#অদৃষ্টে_তুমি_আমি
#লেখিকা_সিনথীয়া
#পর্ব_১৮
স্বাধীন যখন রুমে ফিরলো তখন প্রায় রাত আড়াইটা পার হয়ে গেছে। বাইরে মেঘ অনেকবার ডেকে উঠেছে। যে কোনো সময় বৃষ্টি নামবে। মেঘের ডাকের সাথে যেন পাল্লা দিয়েছে বাতাসও। অনেক বেগে ছুটছে সে।
স্বাধীন ঢুকেই দেখলো ঘরের লাইট জ্বালানো। অবাক হলো ও,
-পৃথা কি এখনো জেগে আছে?
খাটের কাছে আসতেই আরও অবাক হলো স্বাধীন। একপাশে নিজের মাঝে গুটিয়ে ঘুমিয়ে আছে পৃথা। বিয়ের সাজগোজ কিছুই খোলেনি ও। শাড়ি, গয়না সব পরা। মেকাপ ও ওঠায়নি। এমনকি চুলটাও বাধা এখনো। চিন্তিত হলো স্বাধীন। খাটে উঠে পৃথাকে ডাক দিল,
– এই পৃথা? পৃথা? ওঠো।
– হমমমহমম।
পৃথার ঘুম ঘুম আওয়াজের প্রত্যাখান শুনে হেসে দিল স্বাধীন। আরও আদর করে কাছে গেল স্ত্রীর। কোমল স্বরে ডাকলো
– এই পৃথা? ওঠো না। এভাবে কষ্ট হয়ে যাবে শুতে তোমার।
ততক্ষণে পৃথার চোখের পাপড়ি হাল্কা ফাঁকা হয়েছে। স্বাধীনের আবছা অবয়ব দেখতে পেল ও। সাথে সাথেই ঘুম চলে গেল চোখ থেকে। উঠে বসলো পৃথা। স্বাধীন এবার বউকে দেখে হাসতে লাগলো,
– এতো টায়ার্ড ছিলে যে ফ্রেশ না হয়েই ঘুমিয়ে পরেছ?
পৃথা তখন স্বাধীনের কথায় বুঝলো যে ও ঘুমিয়ে পরেছিল। তার আগে স্বামির সাথে ঝগড়া করার যা পরিকল্পনা ছিল তা সব মনে এসে বসলো আবার পৃথার। সাথেসাথেই অভিমানও চড়ে বসলো মাথায় ওর। মুখ গোমড়া করে উঠে দাড়ালো খাট থেকে।
স্ত্রীর হঠাৎ এই আচরণে ফের অবাক হতে হলো স্বাধীনকে। নিজেও উঠে দাড়ালো ও পৃথার পাশে। আদুরে গলায় জিজ্ঞেস করলো,
– কি হলো?
– কিছু না।
– কিছু একটা তো অবশ্যই হয়েছে। নয়তো আমার পৃথা এভাবে রাগ করে না। কি হয়েছে বলোতো আমাকে? আমি কি কোনো ভুল করলাম নাকি?
– তুমি কেন ভুল করবা? তোমরা স্বামীরা কখনো ভুল করো নাকি? আমরা স্ত্রীগুলোই হই বড্ডো বোকা। খালি বেশি আশা করে বসে থাকি।
পৃথা এক নাগাড়ে স্বাধীনের ওপর রাগ ঝাড়লো কিন্তু স্বাধীন তাতে একটুও আপত্তি করলো না। বরং সেই মুহূর্তে ওর তো মনে হচ্ছিলো পারলে ও নাচবে। পৃথা এই প্রথম ওদের দুজনের মাঝের সম্পর্কটাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। স্বাধীনকে স্বামী আর নিজেকে স্ত্রী বলে ডেকেছে ও। হাসি একান থেকে ওকান পৌছে গেছে স্বাধীনের। এটা দেখে পৃথা ঝামটা মেরে উঠলো,
– এমন কি হলো যে বিশ্ব জয় করার হাসি হাসছো তুমি? উফফ!
