প্রেম_আমার♥ #পার্ট-২১,২২♥ #Ayanaa_Jahan(Nusraat)♥ .

0
417

#প্রেম_আমার♥
#পার্ট-২১,২২♥
#Ayanaa_Jahan(Nusraat)♥
.
🌹
.
– হাচ্ছুউউউউউউ…!
– হাচ্ছুউউউউউউউ….!
.
সাদা বিলাই আর আমি একই টাইমে এভাবে হাচি দিবো ব্যাপারটা ঠিক মেনে নিতে অদ্ভুদ লাগছে। মানে এতোক্ষণ কেউই দিলাম না, এখন আবার দুজনেই দিলাম তাও আবার একসাথে একই সময়ে!
হাচি দিয়ে দুজন দুজনের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালাম যার অর্থ এই যে, ” আপনি আমায় কপি করেছেন, আমি না।”
ভাইয়া আমাদের দুজনকে একসাথে হাচি দিতে দেখে কপালে হাত দিয়ে ঠাস করে সোফায় বলে পড়লো।
.
– এইরে, একটা বাদরকেই সামলাতে পারি না, দুটো বাদরকে কিভাবে সামাল দেবো? দুজনেই তো ঠান্ডা লাগিয়ে ফেলেছিস। হায় হায়!
.
ভাইয়ার কথা শুনে মনে হচ্ছে আমরা দুজই দেড় বছরের বাচ্চা আর উনি আমাদের দেখভাল করে নিজেকে উজাড় করে দেয়। আমি আর সাদা বিলাই দুজনেই ভাইয়ার দিকে ভ্রু কুঁচকে চোখ ছোট ছোট করে তাকালাম, যার অর্থ এই “তোরে আহ খাইছি রে!” ভাইয়া আমাদের দুজনের দিকে একবার চোখ তুলে তাকিয়ে আমতা আমতা করতে লাগলো কিন্তু তাতে কোনো লাভ হলো না ভাইয়ার। ততক্ষণে আমি আর নীবিড় ভাইয়া দুজনেই ভাইয়ার ওপর আক্রমণ করে ফেলেছি। নীবিড় ভাইয়া কিলঘুষি চালাচ্ছেন আর আমি একবার ভাইয়ার চুল টানতেছি তো একবার কাতুকুতু দিয়ে চলেছি।
.
– আরে আরে হইছে, আর বলবো না। আরে লাগতেছে তো আউউউউ! আহাহা ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি!
.
আমাদের হুড়োহুড়ি, মারামারির মধ্যেই আগমন ঘটলো ২ জোড়া পায়ের। সেই ২ জোড়া পায়ের অধিকারী কারা তা দেখবার জন্য পেছন ফিরে তাকাতেই আমার মুখটা অটোমেটিক্যালি “হা!” হয়ে গেল। রুশো ভাইয়া “শাহরুখ খান” স্টাইলে দু দিতে হাত মেলে রয়েছে! আর মুখে সেই শাহরুখ খানের মোস্ট ফেভারিট গানের “তুঝে দেখা তো ইয়ে জানা সানাম!” দু লাইন গেয়ে চুলগুলো ডানে বামে একবার ঝাঁকিয়ে মুখে সেই চিরচেনা দাঁত কেলানো হাসি ঝু্ঁলিয়ে বলে উঠলো,
.
– হ্যালো, গাইস! ইটস কল হিরো স্টাইল এন্ট্রি ইউ নো!
.
আমি আর আর এক মুহূর্ত দাঁড়ালাম না। এক দৌড়ে ভাইয়ার কাছে গিয়ে চুলগুলো এলোমেলো করে দিয়ে বলে উঠলাম,
– আমার চকলেট…..কোথায়? (হাত পেতে)
.
রুশো ভাইয়া চুলগুলো কোনোরকমে ঠিক করে মুখটা অপরাধীর মতো করে বলে উঠলো,
– উপপস…! আই এম এক্সট্রেমলি সরি রে ছুটকি, একদম মনে ছিলো না। নেক্সট টাইম গেলে এনে দিবো ট্রাস্ট মি।
.
সাথেসাথেই মুখে অমাবস্যা নেমে এলো আমার। এই বুঝি কেঁদে ভাসিয়ে দেবো পুরো বাড়ি। কতো অপেক্ষা করেছি আমি এই বিদেশি চকলেটের জন্যে! পুরো চার চারটে বছর। ভাবা যায়? আর রুশো ভাইয়া কিনা চকলেট আনার কথা ভুলেই গিয়েছে? না না এই কষ্ট মেনে নেওয়া যায় না। আর কোনো কথা বলবো না আমি রুশো ভাইয়ার সাথে। ভেবেই ভাইয়ার হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুলের সাথে নিজের কনিষ্ঠ আঙ্গুল ছুঁইয়ে বলে উঠলাম,
.
– তোমার সাথে আমার আড়ি, আর কোনো কথা নেই আমার তোমার সাথে। তুমি খুব পঁচা রুশো ভাইয়া।
.
