অতিরিক্ত_চাই_তোকে #পার্ট:০৩

0
826

#অতিরিক্ত_চাই_তোকে
#পার্ট:০৩

(ভাইয়ার এংগেইজমেন্ট আজকে! দেওয়ার ইচ্ছা ছিলো না গল্প তাও ছোটো করে একটা পর্ব দিলাম!দুঃখিত!)

অন্ধকার নিস্তব্ধ শহর।চারিদিকে কুয়াশা পড়েছে।সেই ঠান্ডার মধ্যে দাড়িয়ে আছি আমি।

শুধু আমি না আর্দ্র ভাইয়াও দাড়িয়ে আছে।সেই যে আমার ঠোঁটে অবৈধ ভাবে কিস করে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে, আর তার খবরই নেই।

এবার আর চুপ থাকতে পারলাম না। আর্দ্র ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করলাম,,,

-“আপনি আমার ঠোঁটে কিস করলেন কেনো?”

কিছুটা রাগমিশ্রিত স্বরে বললাম যাতে একটু হলেও ভয় পেয়ে উওরটা দেয়।

আমার প্রশ্নটা শুনে তার কোনো পরিবর্তন হলো না।কিছুটা মন খারাপ হলো আমার কারন তিনি কখনোই আমার কোনো প্রশ্নের উওর দেন না।বিরক্তিকর লোক একটা।

আমি চলে যাচ্ছিলাম তখনি পিছন থেকে আর্দ্র ভাইয়া আমার হাত ধরে বলে,,

-“তোর ঠোঁটে অবৈধ ভাবে টার্চ করার ইচ্ছে আমার ছিলো না।বাধ্য হয়েছি, আর কখনো যেনো তোকে আমাকে ভাইয়া বলে ডাকতে না দেখি ”

তার কথায় বেশ অবাক হলাম।তাকে জিজ্ঞেস করলাম,,

-“আপনাকে ভাইয়া ডাকবো না তো কি বলবো?তাছাড়া বাড়ির সবাই বা কি বলবে?আপনি তো আমার অনেক বড়, নাম ধরে ডাকলে কেমন দেখায়?”

তিনি তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে,,,

-“মাত্র ৯ বছরের বড় আমি তোর!আর নাম ধরে তো আর ডাকতে বলছি না আপনি করে ডাকবি তাহলেই চলবে!কিন্তু ভাইয়া কখনোই না!”

আর্দ্র ভাইয়ার কথায় কিছুটা রাগ হলো আমার।আমি তাকে বললাম,,,

-“কেনো ভাইয়া ডাকলে সমস্যা কি?আমি তো আপনার বো,,,”

কথাটা বলতে যাবো তার আগেই তিনি আমার ঠোঁটে আজ্ঞুল দিয়ে বলে,,,,

-“হুসসসস! তুই আমার বোন কখনোই না, আমার নিঃশ্বাস তুই, আমার অক্সিজেন তুই!!আমার বউ তুই!”

তার কথায় কিছুটা ঝটকা খেলাম।কিন্তু পর মূহুর্তেই নিজেকে সামলে নিলাম।

তিনি আমার থেকে কিছুটা দূরে দাড়িয়ে বললেন,,,,

-“আজকেই শেষ।এর পর আর কখনো বৈধ অধিকার ছাড়া তোকে টার্চ করবো না।”

আমি তার কথা শুনে মনে মনে বললাম,,,

-“সেটা হয়তো কখনোই হবে না আর্দ্র ভাই!কারন আমি চাইনা অন্য কারো ভালোবাসার মানুষ আমার স্বামী হোক।আপনি অন্য কারো আমার না!”

কথাগুলো মনে আওড়িয়ে চোখ থেকে আমার পানি গড়িয়ে পড়ল।সাথে সাথে মুছে নিলাম কারন এটা যদি আর্দ্র ভাইয়া দেখে তাহলে খবর আছে।তিনি একদমই আমার চোখের পানি সয্য করতে পারেনা।

আর্দ্র ভাইয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম মুখটা কেমন যেন শুকিয়ে আছে।তখনি মনে পড়লো আর্দ্র ভাইয়া সকালে না খেয়ে বেড় হয়েছিলেন।আর বাহিরে কিছু খেয়েছেন বলে মনে হয়।কারন তিনি খুবই রুচিবায়ী মানুষ।

আমি তার কাছে এগিয়ে বললাম,,,

-“আপনি তো সকালে কিছু খাননি, এখন একটু খেতে দেই!”