এই বলে গট গট করে স্বাধীনের পাশ কেটে যেয়ে আয়নার সামনে দাড়ালো পৃথা। স্বাধীনও বাধ্য স্বামীর মতন পিছু নিল স্ত্রীর।
আয়নার সামনে দাড়িয়ে পৃথা নিশ্চুপ রাগ নিয়ে নিজের মেকআপ ওঠাতে লাগলো। স্বাধীন কিন্তু পাশেই দাড়ানো, তারপরেও ওর দিকে তাকালো না পৃথা। নিজের কাজেই ব্যস্ত রইলো। স্বাধীন কিছুক্ষণ চুপচাপ বউয়ের কান্ড দেখে তারপর ডাকলো ওকে,
– আমি কি দোষটা করলাম, একবার বলোই না দেখি।
-……….
এবার স্বাধীন সচল হলো। এর মাঝে পৃথার মেকাপ ওঠানো শেষ হতেও দেখলো ও। দ্রুত বউকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে ফেলে প্রশ্ন করলো,
– এতো মিষ্টি একটা চেহারা রেগে থাকলে তো ভালো লাগে না।
– আমি রেগে থাকলেই বা তোমার কি? তুমি তো আমাকে এভোয়েডই করবে জানাই আছে।
থমকে গেল স্বাধীন,
-এভোয়েড? আমি? তোমাকে করেছি? কখন?
পৃথা বিরক্ত হয়ে স্বাধীনের হাত সরিয়ে দিল। তারপর যেয়ে ছাদ বারান্দাটার রেলিংয়ের পাশে দাড়ালো ও। স্বাভাবিকভাবে স্বাধীনও এসে দাড়ালো ওর পাশে। হঠাৎ তখনি খেয়াল করলো স্বাধীন যে পৃথার গাল দিয়ে পানি গড়াচ্ছে। আবার ঝট করে পৃথাকে নিজের দিকে ঘোরালো ও,
– পৃথা তুমি কাঁদছো কেন?
– আমি কাঁদছি না। তুমি সরো।
এটা বলতে বলতে পৃথা কেঁদেই দিল একেবারে। স্বাধীন আর কোন কথা বললো না। সাথেসাথে ওকে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে। পৃথা তখন চাঁপা চিৎকার দিয়ে উঠলো,
– ছাড়ো, ছাড়ো আমাকে।
– একদম না। আগে বলো কি হয়েছে, তারপর ছাড়বো তোমাকে।
– আমার কিছুই হয়নি, কিন্তু তোমার গত দুদিন ধরে কি হয়েছে? এরকম উল্টাপাল্টা আচরণ কেন করছো তুমি?
-যেরকম?
স্বাধীনের হাতের বাধন কিছুটা শিথিল হলে ঝটকা দিয়ে সরে গেল পৃথা। কন্ঠে ভীষণ অভিমান নিয়ে অভিযোগ শুরু করলো ওর,
– মেহেদির রাতে আমার সাজের এতো প্রশংসা করলা দেখে, গতকাল হলুদে এতো যত্ন করে সাজলাম, কিন্তু তুমি একবার ঠিক ভাবে তাকালাও না, প্রশংসা তো অনেক দূরের কথা। ভাবলাম হয়তো রুমে এসে আমাকে আগের রাতের মতন…. কিন্তু তুমি এসেই চলে গেলা ওয়াশরুমে। তারপর এদিক ওদিকের গল্প করে ঘুমিয়ে পরলা। থমকে গেলাম আমি। মনে ভীষণ কষ্ট পেলাম। এতোটা পরিশ্রমই আমার বৃথা গেল।
একটু থামলো পৃথা। তারপর আবার শুরু করলো,
– তাই আজ সাজার মনই ভেঙে গিয়েছিল আমার। একদম ইচ্ছা করছিল না কিছু করতে। ভাবীদের জোরাজোরি তে পরতে হলো এই সব গয়না চুড়ি। ধুর! কেন যে পরতে গেলাম আমি? এখন আমারই এসব দেখে রাগ উঠছে কারণ যাকে দেখানোর তার তো চোখ এখনো বন্ধ।
এটা বলে সেখানে দাড়িয়েই পৃথা হাতে পড়া চুড়িগুলোতে হাত দিল খোলার জন্য। সাথেসাথেই ওর হাতটা ধরে ফেললো স্বাধীন। বাধা দিল গয়নাগুলো খুলতে। পৃথা ওপরে তাকাতেই দেখতে পেল স্বাধীনের চোখ দুটো। কেমন জ্বল জ্বল করছে যেন। ঠোটে এক মায়াবী হাসি ঝুলছে।
