রাগে_অনুরাগে #কলমে সৌমিতা #পর্ব- ১৪

0
311

#রাগে_অনুরাগে
#কলমে সৌমিতা
#পর্ব- ১৪

– অনেক কান্নাকাটির পর অনুপমা নিজেকে শান্ত করে,,,আর মনে মনে ঠিক করে অভ্রের সাথে কথা বলবে,,এইভাবে ওকে ভুল বুঝে দূরে সরিয়ে দিলে তো ও মরেই যাবে,,সেটা কিছুতেই হতে দেওয়া যাবে না,,, তাই মাঝ রাতে অনু অভ্রকে খুঁজতে গিয়ে দেখে সে স্ট‍্যাডিরুমে নেই,,এমনকি সারা বাড়ির কোথাও নেই,,,তারপর ছাঁদে গিয়ে দেখে ওখানে আরামকেদারায় আধশোয়া ভাবে শুয়ে আছে অভ্র,,,আর হাতে তার জলন্ত সিগারেট ,,পায়ের নিচে পড়ে আছে অনেক গুলো সিগারেটের শেষাংশ,,,আর তার পাশে পরে আছে মদের বতল ও কাঁচের গ্লাস,,,, যেটা দেখে অনু একেবারে কেঁদেই ফেলে,,,ওর জন্যে যে অভ্র এতটা কষ্টে আছে সেটা মানতেই পারে না অনুপমা,,,নিজের চোখের জল মুছে সামনের দিকে খুবই সন্তপর্ণে এগিয়ে গিয়ে দাঁড়ায় ও,,তারপর অভ্রের কাঁধে হাত দিয়ে বলে,,

– কেন আপনি নিজেকে কষ্ট দিচ্ছেন এইভাবে মি.চৌধুরী??? আর এই সব কি শুরু করেছেন আপনি??

– হঠাৎ কাঁধে কারোর হাতের স্পর্শ পেয়ে বেশ চমকে ওঠে অভ্র,,কিন্তু পরমুহূর্তেই অনুপমার কন্ঠস্বর শুনে গম্ভীর হয়ে বিষাদ দৃষ্টিতে অনুপমার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,,,

– ছোঁবে না একদম তুমি আমাকে অনুপমা,,, তোমার ওই নোংরা হাত দিয়ে তো নয়,,আমি তোমাকে সহ‍্য করতে পারছি না,,, তুমি প্লিজ চলে যাও এখান থেকে,,(কথা গুলো বলেই হৃদয়ের দেওয়া সেই খামটা অনুপমার হাতে দিয়ে আরামকেদারায় থেকে উঠে দাঁড়ায় অভ্র,,,,তারপর একপলক অনুর দিকে তাকিয়ে ছাদের রেলিংয়ের কাছে চলে যায়,,,,অনু কিছুক্ষণ অভ্রের দিকে তাকিয়ে থেকে হাতের খামের দিকে তাকায়,,, তারপর খাম থেকে জিনিস গুলো বের করে দেখে ওর আর হৃদয়ের কিছু ঘনিষ্ঠ ছবি,,, অনু সেই গুলো দেখে আরও কেঁদে ফেলে,,,কাঁদতে কাঁদতে একসময় অভ্রের দিকে তাকিয়ে দেখে,, অভ্র পিছন ফিরে প‍্যান্টের দুপাশের পকেটে হাত গুজে দাঁড়িয়ে আছে,,, ও অভ্রের কাছে গিয়ে ওর পায়ের কাছে বসে পড়ে,,)

-অনুপমাকে এইভাবে ওর পায়ের কাছে বসে কাঁদতে দেখে অভ্রের ভীষণ কষ্ট হয়,,,বুকের ভেতর তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করে,,, অনুপমার কান্না ওর সহ‍্য হচ্ছেনা এই মুহূর্তে,,, তাই কপট রাগ দেখিয়ে বলে,,,,

– এখানে এই সব নাটক কেন করছো অনুপমা??আমি তো তোমাকে বললাম কটাদিন অপেক্ষা করো তারপর তুমি মুক্ত,,, আর এখন তুমি প্লিজ যাও,,,আমাকে একটু একা থাকতে দাও,,,

– কিন্তু আমার যে আপনাকে অনেক কিছু বলার আছে মি.চৌধুরী,,(চোখের জল মুছে বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে অনুপমা নিজেকে সামলে নেয়,,,আজ আপনাকে সব বলবো মি.চৌধুরী,,,এমনকি আমার মনের কথা টাও বলবো,,,আমি জানি আপনি আমাকে ফেরাতে পারবেন না,, কারণ আপনিও আমাকে ভালোবাসেন,,, নাহলে এত কষ্ট আপনি পেতেন না,,,,)