তিনি অন্যদিকে দৃষ্টি স্থির রেখে বললেন,,,

-“তুই খাবার রেডি কর আমি আসছি! ”

-“আচ্ছা!তাড়াতাড়ি আসবেন বাহিরে খুব ঠান্ডা। খাবার ঠান্ডা হয়ে যাবে! ”

তিনি ছোট করে জবাব দিলেন,,,

-“হুম!”

ছাদ থেকে নেমে এলাম আমি।টেবিলে থাকা খাবারগুলো চটপট করে ওভেন থেকে গরম করে প্লেটে বেড়ে নিলাম।

কিছুক্ষণ পর আর্দ্র ভাইয়া নেমে আসলেন।তার চোখ দুটো বেশ লাল হয়ে আছে।হয়তো ঠান্ডার জন্য।

তিনি এসে চেয়ারে বসতে বসতে আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন,,,

-“বাসার সবাই খেয়েছে? ”

আমি বললাম,,,

-“হুম।”

-“তুই খেয়েছিস? ”

আমি কি বলবো বুঝতে পারছিলাম না কারন আমি এখনো খাইনি, আর এটা যদি আর্দ্র ভাইয়ার থেকে নিশ্চিত বকা খেতে হবে।তাই মিথ্যা বললাম,,,

-“হ্যা খেয়েছি।”

আর্দ্র ভাইয়া ভ্রু কুচকে বললেন,,,

-“আমার সাথে মিথ্যা বলিস কোন সাহসে? ”

আমি ভয় পেলাম কিছুটা।তারপরও নিজেকে সামলে বললাম,,,

-“মি,,থ্যা বলতে যাবো কেন?”

তিনি ধমক দিলেন আমাকে।

-“একদম চুপ!আমি জানি তুই যখন মিথ্যা বলিস তখন নিজের হাতের আজ্ঞুল মোচড়া মোচড়ি করসি।এন্ড নাও তুই এটাই করছিস!”

আর্দ্র ভাইয়ার কথা শুনে আমি চোখ বন্ধ করে একটা নিঃশ্বাস ফেললাম। মনে মনে ভাবলাম,,,

-“উনি এতো ছোট একটা জিনিস ও খেয়াল করেন আল্লাহ!!!আগে জানলে আরো খেয়াল রাখতাম!”

আমার চুপ থাকা দেখে উনি আবার ধমক দিলেন।

-“কি হলো বল,মিথ্যা বলেছিস কেন?”

আমি কান্নাস্বরে বললাম,,,

-“সরি আর এমন হবে না!”

তিনি দাঁতে দাঁত চেপে বললেন,,,

-“নেক্সট এমন হলে থাপড়িয়ে দাঁত ফেলে দিবো অসভ্য মেয়ে! ”

আমি মনে মনে তাকে হাজারটা গালি দিলাম।তখনি হাতে টান অনুভব করি, সামনে তাকিয়ে দেখি আর্দ্র ভাইয়া টান মেরেছে।

তিনি আমাকে টান দিয়ে তার পাশের চেয়ারে বসায়।আমি হকচকিয়ে বললাম,,,,

-“কি হয়েছে?”

উনি ক্ষিনস্বরে বললেন,,,

-“এখনি আমার সামনে খাবার কমপ্লিট কর!”

আমি অসহায় ভাবে বললাম,,,

-“আমি পরে খেয়ে নিবো প্রমিস!!”

তিনি দাঁতে দাঁত চেপে বললেন,,,,

-“যেটা বলছি সেটা কর!”

কি আর করার তার সামনে বসেই খেতে হচ্ছে। আগে জানলে তখনই খেয়ে নিতাম।আড়চোখে তার দিকে তাকিয়ে দেখি তিনি মিটমিট করে হাসছেন।অবাক হলাম কিছুটা কারন তিনি খুব কম হাসেন, সবসময় গম্ভীর ফেস নিয়ে ঘুরে বেড়ান।

আমি মনে মনে বললাম,,,

-“আমাকে চাপে ফেলে হাসা হচ্ছে, তাই না?ভালো হবে না তোর বজ্জাত লোক একটা!!!”

#চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here