#কৃষ্ণবেণী
#পর্ব_২৯(১)
#নন্দিনী_নীলা
প্রথমবারের মতো জায়ান তৃষ্ণাকে নিয়ে বেড়াতে বের হবে। বউকে নিয়ে আজ একটু ভালোবাসা বাসি করবে। তৃষ্ণা জায়ানের সাথে ঘুরতে যাবে শুনেই পরিপাটি হয়ে নিয়েছে।
” তোমার রুপের আগুন আমি জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছি। এই রুপে ডুব দেওয়ার সময় এসে গেছে!”
তৃষ্ণা জায়ানের চোখের দিকে চেয়ে আছে। জায়ান তৃষ্ণার হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে হাতের উল্টো পিঠে চুমু খায়। তৃষ্ণা লজ্জায় কাঁচুমাচু করতে থাকে। জায়ান তৃষ্ণার হাত ছেড়ে সোজা হয়ে দাঁড়ায় দরজার দিকে মুখ করে।
তৃষ্ণার দিকে হাত ভাঁজ করে বাহু ফুলিয়ে দেখিয়ে বলেন,” চলেন মিসেস একটু প্রেম ভালোবাসা করে আসি।”
তৃষ্ণা হেসে জায়ানের বাহু ধরে দুহাতে। জায়ান ঘাড় বাঁকা করে তৃষ্ণার দিকে তাকায়। মাথা নিচু তৃষ্ণার গালে চুমু খেয়ে নিজেও হাসলো।
এদিকে আয়ান এবং জায়ানের বাবা দুজনেই আজ বাড়িতে। তারা লুকিয়ে বাড়িতে আসে আবার পুলিশ বাড়ি দিকে আসলে তখন পালিয়ে যায়। দুজনেই ড্রয়িং রুমে বসে গুজুর ফুজুর করছিল। তখনি জায়ান আর তৃষ্ণা রেডি হয়ে বাইরে বের হতে যায় তা দেখে দুজনেই চোখ বড়ো বড়ো করে তাকায়।
জায়ানের উদ্দেশ্যে সাদিকুর রহমান বলেন,,” তোমরা রাতে বেলা কোথায় যাচ্ছ?”
জায়ান হাঁটার গতি থামিয়ে উত্তর দেয়,” বাইরে।”
” হঠাৎ এতো ফিটফাট হয়ে দুজনে বাইরে কেন যাচ্ছ?”
এতো প্রশ্ন করায় জায়ানের বিরক্ত লাগে।
” আপনি কোনদিন বউকে নিয়ে বাইরে যান নাই? ছেলে ছেলের বউ কেন যাচ্ছে এভাবে জিজ্ঞেস করছেন! লজ্জা করছে না!”
সাদিকুর রহমান এতোক্ষণ লজ্জা না পেলেও এবার লজ্জা পেল। ছেলে যে তার এভাবে নাক কাটবে কে জানতো? তিনি আর কিছু জিজ্ঞেস করল না।
এদিকে আয়ান তখন বলে উঠল,,” আমরা জান হাতে নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। আর তুই বউ নিয়ে ফুর্তি করছিস?”
জায়ান তৃষ্ণার হাত ছেড়ে বললেন,” তুমি গাড়িতে গিয়ে বসো আমি আসছি।”
তৃষ্ণা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিল। জায়ানের কথায় একপলক জায়ানের দিকে তাকিয়ে বাইরে চলে যায়।
জায়ান দুজনের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে,,” হ্যাঁ ফুর্তি করছি তোর সমস্যা?”
আয়ান সঙ্গে সঙ্গে জবাব দেয়,,” অফকোর্স সমস্যা! তুই এতোটা শান্ত হয়ে কীভাবে থাকতে পারছিস? সত্যি করে বলতো! তুই শত্রুর পক্ষের সাথে হাত মিলিয়েছিস তাই না?”
জায়ান ভ্রু কুটি করে ঠোঁটে প্রসস্থ করে হেসে উঠল,”হাত মিলালেই কি? তুই যদি কিছু করে নাই থাকিস! তোর এতো ভয় কিসের?”
