩১
#আদওয়া_ইবশার
দুচোখ বন্ধ করে নিস্তেজ ভঙ্গিতে বিছানায় পরে আছে রক্তিম। ঘন্টা খানেক আগে ঘুম ভাঙ্গে তার। ভারী চোখ খুলে এক পলকের জন্য শুধু দেখেছিল সম্মুখে দাঁড়িয়ে থাকা তৃষ্ণার্ত পথিকের ন্যায় দৃষ্টিকে। এরপর সেই যে চোখ বন্ধ করেছে, ডাক্তারের ডাকেও কোনো সাড়া দেয়নি। একবার শুধু অস্ফুট স্বরে বলেছিল, তাকে যেন কেউ বিরক্ত না করে। মুখের ডান পাশটাও অল্প একটু বেঁকে গেছে রক্তিমের। কথা কেমন জড়িয়ে আসে। ডাক্তারের মুখ থেকেই দৃষ্টি জানতে পারে রক্তিমের প্যারালাইজড এর বিষয়টা। তবে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। না ফেলেছে এক ফোঁটা চোখের জল। অতি শোকে পাথর, কথাটাই যেন ফলেছে দৃষ্টির ক্ষেত্রে।শান্ত কন্ঠে শুধু ডাক্তারের কাছে জানতে চেয়েছিল,
“পুরোপুরি সুস্থ্য হবার সম্ভাবনা কতটুকু?”
ডাক্তার যখন জানতে পারে পেশেন্ট রক্তিম শিকদারের স্ত্রী এই অল্প বয়সী দৃষ্টি মেয়েটা,তখন কিছু সময়ের জন্য থমকায়। সহানুভূতির নজরে তাকায় কিশোরী মেয়েটার দিকে। ভাবে এটুকু একটা মেয়ে! এই বয়সে তো তার বই, বন্ধু-বান্ধব নিয়েই মেতে থাকার কথা। অথচ সেই মেয়েটাই কি না ভাগ্যের ফেরে আজ প্যারালাইজড স্বামীর সবথেকে কাছের অভিভাবক! নিশ্চয়ই সুস্থ্য স্বাভাবিক স্বামীর ঘরে দু-চোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল। হাতে হাত রেখে পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটবে দুজন। স্বামীর কাধে মাথা রেখে চোখ বুজে প্রশান্তির নিঃশ্বাস নিবে। ছোট, বড় সমস্ত আবদার, আহ্লাদ পূরণ করবে স্বামী। কিন্তু আজ! স্বামী নামক মানুষটা তার নির্ভরতার স্থান হবার বদলে উল্টো সেই আজ স্বামীর নির্ভরতার স্থান। অল্প বয়সেই স্বামী সুখ থেকে বঞ্চিত হলো মেয়েটা। কাধে তুলে নিতে হবে পঙ্গু স্বামীর সকল দায়িত্ব। কথাগুলো ভেবে দীর্ঘশ্বাস ফেলেছিল ডাক্তার আসলাম হাজারী। স্মিত হেসে ভরসা দিয়ে বলেছিল,
” আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলোনা মা। চিকিৎসা এক ধারা আর মনের জোর আরেক ধারা। আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখো। নেগেটিভ কোনো কিছু মাথায় না এনে সবসময় পজেটিভ ভাবো। তোমার স্বামীর যা সিচুয়েশন এর থেকেও আরও ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনের পেশেন্ট ও সুস্থ্য হয়েছে। পুরো শরীর প্যারালাইজড পেশেন্টদের ও আমি সঠিক চিকিৎসায় রেগুলার ফিজিওথেরাপি আর সঠিক যত্নে হাঁটতে দেখেছি। সেখানে তোমার স্বামীর কন্ডিশন এতোটাও খারাপ হয়নি। ডান পাশ একেবারেই অকেজো না। অল্প নড়চড় হয়তো করতে পারবে।তোমার স্বামীও সুস্থ্য হবে ইন শা আল্লাহ। হয়তো একটু সময় লাগবে। কিন্তু আল্লাহ চাইলে অবশ্যই সুস্থ্য হবে।”
মলিন মুখে ডাক্তারের কথা গুলো মন দিয়ে শুনে দৃষ্টি। কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায় না। চুপচাপ চেম্বার থেকে বেরিয়ে রক্তিমকে রাখা কেবিনের দিকে এগিয়ে যায়। নিশ্চুপে দরজার নব ঘুরিয়ে ভিতরে ঢুকে একটা টুল টেনে নিরবে বসে পরে রক্তিমের মাথার কাছে। কাঁপা হাতে ছুঁয়ে দেয় রক্তিমের অবশ ডান হাতটা। কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে ডাকে,
“জেগে আছেন?”