– কিন্তু আমার কিছু শোনার নেই অনুপমা,,,তুমি এখন আসতে পারো,,,

– মি.চৌধুরী এই ছবি গুলো আমাদের বিয়ের অনেক আগের,,যখন আমি হৃদয়কে ভালো বাসতাম,, কিন্তু বিশ্বাস করুন ও এখন আমার অতীত,,ওর সাথে আমার এখন কোনো যোগাযোগ নেই,,

– তুমি এত কথা আমাকে কেন বলছো,,,তোমার ওর সাথে সম্পর্ক থাকলো কি না থাকলো তা নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই,,,, আর আমি তো বলেই ছিলাম তোমাকে, যে ছয় মাসের জন্য তুমি আমার স্ত্রী হিসেবে থাকবে এই বাড়িতে,,, ছয় মাস কিন্তু অনেক দিন আগেই শেষ হয়ে গেছে অনুপমা,,,,

– কিন্তু আপনি আমার কথাটা একটু শুনুন মি.চৌধুরী,,,

-কি শুনবো,,,কিছু তো শোনার নেই,,,জাস্ট তুমি আমাকে মুক্তি দাও,,আর পরের মাসে আমাকে এমনিতেই শিউলিগুড়িতে যেতে হবে তাই আমি চাইছি,,

– কি চাইছেন বলুন??আমাকে চলে যেতে হবে তাই তো,,,ঠিক আছে,,(আপনি যখনই আমার কোনো কথা শুনতে রাজি নন তাহলে আপনার ইচ্ছা যা তাই হোক,,)

-চলে তো যাবে অবশ্যই কিন্তু তার আগে ডিভোর্স পেপারে সাইন টা করে যাবে,,,,আশা করছি ডিভোর্সের পেপার টা তাড়াতাড়ি চলে আসবে,,,(আমি তো জানি তুমি এই সুযোগটাই চাইছিলে)

– ঠিক আছে,,, আপনি যা বলবেন তাই হবে,,,কোথায় সই করতে হবে বলবেন করে দেবো,,,(কথা গুলো বলেই নিচে চলে যাচ্ছিলো অনুপমা,,কিন্তু আবার কি মনে করে অভ্রের দিকে যায়,, আর বলে,,)

– শুনুন এখন চলুন এখান থেকে,,ঘরে গিয়ে শোবেন,,,বেশ ঠান্ডা আজকে,, এত রাতে ছাদে থাকলে ঠান্ডা লেগে যাবে আপনার,,, আমার ঘরে থাকা নিয়ে যদি আপনার সমস্যা হয় তাহলে আমি গেস্টরুমে চলে যাচ্ছি,,, তবুও আপনি চলুন,,,

-তুমি যাও, ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ো অনুপমা,,,, আমি এখানেই ঠিক আছি,,,অনেক রাত হয়েছে তর্ক করতে চাইছি না,,,(গম্ভীর হয়ে)

– অভ্রের কথাগুলো শুনে অনুপমা আর দ্বিরুক্তি করে নি,,,সোজা সেখান থেকে ঘরে চলে আসে,,,,নিজেকে লুটিয়ে দেয় বিছানার মাঝে,,অশ্রুজলে বালিশ ভিজে একাকার হয়ে যায় তবুও মনের কষ্ট কমে না,,,,
____________________________________________

-পরের দিন সকালে সবাই পূজো নিয়ে ব‍্যস্ত,,,বাড়িতে লোক জন ভর্তি,, অনু সকাল থেকেই অভ্রের সামনে যায় নি,,,কিন্তু অভ্রের প্রয়োজনীয় প্রত‍্যেকটা জিনিস ও বিছানার উপর দিয়ে এসেছিল,,

– দাদাভাই কোথায় গিয়েছে তোমাকে কিছু বলে গেছে বৌদিভাই??

– কেন মুন্নী তোর দাদাভাই তো ঘরেই ছিলেন,,, কেন কি হয়েছে??

– কর্তামা দাদাভাই কে ডাকতে গিয়েছিল ,,,কিন্তু ঘরে গিয়ে দেখে দাদাভাই নেই,,,আর অফিসে যেই ব‍্যাগটা দাদাভাই নিয়ে যায় সেটাও নেই,,,,

– তার মানে উনি হয়তো অফিসে চলে গিয়েছেন,,,(যাওয়ার সময় একবারের জন্য হলেও বলে গেলে কি এমন ক্ষতি হতো,,, তবে কি আমার সাথে পূজোই বসবেন না বলে এত তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গেলেন মি.চৌধুরী??)