আয়ান থতমত খেয়ে গেল। ঢোক গিলে আমতা আমতা করে বলল,” আমি ভয় পাব কেন? উষসী কে আমি মেরেছি এটাই তো প্রমাণ করতে চাস। আর আমাকে জেলে পাঠিয়ে সব কিছু নিজে একা ভোগ করতে চাস বুঝি না ভেবেছিস!”
জায়ান তাড়া দেখিয়ে বলল,” তোকে জেলে পাঠিয়ে এসব ভোগ করার প্রয়োজন আমার নেই। তুই না থাকলেও আমি ছাড়া অন্য কেউ কিছুই ভোগ করতে বা নিতে পারবে না। সো বানোয়াট কথা বলে সত্য ডাকার চেস্টা করছিস না। যেটা সত্য সেটা সামনে আসবেই তুই আমি আটকাতে পারব না শুধু সময়ের অপেক্ষা।”
বিদায় নিয়ে বেরিয়ে এলো জায়ান। এদিকে আয়ান ভয়ে ঘামতে শুরু করে। আরেকটা জিনিস ভাবে জায়ান কি বলল ও না থাকলেও অন্য কেউ ভোগ করতে পারবে না মানে কি?
__________________________
তৃষ্ণা গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। জায়ান এসে তৃষ্ণাকে গাড়িতে উঠায় এবং নিজেও উঠে বসে। সামনে ড্রাইভার গাড়ি ড্রাইভ করছে।
তৃষ্ণা জায়ানের থেকে দূরত্ব রেখে বসে আছে। জায়ানের ফোনে গাড়িতে উঠতেই একটা কল এসেছে ও কলে কথা বলছে।
খুব রেগে রেগে কথা বলছে। তৃষ্ণা একবার জানালা দিয়ে বাইরে দেখছে তো একবার জায়ানের রাগী মুখশ্রী দেখছে।
জায়ান কল কেটে তৃষ্ণার দিকে তাকিয়ে বললেন,” এই ফোনের জন্য মেজাজ ঠিক রাখাই কঠিন। এটা খোলা থাকলে আরো কত যে কল আসবে ঠিক নাই এটা বন্ধ থাকাই বেটার।”
ফোন অফ করে একটা শান্তির নিঃশ্বাস ছাড়লো জায়ান। তৃষ্ণা ওর দিকেই তাকিয়ে আছে।
” কি হয়েছে মুড অফ?” প্রশ্ন করল তৃষ্ণাকে।
তৃষ্ণা এখন একটু আধটু ইংরেজির মানে জানে। অনেকদিন ধরেই ওর লেখাপড়া চলছে। ও মাথা নাড়িয়ে না বলল।
জায়ান তৃষ্ণার বাহু ধরে টেনে নিজের নিকটে নিয়ে এলো।
” তাহলে এতো দূরে বসেছো কেন? এতো দূরত্ব থাকলে প্রেম ভালোবাসা হবে কি করে? তুমি কি আমার ভালোবাসা চাও না।”
তৃষ্ণা লজ্জায় মাথা নিচু করে বলল,” চাই তো।”
জায়ান তৃষ্ণার থুতনি ধরে মুখটা উঁচু করে বলল,” তাহলে দূরে দূরে থাকো কেন? আজ কোন দূরত্ব নয়। আজ যতটা কাছে যাওয়া যায় ততটাই কাছে যেতে চাই। আমার এই পাগলি বউটাকে আদরে আদরে ভরিয়ে দিতে চাই।”
তৃষ্ণা লজ্জা তাকাতে পারছে না গাড়িতে ড্রিম লাইট চলছে। কিন্তু বাইরের ল্যাম্পপোস্টের আলোতে গাড়ি একটু পর পর আলোকিত হয়ে উঠছে।
জায়ান তৃষ্ণার লজ্জা মাখা মুখটা দেখে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলো না। তৃষ্ণার ঠোঁটে গাঢ় স্পর্শ দিলো।