দৃষ্টির ডাকে সময় নিয়ে চোখ খুলে তাকায় রক্তিম। অষ্টাদশীর লাবন্যময় মুখে আজ কোনো লাবন্যতা খোঁজে পায়না রক্তিম। চুপচাপ খুটিয়ে খুটিয়ে অপলক চোখে দেখে যায় দৃষ্টির মলিন মুখটা। বিয়ের এতোদিন পর এই প্রথম রক্তিম হয়তো পূর্ণ দৃষ্টিতে তার মুখের দিকে তাকিয়েছে। আজ তো দৃষ্টির চেহারায় এক রাশ মলিনতা ছাড়া কিছুই নেই। তবে এই বিষাদ ঘেরা মুখে অপলকে কি দেখছে রক্তিম? ম্লান হাসে দৃষ্টি। আদুরে পরশে মাথার চুলে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে,
“ঘুম পাচ্ছে আরও?”
দৃষ্টির ডাকে হুশ ফিরে রক্তিমের। তড়িৎ মুখ ফিরিয়ে কাত হয়ে শুতে চায়। ঠিক তখনই অনুভব করে ডান পাশটা ঠিকভাবে নাড়াতে পারছেনা। বল প্রয়োগ করতে গেলেই কেমন ঝিমঝিম করছে। অসহনীয় এক পীড়া দিচ্ছে। বারকয়েক চেষ্টার পরও যখন ব্যর্থ রক্তিম, তখনই বিমূঢ় চিত্তে দৃষ্টির দিকে তাকায়। অস্পষ্ট ভাবে বলে,
“আমার হাতে-পায়ে কি হয়েছে?”
মুখ বেকে যাওয়ার ফলে কথা জোরালো শুনালেও বুঝতে পারে দৃষ্টি। তৎক্ষণাৎ চঞ্চলতায় ছেয়ে যায় দৃষ্টির চোখ দুটো। শুকনো খড়খড়ে ঠোঁট দুটো জ্বিভের ডগায় ভিজিয়ে স্মিত হেসে বলে,
“তেমন কিছুনা। তখন না কি কোর্টে মাথা ঘুরিয়ে পরে গেছিলেন! ঐ সময় একটু ব্যথা পেয়েছেন। ডাক্তার বলেছে ঠিক হয়ে যাবে আস্তে আস্তে। আপনি এতো অস্থির হবেন না প্লিজ!”