বলেই নাক মুখ ফুলিয়ে উল্টো দিকে ঘুরে হাটা ধরলাম। এক ধাপ দিতেই রুশো ভাইয়া সহ প্রায় সবার হাসি শুরু হয়ে গেল। আর আমি থমকে দাঁড়ালাম। রুশো ভাইয়া পেছন থেকে একটু জোড়েই বলে উঠলো,
.
– গাড়িতে প্রায় ১৫ টাইপস এর চকলেটস রাখা আছে। কারো যদি খেতে ইচ্ছে করে তো সে জেনো গাড়িতে গিয়ে নিয়ে আসে। নাহলে অন্যদের দিয়ে দেওয়া হবে।
.
রুশো ভাইয়ার কথাটা বলতে দেড়ি হলেও আমার এক ছুটে গাড়ির কাছে যেতে দেড়ি হয়নি। যাওয়ার আগে রুশো ভাইয়ার চুল টেনে দিয়ে চলে গিয়েছি আর ভাইয়ার সেই ঢং করে “আউউচ!” বলে উঠাটা শুনে আরোও মজা পেয়েছি।
.
– অগ্নি, এটাই কি সেই রুশো যাকে তুই ড্রিমার বলতি সবসময়?
– হ্যা, একেবারে ঠিক ধরেছিস! রুশো এদিকে আয়। মিট হিম। হি ইজ “সাদমান শাহরিয়ার নীবিড়” আমার বেস্ট ফ্রেন্ড কম ভাই বেশি।
.
নীবিড়কে দেখে রুশোর মনে এক প্রকার খুশির বন্যা বয়ে গেল। লাফাতে লাফাতে এসেই নীবিড়কে টাইডলি হাগ করে রুশো।
– হেই নীবিড় ব্রো, তোমার কথা অনেক শুনেছি। উইল ইউ বি মাই নেক্সট স্টোরিস হিরো?
.
রুশোর কথা শুনে নীবিড় তেমন কিছু বুঝলো বলে মনে হলো না। বরং অগ্নিকে হাত দিয়ে খোঁচা মেরে চোখের ইশারায় বলে উঠলো,”কিসের স্টোরি আর কিসের হিরো?”
অগ্নি নীবিড়ের অবস্থাটা বুঝতে পেরে রুশোকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো,
.
– আরে হ্যা হ্যা! হবে হবে তুই একদম চিন্তা করিস না।
আর নীবিড়, (নীবিড় ভাইয়ার দিকে তাকিয়া) রুশোর অনেকদিনের স্বপ্ন স্ক্রিপ্ট রাইটার হওয়ার। সো তোর ক্যারেক্টারটা হিরোর জায়গায় দিতে চাইছে।
.
নীবিড় এবার বুঝতে পেরে রুশোর কাঁধে হাত রেখে হাল্কা হেসে বলে উঠে,
– অবশ্যই ড্রিমার!
.
এরকম আরোও নানান গল্পের ঝুলি খুলে ৩ জনই সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে বসে পড়ে। রুশো তো একটার পর একটা জোকস বলে যাচ্ছে আর নীবিড়-অগ্নি হেসে কুটিকুটি হয়ে যাচ্ছে। এতোকিছুর মাঝে যে ঘরে আরোও একজন সদস্য উপস্থিত তা কারোও চোখেই পড়ে নি।
রাত্রি মুখ ফুলিয়ে গেটের কাছে এসে দাঁড়িয়ে আছে আমার অপেক্ষায়। এদিকে আমি এতো গুলো চকলেট দুহাতে ধরতেই পারছিনা। কমপক্ষে ৩ বার নিয়ে যাওয়া আসা করতে হবে তাহলে বোধহয় চকলেটগুলো বাসায় নিয়ে যাওয়া পসিবল হবে। কিন্তু আমার কথা একটাই, আমি তিন তিন বার যাওয়া আসা করতে পারবো না না না। তাইতো কোলে করে নিয়ে যাচ্ছি কিন্তু পারছি আর কই? দুকদম হাটতেই ঠাস ঠাস করে পড়ে যাচ্ছে আমার সাধের চকলেটের বক্স গুলো।
এরকম কয়েকবার প্রচেষ্টা চালাতে চালাতে আমার চোখ যায় গেইটে মুখ ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা রাত্রির দিকে। ওকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে বেচারীর মুড খারাপ। আমি দাঁত কেলিয়ে একটা হাসি দিয়ে রাত্রিকে হাতের ইশারায় কাছে ডাকলাম। জানি আমার এই দাঁত কেলানোটা ওর বিন্দুমাত্র পছন্দ না। কারণ আমার এই দাঁত কেলানোর মানে আর কেউ বুঝুক বা না বুঝুক রাত্রি ঠিকই বুঝে নেয়। এর মধ্যে এক প্রকার সন্দেহ সন্দেহ গন্ধ পায় সে। তাও বেস্টফ্রেন্ড বলে কথা আমার ডাক কি আর উপেক্ষা করতে পারে? একদমই পারে না। তাই তো বেচারী মুখ ফুলিয়ে আমার কাছে এসে বলে উঠলো,
.
