#রাগে_অনুরাগে
#কলমে সৌমিতা
#পর্ব- ৫
-রাতে রান্নাঘরে যাবতীয় সব কিছু গুছিয়ে অনু গেস্টরুমে চলে যায়, ও ঠিক করেছে যতদিন পর্যন্ত বাবা মা বাড়ি না আসবে ততদিন গেস্টরুমে থাকবে,,,আর যথাসম্ভব অভ্রের সামনে না যাওয়ার চেষ্টা করবে,,,আর এই দিকে অভ্র অনুর আসার জন্য অপেক্ষা করে বিছানায় শুয়ে,,, অনেকক্ষণ যাবত অপেক্ষা করতে করতে একসময় ঘুমিয়ে পড়ে,,,,,
-খুব সকাল বেলায় অনু ঘুম থেকে উঠে স্নান করে নেয়,,তারপর ঠিক আশার মতো করে ঠাকুরের পূজো দিয়ে রান্না ঘরে চলে যায়,,,,,আজ আবার তার কলেজ আছে,,,আর তার পাশে বসে মুন্নী নানা রকম গল্প করছে,,,
– ও বৌদিভাই এই আলুর পরোটা দাদাভাই খাবে না তুমি দেখো??
– খাবে না মানে ,,,
– না মানে এত তেলের জিনিস দাদাভাই তো কখনো খাইনা,,,
– খাবে না মানে,,, দেখিস খাবে আরও বাপ বাপ বলে খাবে,,,,কালকে আমাকে ধমকানোর মজা আজ বোঝাবো,,,বেটা খারুশ,,(শেষের কথাটা আস্তে করে বলে)
– যতই আস্তে করে বলোনা কেন আমি তবুও শুনতে পেয়েছি,,,,
– তুই তোর কাজ করবি মুন্নী?? নাকি আমি তোকেও,,,
– না না ঠিক আছে ,,,করছি,,,
___________________________________________
-সকাল ৮টার সময় ঘড়ির এলার্মের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায় অভ্রের,,,হাত বাড়িয়ে সেটা বন্ধ করে বিছানা ছেড়ে ওঠে ও,,তারপর তাড়াতাড়ি অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে নিচে নামে,,,,ড্রয়িংরুমে মুন্নীকে কাজ করতে দেখে ও বলে,,,
-মুন্নী আমি অফিসে যাচ্ছি,,,(কথাটা বলে একটু এদিক সেদিক নজর দিয়ে বেরিয়ে যেতেই)
-মুন্নী উনাকে বলো খেয়ে যেতে,,,খাবার সব রেডি আছে,,,(অনু)
-দাদাভাই খাবে এসো,,,খাবার তো সব রেডি করা আছে,,,খেয়ে তারপর অফিসে যাবে,,,
-থাক তার দরকার নেই আমার তাড়া আছে, নাহলে মিটিং টা ক্যানসেল হয়ে যাবে শেষ মুহূর্তে এসে,,, আমি বরং অফিসে গিয়ে খেয়ে নেবো,,,(একটু জোড়েই বললো কথাটা)
-মুন্নী আমি যে এই সকাল সকাল হাত পুড়িয়ে রান্না করলাম তা সেটা কার জন্য?? এখন এই খাবার গুলোর কি হবে??আগে থেকে বলে দিতেই তো পারে,,তাহলে আর রান্না করতাম না,,, আমার আবার কলেজ আছে,,,দেরি হয়ে যাচ্ছে,,,, তাড়াতাড়ি খেতে বসা হোক,,,নাহলে কিন্তু আমার মাথা গরম হয়ে যাবে,,,,(কথাটা বেশ ধমকের সাথেই বললো অনু,,,কিন্তু মনে মনে ভয় ও পাচ্ছে এসব কি বলে ফেলল তাই)
– অভ্র অনুর এই রকম রূপ দেখে চুপচাপ খেতে বসে যায়,,,খাবার গুলো মুন্নী সামনে এগিয়ে দেয় অনুর বলাতে,,,আর এই দিকে আড় চোখে সব দেখছে অনু রান্নাঘর থেকে,,,,আর মনে মনে হাসছে,,,
– একি?? এই আলুর পরোটা আমি খাবো না,,,মুন্নী তুই ব্রেড আর জুস নিয়ে আয়,,,,,,(অভ্র)
– খবরদার মুন্নী তুই যদি ওখান থেকে এক পাও এগিয়েছিস তো,,,,আলুর পরোটাই কি খারাপ আছে শুনি?? এই বয়সে এসে এখনো বাচ্চাদের মতো করে বলছে আমি খাবো না,,,,ওটাই খেতে হবে,,,সপ্তাহের এক দুদিন পরোটা খেলে কেউ মোটা হয়ে যাবে না,,,মুন্নী এই জুসের গ্লাস টা নিয়ে যা,,,
– মুন্নী আমাকে কি ইনডাইরেক্টলি বুড়ো বলা হচ্ছে এখানে??
