অতিরিক্ত_চাই_তোকে #পার্ট:০৭

0
708

#অতিরিক্ত_চাই_তোকে
#পার্ট:০৭

(গল্প লেখা হয়েছে সকাল ১০ টায়, সারাদিন নেট ছিলো না তাই এখন দিতে হচ্ছে 🙂)

আমি আর্দ্র ভাইয়ার থেকে চোখ সরিয়ে স্টেজে আদ্রিতা আপুর দিকে গেলাম।

রওশন ভাইয়ারা এখনো আসে নি। আপু সেই কখন থেকে একা বসে আছে।আমি আপুর কাছে গিয়ে বললাম,,,,,

-“আপু? ”

আপু আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দেয়।তারপর বলে,,,,

-“আজকে তোকে অনেক সুন্দর লাগছে মায়রা।ড্রেসটা বেশ সুন্দর, আর্দ্র দিয়েছে বুঝি? ”

-“হুম। ”

-“দেখেছিস আমার ভাইয়ার চয়েজ কতটা বেটার। ”

-“উফ আপু এসব কথা রাখো তো। ”

-“কেনো বরের কথা বলাতে লজ্জা লেগেছে বুঝি?”

আমি কিছু না বলে মাথা নিচু করে নেই।
_____________

মায়রা আর আদ্রিতা কথা বলছিলো তখনি ঐ লোকটার আসে যে কিনা মায়রার দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো।তিনি এসে মায়রা গা ঘেঁষে দাড়ান।মায়রার বেশ অসস্থি হচ্ছে লোকটার কারনে।
_______________
লোকটি আদ্রিতার উদ্দেশ্যে বলে,,,

-“কেমন আছো আদ্রিতা? ”

-“জি আলহামদুলিল্লাহ! ”

-“আমাকে চিনতে পেরেছো? ”

-“হুম। আপনি রওশনের ফ্রেন্ড না রাহুল না? ”

-“হুম। ”

লোকটি আপুর সাথে কথা বলার পর আমার দিকে বাজে দৃষ্টিতে তাকায়।কিন্তু আমি কিছু বলতেও পারছি না রওশন ভাইয়ের বন্ধু বলে।

লোকটি আদ্রিতা আপু কে জিজ্ঞেস করে,,,

-“তা এই সুন্দরী টা কে?”

আদ্রিতা আপু হেসে উওর দেয়,,,,

-“আমার চাচাতো বোন। ”

ওনারা দুজন কথা বলছিলো তখনি আর্দ্র ভাইয়ার আগমন ঘটে।আমি মনে মনে প্রশান্তির শ্বাস ফেলি।

আর্দ্র ভাইয়া কে দেখা মাত্রই রাহুল নামে লোকটা বলে,,,,

-“তুমি আর্দ্র না? ”

আর্দ্র ভাইয়া না চাইতেও মুখে হাসির রেখা ফুটিয়ে বলে,,,

-“জি। ”

-“কেমন আছো? ”

-“এইতো। আপনি? ”

-“ভালো। ”

-“আচ্ছা আপনার কথা বলুন আমার মায়রার সাথে একটু কাজ আছে। ”

কথা শেষ না করা মাত্রই তিনি আমার হাত টেনে রাহুলের কাছ থেকে সরিয়ে নেয়।

আর্দ্র ভাইয়া আমাকে বাসার ছাদে এনে দেয়ালে চেপে ধরে জিজ্ঞেস করে,,,,

-“তুই ঐ লোকটার গা ঘেঁষে কেনো দাড়িয়েছিলি?”(রেগে)

আমি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে,,,

-“আমি কই দাড়ালাম, তিনিই তো এসে আমার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আমাকে কেমন বাজে দৃষ্টিতে দেখছিলেন! ”

-“কিহ! আজকে তো ঐ লোকটাকে মেরেই ফেলবো! ”

আর্দ্র ভাইয়া কথাটা বলে নিচে যাচ্ছিলো তখনি আমি পিছন থেকে তার হাত টেনে বলি,,,

-“আপুর এংগেইজমেন্ট এ কোনো সিনক্রিয়েট করবেন না প্লিজ।”

-“তো তুই কি বলছিস? ঐ লোকটাকে ছেড়ে দিবো আমি, ইমপসিবল! ”

-“ছাড়তে তো বলছিনা, জাষ্ট ফাংশন টা শেষ হতে দিন। আপু নাহলে অনেক কষ্ট পাবে ”

আর্দ্র ভাইয়া আমার কথা শুনে কিছু একটা ভাবলেন, তারপর আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন,,,,

-“ঠিক আছে বাট পুরো ফাংশনে তোকে আমার সাথে থাকতে হবে! ”

