রুমে বসে বসে বিয়ের জন্য তৈরি হচ্ছিলাম, তখনি কেও আমার রুমে প্রবেশ করে ধাম করে দরজা লাগায়।আয়নাতে সেই ব্যাক্তিটির চেহারা দেখে আমার চক্ষু চড়কগাছে। হাত পা প্রচন্ড পরিমানে কাপছে আমার।তার সাথে চোখ মেলাতে পারছি না তাই মাথা নিচু করে রেখেছি।লোকটি ধীর পায়ে এসে আমাকে পিছন থেকে জরীয়ে ধরে।
এতে তার গরম নিঃশ্বাস আমার ঘাড়ে আছড়ে পড়ছে।তার চাপ দাঁড়ির স্পর্শে কেঁপে উঠছি আমি।তিনি আমাকে আরেকটু শক্ত করে জরীয়ে ধরলেন, এতে কাঁপাকাপি টা যেনো আমার দীগুন হয়ে গেলো। চোখ বন্ধ আমার, তাকানোর সাহস নেই।
তিনি আলতো করে আমার ঘাড়ে তার ঠোঁট স্পর্শ করান।এবার যেনো আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম।আমি অনেক কষ্টে গলা থেকে শব্দ বের করে তাকে বলি,,,,
-“আ,,আর্দ্র ভাইয়া কি কর,,ছেন কেও দেখে ফেলবে? ”
আমার কথাটা হয়তো তার কান পর্যন্ত পৌছায় নি,আর পৌছাবেই বা কি করে আমি নিজেই আমার কথাটা শুনতে পাই নি, মনে বলেছি যে তাকে সামনে বলার সাহস আমার নেই, এমনিতে প্রচুর কষ্ট দিয়েছি তাকে।তিনি আমাকে আরো নিবির ভাবে জরীয়ে আমার ঘাড়ে নিজের মুখ গুজে দিলেন।
আমি আবার সাহস করে তার মুষ্ঠবদ্ধ হাতটা ছাড়ানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু,, তিনি বললেন,,,
-“ভুলেও হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করবিনা মায়রা!এর ফল ভালো হবে না!”
তার হুমকি স্বরুপ কথাটা কাপিয়ে দিলো আমাকে।চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে কিন্তু এখন যদি এখন কান্না করি তাহলে আর্দ্র ভাইয়ার হাতের সেই বিখ্যাত চড় খেতে হবে নিশ্চিত। তাই কিছু বললাম না মনে মনে আল্লাহকে ডাকতে লাগলাম।
তিনি এবার গম্ভীর কন্ঠে বললেন,,,
-“আমার মানা করা সত্যেও বিয়েতে রাজি হয়েছিস কোন সাহসে? ”
-“নিশ্চুপ”(আমি)
আমার এমন নিরবতা হয়তো তার ভালো লাগেনি তাই তিনি আমাকে ধমকে বললেন,,,
-“কথা কানে যায় না? বোবা হয়ে গেছিস তুই? ”
তার ধমক শুনে ফুপিয়ে কান্না করে দিলাম আমি।
-“কান্না করবিনা একদম, নাহলে ঠাটিয়ে একটা চড় মারবো ”
আমি এবার রেগে ওনাকে বললাম,,,
-“হ্যা পারবেনই তো শুধু চড় থাপ্পড় মারতে একটু সফট ভাবে কথা বলা যায় না?”(কান্না করতে করতে)
তিনি এবার আমার কাছে আমাকে তার বুকে জরীয়ে নিলেন।কেন যেন খুব অস্থস্থি হতে লাগলো।আবারও তার স্পর্শে কাঁপা কাঁপি শুরু হয়ে গেলো আমার।
আর্দ্র ভাইয়া এবার একটু নরমস্বুরে বললেন,,,
-“আমার কথা কেনো শুনিস না তুই? কেনো বুঝিস না #অতিরিক্ত_চাই_তোকে, সবসময় আমার কথা অমান্য করতে তোর ভালো লাগে না?”