– মুন্নী সে যে খুব একটা কচি খোকা তেমনটাও তো না বল??? এখন চুপচাপ খাওয়া হোক,,, আমার কিন্তু দেরি হয়ে যাচ্ছে,,,,,
– অভ্র আর কথা না বাড়িয়ে পরোটা মুখে দিলো,,,(খাবার গুলোতো বেশ ভালোই বানিয়েছে মেয়েটি),,মুন্নী কলেজে যেতে যখন দেরিই হচ্ছে তখন এখানে এসে ব্রেকফাস্ট টা করতে কি হচ্ছে,,,??
-মুন্নী উনাকে বলে দাও কারোর সামনে যাওয়া আমার বারণ,,,আর আমি ব্রেকফাস্ট করবো না,,,
মুন্নী-উফফফ তোমরা নিজেদের মধ্যে আমাকে নিয়ে কেন টানাটানি করছো??সেই তখন থেকে দেখছি এই জিনিস টা,,,একজন ডাইনিং টেবিলে বসে কথা বলছে তো একজন রান্নাঘর থেকে,,,তোমরা থাকো তোমাদের মতো,,,আমি উপরে গেলাম(বলেই সেখান থেকে মুন্নী চলে গেল)
-(অভ্র কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে ওঠে)আপনি খেয়ে নিন,,,কলেজের দেরি হয়ে যাচ্ছে,,,, আমি বাইরে ওয়েট করছি গাড়িতে,,,(বলেই বেরিয়ে গেল)
-এই মানুষটার আবার হলো কি,,,এত ভালো করে কথা বলে চলে গেলেন,,, আর কি জানো বলে গেলেন ও হ্যাঁ উনি গাড়িতে অপেক্ষা করছেন তার মানে আমাকে কলেজে দিয়ে আসবেন,,,
___________________________________________
-অনু তারাতারি ব্রেকফাস্ট করে অভ্রের গাড়ির কাছে এসে দাঁড়ায়,, তারপর দেখে অভ্র আগে থেকেই ড্রাইভিং সিটে বসে আছে
-গাড়িতে উঠুন,,(অভ্র সামনের দিকে তাকিয়ে কথাটা বলে)
-অনু অভ্রের কথা মতো গাড়ির পিছনের দরজা খুলে সিটে গিয়ে বসে,,,
-আমাকে কি আপনার ড্রাইভার ভাবেন??সামনে এসে বসুন(ধমক দিয়ে)
– অভ্রের ধমক খেয়ে অনু তাড়াতাড়ি গাড়ি থেকে নেমে সামনের সিটে বসে যায়,,,সারা রাস্তা কেউ কোনো কথা বলেনি,,অভ্র মাঝে মাঝেই আড় চোখে অনুকে দেখছে,,,অনেকক্ষণ বাদে নিরবতা ভেঙে প্রথমেই অভ্র বলে,,
-কালকের জন্য সরি,,,একটু বেশিই রিয়্যাক্ট করে ফেলেছিলাম,,,
-(অনু অভ্রের মুখে সরি শুনে অবাক হয়ে যায়)
-কি হলো কিছু বলুন??
