রাগে_অনুরাগে #কলমে সৌমিতা #পর্ব- ১৭

0
361

#রাগে_অনুরাগে
#কলমে সৌমিতা
#পর্ব- ১৭

এই এক ওয়েদার সত‍্যিই,, যখন তখন বৃষ্টি এটা অনেকের ক্ষেত্রে অপছন্দের তালিকায় পড়ে,,,কিন্তু অনুপমার এই যখন তখন বৃষ্টিটাই ভালো লাগে,,, শরতের মেঘ যেখানে হবে সেখানেই বৃষ্টি অথচ আর একটু দূরে কোনো জায়গায় শোনা যাবে সেখানে কোনো বৃষ্টিই হয়নি,,,,

ক্ষনিকের বৃষ্টি পছন্দ হলেও অনুপমার এখন এই বৃষ্টিটাকেই প্রচণ্ড রকমের বিরক্তিকর লাগছে,,,বিগত দশ মিনিট ধরে সে একটা বড়ো কৃষ্ণচূড়া গাছের তলায় দাঁড়িয়ে আছে আর ওর ঠিক বিপরীতে দাঁড়িয়ে আছে হৃদয় যার দৃষ্টি এখন সামনে দাঁড়িয়ে থাকা রমনীর উপর,,,,এইভাবে কিছুক্ষণ অতিবাহিত হওয়ার পর অনু নিজের গলা পরিষ্কার করে খুবই ধিরে বলে ওঠে,,,

” এই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য নিশ্চয়ই আমাকে আসতে বলা হয়নি হৃদয়?? অযথা আমার সময় নষ্ট হচ্ছে,,,তুমি যদি এই মনোভাবে আসো তাহলে আমি বলবো তুমি ভুল করেছো,,আমার কাছে যথেষ্ট সময়ের দাম আছে,,”

” সত‍্যিই কি তোমার সময় নষ্ট হচ্ছে অনু”??

হৃদয়ের কথা শুনে আপনাআপনি অনুপমার ভ্রুযুগল কুঁচকে এলো,,,তারপর সেইভাবেই বলে ওঠে,,

” তুমি কি বলতে চাইছো পরিষ্কার ভাবে বলো,,,নাহলে আমি চলে যেতে বাধ্য হবো,,”

” আমি বলতে চাইছি এইরকম তো কত সময় আম‍রা একসাথে কাটিয়েছি,,তখন তোমার সময় নষ্ট হতো না”??

হৃদয়ের কথা শুনে তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে অনুপমা বলে,,”তখনকার সময় আর এখনকার সময় এক করো না হৃদয়। তখন আমি ছিলাম কারোর প্রেমিকা,, যে প্রেমিকা তার প্রেমিক কে খুব ভালোবাসতো,,ভরসা করতো,,চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতো ওইজন‍্য তখন তার কাছে ওই সময়টা নষ্ট বলে মনে হয় নি,,,, কিন্তু এখনকার সময়ে অর্থাৎ বর্তমানে দাঁড়িয়ে তুমি যার সাথে কথা বলছো সে একজনের স্ত্রী,,,তার কাছে তার স্বামী ছাড়া বাকি সব পুরুষ মানুষই হলো পরপুরুষ,,, আর তাদের জন্যে একবিন্দু সময় নষ্ট করতে চাই না সে,,,”

“অনু প্লিজ এমন করে বলো না,,, আমি সুনন্দার কাছ থেকে সব শুনেছি অনু,,,তোমার আর মি.চৌধুরীর মধ্যে এখনো স্বামী স্ত্রী স্বাভাবিক সম্পর্ক শুরুই হয়নি,,,এমনকি তোমরা দুজন দুজনকে ভালো পযর্ন্ত বাসো না,,,,প্লিজ অনু আমার কাছে ফিরে এসো,,,আমি জানি তুমি আমাকে এখনো আগের মতোই ভালোবাসো,,শুধু আমার উপর রেগে আছো তাই দূরে সরিয়ে রাখছো ,,,,,প্লিজ অনু একটা সুযোগ দাও,,,আমি আমার ভুল শুধরে নেবো,,,শুধু তুমি আমার জীবনে ফিরে এসো,,প্লিজ,,”

