রাগে_অনুরাগে #কলমে সৌমিতা #পর্ব- ১০

0
333

#রাগে_অনুরাগে
#কলমে সৌমিতা
#পর্ব- ১০

– বাতাস প্রবাহমান,, আর শীতকালে সেই বাতাস হয় হাড় কাঁপানোর,,আর তার সাথে যদি যোগ হয় বৃষ্টির জলকণা,,,, আর এই বৃষ্টির থেকে বাঁচতে রাস্তায় ধারে থাকা ভ‍্যান গাড়ির নীচে দুটো কুকুর গুটিয়ে শুয়ে আছে,, থেকে থেকে বৃষ্টির গতিবেগ বৃদ্ধি পেতেই হাওয়াও তার গতিবেগ বাড়িয়ে দেয়,,, আজ যেন দুজনেই উঠেপড়ে লেগেছে এই প্রকৃতিকে ঠান্ডা করার জন্য,,,প্রকৃতির এই বীভৎসতা গায়েই লাগছে না সুঠাম দেহের অধিকারী মানবটির,,, সে তো দিব্বি ছাদের একপাশে দাঁড়িয়ে বিষাক্ত নিকোটিনের ধোঁয়া চারপাশে ছড়াতে ব‍্যস্ত,,,, তার পায়ের সামনে গুটিকয়েক সিগারেটের শেষাংশ লুটোপুটি খাচ্ছে,,,,, এইদিকে প্রকৃতির এই বৃষ্টি তাকে ভিজিয়ে দিয়ে গেলেও মনকে ভিজাতে পারছে না,,,, পারছে না সেই মানবটির অশান্ত মনকে ঠান্ডা করতে,,,,,

– নিকোটিনের শেষাংশ টা হাত থেকে ফেলে দেয় অভ্র,,,তারপর হাত দিয়ে ভিজে যাওয়া চুল গুলো উল্টিয়ে জল ঝাড়ে,,,,,নিজেকে নিজের কাছেই কেমন অসহায় লাগছে ওর,,এতক্ষণ যাবৎ ভেবে ভেবে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েই নেয়,,তারপর আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,,

– আজ নিজেকে খুব অসহায় মনে হচ্ছে,,,এই পৃথিবীতে আমি ঠকে গিয়েছি বহুবার,, এক বন্ধুত্বে আর দুই ভালোবাসায়,,,ভুল করেছি ভালোবাসার মানুষটিকে চিনতে,,, আমি তো সিদ্ধান্ত নিয়েই ছিলাম দ্বিতীয় বার এই ভালোবাসা নামক অনুভূতিতে নিজেকে আর জড়াবো না,,,কিন্তু আমার অবচেতন মনে কখন যে অনুপমার জন্যে ভালোবাসা নামক সেই অনুভূতি গুলো প্রবেশ করেছে তার টের আমি পাইনি। যখন পেলাম তখন আমি নিজের অনুভূতি গুলো তার সামনে প্রকাশ করতেই পারছি না,, বা প্রকাশ করতে গেলেই সে ভুল বুঝছে,,,, ভাগ‍্যের কি পরিহাস যাকে ভালোবেসে ছিলাম সে আমাকে ঠকিয়েছে,, আর যাকে এখন ভালোবাসতে চাইছি,,নিজের করে নিতে চাইছি ,,,নিজের অস্তিত্বের সাথে মিশিয়ে নিতে চাইছি,,,চাইছি নিজের করা ভুল গুলোকে সংশোধন করতে কিন্তু এখন সে আমাকে অজুহাত দেখিয়ে দূরে সরিয়ে রাখতে চাইছে,,,ঠিক আছে দূরে সরিয়ে রাখতে চাওতো তবে তাই হবে অনুপমা,,,আমি ভেবেছিলাম আমাদের এই স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কটা সত্যি করে নিতে কিন্তু তুমি যখন চাও না তখন আমি আর এগোবো না,,,কিন্তু তোমাকে আমি বোঝাবো বিরহ কি জিনিস,,, যদি তুমি এই বিরহের কাছে হেরে যাও তবেই আমি আমার অধিকার নিতে আসবো তোমার কাছে,, (এই কথা গুলো বলে অভ্র ছাদ থেকে নিচে নেমে আসে,,, তারপর ঘরে এসে ওয়াশরুমে চলে যায় ফ্রেস হতে,,)

