#অতিরিক্ত_চাই_তোকে
#মারিয়াম_আক্তার_সাদিয়া
#পার্ট:১৬ (নিউ টুইস্ট-০১)
আর্দ্র মায়রার দিকে অসহায় চাহনি দিয়ে তাকিয়ে আছে ওর উওরের আশায়।আর্দ্রের চাহনি দেখে কষ্ট পেলেও মায়রার কিছু করার নেই।
মায়রা একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে আর্দ্র কে বলে,,,,
-“আমি আপনাকে ভালোবাসি না, আর না আপনাকে কোনোদিন ভালোবাসা সম্ভব! আমি অন্য কাওকে ভালোবাসি।তার সাথে আমার ২ বছরের রিলেশন। এমনকি ছেলেটা আপনার থেকেও অনেক বেশি হ্যান্ডসাম। ”
একদমে কথাগুলো বলে মায়রা মাথা উঁচু করে দেখে আর্দ্রের লাল টকটকে চোখ থেকে পানি পড়ছে।আর্দ্র কাপছে, রাগে কাপছে নাকি অন্যকিছু তা জানা নেই মায়রার।
মায়রার ভয় হচ্ছে খুব। মায়রা আস্তে আস্তে পিছিয়ে যেতে থাকে তখনি আর্দ্র উঠে এসে মায়রার হাত অনেক শক্ত করে ধরে, এতোটাই শক্ত করে ধরেছে হাত এখনো ভাঙেনি এটাই অনেক।
আর্দ্র কর্কশ কন্ঠে বলে,,,
-“আমি জীবিত থাকতে অন্য ছেলের সাথে রিলেশন করিস সাহস তো কম না তোর!ইচ্ছে করছে তোকে এখনি জ্যান্ত পুতে ফেলি! ”
-“তো করুন মানা করেছে কে?”
আর্দ্র বাকা হাসি দিয়ে বলে,,,
-“তোকে মেরে ফেললে আমার প্রতিশোধ কিভাবে পূরণ হবে?”
মায়রা অনেকটা অবাক হয় আর্দ্রের কথায়।মায়রা নিজের কন্ঠে অবাক স্বুর টেনে বলে,,,
-“প্রতিশোধ!! কিসের প্রতিশোধ?”
-“বাহ, আমাকে কষ্ট দিলি তার শাস্তি তোকে না দিই কিভাবে? ”
-“আমি অন্য ছেলের সাথে রিলেশন করি এতে আপনাকে কষ্ট দেওয়ার কি হলো?”
আর্দ্রের কপালের রগ ফুলে উঠে মায়রার কথা শুনে। আরো বেশি হিংস্র হয় আর্দ্র। ও বলে,,
-“রিলেশন করিস ২ বছর কিন্তু আমি তোকে ভালোবাসি আরো অনেক বছর ধরে এবং সেটা তুই জানিস এন্ড জেনেশুনে তুই অন্য একটা ছেলের সাথে রিলেশন এ গেছিস তাহলে এটাকে ধোকা বলে নাতো কি বলে?”
-“আমি আমার মতো চলবো তাতে আপনার কি? ”
-“কারন তুই আমার শুধু আমার। গট ইট! ”
আর্দ্র মায়রার হাত ধরে টেনে নিচে নিয়ে যেতে থাকে।মায়রা পিছন থেকে আর্দ্রকে বলে,,
-“কই নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে?”