আমি কিছু বললাম না, কি বলবো জানি না।
তিনি এবার আমাকে নিজের বুক থেকে উঠিয়ে কপালে একটা চুমু দিলেন।আমার চোখ থেকে এক ফোটা পানি গড়িয়ে পড়ল
-“বিয়ের সাঝ তুলে ফেল, তোকে বিয়ের সাঝে দেখার অধিকার শুধু আমার।”
বলেই তিনি গটগট করে চলে গেলেন।
আমি তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললাম।এতটুকু বুঝতে পারলাম এবারও আমার বিয়েটা হচ্ছেনা।প্রতেকবারের মতো এবারও আমার বিয়েটা ভেঙে গেল।
তার কারন একটাই আর্দ্র ভাইয়ার “অতিরিক্ত চাওয়া”
________________
অন্ধকার ছাদে এক কোনায় দাড়িয়ে অশ্রু বির্ষজন দিচ্ছে মাইশা।আজ কেনো যেনো ওর নিজেকে প্রচুর অসহায় লাগছে। মাইশার হাতে প্রেগনেন্সির ফাইল, আজই পরিক্ষা করিয়ে জানতে পারলো ও মা হতে চলেছে বিয়ে ছাড়া।
কিন্তু মাইশার অনাগত বাচ্চার বাবা একটু আগেই মাইশাকে ফোন করে রিজেক্ট করে দিয়েছে।বড্ড অসহায় লাগছে ওর কি করবে জানা নেই ওর।
এসব চিন্তার মাঝেই কেও মাইশার ঘাড়ে হাত রেখে বলে,,
-“মাইশা এত রাতে ছাদে কি করছিস?আজ যে মায়রার বিয়ে খবর আছে তোর? ”
মাইশা পেছনে তাকিয়ে দেখে আয়ান দাঁড়িয়ে।
জলদি করে নিজের চোখের পানি মুছে ফেলে মাইশা।ছাদে অন্ধকার থাকার ফলে আয়ান মাইশার চোখের পানি দেখতে পাইনি।মাইশা নিজেকে সামলিয়ে বলে,,,,
-“কিছুনা ভাইয়া।আসলে খুব গরম লাগছিলো তাই ছাদে এসেছিলাম যদি একটু বাতাস পাওয়া যায়!”
আয়ান হালকা হেসে বলে,,,
-“ওহ! আচ্ছা তুই মায়রার কাছে যা ওর যদি কোনো দরকার হয়!”
-“হ্যা যাচ্ছি ”
মাইশা নিচে চলে যায়।আয়ান কালো কুচকুচে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,
-“পৃথিবী এমন কেন?যাকে চাই তাকে পাইনা, যাকে চাইনা সে বারবার কাছে আসে,কেনো যে তাকে #অতিরিক্ত_চাই? এই অতিরিক্ত চাওয়াটা যে খুব খারাপ ”
কথাগুলো বলে কান্না করে দেয় আয়ান।যদিও ছেলেদের অতো সহজে কাঁদতে নেই তবে আজ খুব করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে আয়ানের।
______________
বিয়ের সাজ তুলে একটা নরমাল ড্রেস পড়ে নিচে এলাম।এতক্ষণে সিয়র আর্দ্র ভাইয়া আমার বিয়েটা ভেঙে ফেলেছে।ভেতরে ভেতরে খুব খারাপ লাগছে আমার।তাও কিছু করার নেই।
নিচে নেমে দেখি আর্দ্র ভাইয়া সোফায় বসে ফোন টিপছে।আর আমার মা শাড়ির আচলল মুখ গুজে কাঁদছে।হয়তো আমার বিয়ে ভেঙে যাবার ফলে।
#চলবে?
#অতিরিক্ত_চাই_তোকে
#লেখিকা: #মারিয়াম আক্তার সাদিয়া
#পার্ট:০১
(ভালো রেসপন্স পেলে কন্টিনিউ করবো নাহলে ঠাঠা বাই 😇🐸)