হৃদয়ের কথা শুনে অনু ম্লান হেসে বলে “আমি এর আগেও বলেছি এখনো বলছি তোমাকে যে তুমি যেটা জানো ভুল জানো,,,ওই মানুষটা নিজের থেকেও বেশি আমাকে ভালোবাসে,,,ওই মানুষটা প্রতিটা ক্ষনে ক্ষনে আমাকে হারিয়ে ফেলার ভয় পাই,,আর সব থেকে বড়ো কথা কি জানো সে এখন আমার অস্তিত্ব জুড়ে আছে,,, আমি চাইলেও তাকে আমার থেকে আলাদা করতে পারবো না,,,”

অনুপমার কথা গুলো শুনে কাতর নয়নে শুধু চেয়ে থাকে হৃদয়,,হৃদয়ের এই চাহনিতে অনুপমা স্পষ্ট কষ্ট দেখতে পাই,,তাই আবার বলে ওঠে,,,

” জীবন কারোর জন্যে থেমে থাকে না হৃদয়,,,যদি থেমে থাকতো তাহলে আজ তোমাকে আর আমাকে এই পরিস্থিতিতে এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো না,,, আমাদের গল্পটা হয়তো অন‍্যরকম হতো,,,আমি জীবনকে সুযোগ দিয়েছি,,,এগিয়ে গিয়েছি তার ছন্দে,,, তোমার কাছেও সেই সুযোগ আছে,,,এগিয়ে যাও জীবনে,, হয়তো তোমার জন্য কেউ ব‍্যাকুল হয়ে অপেক্ষা করছে,, যে আমার থেকেও হয়তো তোমাকে সব দিক থেকে সুখে রাখবে,,” একটু দম নিয়ে আবার বলে,,” এইভাবে থেকো না তুমি,, আমার কষ্ট হয়,,, আমি পাষাণ না সেটা তুমি জানো,,,প্লিজ আমার একটাই রিকুয়েস্ট তুমি এগিয়ে যাও জীবনে,,, আর আমাদের স্বামী স্ত্রী দুজনের জীবনে তৃতীয় ব‍্যক্তি হয়ে এসোনা হৃদয়,,আমি অনুরোধ করছি,,, আজ তোমার কারণে ওই মানুষটা ভীষণ কষ্ট পাচ্ছে,,, আর ওই মানুষটা কষ্ট পাচ্ছে জেনে আমি ভিতরে ভিতরে শেষ হয়ে যাচ্ছি হৃদয়,,, শেষ হয়ে যাচ্ছি,,,কথা গুলো বলে অনুপমা আর এক মুহূর্ত না দাঁড়িয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে যায় রাস্তার দিকে,,,আর হৃদয় হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে কিছুক্ষণ,, তারপর দ্রুত গতিতে এগিয়ে যায় একজন রমনীর দিকে যে কিনা তার স্বামীকে নিজের থেকে হয়তো একটু বেশিই ভালোবাসে,,,

আধা ঘন্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছে অনু একটা রিক্সা কিংবা অটোর জন্য,, কিন্তু দুর্ভাগ্য এটাই যে এই দুটোর মধ‍্যে কোনো গাড়িই সে পাইনি,,,

যদি কিছু মনে না করো,,তাহলে আমি কি তোমাকে বাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসতে পারি?? হমময় হুহুহু ভুল কিছু ভেবো না,,,একজন বন্ধু হিসেবে,, শুধু মাত্র একজন বন্ধু বা শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে,,, পিছন থেকে আসতে আসতে কথা গুলো বলল হৃদয়,,

অনুপমা ম্লান হেসে বলে ওঠে,,” তার কোনো দরকার নেই হৃদয়,,,ধরে নাও আজ থেকে তোমার আর আমার গন্তব্য আলাদা,,, ভালো থেকো,,, ” কথা গুলো বলেই রাস্তা দিয়ে অনুপমা এগিয়ে যায় তার গন্তব্যের উদ্দেশ্যে,,,

আর হৃদয় সেই দিকে চেয়ে স্বগোতক্তি করে বলে,,”তুমিও ভালো থেকো প্রিয়তমা,,, তোমার সব কথা গুলো আমার স্মরণে থাকবে,,” তারপর গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যায় নিজের গন্তব্যে,,, এইভাবেও ভালোবাসার মানুষটি দূর থেকে ভালো আছে জেনেও ভালো থাকা যায়,,,
__________________________________________