– কি করতে লাগবে বল।
.
আমি আবারোও সুন্দর করে দাঁত কেলিয়ে রাত্রির নাকটা টেনে দিয়ে মুখটা অসহায়ের মতো করে বলি,
– দেখনা! এত্তোগুলো চকলেট একা নিয়ে যেতে পারছিনা। তুই অর্ধেক ধর বাকি অর্ধেক আমি নিয়ে যাই।
.
অনিচ্ছা সত্ত্বেও রাত্রি আমার হাত থেকে ৭ টা চকলেটের বক্স নিয়ে খুব সাবধানে হেটে চলতে লাগে। আর বাকি ৮ টা আমি নিয়ে ওর পিছু পিছু যেতে লাগলাম। কারোও চেহারা দেখা যাচ্ছেনা। কারণ চকলেটের বক্স দিয়ে দুজনেরই মুখ ঢাকা।
.
গেটের কাছাকাছি যেতেই কিছুর আওয়াজে মাথা একসাইড দিয়ে বের করলাম কিসের আওয়াজ তা দেখার জন্য। কিন্তু যা দেখলাম তা দেখেই চোখ আমার ছানাবড়া! রাত্রির কোমড় জড়িয়ে ধরে এক ধ্যানে রাত্রির দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রুশো ভাইয়া। আর রাত্রি চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে আছে রুশো ভাইয়ার দিকে। হায় হায় কি রোমান্টিক সিন মাইরি! ওদের দিক থেকে চোখ নিচের দিকে যেতেই দেখি আমার প্রাণপ্রিয় চলকেটগুলো ফ্লোরে অসহায়ের মতো গড়াগড়ি খাচ্ছে। যা দেখে আমার বুক ফেটে কান্না আসতে চাইছে। এহ্যাএহ্যা করে যেই না কান্না জুড়ে দিতে বসলাম ওমনি পেছন থেকে আওয়াজ পেয়ে রুশো ভাইয়া ততক্ষণাত রাত্রিকে ছেড়ে দ্রুতো চকলেটগুকো তোলা শুরু করে দিলো। আমি দ্রুতো পা চালিয়ে টেবিলের ওপর গিয়ে চকলেটগুলো রেখে উলটো দিকে মুখ ফুলিয়ে তাকালাম। আমার চাহনী দেখে রুশো ভাইয়া একটা শুকনো ঢোক গিলে বাকি চকলেটগুলো টেবিলে রেখে বলে উঠলো,
.
– তোর বেস্টু গেটে পা বেজে পড়ে যেতে লেগেছিলো, আর আমি তোদের চকলেট আনায় হেল্প করতেই যাচ্ছিলাম। ওকে পড়ে যেতে দেখে ধরে বাঁচিয়ে দিলাম। হেহে! একা মানুষ ২ টো জিনিস তো আর আটকাতে পারবোনা। তাইনা? প্লিজ ছুটকি ডোন্ট বি এংরি উইথ মি! (ঠোট উলটে)
.
রুশো ভাইয়ার এমন বোকার মতো কথা শুনে আমি রাগি ফেইস বদলে ফিক করে হেসে দিয়ে রাত্রির কাছে গিয়ে ভাইয়াকে বলে উঠি,
– আরে জাহান্নামে যাক চকলেট আগে আমার বান্ধুপি তারপর অন্যকিছু।
.
রাত্রি মুচকি হেসে আমার মাথায় একটা চাটি মেরে দেয়। আর রুশো ভাইয়া ঠোট উলটে বলে উঠে, “দিনমে উল্লু বানা দিয়ে!” বলেই মাথা চুলকোতে চুলকোতে ভাইয়াদের পাশে বসে পড়ে।
.
🍁
.
এমন সময় আম্মু আব্বুর আগমন ঘটে। বাড়ি ভর্তি এতোগুলো মানুষ দেখে আম্মু আব্বুর খুশি যেনো আর ধরে না। আর আম্মু আব্বু তো পুরাই সারপ্রাইজড হয়ে গেল যখন তারা রুশো ভাইয়াকে দেখো,
– রুশো? তুই? কবে এলি? কখন এলি? তোর আম্মু তো কিছু জানালো না।
বাব্বাহ বিদেশে থেকে দেখি আরোও ফর্সা হয়ে গেছিস! ( আম্মু)
– হ্যা রুশো বাবা! কখন এলে তুমি?
.
আরে মনি, আংকেল আমি কাল নাইটে ফিরেছি আর তোমাদের কাউকেই বলিনি কজ ইটস আ সারপ্রাইজ ইউ নো। আচ্ছা মনি তোমরা ফ্রেশ হয়ে এসো। দেন আমার জন্য তোমার স্পেশাল চিকেন ফিট বানিয়ো প্লিজ!