তৃষ্ণা জায়ানের থেকে ছাড়া পেতেই মাথা ঘুরিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগল। জায়ান পেছনে থেকেই তৃষ্ণা কে জড়িয়ে ধরে কাঁধে মুখ ঠেকিয়ে রেখেছে। তৃষ্ণা জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে।
________________________
গন্তব্যে আসতেই গাড়ি থেমে যায়। জায়ান তৃষ্ণাকে হাত ধরে গাড়ি থেকে নামায়। ড্রাইভার কে গাড়ি নিয়ে ফিরে যেতে বলে। হোটেলের ভেতরে প্রবেশ করে দুজন। এই হোটেলের মালিক জায়ান নিজেই। কিন্তু তৃষ্ণা জানে না। তৃষ্ণা মাথা নিচু ধীর গতিতে হাঁটছে। জায়ান তৃষ্ণার হাত ধরে ভেতরে প্রবেশ করে। সবাই স্যার ম্যাম বলে ওদের স্বাগতম জানায়।
তৃষ্ণাকে নিয়ে একটা রুমে প্রবেশ করে। দরজাটা খোলাই ছিল জায়ান শুধু ধাক্কা দেয়। ভেতরে থেকে মনোমুগ্ধকর ফুলের সুবাস ভেসে আসে। তৃষ্ণা সুগন্ধে চোখ বন্ধ করে নেয়। চোখ মেলে দেখে ভেতরে ঘুটঘুটে অন্ধকার। পাশে তাকিয়ে জায়ান কে কিছু বলবে কিন্তু হায় জায়ান কোথায়? আশেপাশে তাকিয়ে দেখে ও ছাড়া কেউ নাই। জায়ান কোথায় গেল? ভয়ে ও গুটিয়ে যায়। এমন নিস্তব্ধ জায়গায় ওকে একা রেখে জায়ান কোথায় গেল?
ও কেঁদে দিবে এমন অবস্থা তখনি অন্ধকার রুমের ভেতরে থেকে কেউ ওকে ভেতরে টেনে দরজা আটকে দেয়। ও চেঁচিয়ে উঠবে তখনি রুমে আলো জ্বলে উঠে। আলো জ্বলতেই উপর থেকে এক ঝাঁক ফুলের পাপড়ি ওর গায়ে ঢলে পরে। ও স্তব্ধ, হতবিহ্বল চোখে দাঁড়িয়ে আছে। ওর থেকে একটু দূরে জায়ান দাঁড়িয়ে ওর দিকে তাকিয়ে হাসছে।
সমস্ত ফুলের পাপড়ি নিচে পরা শেষ হতেই জায়ান ওর নিকটে আসে। একহাতে ওর কোমর
চেপে ধরে অন্য হাতে তৃষ্ণার হাত ধরে নিজের কাঁধে তুলে দেয়।
” ভয় পেয়েছো?”
তৃষ্ণার চোখ ছলছল করে ওঠে।
জায়ান আঙুল স্পর্শ করে অশ্রু মুছিয়ে দেয়।
” একটু চমকে দিতে, সারপ্রাইজ দিতে একটু ভয় পেতেই হয়। এতেই কাঁদলে চলবে? তুমি মিসেস জায়ান আহনাফ। তোমাকে সাহসী হতে হবে। একটুতেই ভয় পেলে চলবে না। বুঝেছ মিসেস?”
তৃষ্ণা উত্তর দেয় না। জায়ান তৃষ্ণার চোখের পাতায় অধর স্পর্শ করে। তৃষ্ণা নিমিষেই চোখ বন্ধ করে নেয়।
জায়ান তৃষ্ণাকে নিয়ে একটু কাপল ডান্স করে। তৃষ্ণা শুধু জায়ানের সঙ্গে তাল মিলিয়েছে। জায়ান তৃষ্ণাকে ছেড়ে দেয়। তৃষ্ণা সাজানো রুমটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগল। ফুলের রাজ্য মনে হচ্ছে। সম্পূর্ণ রুমটা বাহারি ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে।ও মুগ্ধ হয়ে দেখছে।
” সাজানো পছন্দ হয়েছে?”