– প্রায় আধাঘণ্টা শাওয়ার নিয়ে চেঞ্জ করে বেরিয়ে আসে অভ্র,,,আর সাথে সাথে চোখ চলে যায় অনুপমার দিকে,,,মেয়েটা কিভাবে গুটিসুটি হয়ে শুয়ে আছে সোফায়,,,, অভ্র ভালো করে একবার চেয়ে বিছানা থেকে একটা চাদর এনে গায়ে দিয়ে দেয় অনুর,,,তারপর ঘর থেকে বেরিয়ে যায়,,, রাতটা সে আজকে স্ট‍্যাডিরুমেই কাটাবে,,,,
_________________________________________

-রাতে কাঁদতে কাঁদতে কখন যে অনুর চোখ লেগে গিয়েছিল তা ও বুঝতে পারেনি,,,সকালে মিষ্টি রোদের আলোয় ওর ঘুম ভাঙ্গে,,,ঘুম থেকে উঠে দেখে ঘরে অভ্র নেই,,, ফোনে সময় দেখে সকাল ছটা বেজে পাঁচ হচ্ছে,,,

– মি.চৌধুরী কি রাতে ঘরে আসেননি?? তাহলে উনি কোথায় ছিলেন,,, চল অনু তাড়াতাড়ি স্নান করে নীচে নাম,,,,রেডি হয়ে অনুর নীচে নামতে নামতে সাতটা বেজে যায়,,,, তারপর সারা বাড়ি খুঁজেও অভ্রের দেখা না পেয়ে আশার উদ্দেশ্যে বলে,,,

– মা চা খাবে??আমি করবো?? আর এত সকালে নিচে কেন তুমি??

– দেখো মেয়ের কথা,, কাজ ছিল তাই। আর চা করতে হবেনা আমার চা খাওয়া হয়ে গেছে,,, তুই খেতে বস,,মুন্নী লুচি আর তরকারি টা নিয়ে আয়,,

– মা আজ এত তাড়াতাড়ি সকালের টিফিন হয়ে গেছে??

– হ‍্যাঁ হয়ে গেছে,,অভ্রের জন্য তো করতে হলো,, ও তো ৫টার সময় বেরিয়ে গেল,,,৬টা কতোয় বলল ফ্লাইট আছে,,,,

– ফ্লাইট মানে কি বলছো??আমি তো কিছু জানি না,,,

– অভ্র তোকে বলে যায় নি,,,?? হয়তো তুই ঘুমাচ্ছিলিস বলে আর ডাকিনি,,,হঠাৎ করেই নাকি আজকে অফিসের কি মিটিং ডেকেছে তাইতো তড়িঘড়ি করে ওকে চলে যেতে হলো,,

– কোথায় গিয়েছেন উনি??

– দিল্লিতে,,,

– ওওও ঠিক আছে,,আচ্ছা মা তুমি খেয়ে নাও আমি একেবারে কলেজের জন্য রেডি হয়ে আসছি তারপর খাবো,,(বলেই উপরে চলে গেল অনু)

– হ‍্যাঁ রে মুন্নী তোর দাদাভাই আর বৌদিভাই এর মধ্যে কি কিছু হয়েছে??

– তা তো জানি না,,, কেন কর্তামা???

