নিশীভাতি #৩০তম_পর্ব

0
703

#নিশীভাতি
#৩০তম_পর্ব

ইলহাকে বসালো তার পাশে। কাপড়ের থলে থেকে বের করবো অনেকগুলো বই। এগিয়ে দিয়ে বললো,
“এখন থেকে এই খুন্তি বেলুন ছেড়ে পড়াশোনা শুরু করেন”

ইলহা হতভম্ব নয়নে চেয়ে রয়েছে। সামনে তার মোটা মোটা ডাক্তারির বই, সেই সাথে বিসিএস এর বই ও আছে। বইগুলো একেবারে নতুন কেনা। কিছুসময় নির্বাক কাটলো। এবার নিস্তব্ধতা ভাঙ্গলো। হতবাক স্বরে বললো,
“এগুলো কেনো?”
“অদ্ভুত প্রশ্ন করেন তো আপনি! অবশ্যই পড়ার জন্য। সারাজীবন নিশ্চয় হেসেল টানতে আমার বাড়ি আসেন নি। আরেকটা সুখবর আছে। মনে আছে অনেক হাসপাতালে আপনি চাকরির আবেদন করেছিলেন। একটা ইন্টারভিউতে ডেকেছে আপনাকে। আপনি তো ম্যাডাম আমার নাম্বার দিয়ে রেখেছেন। আজকে ম্যাসেজ এসেছে। তাই এই বই কিনে আনা। আমি তো জানি না কোন কোন বই লাগবে, দোকানদার ই দিলো। দেখুন এগুলো একটাও কাজের হয়েছে কি না। নাহলে ফেরত দিয়ে নিয়ে আসবো নে। আর বিসিএস এর ফর্ম ফিলাপ করবেন আপনি৷ শুনেছি সরকারি ডাক্তারদের অনেক দাম। সময় নেই কিন্তু বেশি। ছবিও তুলতে যেতে হবে, কত কাজ।”

রাশাদ হৃষ্টচিত্তে কথাগুলো বলছে। তার উৎসাহ আকাশচুম্বী। ইলহা এখনো তাকিয়ে আছে মানুষটির দিকে। এমন মানুষ কি সত্যিই হয়! ইলহার জীবনে দেখা একমাত্র পুরুষ ই তার বাবা, যার কাছে মহিলা মানেই ঘরে খুন্তি নাড়া বান্দি। তার জীবন স্বামীসেবা এবং সন্তানপালনেই কাটবে। এটাই আকিব শাহরিয়ারের একমাত্র চিন্তাধারা। তাই তো কখনোই তার মাকে ঘর চার দেওয়ালেই বন্দি দেখেছে ইলহা। তার এখনো মনে আছে যখন ইন্টার্ণি করছিলো, খাবার টেবিলে বাবার সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়েছিল। ইলহার বরাবরই ইচ্ছে ছিলো একজন প্রতিষ্ঠিত ডাক্তার হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলবে। তারপর মা কে এই কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে পাড়ি দিবে একটা অজানা জায়গায়। কিন্তু যখন আকিব শাহরিয়ার তার পায়েও শিকল পড়াতে বিয়ের কথা বললো ইলহা নির্ভীক বিরোধিতা করেছিলো,
“আমি বিয়ে করবো না, আমার ইন্টার্ণি শেষ হলে আমি চাকরি করবো”
“আমার টাকার অভাব নেই যে তোমার চাকরি করে খেতে হবে। ওই ক’টা টাকা আমি ই তোমাকে দিতে পারবো”
“আমি শিখার জন্য চাকরি করতে চাই। রোগীদের মাঝে দিন কাটাতে আমার ভালো লাগে। এখানে টাকার কথা কেনো আসছে?”