– ও বৌদিভাই কি ভাবছো??

– কিছু না মুন্নী,,, তুই এক কাজ কর,,,ফল গুলো এনে দেতো আমি তৈরি করে রাখি,,,পিসি ঠাম্মাম একা পারবেন না,,,,

– ঠিক আছে,,,, যাচ্ছি,,,

– ছেলেটা সেই কখন বেরিয়েছে ,,,কালকে এতবার করে বললাম যে অভ্র আজকে বাড়ি থাকিস পূজো আছে,, তোর আর অনুকে পূজোই লাগবে,,তা দেখো আমার ছেলে ঠিক বেরিয়ে গেল,,,,আমার আর ভালো লাগে না,,, আচ্ছা অনু ও যখন বেরোতে যাচ্ছিল তখন তুই একবার আটকালি না কেন??এই গুলো তোর ভারী অন‍্যায়,,,তোদের দুজনের নামে পূজো রেখেছি ,

– আচ্ছা আশা তুই এখন একটু চুপ কর,,,ওই দিকে দেখ ব্রাহ্মণের আর কিছু লাগবে কিনা??(পিসিমা)

-ও কর্তামা তুমি ফালতু চিন্তা করছিলে,,ওই দেখো দাদাভাই চলে এসেছে,,,(অভ্রকে বাড়িতে আসতে দেখে মুন্নী বলে)

– অভ্র তোকে আমি কালকে তো বললাম যে আজকে কোথাও যাবি না,,,সেই তুই আমার অবাধ্য হয়ে বেরিয়ে গেলি???

– মা ভীষণ দরকারি একটা কাজ ছিল,,, ওই জন্যে যেতে হয়েছে,,, কিন্তু দেখো আমি এক ঘন্টার মধ্যে চলে এসেছি,,,,

– আচ্ছা ঠিক আছে,, এখন যা বাইরের জামাকাপড় বদলে নে,,,তারপর এখানে এসে বসবি,,পূজোতে তোদের দুজনকেই তো লাগবে,,,,অনু ওকে একটা ধোঁয়া পাঞ্জাবী বের করে দিস তো,,,,

– দেওয়া আছে মা বিছানার উপর,,, কথাটা বলতে বলতে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে আসে অনুপমা,,,অভ্র একবার অনুপমার দিকে তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিতে চাইলেও পারে না,,,, কারণ অনু আজকে একটা লাল জামদানি শাড়ি পড়েছে,,,চুল গুলো ভিজে থাকার দরুন ছেড়ে রাখা যা কোমড় পযর্ন্ত এসে লুটোপুটি খাচ্ছে,,,,সিঁথিতে সিঁদুর,,কপালে লাল টিপ, অধরযুগলে লাল রঙের লিপস্টিক,,, পায়ে লাল আলতা,,,চোখে গাঢ় কাজল,,,আর শরীরে হালকা গয়না থাকার কারণে ওকে আজ অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছে,,, বেশ কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পর নিজের সম্বিত ফিরে পাই অভ্র ,,,আর তখন খেয়াল করে অনুপমা মার সাথে বসে পূজোর কাজে সাহায্য করছে,,,একটা বারের জন্যে অভ্রের ভীষণ আফসোস হলো এই নারীটাকে সে সারা জীবনের জন্য হলেও নিজের কাছে রাখতে পারবে,,,পারবে না কখনো ছুঁয়ে দেখতে,,,পারবে কখনো এই মানবীর বুকে মাথা রেখে একটু শান্তি খুঁজতে,,, ভিতর থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো ওর,,,,অভ্র কিছু না বলে ফ্রেশ হতে চলে যায়,,,,
____________________________________________

– কিছুক্ষণ পরে অভ্র ফ্রেশ হয়ে পূজোর ওখানে আসে,,তারপর সব নিয়ম মেনে পূজো করে অনুর সাথে বসে,,,কিন্তু অনুর সাথে একটা কথাও বলেনি,,, যেটা অনুকে আরও কষ্ট দেয়,,অভ্রের এমন ব‍্যবহারে যে অনুপমার ভিতরটা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে তা একটাবারের জন‍্যেও বুঝতে দেয়নি অনুপমা,,,পূজোর শেষে সবাই যখন ড্রয়িং রুমে বসে প্রসাদ খাচ্ছে আর গল্প করছে,,তখন অভ্র সিঙ্গেল সোফায় বসে ল‍্যাপটপে কাজ করছিলো আর তার ফাঁকে ফাঁকে অনুপমাকে দেখছিল,,, আজকে ও যতই নিজের মনকে শাসন করুক না কেন,,নিজের দৃষ্টি অন‍্যদিকে দেওয়ার চেষ্টা করুক না কেন,, ঠিক এই চোখ বারবার অনুপমার দিকেই চলে যাচ্ছে,,,ঠিক এমন সময় কেউ একজন বলে,,,