-“বিয়ে করতে! ”
মায়রা স্তব্ধ হয়ে যায় আর্দ্রের কথা শুনে। ওর ব্রেন কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে,
আর্দ্র মায়রাকে ফাস্ট ফ্লোরে এনে সোফায় ছুড়ে মারে। কিন্তু মায়রার কোনো রিয়েক্ট নেই।আর্দ্র নিজের ফোন বের করে কাকে যেনো ফোন লাগিয়ে বলে,,,,
-“চলে আয়!ও মানেনি,, ”
_______________
মায়রাদের বাসার সামনের ঝোপঝাড়ে বসে আছে আদনান মাহমুদ আর তার লোকেরা।আদনান মাহমুদ বিরক্ত হয়ে বলে,,,
-“শুভ তুই সিয়র তো এটাই ঐ মেয়ের বাসা? ”
-“জি বস! হ্যান্ড্রেড পার্সেন্ট সিয়র। ”
-“তাহলে মেয়েটা কই এখনো দেখলাম না তো? ”
শুভ আমতা আমতা করে বলে,,,,
-“বস মনে হয় মেয়েটা বাসায় নেই! ”
রেগে যায় আদনান মাহমুদ। তিনি রেগে শুভর গালে একটা থাপ্পড় মেরে বলে,,,
-“শালা কোনো কাজের না তুই। ”
বলেই ঝোপঝাড় থেকে বেড়িয়ে গাড়ি নিয়ে চলে যায় সে।
____________
মুখে কাপড় বেধে ফাইভ স্টার হোটেলে প্রবেশ করে তুরনা।বারবার আশেপাশে তাকাচ্ছে যে কেও ওকে দেখছে কিনা।তুরনা খুব সাবধানতার সাথে হোটেলের ৩০৪ নাম্বার রুমে যায়।
তুরনা ৩০৪ নাম্বার রুমের সামনে এসে বুক ভরে শ্বাস নেয়।তারপর আস্তে করে ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভেতর প্রবেশ করে তুরনা।
তুরনা ভেতরে প্রবেশ করতেই একটা মনো মুগ্ধকর স্মেল পায় ও। গভীরভাবে নেশাক্ত এই স্মেলটার প্রতি ও। তুরনা আরো ভিতরে গিয়ে একটা রুমের দরজার রুমের সামনে দাড়ায় ও।দরজাটা খুলে দেখে, একটা ছেলে শার্টলেস হয়ে দাঁড়িয়ে ড্রিংক করছে। ছেলেটার বডি আর্কষণ করার মতো।
তুরনা গিয়ে ছেলেটাকে পেছন থেকে জরীয়ে ধরে।তুরনা বলে,,,
-“কেমন আছো মি.হ্যান্ডসাম?”
ছেলেটা ড্রিংক এর গ্লাসে ঠোঁট লাগাতে লাগাতে বলে,,,
-“এতো দেরী হলো যে? ”
-“বাড়ির সবাইকে ম্যানেজ করতে একটু দেরী হয়ে গেছে। ”
-“আর্দ্রের কি খবর? মিশনের কতটুকু এগিয়েছো? ”
-“অনেকটাই! আর্দ্রের বাবা মা চাইছেন খুব তাড়াতাড়ি আমাদের বিয়েটা দিয়ে দিতে।”
ছেলেটা ড্রিংকের গ্লাস পাশের কাচের টেবিল এ রেখে তুরনার দিকে তাকায়।
-“দ্যাট’স গুড। খুব তাড়াতাড়িই তাহলে সু-খবর পাচ্ছি। ”
তুরনা হেসে বলে,,,
-“ইয়াহ। ”
তুরনা ছেলেটার কাছে গিয়ে বলে,,
-“কতদিন হয়েগেলো তীব্র, তুমি আমাকে একটুও আদর করো না! ”
তীব্র বাঁকা হেসে তুরনাকে বেডে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে ওর দিকে এগিয়ে যায়।
________________
বধুবেশে বসে আছে মায়রা। পাশে আর্দ্র বসা, সাথে আরো অনেকে এসেছে আর্দ্র আর মায়রার বিয়ের জন্য এমনকি আদ্রিতাও বাদ নেই।