ইলহার কথায় খাওয়া থামালেন আকিব সাহেব। রাশভারী গম্ভীর স্বরে বললেন,
“তোমাকে ভালো লাগার জন্য আমি ডাক্তারি পড়াই নি। পড়িয়েছি যেনো আমি গর্ব করতে পারি আমার মেয়ে ডাক্তার। কেউ দেখবে না তুমি চাকরি কর কি না, এমন ডাক্তার ভুড়ি ভুড়ি পড়ে আছে। সাদা কোর্ট পেয়েছো এটাই যথেষ্ট। আর বিয়েটা হয়ে যাক, তোমার স্বামীই সিদ্ধান্ত নিবে তুমি কি করবে। ইন্টার্ণি শেষ হলেই তোমার বিয়ে হবে। আর আমি এখানে তোমার মত জানতে চাইছি না”

বাবার রক্তিম দৃষ্টি শিরদাঁড়ায় হিম ধরিয়ে দিয়েছিলো। আর কিছু বলতে পারে নি ইলহা। অথচ তার সামনের মানুষটি কি সুন্দর তার স্বপ্ন পূরণের সিড়ি বানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইলহা মৃদু স্বরে বললো,
“আমি তো স্বপ্ন দেখা ছেড়ে দিয়েছি নাতী সাহেব। তাহলে এগুলো কেনো? আমি এখন আপনার সাথে হাটতে চাই। এই পড়াশোনা, ডাক্তারি, পুরোনো আমিকে সেই কবেই পুটলি বদ্ধ করে কোনো অন্ধকারে ফেলে আছি। আমার পরিচয় আমি আপনার স্ত্রী। এছাড়া আমি আর কোনো পরিচয় চাই না”
“আমি চাই”

জড়তাহীন স্বীকারোক্তি। রাশাদ এবার ইলহার হাতজোড়া নিজের মুঠোবন্দি করলো। গাঢ় স্বরে বললো,
“আপনি কি জানেন ডাক্তার ইলহা শাহরিয়ার আমাকে কতটা মোহিত করে! আমি প্রথম কোনো নারীর মাঝে মুগ্ধতা খুঁজে পেয়েছিলাম সেদিন। আপনার নিদ্রাহীন ক্লান্ত চোখের মাঝে আমি যে তেজ দেখেছিলাম সেই তেজ হারাতে দিবেন না ইলহা”
“কিন্তু….”
“কোনো কিন্তু নয়। আপনি ই বলেছিলেন, সরকারী হাসপাতালে চাকরি করতে ক্যাডার হতে হয়। আমি চাই আপনি সেটা হন। তার জন্য আমাকে যতটা পরিশ্রম করতে হবে আমি করবো। কিন্তু আমি আপনাকে সেই সাদা কোটে দেখতে চাই”

রাশাদের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে ইলহা। প্রতিবার মনে হয় এর চেয়ে অধিক পরিপূর্ণতা হয়তো অসম্ভব। কিন্তু মানুষটি প্রতিবার তাকে ভুল পরিণত করে। পুরুষ মানুষের প্রতিচ্ছবি যদি এমন হয় তবে কোনো নারী ই পুরুষের সান্নিধ্য পেতে দ্বিধাবোধ করবে না।

****

রাত প্রগাঢ়। সামনে টেবিলল্যাম্প জ্বলছে। পদার্থবিজ্ঞান ২য় পত্রের বইটি খোলা হুমায়রার সামনে। হুমায়রা অংক কষছে মন দিয়ে। সে পিছিয়ে পড়তে চায় না এই পড়ালেখার যুদ্ধে। চুলগুলো এলোমেলো ভাবে বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে। তার যেনো জগৎ সংসারের দিকে নজর নেই। পুরো অধ্যবসায় পড়াশোনায়৷ ঠিক সেই সময় দুধের গ্লাস নিয়ে হাজির হলো চামেলী। দাঁত কপাটি বের করে হৃষ্টচিত্তে শুধালো,
“ভাবীসাব কি পড়েন”
“ফিজিক্স”
“হ্যা?”
“পদার্থবিজ্ঞান”

চামেলী মাথা চুলকালো। যার অর্থ সে বুঝে নি। হুমায়রা মৃদু হাসলো। চামেলী দুধের গ্লাস এগিয়ে দিয়ে বললো,
“এখনই খাইয়ে দেন। আমি ধুয়ে বাড়িত যামু”
“তুমি বাড়ি যাবে?”

