#অতিরিক্ত_চাই_তোকে
#পার্ট:০৮
রাহুলকে দেখে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম,,,
-“আপনি এখানে কেনো? ”
রাহুল অদ্ভুত হেসে বলে,,,
-“মজা নিতে এসেছি! ”
বলেই রাহুল আমার দিকে এগিয়ে আসছিলো। আমি বুঝতে পারলাম তার কোনো খারাপ উদ্দেশ্য আছে।আমি চিৎকার দিতে যাবো তার আগেই উনি এসে আমার মুখ চেপে ধরে।ভয়ে থরথর করে কাপছি আমি।বারবার আর্দ্র ভাইয়ার কথা মনে পড়ছে আমার।
রাহুল আমার গাউনের দু হাতা টান দিয়ে ছিড়ে ফেলে। তিনি এতো জোরেই টান দিয়েছিলো যার ফলে দু হাত দিয়েই আমার রক্ত বেয়ে বেয়ে পড়তে থাকে।
______________
মাইশার জ্ঞান আসা মাত্রই ও মেঘের নাম ধরে একটা চিৎকার দেয়।
আয়ান জলদি করে মাইশার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে,,,
-“মাইশা কি হয়েছে? চেচাচ্ছিস কেনো?খারাপ স্বপ্ন দেখেছিস? ”
মাইশা কিছু বলতে তার আগেই ওর খেয়াল হয়।ও আয়ান কে দেখে ভড়কে যায়। মাইশা বলে,,
-“ভাইয়া আপনি? ”
-“হুম! রাস্তায় তুই আমার গাড়ির সামনে সেন্সলেস হয়ে গিয়েছিলি তারপর তোকে হসপিটালে নিয়ে আসি। কিন্তু তুই রাস্তার মাঝখানে কি করছিলি? ”
মাইশা আমতা আমতা করে জবাব দেয়,,,
-“আসলে আমি,,, ”
-“মাইশা তুই প্রেগনেন্ট, কার বাচ্চা এটা? ”
মাইশা বুঝতে পারে আয়ান সব জেনে গেছে। কান্না করে দেয় ও।
-“কান্না না করে বল, নাহলে আমি বুঝবো কি করে আর তাছাড়া এই খবর যদি বাসায় জানে তাহলে কি হবে বুঝতে পারছিস?”
-“আয়ান ভাইয়া,,, আসলে। ”
কান্নার কারনে কথা বলতে পারছে না মাইশা।ও আয়ানকে কি বলবে বুঝতে পারছে না।
______________
অক্সিজেন মাস্ক পড়িয়ে রাখা হয়েছে মেঘকে।ওর অবস্থা বেশ খারাপ। ব্রেন টিউমার এর সেকেন্ড স্টেজে আছে মেঘ।
কিছুক্ষন পর মেঘের কেবিনের দরজা খুলে হুড়োহুড়ি করে প্রবেশ করে মেঘের বোন আর ফ্রেন্ড।মেঘের এই অবস্থা দেখার পর কান্না করে দেয় মেঘলা।
মেঘলা মেঘের পাশে বসে জিজ্ঞেস করে,,,,
-“মেঘ কিভাবে হলো এসব?আমাদের জানানোর প্রয়োজন ও মনে করলি না? “(মেঘলা- মেঘের বড় বোন)
মেঘ আস্তে করে চোখ খুলে মেঘলার দিকে তাকায়।মেঘের চোখে পানি। মেঘ বলে,,,
-” আমি নিজেও কয়েকদিন আগে জানতে পেরেছি, তোকে কিভাবে বলবো আপু? ”
-“মাইশা কই? কেমন আছে ও, মাইশা তো প্রেগনেন্ট ছিলো ও কে কি বলেছিস? ”
মেঘ সব খুলে বলে যে ও মাইশার সাথে কি ব্যাবহার করেছে আর কি বলে।
সবকিছু শোনার পর মেঘলা মেঘের গালে একটা থাপ্পড় দেয়।রাগে থরথর করে কাপছে মেঘলা।থাপ্পড় দেয়ার ফলে মেঘের নাক দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে।
মেঘলার হ্যাজবেন্ড ফারিস এসে মেঘলা ধরে বলে,,,
-“মেঘলা তুমি পাগল হয়ে গেছো? মেঘের এই স্টেজে ওকে তুমি মারছো কেনো?”