টিনের ঝাউনির উপর যখন একঝাঁক বৃষ্টির ফোঁটা একসাথে পড়ে তখন সেটা ছমছম শব্দের দ্বারা প্রতিধ্বনিত হয়,,,আজ সকাল থেকেই এই একই গতিতে বৃষ্টি পড়ছে,,,অন‍্য সময় হলে অনুপমা কখন সিঁড়ির ঘর ছেড়ে উঠে দৌড়ে ছাদে গিয়ে ভিজতে আরম্ভ করে দিতো,,,,কিন্তু এখন সেই প্রবৃত্তি ওর হচ্ছে না,,,চারিদিকে যেন বিষাদ ছেয়ে আছে,,,জীবনটাকে হঠাৎ করেই বিসর্জন দিতে ইচ্ছা করছে ওর,,,কিসের জন্য বেঁচে থাকবে ও এই পৃথিবীতে,,, এইসব নানান চিন্তা করছে আর চোখের জল ফেলছে,,,

হঠাৎ অনুপমা চোখের জল মুছে উঠে দাঁড়ায়,, তারপর এগিয়ে যায় ছাদের দিকে,,,বৃষ্টির জলে ভিজে যায় পুরো শরীর মুহূর্তের মধ্যে,, আর সেই জলের সাথে বেয়ে যায় সব কষ্ট,,,,

(কিছুক্ষণ আগের ঘটনা)

স্নান সেরে অনুপমা যখন সকালে গরম গরম ধোঁয়া ওঠা চা খেতে ব‍্যস্ত ছিলো,, ঠিক তখনই ওর ফোনে পিসির কল আসে,,,ও রিসিভ করতেই,,,

” অনু এইদিকে একটা সমস্যা হয়ে গেছে,,”

সকাল সকাল পিসির মুখে এমন কথা শুনে ও ভয় পেয়ে যায়,,, আর বলে,,” কি হয়েছে পিসি?? বাবার শরীর ঠিক আছে তো,,”??

” আরে হ‍্যাঁ দাদার শরীর ঠিক আছে,,, আমি তোকে ফোন করেছিলাম এটা বলতে যে এখানে ভীষণ বৃষ্টি হচ্ছে,,, তোর দাদাভাই যেতে দিচ্ছে না আমাদের,,, আমরা কাল সকালে যাবো,,,তুই আজকে একটু কষ্ট করে রান্না করে নিস মা,,”

“ওওও এটার জন্য তুমি এত চিন্তা করছো,,,তুমি কি পাগল,,,এত চিন্তা করতে হবে না,,, আমি রান্না করে নেবো,,,তোমরা সাবধানে থেকো,,,”

কথা গুলো বলেই অনুপমা ফোন রেখে দেয়,,তারপর চা টা তাড়াতাড়ি শেষ করে রান্নার কাজে লেগে পড়ে,,,একা খাবে তাই বেশি কিছু রান্না করবে না বলেই ঠিক করে,, হঠাৎ ডাইনিং টেবিলের উপরে থাকা ফোনটা ক্রমাগত বেজে ওঠার কারণে গ‍্যাসের জোর টা একটু কমিয়ে সে দিকে এগিয়ে যায় অনুপমা,,,ফোনের উপরে মা শব্দটি ভাসতে দেখে মুখে আপনাআপনি হাসি ফুটে ওঠে ওর,,,রিসিভ করে বলে,,

” এখন বুঝি মনে পড়লো তোমার আমার কথা”??

” উমম হুহু,,তোর কথা আমার সব সময় মনে পড়ে,,আচ্ছা শোন আমি যে জন্যে ফোন করেছি,,,বলছি অভ্র কি তোদের ওখানে গিয়েছে”??

” না তো,,উনি তো আসেন নি,,উনার কি আসার কথা ছিল এখানে”??

” হ‍্যাঁ রে তোর বাবা বলেছিল আগের দিন ,যে তোকে যেন ও বাড়িতে নিয়ে আসে,,,সেই যে কাল বাড়ি থেকে বেরিয়েছে এখনো বাড়িতে ফেরেনি,,,ওর অফিসে ফোন করে ছিলাম তা ওরা বললো কালকে নাকি কোন মিটিং ছিল,,, তাই আমি ভাবলাম হয়তো মিটিং শেষ করে তোর ওখানে গিয়েছে,,”

” না মা উনি আসেননি,,কিন্তু উনি তাহলে কোথায় আছেন এখন,, ফোন করে ছিলে তুমি”??