আর্দ্রের কবুল বলা শেষে মায়রাকে কবুল বলতে বলা হলে ও চুপ হয়ে থাকে।মায়রার এমন চুপ থাকাটা আর্দ্রের সহ্য হয় না, ও রেগে মায়রাকে একটা থাপ্পড় দিয়ে বলে,,,
-“কবুল বলবি নাকি আরেকটা দিবো? ”
আর্দ্রের থাপ্পড় খেয়ে মায়রা কান্না করে দেয়।ও অসহায় চোখে আদ্রিতার দিকে তাকায়। আদ্রিতা বলে,,,
-“কবুল বলে দে বোন নাহলে আরো থাপ্পড় খেতে হবে। ”
মায়রার প্রচুর রাগ লাগছে আদ্রিতার ওপর। ওর মনে হচ্ছে “কই আদ্রিতা ওকে একটু হেল্প করবে তা না সে নিজের ভাইয়ের অনৈতিক কাজে সার্পোট করছে। ”
মায়রার ভাবনার মাঝে আরো একটা থাপ্পড় পড়ে ওর গালে।মায়রা আরো জোরে কান্না করে দেয়।
আর্দ্র বলে,,,,
-“এসব মেলোড্রামা অফ করে জলদি কবুল বল নাহলে এখানেই তোকে মেরে কবর দিয়ে যাবো।”
মায়রা কাঁপা কন্ঠে বলে,,,
-“বলবো না কবুল মেরে ফেলুন আমাকে।”
আর্দ্রের রাগ দ্বিগুন বেড়ে যায়।
আর্দ্র আর মায়রার কাহিনির মধ্যে কাজি ফোড়ন কেটে আর্দ্র কে বলে,,,,
-“বাবা জোর করেতো বিয়ে করা ঠিকনা তুমি এটা কি করছো? ”
আর্দ্র চোখ বাকিয়ে বলে,,
-“একদম চুপ জ্ঞান দিতে আসবেন না। ”
আর্দ্র ধমক স্বরুপ কথা শুনে কাজি বেশ ভয় পেয়ে যায়।কাজিকে ভয় পেতে দেখে রোহিত বলে,,,
-“আরে চাচা, স্কুলের টিচারদের মতো জ্ঞান না দিয়ে সিন উপভোগ করুন না, শুধু শুধু ওদের ঝগড়ার ভেতর নাক গলাচ্ছেন কেনো?”
কাজি বলে,,,
-“সরি বাবা ভুল হয়ে গেছে। ”
-“ইট’স ওকে চাচা।”
বলেই রোহিত আর্দ্রকে বলে “ক্যারি অন ”
আর্দ্র এবার নিজের পকেট থেকে গান বেড় করে নিজের মাথায় ঠেকিয়ে বলে,,,
-“বল বিয়ে করবি নাকি গুলি করবো? ”
মায়রা অনেক ভয় পেয়ে যায় আর্দ্রের এমন আচরণ। মায়রা ভীত স্বরে বলে,,,
-“ওটা সরান প্লিজ আমি কবুল বলছি! ”
-“আগে বল। ”
আর্দ্রের কথাশুনে জলদি করে তিনবার করে কবুল বলে ফেলে। সাথে উপস্থিত সবাই “আলহামদুলিল্লাহ ” বলে উঠে।
বিয়ের আরোও কিছু কাজ সমাপ্তি করে পুরোপুরি ভাবে স্বামী স্ত্রীর পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয় আর্দ্র আর মায়রার।
আর্দ্র মায়রার কানের কাছে বলে,,,
-“এবার আমার প্রতিশোধ নেয়া শুরু করবো।এতো কষ্ট দিবো যে তুই তোর মৃত্যু কামনা করবি। বিয়ে করেছি বলেই ভাবনি না যে তোকে ভালোবাসবো আমি, এতোটা টর্চার করবো যে রিলেশন করার শাস্তি তুই হারে হারে পাবি।
আর্দ্রের কথাগুলো শুনে কেঁপে উঠে মায়রা।ও বুঝতে পারছে ওর জন্য বেশ বড় কোনো কিছু অপেক্ষা করছে।
#চলবে?
(গল্পে নতুন মোড় আসতে চলেছে 😼 সো বি রেডি! 🤟😼,)