হুমায়রা অবাক হলো। চামেলী কখনো বাড়ি যেতে দেখে নি এই কয়দিনে। সবসময় এখানেই ছিলো। তাই চামেলী বাড়ি যাবে কথাটা শুনে অবাক হলো সে। চামেলী তার হাসি অক্ষত রেখে বললো,
“নিজের বাড়ি যামু না?”
“আচ্ছা, কে কে আছে তোমার বাড়িতে?”
“আমার আম্মা আর একটা ছুটো ভাই”
“তোমার মনে পড়ে না তাদের?”
“ফড়ে, ফড়বে না কে রে? কিন্তু তাদের লগে থাকলি তো তাদের পেট চলবো না”

হাসতে হাসতে কথাটা বললো চামেলী। হুমায়রা পা গুটিয়ে বসলো। হাতজোড়া হাটু আকড়ে ধরে বললো,
“তোমার বাবা নেই?”
“নাহ, বাবায় মরছে যখন ভাই অনেক ছুডো। আমার মায়ে এহানে কাম করতো। একদিন কলসি লইয়্যা আছাড় খাইলো। সেই দিয়ে আমি কাম করি। ছয় সাত বছর তো হবেই। গরিবি খুব খারাপ জিনিস ভাবীসাব। আল্লাহ মানুষরে এতো কিছু দেয়, আমি হুদু চাই অভাব যাতে কাউরে না দেয়”

হুমায়রা কিছুসময় চুপ করে রইলো। দারিদ্রতা কতটা ভয়ংকর হতে পারে সেটা সে জানে। এখন স্বচ্ছলতা আছে বলে তার অতীত সে ভুলে নি। ভাইজান কতটা ঘাম ঝরিয়ে অর্থ উপার্জন করেছে সে জানে। তাই চামেলীর সাথে নিজেকে মেলাতে সময় লাগলো না তার। চামেলী আবার বকতে লাগলো,
“তয় এই বাড়ি কাজ করনের পর থেকে ভালোই আছি। বাপের দেনা শোধ হইছে। ভাইডা ইস্কুলে যায়। আম্মার ওষুধ কিনতি পারি। আর কি লাগে?”
“তোমার পড়তে ইচ্ছে করে না চামেলী আপা?”
“যার পেটে খাওন জোটে না তার কাছে লেহাপড়া মানেই বড়লোকি কারবার। আব্বায় মরার পর দিয়েই আমি লেহাপড়া ছাইড়ে দিছি। টেহা ফাও খরচের কি দরকার ভাবীসাব?”

মলিন হাসি হাসলো চামেলী। হুমায়রা মৃদু হেসে বললো,
“তোমার ভাইটিকে নিয়ে এসো একদিন। দেখবো”
“আনুম, ওয় লেহাপড়ায় খুব ভালা। ফাস্ট হয় ইস্কুলে। নাম চমক। ওরে আমি খুব বড় করতি চাই ভাবীসাব।”

চামেলী আপার চোখ চকচক করছে। চামেলী আপার মাঝে নিজের ভাইজানকে দেখতে পেলো যেনো হুমায়রা৷ সেই মানুষটিও তার ইচ্ছেগুলো বিসর্জন দিয়েছিলো যেনো তার বোনের জীবনটা সুন্দর হয়। রাশাদের পড়াশোনা বেশি নয়। কিন্তু হুমায়রার প্রতি কখনোই সে কোনো কার্পন্য করে নি। কত ঈদ গিয়েছে মানুষটি সুতোবিহীন কাটিয়েছে। কিন্তু হুমায়রাকে অভাব অনুভব করতে দেয় নি। এই মানুষগুলো আছে বলে হয়তো হুমায়রা এবং চমকের মতো মানুষটি এগিয়ে যায়।