পৃথার হাতটা ধরে ওর দুই কদম কাছে আসলো স্বাধীন। কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই পৃথার মুখটা উঠিয়ে ঠোটে একে দিল নিজের ভালোবাসা। থমকে যাওয়া পৃথার অজান্তেই চোখ দুটা বন্ধ হয়ে গেল এই কোমল পরশে। একসময় ওকে ছেড়ে চোখের দিকে তাকালো স্বাধীন। পৃথার চোখ দুটো খোলার অপেক্ষায় রইলো। পৃথা চোখটা খুলতেই স্বাধীনের দৃষ্টিতে একটা নেশা খুজে পেল। স্বাধীন জড়ানো কন্ঠে বললো ওকে,
– ঠিক এই কারণেই গত দুদিন তোমার দিকে গভীর ভাবে তাকাইনি আমি। জানি তাকালে নিজেকে আর আটকাতে পারবো না। তোমাকে দেওয়া প্রমিসটা ভেঙে যাবে। তোমার অনুমতি ছাড়াই হয়তো কাছে চলে আসবো।
পৃথার দৃষ্টি চুম্বকের মতোন আটকে গেছে স্বাধীনের চোখে। স্বাধীন ওর কপালে আঙ্গুলের আল্তো ছোয়া বুলাতে বুলাতে বলতে থাকলো,
– মেহেদির রাতে আমি তোমাকে বলেছিলাম পৃথা, আমি তোমার হয়ে যেতে চাই। গতকাল হলুদে যখন তুমি আমার পাশে এসে দাড়ালে, তোমাকে এতো সুন্দর লাগছিল যা বলে বোঝাতে পারবো না আমি। নিজেরই মনে হচ্ছিলো যেন নজর লেগে যাবে তাই তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে ফেলেছিলাম। রাতে যখন রুমে তোমাকে একাকি পেলাম তখন আগের রাতের বলা সেই ইচ্ছাটা প্রবলভাবে আমার মনে আবার জেগে উঠেছিল। তোমার কাছে এগোলেই হয়তো আর সামলাতে পারতাম না। নিজেকে কিভাবে নিবারণ করেছি আমি তা বলে বোঝাতে পারবো না পৃথা। তাই সরে গিয়েছিলাম তোমার পাশ থেকে। আজও তাই চাচ্ছিলাম করতে কিন্তু….
পৃথার কপাল থেকে ওর চেহারা ছুয়ে স্বাধীনের হাত এসে পরলো ওর কাধে।
-পৃথা…. আজ…..
পৃথা চেয়ে রইলো নিজের বরের দিকে অজানা এক আশায়। তবে হঠাৎই স্বাধীন পিছিয়ে গেল এক পা।
– পৃথা তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও। অনেক রাত হয়ে গেছে। ঘুমোতে যাও।
হঠাৎ যেন কোন এক জগত থেকে ছিটকে বের হয়ে আসতে হলো পৃথাকে। স্বাধীনের মুহূর্তে বদলে যাওয়া কঠোর আওয়াজে চোখ বড় বড় হয়ে গেল ওর। শরীরের ভাষায় বুঝতে পারলো যে স্বাধীন দূর হয়ে যাচ্ছে ওর কাছ থেকে। অজান্তেই ওর হাত চেপে ধরলো পৃথা। স্বাধীন তাকাতেই এবার পৃথা এক কদম বারালো ওর দিকে। যেই টুকু দূরত্ব স্বাধীন ওদের মাঝে করেছিল ততটুকু পৃথা আবার ঘুচিয়ে দিল। স্বাধীন এটা দেখেই সতর্ক করলো ওকে,
– পৃথা, প্লিস। আর কাছে এসোনা। যদি আমি নিজেকে আটকাতে না পারি, তুমি হয়তো এই মুহূর্তটাকে নিয়ে পরে রিগ্রেট ফিল করবা।
ছেলেটার আকুতি ভরা দৃষ্টিটা মনে হয় পৃথাকে আরো কাছে টেনে নিল ওর। আল্তোভাবে নিজের মাথাটা স্বাধীনের বুকে এলিয়ে পেছন থেকে দুহাত দিয়ে ওর পিঠ জড়িয়ে ধরলো পৃথা। কেন এমনটা করলো ও জানে না। তবে মনে হলো এখন এটাই ওর দরকার।