তৃষ্ণা,” অনেক বেশি।” বলে উত্তর দেয়।
জায়ান তৃষ্ণাকে রুমে রেখে একটু বাইরে আসে। খাবার অর্ডার করতে। ফোন অফ তাই নিজেকেই বাইরে আসতে হয়।
পনেরো মিনিট পর খাবার আসে। জায়ান খাবার সহ রুমে আসে। তৃষ্ণা বিছানায় পা ঝুলিয়ে বসে ছিল।
” বাথরুমে থেকে হাত মুখ ধুয়ে আসো।” জায়ানের আদেশে তৃষ্ণা বাধ্য মেয়ের মতো হাত মুখ ধুয়ে আসে।
জায়ান তৃষ্ণাকে সোফায় বসিয়ে হাতে খাবারের প্লেট দিয়ে বলেন,” এবার স্বামী সেবা কর। খাইয়ে দাও।”
তৃষ্ণা জায়ানকে খাইয়ে দিচ্ছে। জায়ান তৃষ্ণার হাতে পেট ভরে খেয়ে উঠে দাঁড়ালো।
” এবার তুমি খেয়ে নাও। আমি একটু আসছি বাইরে থেকে।”
জায়ান পানি পান করে বাইরে চলে যায়। তৃষ্ণা নিজে খাওয়া শেষ করে জায়ানের অপেক্ষা করতে লাগে।
জায়ানের আসতে দের ঘন্টা লেগে যায়।
তৃষ্ণা অপেক্ষা করতে করতে সোফায় হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পরে।
জায়ান একটা শপিং ব্যাগ এনে সোফার উপর রেখে ঘুমন্ত তৃষ্ণা কে ডেকে তুলে। তৃষ্ণা ঘুম ঘুম চোখে জায়ানের উপস্থিতি টের পেয়ে চোখ পিটপিট করে তাকায়।
জায়ান তৃষ্ণার কানে ফিসফিস করে বলেন,” আজ তো ঘুমালে চলবে না জান। বুকের ভেতর থাকা সমস্ত ভালোবাসা আজ তোমায় নিগড়ে দিতে চাই। গ্রহণ করবে তো আমার এই ভালোবাসার।”
” আপনি কাছে টানলে আমার কি সাধ্য আছে আপনাকে ফিরিয়ে দেবার?”
তৃষ্ণা ঘুম ছুটাতে আরেকবার চোখে মুখে পানি দিয়ে আসে। তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে এসে দেখে জায়ান কসমেটিকস, নতুন শাড়ি, চুড়ি, হাতে নিয়ে বসে আছে।
তৃষ্ণা কে নিজের সামনে দাঁড় করিয়ে শাড়ি তৃষ্ণার গায়ে ধরে বলেন,” মাশাআল্লাহ। তোমার জন্য এই শাড়ি অর্ডার করে এক পিস বানিয়ে এনেছি। পছন্দ হয়েছে?”
তৃষ্ণা সিলভার কালারের পাতলা জর্জেট শাড়ির দিকে তাকিয়ে আছে। এতো পাতলা কেন সেটাই ভাবছে। এমনিতেই সুন্দরই।
জায়ান তৃষ্ণার হাতে পেটিকোট আর ব্লাউজ দিয়ে বলল পরে আসতে। তৃষ্ণা লজ্জায় পরে আর বেরুতে পারছে না। তাই আগে যে শাড়ি ছিল ওটাই গায়ে জড়িয়ে বেরিয়ে এলো। জায়ান তৃষ্ণার এমন অবস্থা দেখে হাসতে হাসতে শেষ।
” এভাবে থাকলে শাড়ি পরবে কি ভাবে?”