” ফোন তো সুইচ অফ বলছে,,,আচ্ছা তুই এই নিয়ে যেন চিন্তা করিস না বেশি,, হয়তো কোনো কাজে আটকে গিয়েছে,,, আমি দেখছি,,”

কথা গুলো বলেই আশা দেবী ফোনটা রেখে দেন,,,আর এইদিকে অনুপমার মাথায় একরাশ চিন্তারা দল বেঁধে উদয় হয়,,,চিন্তার মধ্যে নিজেই বার কয়েক ফোন করলো অভ্রকে কিন্তু ফোনের ওপাশ থেকে সেই একই কথা ভেসে আসছে,,, একরাশ চিন্তার মাঝে প্রায় দেড় ঘন্টার মধ্যে ভাত, ডাল,,আলু ভর্তা,, বেগুন ভর্তা আর একপিস মাছ ভাজা নিজের জন্য করে নেয়,,,আবার এটাও ভাবে যদি অভ্র এখানে আসে,,,
___________________________________________

সব কিছু গুছিয়ে রেখে যখন ঘরে যায় ঠিক তখনই ডোরবেল বেজে ওঠে,,,ডোরবেলের শব্দ শুনে অনুপমা চমকে ওঠে,,, মস্তিষ্ক বলে এই বৃষ্টির দিনে কে আসবে,,,আবার মন বলে ওঠে,,দেখ গিয়ে তোর বর এসেছে,,,মুহূর্তেই সব চিন্তা গায়েব হয়ে যায়,,, শুধু একটা কথায় মনে হচ্ছে উনি হয়তো এসেছেন,,

আজ কত গুলো দিন পর উনাকে আমি দেখবো,,,কত গুলো দিন পর উনার গলার স্বর শুনবো,,কথাটা ভাবতেই একরাশ লজ্জা মুখে এসে ভর করে ওর,,দৌড়ে যায় দরজা কাছে,,,কাঁপা কাঁপা হাতে দরজা খুলে সামনে তাকাতেই মুখের সব হাসি মিলিয়ে যায়,,,পাশের বাড়ির পিকুর মাকে দেখে চোখে মুখে ফুটে ওঠে প্রশ্নবোধক এর চিহ্ন,,,

” কাকিমা কিছু বলবেন?? এই সময়ে আপনি”??

” আর বলিস না,, বাধ‍্য হয়েই আসতে হলো আমাকে ,,,তোর নামে কালকে একটা চিঠি এসেছিল,, সম্ভাবত তোদের বাড়িতে কেউ তখন ছিল না,,, তাই পিওন আমার কাছে দিয়ে গেছে,,,আমি পিকুকে বলেছিলাম তুই আসলে যেন তোকে দিয়ে দেয়,,,কিন্তু সে ভুলে গেছে,,,এখন তোকে দেখতে পেয়ে তাই দিতে এলাম,,,ধর চিঠিটা নে,,,”

অনুপমা চিঠিটা হাতে নিয়ে বলে,,”কাকিমা আসুন,, ভিতরে এসে বসুন,,”

” না রে অন‍্য একদিন আসবো,,,রান্নাটা মাঝপথে থামিয়ে এসেছি,,যদি পরে আবার ভুলে যায় তাই,,আসছি,,তুই জামাইকে নিয়ে যাস একবার আমার বাড়িতে,,,,”
__________________________________________

কাকিমা চলে যেতেই অনুপমা দ্রুত পায়ে ড্রয়িং রুমে চলে আসে,,তারপর ডাইনিং টেবিলে ফোনটা রেখে তাড়াতাড়ি চিঠির খামটা ছিঁড়ে ফেলে অনুপমা,,ভাবে হয়তো বাবার কোনো মেডিকেল রিপোর্ট এসেছে,,,খামের থেকে কাগজটা বার করে দেখতেই ওর পুরো পৃথিবী ১৮০ ডিগ্ৰীতে ঘুরে যায়,,, মাথা ঘুরে পড়ে যেতেই পাশে থাকা চেয়ার টা ধরে নিজেকে সামলে নেয়,,,তারপর আস্তে আস্তে মেঝেতে বসে পড়ে। চোখের সামনে কাগজটা কে আবার মেলে ধরতেই চোখজোড়া পুনরায় ঝাপসা হয়ে ওঠে,,,,