রুশো ভাইয়ার পছন্দের চিকেন ফিটের নাম শুনেই আমু আর রাত্রি নাক মুখ শিটকালাম। অদ্ভুত হলেও ভাইয়ার ওটাই পছন্দ। আম্মু আব্বু হেসে দিয়ে ভাইয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।
হটাৎ আম্মুর খেয়াল হলো যে এটা তো ভার্সিটির সময়। এখন তো সবার বাসায় আসার কথা না। তাই প্রশ্ন করে বসলো। আমি অগ্নি ভাইয়াকে আজকের পুলে পড়ে যাওয়ার ঘটনা যাতে না বলে তাই মাথা ডানে বামে ঘুরিয়ে ইশারা করলাম। কারণ আম্মু আব্বু জানলে টেনশন করবে। ভাইয়াও চোখের ইশারায় সম্মতি জানিয়ে কোনো এক অজুহাতে বলে দিলো যে আজ ক্লাস হবে না।
আম্মু আব্বু আর বেশি কথা না বাড়িয়ে ফ্রেস হতে চলে গেল। আর যাওয়ার আগে নীবিড় ভাইয়াকে বলে গেল যাতে নিত্য আপুকে ফোন করে মেডিকেল কলেজ থেকে ডিরেক্ট বাসায় আসতে বলে! নীবিড় ভাইয়া না চাইতেও নিত্য আপুকে ফোন করে আসতে বললো কারণ উনি জানেন হাজার চেষ্টা করেও আম্মু ভাইয়াকে লাঞ্চ না করে যেতে দিবে না। নিত্য আপু আসবে জেনে অজান্তেই ঠোটের কোণে হাসি ফুটে ওঠলো অগ্নি ভাইয়ার। যা আর কারো চোখ এড়ালেও আমার চোখ এড়ালো না।
.
.
.
.
চলবে……………………..💕
#প্রেম_আমার♥
#পার্ট-২২♥
#Ayanaa_Jahan(Nusraat)♥
.
🍂
.
– আআআআআআআআআ…………!
.
জোড়ে একটা ঘরকাঁপানি চিৎকার দিয়ে এক লাফে সোজা অগ্নি ভাইয়ার কোলে উঠে পড়লো রুশো ভাইয়া। উঠেই কাঁপাকাঁপা গলায় বলে উঠলো,
.
– হে…হেই বো ব্রো লুক শি ইজ স্পিকিং! ওহ মাই গড আমার সাথে দেখা হয়েই সে কথা বলতে পারছে। ওহ গড! আই জাস্ট কান্ট বিলিভ দিস। এতো বড়বড় ফিল্মকেও হাড় মানিয়ে দিলো।
.
রুশো ভাইয়ার কোনো কথাই বুঝতে পারছি না আমরা কেউই। সবই তো ঠিকই ছিল হঠাৎ রাত্রির আমার নাম ধরে ডাকায় রুশো ভাইয়ার এমন রিয়াকশনের কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছিনা আমি। শুধু আমি কেন এখানে উপস্থিত কেউই বুঝে উঠতে পারছেনা। সবাই সবার মুখের দিকে চাওয়া চাওয়ি করছি শুধু। রাত্রির মুখ দেখে যা বুঝলাম সে যে শুধু অবাকই হয়েছে তাই নয় সাথে চূড়ান্ত রেগেও গিয়েছে।
শেষমেশ আমিই কনফিউশন দূর করতে বলে উঠলাম,
.
– কি বলছো এসব রুশো ভাইয়া? আর রাত্রির কথা বলাতে এতো অবাকই বা হচ্ছো কেনো?
.
অগ্নি ভাইয়া রুশো ভাইয়াকে নিজের কোল থেকে নামিয়ে একই প্রশ্ন করে বসলো। রুশো ভাইয়া অগ্নি ভাইয়ার দিকে তাকিয়েই বলে উঠলো,
.
– মানে ও বোবা না? (রাত্রির দিকে আঙুল দেখিয়ে)
.
– হোয়াট বোবা হতে যাবে কেনো? আরে বোকা, বোবা হলে আমাদের কথা শুনছে কিভাবে? পাগল হয়ে গেয়েছিস নাকি?
.
– আরে ব্রো ট্রাস্ট মি, তুমি ওকে নিয়ে আসতে বলার পর ওর নাম আস্ক করেছিলাম যে ওর নেইম কি। বাট শি সেইড নাথিং। পুরো রোডে আসতে আসতে আরোও অনেক কথাই শেয়ার করে গেছি বাট শি জাস্ট হেয়ার্ড। একটা টু সাউন্ড ও করে নি। ইভেন বাসায় আসার পরোও তো এই কেবল একটা কথা বললো। তখন পড়ে যাওয়া থেকে আটকালাম মুখ ফুটে একটা থ্যাংকসও দিলো না। তো আমার ফল্ট টা কি? ওকে তো আমি বোবাই ভেবে নিয়েছিলাম!