তৃষ্ণা মাথা নিচু করে বলে,” আমার কাছে দিন আমি বাথরুমে থেকে পরে আসি।”
জায়ান শাড়ি দিল না। উল্টো তৃষ্ণার গায়ে পেঁচিয়ে রাখা শাড়িটা এক টানে খুলে নিলো। তৃষ্ণা লজ্জা দুহাত দিয়ে মুখ চোখ ঢেকে ঘনঘন শ্বাস নিতে লাগে। ওর সারা শরীর কাঁপছে লজ্জায়। জায়ান তৃষ্ণার লজ্জা পাওয়া দেখে বললেন,” আজ তো লজ্জা ভাঙানোর দিন। তুমি লজ্জা পাচ্ছ কেন? তোমার হাজব্যান্ডই তো দেখছে অন্য কেউ তো দেখছে না।”
তৃষ্ণা জায়ানের দিকে পিঠ করে দাঁড়ালো মুখ ঠেকেই। জায়ান শাড়ি হাতে উঠে দাঁড়ালো।
” আজ আমি আমার হৃদয়ের রানীকে নিজের হাতে শাড়ি পরাবো, নিজের হাতে যত্ন সহকারে সাজাবো। অতঃপর নিজেই সেই সাজ সজ্জা নষ্ট করব।”
জায়ান তৃষ্ণাকে শাড়ি পরাতে শুরু করে দিয়েছে। শরীর বিভিন্ন স্থানে জায়ানের হাতের স্পর্শ লাগছে। তৃষ্ণা জায়ানের স্পর্শে কেঁপে কেঁপে উঠছে। পায়ের আঙুল ফ্লোরে ঘর্ষণ করছে। জায়ান শাড়ি পরাতে ওতোটা পারফেক্ট নয়। এজন্য তেমন ভালো হয়নি। কোন রকম পেঁচিয়ে পরিয়ে দিল। কিন্তু এতো টুকু তেই জায়ানের খুশির সীমা নাই। জায়ান শাড়ি পরানো শেষ করে বলল,” এই যে আমার লজ্জাবতী এবার তাকাও। দেখতো তোমার বর কেমন শাড়ি পরালো।”
তৃষ্ণা আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকালো। জায়ান ওর দিকে কেমন করে নেশাতুর দৃষ্টিতে যেন তাকিয়ে আছে। ও নিজের দিকে তাকালো। শাড়ি তো পরিয়েছে। কিন্তু এটা কি শাড়ি? শরীরের প্রতিবিম্ব সম্পুর্ন তো দেখা যাচ্ছে। লজ্জায় ওর কান গরম হয়ে এলো।
” আর মুখ ঠেকো না এবার তোমার মুখ মন্ডল সাজাবো আসো।”
” শাড়ি এমন ধারা কেন? আমার খুব লজ্জা লাগছে আমি এভাবে আপনার সামনে থাকতে পারব না।”
জায়ান তৃষ্ণাকে সোফায় বসিয়ে বললেন,” ওরে আমার লজ্জাবতী! একটু পর সব ছাড়াই থাকতে হবে। চুপ করে বসো এখন নো সাউন্ড।”
তৃষ্ণা জায়ানের কথা শুনে চোখ বড়ো বড়ো করে তাকালো। জায়ান ওকে সুন্দর করে সাজিয়ে দিচ্ছে। গলায় ডায়মন্ডের নেকলেস পরিয়ে দিলো। হাতে চুড়ি পরিয়ে দিলো। ঠোঁটে লিপস্টিক, চোখে কাজল, কপালে টিপ। এরপর তৃষ্ণা কে দাড় করিয়ে প্রিয় সেই কেশ পিঠে ছেড়ে দিলো। জায়ান তৃষ্ণার চুল আঁচড়ে বেলি ফুলের তোড়া চুলে লাগিয়ে দিল।
তৃষ্ণা কে আয়নার সামনে দাড় করিয়ে বললেন,” দেখতো তোমার হাজব্যান্ড কেমন সাজালো।”
তৃষ্ণা লজ্জা মাখা হাসি দিলো। জায়ান তৃষ্ণার চুলে নাক ডুবিয়ে ঘ্রাণ নিতে নিতে লাগল।
তৃষ্ণা হাত দিয়ে শাড়ির আঁচল খামচে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ওর অঙ্গ প্রতঙ্গ থরথরিয়ে কাঁপছে।
” সাজ পছন্দ হয়েছে?”
তৃষ্ণা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিলো।
” তোমাকে খুব আবেদনময়ী লাগছে জান। ”
জায়ান তৃষ্ণাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে কপালে চুমু খেল। তৃষ্ণা চোখ বন্ধ করে জায়ানের বুকে মাথা রাখল।
আজ দুটি দেহ, মন এক সুতোয় বাঁধা পরবে। স্বামী স্ত্রীর বৈধ সম্পর্ক ভালোবাসার পূর্ণতা পাবে।
এভাবে ভালোবাসায় এক সুতোয় গাঁথা থাকতে পারবে তো জায়ান তৃষ্ণা নাকি অশুভ ছায়ায় সব শেষ হয়ে যাবে?
#চলবে……