কথাটা বিশ্বাস হয়না রক্তিমের। পরে গিয়ে ব্যথা পেলে এমন অবশ অবশ লাগবে কেন হাত-পা? তাও শুধু এক পাশ। নড়তে না পেরে ছটফট করে রক্তিম। তার এমন ছটফটানি দেখে দৃষ্টি ব্যর্থ হয় চোখের জল আটকে রাখতে। ঠোঁট ভেঙ্গে কেঁদে ওঠে ফুপিয়ে। দিশেহারা হয়ে ছুটে যায় বাইরে। মেহেদীর সামনে দাঁড়িয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে অনুনয় করে বলে,
“ভাইয়া প্লিজ ওনাকে সামলান। আমি পারছিনা। আমি, আমি কি বলব? কোন মুখে বলব যে আপনি হাঁটা-চলার শক্তি হারিয়েছেন? আমি আর পারছিনা। আমার ভিতরটা দুমড়ে মুচড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। আপনি যান। গিয়ে কিছু একটা বলুন। আপনার কথা ঠিক শুনবে।”
মেহেদীর পিছন পিছন আজীজ শিকদার ছুটে যায়। বাইরে দৃষ্টির কাছে ঝাপসা চোখে দাঁড়িয়ে থাকে জাবির, শান্ত। রাকিব দরজার কাছে আড়াল থেকে দেখার চেষ্টা করে ভিতরের পরিস্থিতি। মেহেদীর সাথে আজীজ শিকদারকে দেখা মাত্রই একদম শান্ত হয়ে যায় রক্তিম। থেমে যায় এতোক্ষনের সকল ছটফটানি। শরীরের ব্যথা ছাপিয়ে অনুভূত হয় বুকের ভিতর জ্বলছে। শারীরিক যন্ত্রণার থেকেও বেশি পীড়া দিতে শুরু করে মনের যন্ত্রণা। চোখের পাতায় একে একে ভেসে ওঠে আদালতের প্রতিটা ঘটনা। অসহনীয় ব্যথার উদ্বেগ হয় মাথায়।ঘন ঘন নিশ্বাস নিয়ে সামলানোর চেষ্টা করে নিজেকে। যেই আজীজ শিকদার পা বাড়ায় তার কাছাকাছি আসতে, ওমনি সচল বা-হাত উঁচিয়ে থামিয়ে দেয় রক্তিম। হাপিয়ে যাওয়া কন্ঠে কাঠিন্যতা মিশিয়ে চোখ খিঁচিয়ে বলে মেহেদীকে উদ্দেশ্য করে বলে,
“ওনাকে চলে যেতে বল। সহ্য হচ্ছেনা আমার ঐ চেহারা।”
এমন একটা আচরণেই বোধহয় আশা করেছিল আজীজ শিকদার। এতো বড় একটা ঘটনার পর আর কি ই বা আশা করা যায়। তবুও দমেনা আজীজ শিকদার। ভুল যখন করেছে সেই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত তো করতেই হবে। ফোঁস করে একটা দম ছেড়ে নিষেধ সত্বেও এগিয়ে যায় আজীজ শিকদার। বোঝানোর সুরে বলে,
“বাবা আমার কথাটা শুন। আমাকে একটা সুযোগ দে।”
“সুযোগ! কিসের জন্য? যেটুকু বেঁচে আছি সহ্য হচ্ছেনা? একেবারে সাড়ে তিন হাত মাটির নিচে পুতে রাখতে চাচ্ছেন? কিন্তু বিশ্বাস করুন, আমি একটুও মরতে চাইনা। আগে চাইলেও এখন আর চাইনা। বাঁচতে চাই। বেঁচে থেকে নিজ চোখে দেখতে চাই আমার আশেপাশে থাকা মানুষ গুলো আর কতভাবে আমাকে আঘাত করতে পারে। আর আমিও কতটুকু সহ্য করতে পারি। একসময় জীবনের প্রতি অনিহা ছিল। আর এখন জীবনের প্রতি জেদ ছাড়া কোনো অনিহা নেই।”
এটুকু বলেই হাপিয়ে যায় রক্তিম। শরীর ছেড়ে শুয়ে থেকে ঘন ঘন নিশ্বাস ফেলে কতক্ষণ। তড়িৎ বেগে মেহেদী এগিয়ে যায় তার দিকে। একটা হাত নিজের দু-হাতে মুঠোয় নিয়ে অনুরোধের স্বরে বলে,