-“আচ্ছা। ”

আর্দ্র ভাইয়া আমার হাত ধরে নিচে নেমে গেলেন।

আমি মনে মনে ভাবলাম,,,

-“যাক সিনক্রিয়েট থেকে তো বাঁচা গেছে, ফাংশনের পরও সামলে নেয়া যাবে। ”

নিচে আসা মাত্রই রাহুল আমাদের দিকে এগিয়ে আসে।তাকে দেখা মাত্রই আর্দ্র ভাইয়ার চোখগুলো লাল টকটকে হয়ে যায়। আমার ভয় হচ্ছে যদি আর্দ্র ভাইয়া তার রাগ কন্ট্রোল করতে না পারে তখন কি হবে?

রাহুল এগিয়ে এসে বলে,,,

-“আরে তোমরা কই ছিলে? ফাংশন তো শুরু হয়ে গেছে, ”

আর্দ্র ভাইয়া দাঁতে দাঁত চেপে বলে,,,

-“আমাদের একটু কাজ ছিলো। ”

-“ওহ। তা মায়রা তোমার সাথে তো পরিচিত হওয়া হয়নি, চলো একটু পাশে গিয়ে কথা বলি? ”

আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই আর্দ্র ভাইয়া গটগট করে বলতে থাকে,,,

-“ওর ফুলনেম তাহিরা ইসলাম মায়রা। এবার মেডিকেল ফাস্ট ইয়ারে পড়বে।ও এই বাড়ির সর্ব কনিষ্ঠ মেয়ে।বয়স ১৮ হবে আর কয়েকমাস পর।ও অনেক ভদ্র মেয়ে। কোনো ছেলের সাথে কথা বলা পছন্দ করে না শুধুমাত্র কাজিন ছাড়া।আর কিছু জানার থাকলে আমাকে জিজ্ঞেস করবেন না থ্যাংকস! ”

আর্দ্র ভাইয়া কথাগুলো বলে আমার হাত ধরে সামনে নিয়ে যায়।আমি পিছে তাকিয়ে দেখি রাহুল আমাদের দিকে ভ্যাবাচেকা খেয়ে তাকিয়ে আছে।আমার বেশ হাসি পেলো, তাই ফিক করে হেসে দিলাম।

আমাকে হাসতে দেখে আর্দ্র ভাইয়া ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করলেন,,,,

-“হাসছিস কেনো? ”

-“এমনি। ”

আমি আর আর্দ্র ভাইয়া স্টেজে গিয়ে দেখি রওশন ভাইয়া আর আদ্রিতা আপু কথা বলছে।

আমাদের দেখা মাত্রই রওশন ভাইয়া মুচকি হাসি দেয়।তারপর বলে,,,

-“কেমন আছেন আপনার লাভ বার্ড’স! ”

রওশন ভাইয়ার কথা শুনে আমি অবাকের চরম পর্যায়ে।আমি মনে মনে ভাবলাম,,,

-“তারমানে রওশন ভাইয়া ও জানে।হায় আল্লাহ না জানি আরো কত লোক জানে।যদি একবার এই কথা তুরনার কানে যায় তাহলে তো,,, ”

তুরনার কথা মনে করতেই কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমা হয় আমার।আমি আমার হাত আর্দ্র ভাইয়ার থেকে ছাড়িয়ে নিলাম।আর যাইহোক আমি কারো জীবন নিয়ে খেলতে পারবো না।
_______________

বেঘোরে ঘুমাচ্ছে মাইশা। একটু আগেই ওকে ঘুমের ইনজেকশন দিয়েছে আয়ান।

আয়ান একটা রিপোর্ট হাতে নিয়ে কেবিনের সোফায় বসে পড়ে।

রিপোর্ট টা মাইশার প্রেগনেন্সির রিপোর্ট ছিলো।আয়ানের মুখে চিন্তার রাশ স্পষ্টত।ও ভাবছে,,,

-“মাইশা প্রেগনেন্ট তাও ওর আবার বিয়ে হয়নি, কার বাচ্চার মা হবে ও?বাসায় জানলে কি যে হবে? ”

(একটা কনফিউশান ক্লিয়ার করে দেই, আয়ান মাইশাকে পছন্দ করেনা। ও শুধু ওকে বোনের নজরেই দেখে।ছাদে ঐ কথাটা ও অন্য কাওকে উদ্দেশ্য করে বলেছে 🥴)

আয়ানের ভাবনার মাঝেই মাইশা ঘুমের মধ্যে কেমন যেন অদ্ভুত আচরন করতে থাকে।বারবার কারও নাম নিয়ে বিড়বিড় করতে থাকে ও!