(হঠাৎ বলতে বলতে তুড়ি বাজিয়ে) ভেবেছিলাম এরকম একটা ইম্পসিবল ইনসিডেন্ট স্টোরিতে এড করে দিনে দুপুরে ফেমাস হয়ে যাবো বাট তা আর হলো কই। সাচ আ ভেরি ব্যাড লাক! (মুখ কালো করে)
.
রাত্রি বাদে আমরা তিনজন তিনজনের দিকে ২ সেকেন্ড তাকিয়েই হু হা করে হেসে উঠলাম। পাশেই যে রাত্রি রেগেমেগে বোম্ব হয়ে গেছে তা কারোও খেয়ালই নেই! হঠাৎ হাসি থামিয়ে আমরা তিনজন এক পলক রাত্রির দিকে তাকিয়েই গলা খাঁকারি দিয়ে উঠলাম। রাত্রি মারাত্মক রেগে গেছে। চোখ দিয়ে খুন করে ফেলছে রুশো ভাইয়াকে। হয়তো রাগগুলো একটু একটু করে পুষে নিয়ে একেবারে ঢেলে ফেলবে রুশো ভাইয়ার দিকে। আর রুশো ভাইয়া তো ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে আনমনে নিজের কল্পনার জগতে ভাসতে ব্যস্ত। তার কোনো ধারণাই নেই যে যেকোনো মুহূর্তে তার ওপর এটম বোম্ব ব্লাস্ট হতে পারে।
.
হলোও তাই। রাত্রি একপ্রকার তেড়েই রুশো ভাইয়ার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। দাঁড়িয়েই হাতের এক আঙুল তুলে চেপে রাখা সব ক্ষোভ ঝাড়তে শুরু করে দিলো। ততক্ষণে আমি দু কানে দু আঙুল ঢুকিয়ে দিয়েছি। কারণ রাত্রি একটু চাপা স্বভাবের হলেও যদি একবার ক্ষেপে যায় তো তাকে থামানো বড়ই দুঃষ্কর। সামনে তাকিয়ে দেখিয়ে দেখি ভাইয়াদেরও একই অবস্থা। অগ্নি ভাইয়া দুকানে দুহাত চেপে সোফায় বসে চোখ বন্ধ করে রয়েছে আর পাশেই নীবিড় ভাইয়া মাথা নিচু করে দুহাতে মুখ ঢেকে রয়েছেন।
.
– ওই বিদেশ ফেরত ধলা ইন্দুর তোর সাহস কি করে হয় আমারে বোবা বানানোর? এই দেখ আমি চেঁচাচ্ছি। কোন এংগেল দিয়ে বোবা লাগে বলতো এবার?
.
রুশো ভাইয়া ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে রাত্রির দিকে। বোঝার চেষ্টা করছে আসলে কি বলছে সে তাকে! রাত্রির ধমক খেয়েও রুশো ভাইয়া অগ্নি ভাইয়া আর নীবিড় ভাইয়ার দিকে বোকার মতো দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে উঠলো,
.
– ব্রো, হোয়াট ইজ “ধলা ইন্দুর”?
.
অগ্নি ভাইয়া আগের মতো থেকেই বলে উঠলো “ফর্সা” আর নীবিড় ভাইয়াও আগের মতো মাথা নিচু করে মুখ ডেকেই বলে উঠলো “মাউস!”
রুশো ভাইয়া দুটো ওয়ার্ড একসাথে করে আনমনেই বলে উঠলো “ফর্সা মাউস” এটা আবার কেমন নাম? অর্ধেক প্রশংসা তো অর্ধেক অপমান! ইন্টারেস্টিং তো।
.
নাহ আর পারা যাচ্ছে না। এতোক্ষণ ধরে হাসি কন্ট্রোলে রাখলেও আর পারছি না আমি। আজ রুশো ভাইয়ার কপালে যে খুব বড়সড় শনি আছে তা বেশ বুঝতে পারছি। কানে আঙুল ঢুকিয়েই দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে লাগলাম। আসার সময় “ঢিশুম” টাইপ একটা আওয়াজ কানে ভেসেছিলো। হয়তো যেটা ভেবেছিলাম তাই হয়ে গেলো। ইশশ রে বেচারা রুশো ভাইয়া! বিদেশ থেকে ফিরতে না ফিরতেই সাবান ছাড়াই ধুয়ে গেলো!
.
🌺
.
প্রায় আধঘন্টা পর পা টিপেটিপে নিচে নেমে এলাম। পরিবেশটা নিতান্তই ঠান্ডা মনে হচ্ছে। হয়তো ঝড় চলে যাওয়ায় পর মুহূর্তের নিস্তব্ধতা!