“ভাই প্লিজ চুপ থাক। তোর শরীর ভালো না। আর কথা বলিস না। যা বলার সুস্থ্য হয়ে বলিস। ওনাকে আমি পাঠিয়ে দিচ্ছি। চলে যাবে ওনি। তুই একটু শান্ত হো।”
আবারও অশান্ত ভঙ্গিতে মাথা কাত করে বা-হাত ঝাড়ি দিয়ে মেহেদীর থেকে ছাড়িয়ে নেয় রক্তিম। ঠেলে একটু দূরে সড়াতে চায়। মেহেদীও কোনো জোর ছাড়াই ঝটপট সড়ে দাঁড়ায়। এভাবে বল প্রয়োগ করলে যদি আবার কোনো ক্ষতি হয়! অস্পষ্ট স্বরেই রক্তিম চিৎকার করে বলতে থাকে,
“আপনার জন্য। একমাত্র আপনার জন্য আমার তিলে তিলে গড়ে তোলা ক্যারিয়ার নষ্ট হয়েছে। ছোটবেলা থেকে ডিফেন্সের যে স্বপ্ন দেখে কিশোর বয়স থেকে যুবক হয়েও দিন-রাত এক করে নিজেকে মিলিটারী হিসেবে গড়ে তুলেছিলাম। সেই স্বপ্ন এক লহমায় ধূলিসাৎ করে দিয়েছেন আপনি। খুনি না হয়েও গায়ে খুনের তকমা লাগিয়েছি।যে মুহূর্তে সামরিক বাহিনী আমাকে বহিঃষ্কার করেছিল,ঠিক সেই মুহূর্তে আমার ভিতরে কি চলছিল আপনি কোনোদিন জানবেন না।আমার শরীর থেকে যখন একে একে কঠোর সাধনার ফল হিসেবে পাওয়া প্রতিটা ব্যাজ খুলে নিয়েছিল সেই মুহূর্তেই আমি রক্তিম বেঈমান স্ত্রী আর ভাইয়ের বিশ্বাস ঘাতকতায় যে আঘাত পেয়েছিলাম তা ভুলে গিয়েছিলাম।নিজের স্বপ্ন গুলোকে দাফন করে প্রাণহীন দেহটা নিয়ে যখন বাড়ি ফেরেছিলাম, চেয়েছিলাম মায়ের কোলে মাথা রেখে মনে জমে থাকা দুঃখ গুলো একটু লাঘব করতে। কিন্তু এতোটাই কপাল পোড়া ছিলাম আমি যে, নিজের মায়েই মৃতপ্রায় হৃদয়টা নতুন করে কথার আঘাতে ক্ষতবীক্ষত করেছিল। জীবন্ত লাশে পরিণত হয়েছিলাম তখন। একজন মিলিটারী মেজর থেকে গুন্ডাতে পরিণত করেছেন আপনি আমাকে। আমার আজকের এই ছন্নছাড়া জীবনের জন্য একমাত্র দায়ী আপনি। বাবা হয়ে পুরো সমাজের কাছে আমাকে খুনি বানিয়েছেন আপনি। শুধু আপনার জন্য যে মা আমাকে দশ মাস গর্ভে ধারণ করল সেই মা দুটো বছর মুখ ফিরিয়ে রেখেছে। যে সমাজের মানুষ গুলো একসময় আমাকে দেশ রক্ষক ভেবে সম্মান জানাতো,আজ সেই সমাজের মানুষ গুলোই আমাকে দেশের আবর্জনা ভেবে উপরে ফেলতে চায়। কেন করলেন এমনটা? দিনশেষে সমস্ত ধারণা মিথ্যে প্রমাণ করে দিলেন?আমার জীবনটা নষ্ট করার জন্য এই সব কিছু আপনি আর আপনার ছেলে মিলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ঘটিয়েছেন তাই না!আপনাদের পরিকল্পনা সফল। এখন আর কিছুই নেই আমার। নিঃস একেবারে। এবার অন্তত রেহাই দিন আমাকে। ভুলেও আর কখনো মুখ দিয়ে আমাকে নিজের সন্তান হিসেবে পরিচয় দিবেন না। আপনার মতো মানুষকে বাবা হিসেবে পরিচয় দেওয়ার থেকে নিজেকে জা র জ হিসেবে পরিচয় দেওয়া আমার জন্য অধিক সহজ।”