– না এমনি,,জানি না ছেলে মেয়ে দুটোর মধ্যে কি হয়েছে কে জানে???
_________________________________________

-আমাকে তো আপনি মানুষ বলেই মনে করেন না,, যে চলে যাওয়ার সময় একবার হলেও তো বলে যেতে পারতেন,,,,ভালো আমার কি,,,আমি একদম আপনাকে নিয়ে ভাববো না,,,করবো না আপনাকে মিস,,,থাকুন আপনি আপনার কাজ নিয়ে,,,(বলেই খানিকটা কেঁদে নিলো অনু)

– সেদিনের পর থেকে প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গেছে অভ্র এখনো বাড়ি ফেরেনি,,এই এক সপ্তাহে অনুর সাথে ওর কোনো কথাই হয়নি,,, মাঝে মাঝেই বাবা মার সাথে কথা হয়েছে,,,এমনিতেও অভ্রের কাজের চাপ ভীষণ,,,,এই দিকটার সব কিছু এখন ওকেই সামলাতে হয় বাবা অসুস্থ হওয়ার পর থেকে কোথায় কি মিটিং হয় সবকিছু ওকে ঠিক করতে হয়,,, সারাদিন কাজের চাপ থাকলেও রাতে দু-চোখের পাতা এক করতে পারে না অভ্র,,নীলার দেওয়া সব আঘাতের কথা ওর মনে পড়ে,,,শুধু তো ভালোই বেসেছিল,,,কিন্তু মেয়েটা সেই ভালোবাসার মর্যাদা দিতে পারে নি,,, আর এখন অনু,,না আর একই ভুল সে আর দ্বিতীয় বার করবে না,,,(এই সব কথা ভাবতে ভাবতে অভ্র মদের গ্লাসে চুমুক দেয়,,,সচারাচর অভ্র মদ্যপান করে না,, কিন্তু এখন এমন এক পরিস্থিতি যার চাপে অভ্র এখানে এসেও রাতে প্রায় ড্রিংক করে,,,)

– আর এইদিকে অনুপমার অবস্থা প্রায় নাজেহাল,,আর ওর এই অবস্থা দেখে মুন্নী বেশ মজা পাই,,, কারণ মুন্নী তো জানে অনু যতই মুখে বলুক না কেন যে ও অভ্রকে ভালোবাসে না কিন্তু বাস্তবিক অর্থে সে অনেক আগেই তার মনটা অভ্রের নামে লিখে দিয়েছে,,,, আর তার থেকেই তো জন্ম নিয়েছে এই মন খারাপের,,,

– সারাদিন কাজের মধ্যে থেকেও অভ্রের কথা মনে পড়ে অনুর,,,নিজের মনকে বারবার বুঝিয়েছে,,কিন্তু মন সে তো মানতেই চাইনা ওর বারণ,,,কারণ মন তো সর্বদাই চাই অভ্রকে ফোন দিতে,,,তার কন্ঠস্বর শুনতে,,,তার কাছে অভিযোগ করতে,,,তাকে ভালোবাসি বলতে,,,,কিন্তু ওই যে অভিমানের পাহাড় যে মনে জমেছে সেটা যে এত সহজে ভাঙবে না,,,,,
_________________________________________

– হ‍্যালো অভ্র কবে আসবি বাবা?? বাড়িটা যে ফাঁকা ফাঁকা লাগছে তোকে ছাড়া,,,

-,,,,,,,,,,,(ফোনের ওপাশে)

-কেন আর কত দিন,,এই যে বললি কাল পরশুর মধ্যে চলে আসবি,,,তুই কি আমার সেই আগের অভ্র হয়ে গেলি ?? যে শুধু নিজেকে কাজের মধ্যে ডুবিয়ে রাখতো,,,,

-,,,,,,,,,,,,(ফোনের ওপাশে)

-ঠিক আছে রাখছি,,, তুই যা ভালো বুঝিস তাই কর,,,সাবধানে থাকবি,,,(ফোন রেখে দিলেন আশাদেবী)

– কি বললো মা তোমার ছেলে?? কবে আসবেন উনি??

– বললো এখনো এক সপ্তাহ লাগবে আসতে,,,ওখানে নাকি ভীষণ প্রেসার কাজের,,,,

– ওওও(আমি জানি আপনি আমার জন‍্যেই আসছেন না,,,ঠিক আছে আমিও দেখি তুমি কালকের মধ্যে না মানে আপনি কালকের মধ্যে না এসে থাকেন কি করে)

– মুন্নী বাড়িতে কি রসুন আছে??(অনু)

-হ‍্যাঁ আছে বৌদিভাই,, কিন্তু কেন??