বাতাসের বেগ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। প্রকৃতির সাথে ধাক্কা খেয়ে সেই বাতাসের থেকে আসছে নানা ধরনের আওয়াজ। এতো আওয়াজের মাঝে দুজন নিস্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে রইলো কিছুক্ষণ। পৃথা ওকে জড়িয়ে ধরার পর থেকেই আরেক ঝড় শুরু হয়েছে স্বাধীনের ভেতরে। মেয়েটা যেভাবে ওর মনে প্রলোভন জাগাচ্ছে তাতে নিজেকে সামলাতে আর পারবে না ও। তারপরেও ও শেষ বারের মতন পৃথার কাছে প্রশ্ন করলো। ওর মুখ নিজের দিকে উঠিয়ে নিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
– পৃথা এখনো সময় আছে। যদি তোমার অনুমতি না থাকে তাহলে এখনি সরে যাও। এখন না সরলে আমি কিন্তু আজ আসলেই আর কোনো কথা শুনবো না। পরে আর থামাতে পারবা না আমাকে।
পৃথা এক লাজুক হাসিতে নিজের মুখটা ভরে ফেললো। এক পাও নড়লো না ওখান থেকে। শুধু মাথাটা নিচু করে লুকানোর চেষ্টা করলো ওর লজ্জা।
এই প্রতিক্রিয়াই যথেষ্ট ছিল স্বাধীনের বোঝার জন্য। উল্লাসে মেতে উঠলো ও মনে মনে। মুহূর্তেই কোলে তুলে নিল নিজের স্ত্রীকে। তারপর হাটা শুরু করলো ভেতরে। পৃথা নিজেকে ততক্ষণে সম্পূর্ণরুপে স্বাধীনের ওপর ছেড়ে দিয়েছে। কোলে তুলে নিতেই স্বাধীনের গলা জড়িয়ে ধরলো। অজানা এক মায়াবী অনুভূতি কাজ করতে লাগলো ওর মাঝখানে।
ভেতরে এসে স্বাধীন পৃথাকে প্রথমে আয়নার সামনে দাড় করালো। তারপর পৃথাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে একসাথে দুজনের প্রতিচ্ছবি দেখলো আয়নায়। পৃথার লজ্জায় ভেসে যাওয়া চেহারাটা আয়নাতে স্পষ্ট দেখতে পেল স্বাধীন। মন ভরে দেখলো ও সেটা।
– I love you Preetha.
স্বাধীনের এই জড়ানো কন্ঠের স্বীকারোক্তি আর পৃথার ঘাড়ে পরা ওর শ্বাস আর নিতে পারলো না পৃথা। ঘুরে স্বাধীনের বুকে মুখ লুকালো নিজের। তবে স্বাধীন এখন ওকে আর লুকনোর সুযোগ দিল না। সাথে সাথেই ওর মুখ টা তুলে নিল নিজের মুখের দিকে। মন ভরে আল্তো আদর চড়িয়ে দিল পৃথার কপালে, চোখে আর গালে। হাসতেও যেন ভুলে গেছে পৃথা। চোখ বন্ধ করে শুধু স্বাধীনের স্পর্ষ অনুভব করতে ইচ্ছা হচ্ছে ওর।
পৃথার যখন চোখ বন্ধ, স্বাধীন তখন আল্তো হাতে ওর কানের দিকে নিজের হাত বাড়ালো। ঝুমকা দুটো খুলে রেখে দিল ড্রেসিং টেবিলে। এরপর গলার হারটাও খুলে রেখে দিল। পৃথার হাত ওঠানোর সময় ওর চোখের দিকে তাকিয়ে একটা ছোট্ট হাসি দিল স্বাধীন। পৃথাও দেখেছে সে হাসিটা। সেই হাসি অল্প করে ওর মাঝেও সংক্রামিত হলো। চুড়ি গুলোও একে একে সব খুলে ফেললো স্বাধীন। নামিয়ে রাখতেই সেগুলো ছড়িয়ে পরলো টেবিলটাতে।
হঠাৎ বাইরে ঝম ঝম বৃষ্টির আওয়াজ শোনা গেল। মুহূর্তের জন্য নিজেদের মাঝ থেকে বের হয়ে আসলো দুজন। বারান্দার চৌখাটে দাড়িয়ে এই ভোর রাতের বৃষ্টি কয়েক মুহূর্ত উপভোগ করলো ওরা। স্বাধীন এই সময়টায় এক পাশ দিয়ে পৃথাকে নিজের সাথে জড়িয়ে রেখেছিল।
-পৃথা, দশ বছর আগের সেই বৃষ্টিতে ভেজা সন্ধ্যাটার কথা মনে আছে? ছাদে আমরা ভিজে ভিজে কতো মজা করেছিলাম, তাই না?