****

ফাইজান ফিরলো খুব রাত করে। আজকাল প্রায়ই রাতে ফিরছে সে এবং ফরিদ। সারাদিন থাকে পার্টি অফিস, সমাবেশ, প্রেসক্লাব ইত্যাদিতে। আজ একটি অনুষ্ঠানে তাকে ডাকা হয়েছে অতিথি হিসেবে। সেখানেও গিয়েছে সে। দরজায় কড়া নাড়তেই দরজা খুললো হুমায়রা। চামেলী আপা বাড়ি গেছেন। তাই সেই অপেক্ষা করছিলো ওদের জন্য। শরীফার বাতের ব্যাথা বেড়েছে। সে বিছানা থেকে উঠতে পারছে না। হুমায়রা তাদের সর্ষে তেল গরম করে মালিশ করে দিয়েছে। এখন সে একটু ঘুমোচ্ছে। হুমায়রাকে দরজা খুলতে দেখেই ফাইজান অবাক হলো,
“আপনি ঘুমান নি?”
“না”
“চামেলী কোথায়?”
“বাড়ি গেছে”
“আর মা?”
“ঘুমোচ্ছেন”
“ও”

ফাইজান আর প্রশ্ন করলো না। ভেতরে প্রবেশ করলো। হুমায়রা মৃদু স্বরে বললো,
“আমি সব গরম করছি আপনারা হাত মুখ ধুয়ে আসুন”
“ভাবী, আমি খাব না। আমার পেট ভরা”

ফরিদ সাথে সাথেই উত্তর দিলো। হুমায়রা ফাইজানের দিকে চাইলো। যার অর্থ আপনি কি খাবেন? ফাইজান উলটো শুধালো,
“আপনি খেয়েছেন?”

হুমায়রা মাথা নাড়লো। সে সত্যি খায় নি। পড়ছিলো এতোটা সময়, তাই খাওয়া হয় নি৷ ভেবেছে একেবারে ফাইজানের সাথেই খাবে। ফাইজান হাতা গুটাতে গুটাতে বললো,
“একটু গরম পানি করুন৷ আমি গোসল করে খাবো”

বলেই বড় বড় পা ফেলে ভেতরে চলে গেলো। ফরিদ তার দিকে তাকিয়ে রইলো। মিটিমিটি হাসলো। কারণ পার্টি অফিসে সব কর্মীদের সাথে তাদের খাওয়া হয়েছে। অথচ ছেলেটি আবার খাবে যেনো তার ছোট বউকে একা না খেতে হয়। ফাইজানের মাঝে বিস্তর পরিবর্তনটা বহুদিন থেকেই লক্ষ্য করছে সে। হুমায়রার প্রতি তার আচারণ বরাবর ই ব্যতিক্রম। কিন্তু সেটা সে কখনোই স্বীকার যাবে না। উলটো এড়িয়ে যাবে। তাই ফরিদও ঘাটাতে চায় না। বরং সে খানিকটা নিশ্চিন্ত বটে। অন্তত বাচ্চা মেয়েটিকে এই উদাসীন, গম্ভীর মানুষটিকে সহ্য করতে হবে না। ফরিদ মুচকি হেসে বললো,
“আমি ঘুমাতে গেলাম ভাবী”
“আচ্ছা”

খাবার সময় দুজনের মাঝে খুব একটা কথা হলো না। নিঃশব্দে দুজন খাওয়া দাওয়া করলো। খাওয়া শেষে ফাইজান গম্ভীর স্বরে বললো,
“কাল ফরিদভাই আপনাকে কোচিং এ নিয়ে যাবে”
“কোচিং কেনো?”
“মা বলছিলো আপনার নাকি কিছু বিষয়ে একটু ঝামেলা আছে”

হুমায়রা বলতে চাইলো, “বৃথা টাকা খরচ করার প্রয়োজন নেই” — কিন্তু বলা হলো না। কারণ সেই সুযোগ দিলো না ফাইজান। তার পূর্বেই সে হনহন করে নিজ ঘরে চলে গেলো। হুমায়রা গাল ফুলিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললো। এই মা আর ছেলে কারোর কথাই শুনেন না। তাদের যা মনে হবে তাই করবে। কেউ মানুক বা না মানুক। তাই অহেতুক কষ্ট করতে ইচ্ছে হলো না। অবশ্য ব্যাপারটি মোটেই মন্দ নয়। তার কিছু বিষয়ে সত্যি ঝামেলা আছে। এই সুযোগে সেগুলো ঠিক করে নিলে ক্ষতি হবে না। ঘরে এসে দেখলো ঘর অন্ধকার, নিস্তব্ধ। আলো জ্বালাতেই দেখা গেলো মানুষটি ঘুম। শীতের মাঝে খালি গায়ে উলটো হয়ে ঘুমোচ্ছে মহারাজ। তার নগ্ন পিঠখানা উদাম হয়ে আছে। ভেজা তোয়ালে টা খাটের উপর ই রাখা। কম্বলটাও টানে নি। মানুষটির এই সুঠাম দেহ যেকোনো নারীর হৃদয়ে আন্দোলন তৈরি করতে যথেষ্ট। নিলীন চোখে কিছু সময় দেখলো হুমায়রা। তারপর একটা কম্বল টেনে দিলো ফাইজানের উপর। রাতবিরাতে তার নায়ক সাজার কি দরকার মোটেই বোধগম্য হলো না।