নিচে নেমে এসে দেখে অগ্নি ভাইয়া আর নীবিড় ভাইয়া কফির মগে স্থির দৃষ্টি নিক্ষেপ করে চুমুক দিয়ে যাচ্ছে। পাশে তাকাতেই দেখি রুশো ভাইয়া টমেটো তে বরফ ঠেলাচ্ছে, থুক্কু আই মিন নিজের লাল হয়ে যাওয়া নাকে বরফ ঠেকাচ্ছে। এবার বুঝলাম তখনকার “ঢিশুম” এর আসল মানেটা। রাত্রি তবে রুশো ভাইয়ার নাক টাকেই টার্গেট বানালো। ইশশ! একেই ফর্সা মানুষ। একটু রোদে গেলেই লাল হয়ে যায়। সেখানে রাত্রির সর্বশক্তি ওয়ালা ঘুষি খেয়ে নাক টার বারো অবস্থা বানিয়ে ফেলেছে।🤦‍♀
.
– রুশো ভাইয়া, আর ইউ ফিলিং বেটার?
.
রুশো ভাইয়া আমার দিকে অসহায় দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে উঠলো,
– ছুটকি, ট্রাস্ট মিহ আমার কুনো দুষ ছিলু না। তাও কিনু আমি ঘুষি খাইলুম? হুয়াই ছুটকি ছুটকি!
.
রুশো ভাইয়ার কথা শেষ হতে কি না হতেই অগ্নি ভাইয়া আর নীবিড় ভাইয়া একসাথে কফির মগ টেবিলে রেখেই হাসা শুরু করে দিলো। নীবিড় ভাইয়া তো হাসতে হাসতে অগ্নি ভাইয়ার ওপর পড়ে যাচ্ছে। আর অগ্নি ভাইয়া হাসতে হাসতে সোফায় হেলান দিয়ে মুখ ওপরের দিকে করে রেখেছে। এখন যদি আমিও হেসে দেই তবে রুশো ভাইয়া বড্ড অসহায় ফিল করবে তাই ভাইয়ার কাছে গিয়ে নাকে আইস ব্যাগটা লাগাতে লাগাতে বলে উঠলাম,
.
– ভাইয়া, এখানকার পরিবেশ কিন্তু ইউএসের মতো না এখানে দিনে দুপুরে গোলা-বারুদ ছাড়াই হামলা হয়ে যায়। তাই একটু সাবধানে দেখে শুনে কথা বলিও হুম।
.
আমার কথায় যেনো ভাইয়াদের হাসি আরোও তীব্র আকার ধারণ করলো। বুঝতে পেরেছি এতোক্ষণ ধরে নিশ্চয় হাসি চেপে ধরে রেখেছিলো তারা। আর আমি তো উপরে গিয়েই হেসে উজাড় করে এসেছি। তাই প্রবলেম খুব একটা হচ্ছে না। রুশো ভাইয়া এবার চুপ করে রইলো কি জানি আবার কি বলায় তাকে উস্টা খেতে হয় সেই ভয়ে।
আমি এদিক ওদিক চোখ বুলাচ্ছি রাত্রিকে খুঁজতে। মেয়ে গেলো কোথায়? এভাবে খোঁজাখুঁজির একটুপরই দেখি আম্মুর সাথে ডাইনিং টেবিলে খাবার এনে রাখছে রাত্রি। কিন্তু তার চেহারায় এখনোও রাগের চিহ্ন স্পষ্ট! রুশো ভাইয়ার নাক ফাটিয়েও যেনো শেষ হয়নি তার রাগ।
.
🌹
.
– হ্যালো এভরীওয়ান…! কেমন আছো সবাই?
.
পেছন থেকে কারোও মিষ্টি গলা পেয়ে সবাই একসাথে গেইটের দিকে তাকালাম। নিত্য আপু মেডিকেলের ইউনিফর্ম পড়ে ঠোঁটের কোণে মিষ্টি হাসি ঝুলিয়ে ভেতরে ঢুকছে। আপুর চুলগুলো উঁচু করে টাইট করে ঝুটি করে বাঁধানো। মিষ্টি কালারের সালোয়ার তারওপর সাদা কালারের এপ্রোন! ঠোঁটে হাল্কা গোলাপি কালারের লিপস্টিক। কাঁধে লেডিস ব্যাগ! আর এক হাতে ডক্টরস বক্স! এখনই প্রাকটিক্যালি ট্রিটমেন্টের প্রাকটিস করানো হচ্ছে বোধহয়। সব মিলিয়ে একদম মিষ্টি পরী লাগছে আপুকে! ইশশ কারো নজর না লাগে।
.
আপু এসেই আগে আমার গাল টেনে বলে উঠলো,
– কেমন আছো অনন্যা? মুখটা শুকনো শুকনো লাগছে কেনো তোমার?
.
বলেই আমার কপালে, গালে হাত রেখে বলে উঠলো,
– একি, তোমার তো গা গরম! জ্বর বাধালে কিভাবে?
.