– হমম, মনে আছে।
– সেই বারই প্রথম তোমাকে আমি….
স্বাধীনের হাসিতেই পৃথা বুঝে গেল ও কি বলতে চাচ্ছে। সাথে সাথে বরের মুখ চেপে ধরলো ও। কিন্তু স্বাধীন সেই হাত সরিয়ে পৃথাকে ঘুরিয়ে নিজের কাছে টেনে নিল। তারপর দখল করে নিল ওর ঠোটজোড়া। এবার গভীর ভাবে নিজের ভালোবাসার জানান দিল স্বাধীন। পৃথাও কোনো আপত্তি না করে তাল দিল স্বাধীনের সাথে। এ যেন প্রেম উপস্থাপনের এক প্রতিযোগিতা চলছে ওদের মাঝে। পৃথার হাত ক্রমেই উঠে গেল স্বাধীনের গলায়। পরনের টাইটা টানতে লাগলো ও খুলে ফেলার জন্য। স্বাধীন সাহায্য করলো ওকে। খুলে ফেল দিল টাইটা এক দিকে।
আর দেরী করলো না স্বাধীন। আবার পৃথাকে উঠিয়ে নিল নিজের কোলে। এক হাত দিয়ে কাধ জড়িয়ে আরেক হাত স্বাধীনের বুকে রাখলো পৃথা। নতুন এক নেশা যেন ঘিরে ফেলেছে ওদের দুজনকে। তাদের দৃষ্টিতেও সেই নেশা স্পষ্ট। খাটের ওপর এসে পৃথাকে নামালো স্বাধীন। পেছন হাত দিয়ে পৃথার চুলের কাটাটা খুলে ফেললো এক ঝটকায়। সাথেসাথেই লম্বা চুল গুলো ছড়িয়ে পরলো পৃথার আশপাশে। স্বাধীন তখন এগিয়ে আসলো পৃথার কাছে। তবে ও আসতেই ভারী কন্ঠে আল্তো বাধা দিল পৃথা,
– লাইটা টা অফ করো প্লিস।
-কেন?
– আমার ভীষণ লজ্জা লাগবে নাহলে।
– কিন্তু…..
– প্লিস, আজ অফ করে দাও।
স্বাধীনের মাঝে তখন পৃথাকে ভালোবাসার উন্মাদনার মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। আর কোনো কথা না বাড়িয়ে উঠে গিয়ে লাইট নিভিয়ে আবার ফিরে আসলো ও। ডিম লাইটের আধো আলো আধো অন্ধকারেই নিজের ভালোবাসায় ভরে দিতে লাগলো ও পৃথাকে। যেই ভালোবাসার প্রতি পৃথার অধিকার আজ কতো বছর ধরে, সেই হক্ টুকুই আজ সপার্দ করলো স্বাধীন পৃথার কাছে। নিজের অধিকারও চেয়ে নিতে ভুললো না ও। এতো ভালোবাসার অনুভূতিতে ঘেরা পৃথা বাধ্য হলো নিজের বরকেও একই ভাবে ভালোবাসতে।
বাইরে প্রকৃতির উন্মাদনা চলছেই। তার মাঝ দিয়েই মিশে গেল দুই প্রাণ। এই ঝড়ো রাতে এক উত্তাল প্রেম নিজের গন্তব্য খুজে পেল। এক হয়ে গেল পৃথা আর স্বাধীন।
চলবে।
https://m.facebook.com/groups/1749042645384412?view=permalink&id=2807385712883428