মেঘলা কেঁদে দিয়ে বলে,,,
-“তাহলে কি করবো তুমি বলো মাইশা প্রেগনেন্ট, ওকে এই স্টেজে এতোটা স্ট্রেস দিলো কেনো ও, এতে ওর ওপর কতোটা এফেক্ট হতে পারে মেঘের কোনো আইডিয়া আছে? ”
মেঘ তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে,,,
-“আমি মরে গেলেও আয়ান ওকে ঠিকই সামলাতে পারবে। ”
মেঘলা আর ফারিস কিছুটা চমকে বলে,,,,
-“আয়ান কে?”
_________________
আর্দ্র ফোনে কথা বলে স্টেজের দিকে তাকিয়ে দেখে মায়রা নেই।আর্দ্রের বুকে মোচড় দিয়ে উঠে।ও আশেপাশে তাকিয়ে মায়রাকে খুজতে চেষ্টা করে কিন্তু কোথায় পায় না মায়রাকে।
____________
রাহুল আমার ড্রেস এর চেইন হাত দিবে তার আগেই আমি তার হাতে কামড় দিয়ে আর্দ্র ভাইয়ার নাম ধরে জোরে একটা ডাক দেই।
_____________
আর্দ্র তখন ঐ রুমের পাশ দিয়েই যাচ্ছিলো, মায়রার গলার আওয়াজ শুনে জলদি করে রুমের দিকে এগিয়ে যায়।কিন্তু ডোর লক ছিলো।আর্দ্র কাছে ঐ রুমের ডুপ্লিকেট চাবি ছিলো।চাবি দিয়ে দরজা খুলে আর্দ্রের চোখ ছানাবড়া।
আর্দ্রের রাগের করানে কপালের রগ ফুলে উঠেছে।
_____________
আর্দ্র ভাইয়াকে দেখে আমার কলিজা ঠান্ডা হয়।আমি রাহুলকে ধাক্কা দিয়ে আর্দ্র ভাইয়ার বুকে ঝাপিয়ে পড়ি।আর্দ্র ভাইয়াকে দেখে রাহুল তার হাতের বাধন আলগা করে দেয় যার ফলে আমার তাকে ধাক্কা দিতে বেশি কষ্ট করতে হয়নি।
আমি আর্দ্র ভাইয়াকে শক্ত করে জরীয়ে ধরে কান্না করে দেই।হাত পা প্রচন্ড পরিমানে কাপছে আমার।
___________
আর্দ্র মায়রার অবস্থা দেখে মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে।ওর বারবার মনে হচ্ছে “এই অবস্থার জন্য ও দায়ী”
মায়রার কান্নার আওয়াজে ফাংশনের বেশ মানুষ ঐ রুমে উপস্থিত হয়ে যায়।
____________
বাড়ির সবাইকে দেখে বেশ ভয় হচ্ছিলো আমার।জানিনা তারা কে কিভাবে বিষয়টা নিবে।এতো মানুষ দেখে আর্দ্র ভাইয়া তার পরনের ব্লেজার টা খুলে আমাকে পড়িয়ে দিলেন।
আম্মু এসে আমাকে বলে,,,
-“আম্মু কি হয়েছে তোর? ঠিক আছিস তুই? ”
আমি কি বলবো বুঝতে পারছিনা।
আশেপাশে মানুষজন সব বিড়বিড় করে বলছে,,,
-“আহারে বেচারা মেয়েটার এতো অল্প বয়সে ইজ্জতটা গেলো। ”
তাদের কথা শুনে আর্দ্র ভাইয়া হুংকার দিয়ে বলে,,,,,
-“কিছু হয়নি মায়রার!সময় মতো এসেছিলাম আমি।উল্টাপাল্টা কথা বলবেন না আপনারা।”
আর্দ্র ভাইয়া কথাটি বলে তার শার্টের হাতা ফোল্ড করে রাহুলের দিকে এগিয়ে যায়।
#চলবে?
(দেওয়ার ইচ্ছে ছিলো না তাও কয়েকজনের অনুরোধে ছোট করে একটা পর্ব দিলাম)