সমস্ত কথা ছাপিয়ে শেষের কথাটাই বারবার প্রতিধ্বনিত হয় আজীজ শিকদারের কানে। স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে শুধু ছেলের ব্যথাতুর মুখের দিকে। সত্যিই কি আজীজ শিকদার এতোটাই দোষী হয়ে গেল! যে দোষের কারণে আজ নিজেকে জা র জ বলতেও রক্তিমের বুক কাঁপলনা। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে রক্তিমের। মাথার অসহ্য যন্ত্রণায় চোখ-মুখ বিকৃত করে মুখ দিয়ে অস্ফুট শব্দ বের হচ্ছে। দিকবিক না পেয়ে মেহেদী দৌড়ে ডাক্তারকে নিয়ে আসে। কেবিন থেকে সবাইকে বের করে দিয়ে নিজের মতো করে চিকিৎসা চালিয়ে যায় ডাক্তার।
রক্তিমের চিৎকার শুনে তখনই ছুটে যায় দৃষ্টি। কিন্তু দরজা পেরিয়ে ভিতরে যাবার শক্তি পায়না। রক্তিমের মুখ নিঃসৃত এক একটা কথা অসাঢ় করে দেয় দৃষ্টিকে। স্তব্ধতার রেশ এতোটাই ভারী ছিল যে এখনো বিমূঢ় হয়ে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে। উত্তেজিত হয়ে রক্তিম আবার অসুস্থ হয়ে পরেছে সেদিকে তার কোনো খেয়াল নেই। কানে এখনো বেজে যাচ্ছে রক্তিমের অস্পষ্ট এক একটা কথা। আজীজ শিকদার বুকে পাহাড়সম দুঃখ চেপে তৎক্ষণাৎ বেরিয়ে যায় হাসপাতাল থেকে। ছেলের সামনে থেকে এভাবে উত্তেজিত করে শারীরিক অবস্থার অবনতি করে আর দোষী হতে চায়না। চোখের আড়াল হলে ছেলে যদি ভালো থাকে তবে তাই হোক। এই পাপি মুখ আর কখনো না দেখুক ছেলে।
ডাক্তারের কথায় স্তব্ধতার রেশ কাটে দৃষ্টির। মস্তিষ্ক সচল হয়। ডাক্তার হাজারী কেবিন থেকে বেরিয়ে রাগত স্বরে বলে ওঠে,
“আগেই বলেছিলাম আপনাদের,পেশেন্ট যাতে কিছুতেই হাইপার না হয়। কি একটা কন্ডিশন হয়েছিল এখন ধারণা আছে আপনাদের? আবারও ঘুমের ইনজেকশন পুস করে শান্ত করতে হয়েছে। আমার অনুমতি ব্যতিত আর কেউ যদি কেবিনে ঢুকেন তবে এই রোগীর দায়িত্ব আমি আর নিবনা। এটা হাসপাতাল। পারিবারিক ঝামেলা মিটানোর জায়গা না। আর পেশেন্ট ও রক্তে, মাংসে গড়া মানুষ।কোনো রোবট না। আশা করি এই দিকটা মাথায় রেখে এখন থেকে যা করার করবেন।”
কথা গুলো বলে ডাক্তার হাজারী দুজন নার্সকে কেবিনের সামনে কড়া নজরদারির দায়িত্ব দিয়ে চলে যায়। সাথে সাথেই দৃষ্টি মেহেদীর দিকে তাকিয়ে জানতে চায়,
“কি হয়েছিল কোর্টে? ওনি কেন বাবার সাথে এমন আচরণ করছে?”
বুক ফুলিয়ে একটা দম নেয় মেহেদী। প্রস্তুত হয় একে একে সমস্ত ঘটনা খুলে বলতে। সংক্ষেপে পুরো ঘটনা খুলে বলতেই অবাকতার চরম পর্যায় পৌঁছে যায় দৃষ্টি। ফ্যালফ্যাল নয়নে শুধু তাকিয়ে থাকে মেহেদীর মুখের দিকে। বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় আজীজ শিকদারের মতো একজন মানুষ নিজের ছেলের সাথে এতো বড় মিথ্যাচার করতে পারে।
চলবে…..
(রি-চেইক দেইনি। লেখা শেষ করা মাত্রই দিয়ে দিলাম। কোনো বিরতি ছাড়া এক টানা মস্তিষ্কে যা এসেছে তাই টাইপ করে দিয়েছি। মাথা এখন ঝিমঝিম করছে। ভুল গুলো ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।)
Please porar part gulo dan