আপুর কথা শুনে সবাই আমাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। অগ্নি ভাইয়া ছুটে এসে আমার কপালে হাত রেখে বলে উঠলো,
– সব সময় বেখেয়ালি।
নিত্য তুমি জানো আজ পুলে স্লিপ কেটে পড়ে গিয়েছিলো বাদরটা। নীবিড় না বাঁচালে কি হতো ভাবতে পারো? নীবিড়েরও ঠান্ডা লেগে গেছে বোধহয়। (চিন্তিত হয়ে)
.
– সেকি? ওয়েট! ভাইয়া….! তুই এদিকে আয়। দুজনের টেম্পারেচারটা মেপে দেখি।
.
নীবিড় ভাইয়া অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমার পাশে বসে পড়লো। ওদিকে আম্মু আর রাত্রি লাঞ্চ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আম্মু জানবে না। এই ফাঁকে ভাইয়া পুলে পড়ে যাওয়ার ব্যাপারটা নিয়ে ঘাটাঘাটি করা শুরু করে দিলো।
.
সাদা বিলাই আর আমি দুজনেই মুখে থার্মোমিটার নিয়ে বসে আছি। অগ্নি ভাইয়া তখন থেকে বকবক করে মাথাটা খেয়ে ফেলছে। ভাইয়াটা এরকমই, একটু চুন থেকে পান খসলেই বকতে বকতে পুরো দুনিয়া উলটে দেয়। এদিকে রুশো ভাইয়া আর নিত্য আপুও টেনশনে পড়ে গেছে।
দুজনের থার্মোমিটারই মুখ থেকে নিয়েই নিত্য আপু খুব সুক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করে বলে উঠলো,
.
– জ্বর তো ভালোই বাধিয়ে ফেলেছো। ১০০ ডিগ্রি আপ। ভাইয়ার টেম্পারেচার স্বাভাবিক থাকলেও জ্বর আসার সম্ভাবনা আছে।
আমি যদিও প্রফেশনাল ডক্টর হইনি তাও। ভরসা করতে পারো। আচ্ছা আমি কিছু ঔষুধের নাম বলে দিচ্ছি। কেই কি এনে দিতে পারবে?
.
অগ্নি ভাইয়া চট করে বলে উঠলো, “আমাকে লিখে দাও। এক্ষুনি এনে দিচ্ছি!” বিনিময়ে আপু শুধু মুচকি একটা হাসি দিয়ে প্যাডের একটা পেজে কিছু মেডিসিনের নাম লিখে পেজটা ভাইয়ার দিকে এগিয়ে দিলো। আর ভাইয়া তা হাতে নেওয়া মাত্রই ছুট লাগালো ফার্মেসির দিকে।
.
🍁
.
আজ সবাই এখানেই থেকে গেল। আবার যাওয়ার জন্য কেউ কথা তুললোও না। ব্যাপারটা বরই অদ্ভুত। সেই যে দুপুরে খেয়ে রেস্ট নিতে রুমে পাঠিয়ে দিয়েছে তারপর থেকে কিসব ঘুটুর ঘুটুর করছে আল্লাহ মালুম। আমি গেট খুলে বের হতে নিলেই কেউ এসে থামিয়ে দিয়ে কড়া গলায় বাইরে যেতে নিষেধ করে যাচ্ছে। ব্যাপারটা আমার বোধগম্য হচ্ছে না মোটেই।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে নেমে এলো। ২ ঘন্টা ঘুমিয়েছি এর মধ্যে। শরীরটা এখন ভালো লাগছে। কিন্তু মনটা একেবারেই ভালো নেই। কথায় সবাই মিলে আড্ডা দিবো তানা আমায় সবাই ঘরবন্ধি করে রেখে দিয়েছে। কিন্তু আর পারা যাচ্ছেনা। এবার যাই হয়ে যাক না কেনো আমি বেড় হবোই।
.
মনস্থির করে পা টিপেটিপে দরজার কাছে এসেই চোরের মতো নিঃশব্দে দরজা খুলার চেষ্টা করছি। হায় রে অনন্যা! তোর কপাল কি রকম ভাব! নিজের বাড়িতে নিজেকেই চোরের মতো দরজা খুলতে হচ্ছে! 🤦‍♀
দরজা খুলেই মাথা বের করে এদিক ওদিক চোখ বুলিয়ে নিলাম। নাহ কেউ নেই। একেবারে ফাঁকা ময়দান। আর এই ফাঁকা ময়দানেই গোল দিবো আমি।
দরজা আটকিয়ে যেই না উলটো দিকে ঘুরে হাটা ধরলাম ওমনি কোনো পিলারের সাথে ধাক্কা খেলাম। কিন্তু এখানে তো কোনো পিলার আগে ছিলো না। সেটা তো সিঁড়ির দুপাশে রয়েছে। মাথা তুলে ওপরে তাকাতেই বুঝলাম এটা কোনো সিমেন্টের পিলার নয় বরং রক্ত মাংসে গড়া আমার যম সাদা বিলাই! উনাকে দেখে এবার ভয়ের থেকে রাগ বেশি হচ্ছে। সেই তখন থেকে কেউ না কেউ আমার ওপর নজর রেখে যাচ্ছে। কখনোও অগ্নি ভাইয়া, কখনো নিত্য আপু আবার কখনোও রুশো ভাইয়া তো কখনোও প্রাণের সখি রাত্রি! শেষমেশ এই সাদা বিড়ালটাও কিনা আমাকে পাহারা দিচ্ছে! ডিজগাস্টিং!