– এমনি দরকার আছে,,,আচ্ছা তুই বাবাকে এই চা টা দিয়ে আয়,,(মুন্নী চলে গেলে অনু দুটো রসুন নিয়ে উপরে চলে যায়)
________________________________________

– মিটিং শেষ করে আসতে বেশ রাত হয়ে যায় অভ্রের,, আজকাল কাজের চাপটাও বেশি,,,আর ও নিজেই ইচ্ছা করে কাজে ডুবে থাকে,,,বেশি দেরি হয়ে যাওয়ায় তাড়াতাড়ি হোটেল রুমে ঢুকে ফ্রেস হওয়ার জন্য ওয়াশরুমে যায়,, কিছুক্ষণ পর ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে সোফায় বসে ফোন চেক করে,,এটা ওর প্রতিদিনের রুটিন,, যবে থেকে এখানে এসেছে তবে থেকেই সময়ে অসময়ে ফোন চেক করে,এই আশায় যে এই বুঝি অনুপমা ফোন করলো,,কিন্তু প্রতিবারই ও ব‍্যর্থ হয়,,,,সারাদিন পরিশ্রমের পর আজ কেমন যেন ক্লান্ত হয়ে গেছে অভ্র,,তাই হাতের ফোনটা টেবিলের উপর রেখে বিছানার দিকে এগিয়ে যেতে থাকে,,,,

– এই বুঝি আপনার আসার সময় হলো??আমি সেই কখন থেকে আপনার জন‍্য অপেক্ষা করছি এখানে,,আপনার কি আমার জন্য একটুও চিন্তা হয়না???

-তুমি??তুমি এখানে কি করে??আর আমার রুম নম্বর পেলে কি করে?আর চাবি??(অনুর কন্ঠস্বর শুনে পিছন ফিরে অবাক হয়ে প্রশ্ন করে অভ্র)

– শান্ত হন মি.চৌধুরী,, এত উত্তেজিত হওয়া শরীরের পক্ষে খারাপ,,, আর আমি আজ দুপুরে এসেছি যখন আপনি মিটিং করতে ব‍্যস্ত ছিলেন তখন,,

– তা হঠাৎ এখানে আসার কারণ কি অনু??( গম্ভীর হয়ে)

– কোনো কারণ নেই মি.চৌধুরী,,এমনি মন হলো তাই চলে এলাম,,

– ঠিক করোনি অনুপমা,,

– কি ঠিক করিনি আমি মি.চৌধুরী বলুন???

– এই যে তোমার আসা উচিত হয়নি,,,,আমার কাছে তোমার আসা উচিত হয়নি সত‍্যিই উচিত হয়নি,,,

– এই মি.চৌধুরী আপনি কি বলতে চাইছেন??একজন স্ত্রীর তার স্বামীর কাছে আসা উচিত হয় নি,,,(অভ্রের কাছে গিয়ে ওর জামার কলাট ধরে চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন করে অনুপমা)

-(অনু এক নাগারে অভ্রেরর দিকে প্রশ্নবিদ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে আছে যা ক্রমশ অভ্রকে দুর্বল করে দিচ্ছে,,অভ্রের যেন আজ আর ধৈর্য নেই,, ক্রমেই ওই মায়াময় দুই চোখে ডুব দিতে ইচ্ছা করছে ওর,,,তবুও নিজেকে সংযত করে বলে,,,,)

– না আসা উচিত হয়নি,,, আর আমরা কিসের স্বামী স্ত্রী অনু??তুমি কি মানো এই সম্পর্ক??