“আপনি তাহলে এত গুলো দিন এই কারণে ফোন করেননি,,, হয়তো এটার জন‍্যেই এত গুলো দিন আপনি ব‍্যস্ত ছিলেন,,এমনকি ও বাড়িতে এড়িয়ে চলতেন আমাকে,,,কালকে হয়তো এটার জন‍্যেই আপনি বাড়ি ফিরতে পারেন নি,,,,এতোটাই তাড়া আপনার আমার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য?? আমাকে ভালোবাসেন অথচ আমার থেকে দূরে যেতে চাইছেন,, কেন অভ্র কেন বলুন?? কোন অপরাধের জন্যে আমাকে আপনার কাছে যেতে দিচ্ছেন না?? কেন এত বড়ো শাস্তি দিচ্ছেন অভ্র বলুন না?? কেন”??

কথা গুলো বলে ধির পায়ে হেঁটে সিঁড়ি বেয়ে ছাদের দিকে চলে যায় অনুপমা,,এইদিকে ডাইনিং টেবিলে পড়ে থাকে দুপুরের জন্য রান্না করা খাবার আর ডিভোর্সের পেপার,,, যেটা বাইরের দমকা হাওয়ার কারণে এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে বারংবার,,,,
__________________________________________

(বর্তমান সময়)

দুপুর গড়িয়ে বিকেল,,, বিকেল গড়িয়ে সন্ধ‍্যে হব হব ভাব,,,আকাশে কালো মেঘেরা জানান দিচ্ছে এ বৃষ্টি আজ আর থামবে না,,,অনুপমা সেই থেকে ঠাঁই হয়ে বসে আছে ছাদের মাঝখানে,,, বৃষ্টির ফোঁটায় ফোঁটায় কেঁপে উঠছে ও বারংবার,, হঠাৎ আশপাশ থেকে ভেসে আসে শঙ্খের ধ্বনি,,,,,

অনুপমা হঠাৎ খেয়াল করলো ওর ওঠার প্রয়োজন নাহলে এখানেই জ্ঞান হারাবে,,, এই ভেবে উঠতে চেয়ে যখন দেখলো শরীরে আর এক ফোঁটা শক্তি নেই উঠে দাঁড়ানোর মতো তখন ও সেইখানেই বসে থাকে আকাশের দিকে তাকিয়ে,,, আর ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে,, হঠাৎ কাঁধের উপর কারোর হাতের স্পর্শ পেয়ে চমকে ওঠে ও,,মুখ উঠিয়ে দেখে আগন্তুক কে,,,সঙ্গে সঙ্গে অধরযুগলে ছড়িয়ে পড়ে ম্লান হাসি,,,হাত উঁচিয়ে আগন্তুকের মুখটা স্পর্শ করার আগেই ঢোলে পড়ে তার বুকের মাঝে,,, সঙ্গে সঙ্গেই একজোড়া শক্তপোক্ত হাত জড়িয়ে নেয় ওকে,,,শীতের মাঝে কারোর উষ্ণ আলিঙ্গনে শরীরের কাঁপটা একটু কমতেই,,অনুপমার চোখের সামনে অস্পষ্ট ভাবে ভেসে ওঠে অভ্রের মুখ,,,যেই মুখ দিয়ে বৃষ্টির জল গড়িয়ে পড়ছে ওর ললাটে,,,ধিরে ধিরে অনুপমা চোখ বন্ধ করে নেয়,,,,চেতনা হারায় একজন বলিষ্ঠ হাতের অধিকারীর বুকে,,,,,

চলবে,,,,

( আমি খুবই দুঃখিত,,, পূজোর কারণে আমি গল্প দিতে পারেনি,,,তার জন্য আমি আপনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী,,, পরের পর্ব গ্ৰুপে দেবো,,,সবাই প্লিজ রিয়‍্যাক্ট ও গঠনমূলক মন্তব্য করবেন,, তাহলে পেজের রিচ বাড়বে,,যার কারণে সবার কাছে গল্প পৌঁছাবে,,, কপি পেস্ট করবেন না)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here