আয়ান মাইশার মুখের কাছে কান নিয়ে শোনার চেষ্টা করে ও কি বলছে।মাইশা বলে,,,

-“মেঘ! মেঘ, আমাকে ধোকা দেয় নি, ও আমাক ভালোবাসে। আমাকে ভালোবাসে ও! ”

আয়ান ভাবে,,,

-“তাহলে মাইশার বাচ্চাটার বাবার নাম কি মেঘ? ”
______________

আদ্রিতা আপুর পাশে মনমরা হয়ে বসেছিলাম।কেন যেন কিছুই ভালো লাগছেনা। আর্দ্র ভাইয়া আমার না কথাটা মনে পড়তেই বুকে কেমন যেন মোচড় দিয়ে উঠছে।কিন্তু কেন আমি তো আর আর্দ্র ভাইয়াকে ভালোবাসি না!

আমি এসব কথা ভাবছিলাম তখনি আম্মু এসে বলে,,,

-“মায়রা তোর রুমে আমার ফোনটা রেখে এসেছি মনে হয়, একটু এনে দেনা মা! ”

-“আচ্ছা যাচ্ছি! ”

ওপরে যাওয়ার আগে আর্দ্র ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেখলাম তিনি তার বন্ধুদের সাথে কথা বলায় ব্যাস্ত, কেনো যেনো তাকে ডিস্ট্রাব করতে ইচ্ছে করলো না কারন তিনি কখনো এমন ফ্রি টাইম পান না।

আমি একা একাই ওপরে গেলাম।
______________

মায়রা যখন ওপরে যাচ্ছিলো তখন সেটা দেখে শয়তানি হাসি দেয় রাহুল।

মায়রা ওপরে যাওয়া মাত্রই রাহুল ও সবার চোখ আড়াল করে মায়রার পিছু পিছু যায়।
_______________

৩, ৪ বছরের একটা বাচ্চার ছবি নিয়ে কাঁদছে একজন বৃদ্ধ লোক।বৃদ্ধ লোকটির বয়স ৬০ বছর তো হবেই।

বৃদ্ধ লোকটি বাচ্চাটির ছবিতে চুমু দিয়ে কেঁদে বলে,,,

-“আর কতো অভিমান করে থাকবি দাদু, এবার তো ফিরে আয়! পুরো ১৩ টা বছর দূরে থেকেছিস! কতো দিন তোকে দেখিনা! একবার ফিরে আয় দাদু! ”

বৃদ্ধ লোকটি কাঁদছিলো তখনি রুমে ঢুকে আদনান মাহমুদ।মুখে বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট। তিনি বিড়বিড় করে বললেন,,,

-“আজ এই বুড়োকে কি বাহানা দিবো কে যানে? ”

আদনান মাহমুদ কে দেখা মাত্রই বৃদ্ধ লোকটি তার চোখের পানি মুছে আশার আলো নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,,,

-“কোনো খবর পেলি সুহার, আদনান?”

তিনি নেকা কান্না করে বলে,,,

-“না বাবা, অনেক খুজেছি সুহার কোনো খোজ পেলাম না। ”

বৃদ্ধ লোকটির আশার আলো যেনো নিমিষেই নিভে যায়।
________________

আম্মুর ফোন নিয়ে রুম থেকে বেড় হতে যাচ্ছিলাম তখনি রাহুল রুমে ঢুকে দরজা লক করে আমার দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকায়।

রাহুলের এমন দৃষ্টিতে আমার প্রচন্ড ভয় হচ্ছে।

#চলবে?

(গল্পটা মাত্র শুরু! বলতে গেলে এখনো শুরু ও হয়নি গল্পে এখন পরিচয় পর্ব চলছে! তাই যেকোনো মন্তব্য করার আগে ভেবেচিন্তে করার অনুরোধ রইল। আর যতো যাইহোক আমি আপনাদের নিরাস করবোনা ইনশাআল্লাহ। তাই দয়া করে কোনো খারাপ মন্তব্য করার আগে একবার ভেবে নিবেন যে এটা কতটা এফেক্ট হতে পারে।কয়েকদিন যাবত কিছু কিছু মন্তব্য আমাকে গল্প লেখা থেকে নিরাশ করছে।আপনারা এমন করতে থাকলে আমি আমার লেখালেখি টা কন্টিনিউ করতে পারবো না।আমি আমার গল্পে কোনো ১৮+ বিষয় রাখিনি যে আপনারা এমন অদ্ভুত মন্তব্য করছেন। সে যাইহোক এমন মন্তব্য নেক্সট পেলে আমি গল্পটা আর কন্টিনিউ করবো না! আসসালামু আলাইকুম❤️)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here