– অভ্রের মুখে এমন কথা শুনে কিছুক্ষণ ওইভাবে দাঁড়িয়ে থাকে অনু,,তারপর ধিরে ধিরে অভ্রকে ছেড়ে একটু সরে দাঁড়িয়ে বলল,,,

– যদি বলি মানি এই বিয়ে,,,যদি বলি মানি এই স্বামী-স্ত্রীর পবিত্র সম্পর্ক,,,যদি বলি এই এক সপ্তাহ আপনাকে ছাড়া আমার এক একটা দিন এক একটা বছরের মতো লেগেছে,,,(তারপর চোখের জল মুছে আবার অভ্রের উদ্দেশ্যে বলে,,) অবশ্য আপনি এইসব বুঝবেন না মি.চৌধুরী,,, আর স্বামী- স্ত্রীর সম্পর্কের গভীরতাও বুঝবেন না,,,যদি বুঝতেন তাহলে একটাবারের জন্যে হলেও আপনি আমাকে ফোন করতেন,,বা এখানে আমাকে এইভাবে দেখে খুশি হতেন,,,কিন্তু না আমি ভুল,,, আমি জানি আপনার মনে আমার জন্যে কোনো জায়গা নেই,, রয়েছে শুধু ওই নীলাঞ্জনার জন্য,,, আর এটাই স্বাভাবিক,,, মেনেও নিয়েছিলাম সেটা,,, কিন্তু এই পোড়া মন মাঝে মাঝেই বেহায়া হয়ে যায়,,,,ঠিক আছে আমি চলে যাচ্ছি,,, আপনাকে বিরক্ত করার জন্য সরি,,পারলে ক্ষমা করে দেবেন,,(বলেই অনু চলে যাচ্ছিল কিন্তু অভ্র পিছন থেকে একটা হাত টেনে অনুকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়,,,তারপর অনুর কানের কাছে মুখটা নিয়ে গিয়ে শান্ত কন্ঠে বলে ওঠে,,,,)

– এই পাগলামি টা আর কটা দিন আগে করতে পারলেনা অনু???আমি যে তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি,,কবে এই শক্ত হৃদয়ে তোমার ভালোবাসার অনুভূতি প্রবেশ করে তাকে কোমল করেছে জানিনা,,,এই আমিটা আর আমার মধ্যে থাকে না যখন তুমি আমার চারপাশে বিচরণ করো,,,আমার এই হৃদয়ে তোমার আনাগোনা তো অনেক আগে থেকেই হয়েছিল অনু শুধু আমি বুঝতে পারিনি আর যখন পেরেছি,, গিয়েছি তোমার কাছে কিন্তু তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলে অনু,,,

– অভ্রের কথা গুলো শুনে অনু কেঁদে দেয়,,,তারপর অভ্রকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে,,,

– ভুল করেছিলাম আমি সেদিন মি.চৌধুরী,,,আসলে আপনার প্রতি আমার অভিমান হয়েছিল,,আমিও আপনাকে খুব ভালোবাসি মি.চৌধুরী,,,, আপনি আমাকে এতটা কষ্ট কীভাবে দিতে পারলেন বলুন??আসার সময় একটা বারের জন্য বলেও আসলেন না??

– সরি অনুপমা ভুল হয়ে গেছে আর কোনো দিন এমন টা আর হবে না,,(কপালে চুমু খেয়ে)

– আপনি খুব পচা,,,খুব খারাপ একটা লোক,,,কিন্তু দেখুন সেই আপনিটাকেই আমি খুব ভালোবেসে ফেলেছি,,(অভিমানী কন্ঠে)

– আমি জানি তো ,,(অনুকে কোলে তুলে)এবার এই খারাপ,, পচা লোকটাকে যে তোমাকে সারা জীবন সহ‍্য করতে হবে অনুপমা,,(অনুকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে)

– সহ‍্য করার ক্ষমতা আপনার থেকেও আমার একটু বেশিই আছে,, বুঝেছেন,,,??