*******

নতুন কোচিং এ ভর্তি হলো হুমায়রা। ফরিদ তাকে পৌছে দিয়েছে। স্যারকে বলেছে যেনো ভালো ভাবে যত্ন নেওয়া হয়। স্যার ফাইজানেরও শিক্ষক ছিলো৷ ফলে তিনিও যত্নে ত্রুটি রাখলেন না। ক্লাসের মাঝেই দু-তিনবার শুধালেন,
“তুমি কি বুঝছো?”

হুমায়রা মাথা দোলালো। সে বুঝছে। এটা বেশ চোখ লাগলো বাকিদের। পুরোটা সময় তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো তারা। হুমায়রা তীক্ষ্ণতা উপেক্ষা করলো। তার এতে কিছু যায় আসে না। সে এখানে পড়তে এসেছে। ফলে কোনো ক্রুটি রাখবে না পড়াশোনায়। ক্লাসের শেষ হতেই দেখলো বাহিরে গাড়ি দাঁড়ানো। নিশ্চয়ই ফরিদ ভাই পাঠিয়েছেন। হুমায়রা তখন কানাগোসা শুনলো,
“মন্ত্রী টন্ত্রীর মেয়ে মনে হয়ে তাই তো স্যারের যত্নের শেষ নেই”

কথাটা হুমায়রার কানে গেলো। তবুও সে নির্বিকার রইলো। সোজা যেয়ে গাড়িতে বসলো। গাড়ি বসতেই অবাক হলো। কারণ ফাইজান ভেতরে বসে আছে। অপেক্ষা করছে তার জন্য। ফাইজানকে দেখে ভুত দেখার মতো চমকালো হুমায়রা। অবাক স্বরে শুধালো,
“আপনি?”
“আমার গাড়িতে আমি থাকতে পারবো না? এটা কোন দেশের নিয়ম?”
“না মানে আপনি আমাকে নিতে এসেছেন তাই অবাক হলাম। আপনার আজ কাজ নেই?”

ফাইজান এবার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো হুমায়রার দিকে। কপালে প্রগাঢ় ভাঁজ। খানিকটা বিরক্তি চোখে মুখে। গম্ভীর স্বরে বললো,
“আপনি তো ভীষণ অদ্ভুত, কোথায় আমি আপনাকে নিতে এসেছি বলে আপনার আহ্লাদে আটখানা হবার কথা। সে না হয়ে আমাকে প্রশ্ন করছেন। আবার বলছেন আমি বেকার”
“না আমি খুশি হয়েছি। আসলে আপনাকে তো সবসময় ব্যস্ত দেখি তাই প্রশ্নটা করলাম”
“খুশি হয়েছেন তাহলে দেখতে পাচ্ছি না কেনো?”

হুমায়রা তাজ্জব হলো, খুশি দেখানো যায় কি করে! সে আসলে এতোটাও খুশি হয় নি যে সেটা দেখানো যায়। তবুও জোর করে হেসে বললো,
“এই যে, হাসছি। তারমানে আমি খুশি হয়েছি”

এবার হো হো করে হেসে উঠলো ফাইজান। অনেকক্ষণ হাসলো। কি চমৎকার হাসি। তারপর বললো,
“ফুচকা খাবেন? আজ আমার ছুটি। চাইলে আপনাকে দিনটা দিতে পারি”…….

চলবে

মুশফিকা রহমান মৈথি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here