.
– বাইরে কোথায় যাচ্ছো? চুপচাপ ভেতরে যাও। রেস্ট নাও। একেবারে ৮ টার পর বের হবে।
.
– হোয়াট? মাথা খারাপ হয়ে গেছে আপনার? দেখুন! সেই দুপুর থেকে ঘরে আছি আমি। ২ ঘন্টা ঘুমিয়েছি ১ ঘন্টা গেমস খেলেছি। আর করার মতো কিছু পাচ্ছিনা। আমি বের হবো। তাছাড়া আমি কমপ্লিটলি ফাইন। জ্বর টর কিছু নেই আর। প্লিজ সরুন।
.
উনি কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ভ্রু কুঁচকে বলে উঠলেন,
– কিছু করার মতো খুঁজে পাচ্ছোনা তো? ওকে চলো আমি দেখিয়ে দিচ্ছি কি করে সময় কাটাবে তুমি।
.
বলেই আমার হাটু জড়িয়ে কাঁধে উঠিয়ে নিলেন আমায়। আর আমি উনার থেকে ছোটাছুটি করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। উনার পিঠে কিল ঘুষি বসিয়ে চলেছি আমি। তাও কোনো লাভ হচ্ছে না। এবার খুব জোড়েসড়ে একটা কিল বসিয়ে দিলাম উনার পিঠে। উনি ব্যথায় আমাকে ছেড়ে দেওয়া মাত্রই ধপাস করে ফ্লোরে পড়ে গেলাম আমি। উনি আবারোও আমায় তুলতে আসলে সামনের গ্রিল দুহাতে চেপে ধরলাম যাতে আমায় ঘরে নিয়ে যেতে না পারে। উনিও হাল ছাড়বার পাত্র নন। আমার দুই পা ধরে টেনেই যাচ্ছেন।
শেষমেশ উনি উপায় না পেয়ে আমার দূর্বল পয়েন্টে আঘাত করে বসলেন। যেটা হলো “কাতুকুতু” এই কাতুকুতু নামক ভয়ংকর হাস্যকর অনুভূতিটি আমার রন্দ্রে রন্দ্রে শিরায় শিরায় প্রবাহমান। ঠিক আমার ঘুম কাতুরে ভাইটার মতোই।
সাদা বিলাই আমার কোমড়ে আঙুল বুলাতে থাকে কাতুকুতু দেওয়ার জন্য। আর আমি এইদিকে হাসতে হাসতে কান্না করে ফেলছি। ছুটাছুটি করছি সাথে কাকুতিমিনতি করে চলেছি যাতে উনি থামেন। কিন্তু উনি তো উনিই আমার হাত ছুটার আগ পর্যন্ত কাতুকুতু দিয়েই যাবেন। আমি বাধ্য হয়েই হাসতে হাসতে গ্রিল ছেড়ে দেই। আগে প্রাণ তারপর অন্যকিছু। উনি আমার হাত ছুটা দেখেই টুপ করে কোলে তুলে নিয়ে রুমে ঢুকে গেলেন।
.
🌸
.
বইয়ের মধ্যে মুখ গুঁজে ফোঁপাচ্ছি আমি। সামনেই লাঠি হাতে পায়ের ওপর পা তুলে রিল্যাক্সে বসে আছেন নীবিড় ভাইয়া। এইটুকু সময়ে এতোগুলো পড়া দিয়ে বসিয়ে রেখেছেন আমায়। উনার একটাই কথা টাইম বেশি লাগলে লাগুক কিন্তু উনাকে আজ ১১ টার মধ্যে পড়া কমপ্লিট করে দেওয়া চাই। এতো বড়বড় বিক্রিয়া দেখে এখনই আমার অবস্থা দফারফা হয়ে যাচ্ছে। এই পড়া দুদিনেও পড়ে মুখস্থ করতে পারবো কিনা জানা নেই আমার।
তাইতো বারবার অসহায় দৃষ্টিতে উনার দিকে তাকাচ্ছি আমি কিন্তু তাকানো মাত্রই ৪৪০ ভোল্টের একটা করে ধমক খেয়ে আবারোও বইয়ে মুখ ঢুকিয়ে আল্লাহকে ডাকা শুরু করে দিচ্ছি।
ইয়া আল্লাহ! এ কি দুর্দিন এলো আমার! নিজের বাড়িতে নিজেই টর্চারড!
এই অন্যায় সইবে না আল্লাহ! আপনার বিচার হবে! হবেই মি..সাদা বিলাই!
.
.
.
চলবে………………❤

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here