– সত্যি অনু??সব কিছু সহ‍্য করতে পারবে তো??আমি যে তোমাকে খুব জ্বালাবো,,(বলেই অনুর ওই কোমল রক্তিম অধরযুগল নিজের অধরযুগলে আবদ্ধ করে নেয়,,,অধরযুগল আবদ্ধ করার খেলায় উভয়ই মেতে ওঠে ক্ষণিকের মধ্যে,,,অনুর সারা শরীর যেন হালকা হয়ে যায় অভ্রের উষ্ণ স্পর্শ নিজের শরীরে পেয়ে,,,নিজের উত্তেজনা কে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য দুটো হাত দিয়ে খামচে ধরে অভ্রের মাথার দীর্ঘ চুল,,, বন্ধ ঘরে ক্রমেই বেড়ে চলেছে দুটি হৃদয়ের মিলিত হওয়ার উত্তেজনা,,, প্রচন্ড শীতের মাঝেও আজ দুটো শরীর ঘেমে উঠছে,,,,অভ্র অনুর অধরে একটা লাভবাইট দেয়,, অনুর উপর থেকে উঠে নিজের পরনের টিশার্ট খুলে ফেলে দেয় বিছানার নিচে,,,মুহূর্তেই লজ্জায় অনুর মুখ রক্তিমময় হয়ে ওঠে,,আর তার লজ্জা নিবারণ করার জন্য অভ্র নাইট ল‍্যাম্প অফ করে দেয়,,তবুও ওই চাঁদের আলোয় ঘর হয়ে ওঠে জ‍্যোৎস্নাময়,,,আর এদিকে অনু হয়ে ওঠে আরো আবেদনময়ী,,,,তারপর যখন অভ্র অনুর শরীর থেকে শাড়িটা একটু সরিয়ে পেটের উপর হাত দিয়ে স্লাইড করতে থাকে তখন অনু বারবার কেঁপে উঠে অভ্রকে আঁকড়ে ধরে,,,দুজনেই যেন এক ঘোরের মধ্যে রয়েছে হঠাৎ ফোনের রিংটোনের আওয়াজে অভ্রের ঘোর কাটে,,ধরফর করে উঠে দেখে বাড়ির ফোন,,, মা ফোন করেছে,,,ও রিসিভ করতেই,,

– হ‍্যালো অভ্র অনু,,

– হ‍্যাঁ মা অনু তো,,(অভ্রকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে আশা বলে)

– তুই যত তাড়াতাড়ি পারিস চলে আয় বাবা,,মেয়েটার যে খুব শরীর খারাপ,,, ডাক্তার ডাকা হয়েছে,,,

– কি বলছো কি মা অনু তো(পাশে তাকিয়ে দেখে ও সোফায় শুয়ে আছে,, আর অনু কোথাও নেই,,,,তারপর নিজেই বলে ওঠে,, তাহলে আমি কি এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিলাম?? স্বপ্নও কি এতটা বাস্তব হয়??)

– হ‍্যালো অভ্র তুই শুনতে পাচ্ছিস???

– হ‍্যাঁ মা শুনতে পারছি?? আর কি হয়েছে অনুর??(উত্তেজিত হয়ে)

– সকালে ভালো ছিল,, দুপুর থেকে ৩-৪ জড় উঠছে,,,কাঁপ দিয়ে,, কিচ্ছু খাচ্ছে না,,যদিও বা খাচ্ছে তা সব বমি করে তুলে দিচ্ছে,,,,ডাক্তার এসেছিল,,,ওষুধ দিয়ে গেছে বললো এতে যদি না কমে তাহলে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে,,, আমার ভীষণ ভয় করছে অভ্র,, তোর বাবাও ভীষণ চিন্তা করছে,,,তুই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চলে আয়,,রাখছি,,

– অনুর এই অবস্থা শুনে অভ্র একদম রেডি হয়ে এয়ারপোর্টে চলে যায় হোটেল থেকে,,,

– আমি আসছি অনু ,,তোমার কিছু হবে না,,, সত্যিই তো মেয়েটার একটা খোঁজ নেওয়া আমার উচিত ছিল,,, সরি অনুপমা আমি আসছি,,

চলবে….

( কপি পেস্ট করবেন না,,, সবাই রিয়‍্যাক্ট ও মন্তব্য করবেন। )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here