– যাই বলো আশা তোমার বৌমাটি কিন্তু দারুণ হয়েছে,,, যেমন রূপবতী ঠিক তেমন গুণবতী,,,(মিসেস মন্ডল)

– হ‍্যাঁ একদম,,, আমি তো অনুপমার মতো একটা মেয়ে খুঁজছি নিজের বৌমা করবো বলে,,,(মিসেস রায়)

– এবার তোমার একটা নাতি নাতনি হলেই সম্পূর্ণ হবে পরিবার,,,বেশ বাড়িটা সারাক্ষণ জমজমাট থাকবে কি বলো,,(মিসেস মুখার্জি)

– হ‍্যাঁ হ‍্যাঁ তোমরা ঠিকই বলছো আমি তো অনুকে বলেই দিয়েছি নাতি দেখা হয়ে গিয়েছে আমার,, এবার একটু নাতির ঘরে পুতির মুখটা দেখা,,,এখন দেখি সেই সৌভাগ্য আমাদের কবে হয়???( পিসিমা)

– এতক্ষণ এদের কথা শুনে অনুপমার তো লজ্জায় মুখ লাল হয়ে গিয়েছে,,, আর অভ্রতো অবাকের চরম পর্যায়ে চলে গিয়েছে,, মানে প্রসাদ খেতে খেতে বাচ্চার প্লানিং,,, সত‍্যি এরা পারেও বটে,,,

– হ‍্যাঁ তোমরা ঠিক বলেছো আমার বৌমাটা সত‍্যিই খুব ভালো,,, ও আমার মেয়ে,,,, আমার সংসার এখন ওর হাতেই,,,, আর আমিও ওকে বলে দিয়েছি যে এবার আমি যেন তাড়াতাড়ি নাতি নাতনির মুখ দেখতে পাই,,,,,

– অনুপমা এদের কথা শুনে আর এক মুহূর্তের জন্যে ওখানে দাঁড়ায় নি,,,,সোজা ঠাকুর ঘরে চলে যায়,,, আর অভ্র সে ল‍্যাপটপটা হাতে নিয়ে উপরে চলে যায়,,, হঠাৎ এদের দুজকে এইভাবে চলে যেতে দেখে ড্রয়িংরুমে হাসির রোল পড়ে যায়,,,,,
__________________________________________

– সব গেস্ট রা চলে গেছে খানিকক্ষণ আগে,,,অনুপমা পিসি ঠাম্মাম কে তার ঘরে দিয়ে এসে ঠাকুর ঘরের সব কিছু গুছিয়ে আশার ঘরে যায়,,,

-মা আসবো?

-মার কাছে আসবি তার আবার অনুমতি নিতে হবে নাকি,,পাগল,,

-না আসলে বাবা,,ঘুমিয়ে পড়েছে কিনা

-হ‍্যাঁ ঘুমিয়ে পড়েছে,, স্ট‍্যাডিরুমে গিয়ে দেখে এলাম বই বুকে নিয়ে ঘুমাচ্ছে,,,

-ও ঠিক আছে আসছি তাহলে আমি,,,

– শোন অনু আমি কিন্তু তোর বাবার উপর খুব রেগে আছি,,,আজ পূজোতে সবাই এলো শুধু তোর বাবা আর পিসি এলো না,,,দাদাকে আমি কতবার করে বললাম,,

-আসলে মা বাবার শরীর টা নাকি এই কদিন ভালো যাচ্ছে না,,, আর এই অবস্থায় পিসিও বাবাকে একা রেখে আসতে পারে নি,, আমাকে সকালে ফোন করে ছিল,,, তুমি ব‍্যস্ত ছিলে আর তারপর পূজোর কাজে আমিও ব‍্যস্ত হয়ে পড়লাম ওই জন্য আর বলা হয়নি,,,

-ওওও আচ্ছা ঠিক আছে,,, বাবার শরীর টা ভালো হলে একদিন আসতে বলিস,,,,আর তুই এক কাজ কর,,কদিনের জন্য একটু বাবার বাড়ি থেকে ঘুরে আয়,,দেখবি বাবার ভালো লাগবে,,,বিয়ের পর থেকে তো তেমন একটা যাসনি ঐ বাড়িতে,,,আমি অভ্রের সাথে এই বিষয়ে কথা বলে নেবো,,,

-ঠিক আছে মা ,,

-আর শোন এটা রাখ,,,আজ থেকে এই বাড়ির সব দায়িত্ব তোর,,,এমন কি আমাদের সবার দায়িত্বও তোর,,(চাবির গোছা অনুপমার হাতে দিয়ে)

-না মা আমি এটা নিতে পারবো না,,, এত বড়ো দায়িত্ব তুমি আমাকে দিও না,,

-চুপ খুব পারবি তুই,,,,এখন যা আমি ঘুমাবো,,,আর শোন যাওয়ার সময় আলোটা নিভিয়ে দিয়ে যাস,,,,
___________________________________________

– মায়ের কাছ থেকে চাবির গোছা নিয়ে সোজা নিজের ঘরে চলে আসে অনু,,,তার পর আলমারিতে চাবির গোছাটা রেখে দিয়ে বলে,,সরি মা এটার যোগ্য হয়তো আমি না,,,তাই রাখতে পারবো না আমার কাছে,,,আর সত‍্যি বলতে মাত্র কদিনের অতিথি আমি এই বাড়ির,,, আমি জানি চাবিটা রেখে গেলে তুমি ঠিক বুঝবে আমাকে,,,

– কথা গুলো আপনমনে বলেই ওয়াশরুমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো অনুপমা কিন্তু হঠাৎ এমন সময় অনুর ফোন বেজে ওঠে,,,ও টেবিলের উপর থেকে ফোনটা নিয়ে দেখে একটা আননোন নম্বর থেকে কল এসেছে,, এবং ওর দেখতে দেখতে সেটা কেটেও গেছে,,,ও ফোনটা রেখে দিয়ে যেই পিছন দিকে ফেরে,,ঠিক তখনই আবার ফোনটা বেজে ওঠে,,, ও দুমনা হয়ে ফোন রিসিভ করে,,,

-হ‍্যালো কে?

-,,,,,,,

-তুমি কেন ফোন করেছ??আমার নম্বর কি করে জানলে হৃদয়??আমি তোমাকে শেষ বারের মতো বলছি আমার আর আমার স্বামীর জীবন থেকে চলে যাও তুমি,,,

-,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

-না আমি তোমাকে ভালোবাসি না,,,আমি শুধু মাত্র আমার স্বামী কে ভালো বাসি,,,

-ওদের কথা চলা কালিন অভ্র ফোন হাতে নিয়ে ঘরে ঢুকতে গিয়েও ঢোকে না কারণ ও বাইরে থেকে শোনে অনু কার সাথে আস্তে আস্তে ফোনে কথা বলছে,,এত রাতে কার সাথে কথা বলছে সেই কৌতূহলকে দমিয়ে না রাখতে পেরে দরজার কাছে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে অভ্র,,,

– আমি তো তোমাকে বললাম হৃদয় কেন শুনছো না তুমি,,, আগের কথা আমি কিছুই ভুলিনি,, আর ভুলতেও চাই না,,

– বাহঃ তাহলে এত রাতে পুরোনো প্রেমিকের সাথে কথা বলছে অনুপমা,,ভালো আমি তো জানি অনুপমা তুমি পুরোনো কিছুই ভুলতে চাও না,,,ক‍্যারিঅন,,,(কথা গুলো বেশ তাচ্ছিল্যের সাথে বলেই ওখান থেকে চলে যায় অভ্র)

– হ‍্যাঁ আমি সত‍্যিই ভুলতে চাই না সেইসব দিন যেগুলো আমি পেরিয়ে এসেছি,,আমি ভুলতে চাইনা হৃদয় যে একদিন তুমি আমাকে ঠকিয়েছিলে এবং আমাকে ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলে বিদেশে,,,আর ভাগ‍্যিস সেইদিন চলে গিয়েছিলে ,,,নাহলে তো আমি অভ্রের মতো অমন একটা মানুষ কে এই জীবনে পেতাম না,,, আর তুমি ওর অফিসে গিয়ে ছিলে কেন??ভবিষ্যতে আর এমনটা করো না,,,, তার ফল কিন্তু ভালো হবে না,,আর আমাকে ফোন দেওয়ার আগে একটা কথা অবশ্যই মাথায় রাখবে আর সেটা হলো আমি মি.অভ্র চৌধুরীর বৌ,,,মিসেস অভ্র চৌধুরী,,,রাখছি,,,

চলবে,,,

(কপি পেস্ট করবেন না,,,, রিয়‍্যাক্ট ও গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকুন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here