-দেখুন মি.চৌধুরী সরি বলার দরকার নেই,, আর আমারই তো দোষ ছিল,,, কি করে নিজের সীমা ভুলে গেলাম আমি??কালকের জন্য আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি,,,
-আমি জানি আপনি রাগ থেকে এই কথা গুলো বলছেন,,আমি কিন্তু কথা গুলো সেইভাবে বলতে চাইনি,,,আসলে তখন মাথাটা গরম হয়ে গিয়েছিল তাই,,,
-দেখুন মি.চৌধুরী আমি আপনার থেকে বয়সে অনেক ছোট সুতরাং আমাকে আপনি তুমি করেই বলতে পারেন,,যেমনটা কাল দিন আগেও তুমি করে সম্বোধন করতেন,, হয়তো কালকের ঘটনার জন্য আপনি করে ডাকছেন,, তবুও বলছি ডাকবেন না,,, আপনি শুনলে কেমন অসস্তি হয়,,,আর আমি যে কটা দিন আছি আপনার বাড়িতে আসা করছি আর কোনো সমস্যায় আপনাকে ফেলবো না,,,আজ যদি কোথাও আমার যাওয়ার জায়গা থাকতো আমি চলেই যেতাম এইভাবে আপনাকে বিপদে ফেলতাম না,,,(অনুর কথা গুলো শুনে অভ্র আর কোনো কথা বাড়ালো না)
-তোমার কলেজ টা কোথায়?? আমি সেখানেই তোমাকে ড্রপ করে দেবো,,,
-আমাকে আপনি ওই মোড়টার কাছে নামিয়ে দিন,,, ওখানে নিশা দাঁড়িয়ে আছে,,,
-ওও তাহলে ওকেও ড্রপ করে দেবো কলেজে,,,
-না তার কোনো প্রয়োজন নেই,,, আমাদের একটু কাজ আছে এখানে,,
-ঠিক আছে,,, আমি কি নিতে আসবো??
-না না আপনাকে এত কষ্ট করতে হবে না,, আমি একাই চলে যেতে পারবো,,(বলেই গাড়ি থেকে নেমে গেল অনু,,)
নিশা-হাই অভ্র দা কেমন আছেন??
-ভালো আর তুমি??
নিশা-আমিও ভালো আছি,,,
-আজ আসি,,,আমাদের বাড়িতে একদিন এসো কেমন,,
নিশা-অবশ্যই যাবো,,,
– অভ্র ওদের সাথে কথা বলে তারপর অফিসে চলে যায়,,,
__________________________________________
আর এই দিকে কলেজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর থেকে নিশা একটার পর একটা কথা বলে বলে পাগল করে দিচ্ছে অনুকে,,,
অনু-তুই কি বলতে চাইছিস?
নিশা-দেখ আমি যেটা বলছি তোর ভালোর জন্যই বলছি,,তুই হৃদয়কে ভুলে যা,,,বর্তমানটাকে নিজের করে বাঁচ অনু,,,জীবনটাকে এই রকম নিরামিষ করে রাখছিস কেন??
-সেটা সম্ভব নয় ,আমি তো তোকে বললাম মি.চৌধুরীর সাথে আমার কেমন সম্পর্ক,,,তার মনে কোথাও আমি নেই,,,
-দেখ অনু তুই চাইলেই এই সম্পর্কটাকে একটা স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে রুপান্তরিত করতে পারিস,,,অভ্র দাকে বোঝার চেষ্টা কর,,,তুই যদি সবসময় হৃদয়কে নিয়ে ভাবতে থাকিস তাহলে কোনোদিন কিছুই ঠিক হবে না তোদের মধ্যে,,,
-কিন্তু নিশা,,
-দেখ অনু আমি তোর ভালোর জন্যই বলছি,,জীবন টাকে আরেক বার সুযোগ দে না,,,দেখবি তোরা দুজন খুব ভালো থাকবি,,,তোর বাবা আর পিসির কথা চিন্তা কর,,,আর সব থেকে বড়ো কথা হল তোর শ্বশুর আর শাশুড়ি কত ভালো,,, তারা যখন জানতে পারবে এই কনট্রাক্ট পেপারের কথা,,তখন তারা কতটা কষ্ট পাবে একবার ভেবে দেখ,,,অভ্র দাকে নিজের করে নে অনু,,,তুই তোর হান্ড্রেড পার্সেন্ট দে,,দেখবি অভ্রদাও একদিন নিজে থেকেই তোর কাছে আসবে,,,,অভ্রদার মনেও তোর জায়গা ঠিক হয়ে যাবে,,,
-নিশা আমি এবার বাড়ি যায়,,,অনেক দেরি হয়ে গেছে,,, উনি আবার বাড়ি চলে আসবেন,,,
-পালাচ্ছিস??আমি তোকে বলে রাখলাম অনু তুই আবার প্রেমে পড়বি,,,হ্যাঁ তুই অভ্রদাকে ভালোবেসে ফেলবি,,,এক ছাঁদের নিচে দীর্ঘদিন থেকে ওই রকম একটা মানুষকে ভালো না বেসে তুই থাকতেই পারবি না,,,আমার কথা মিলিয়ে নিস,,,
-এটা কখনোই হওয়ার না রে,,,,এখন এসব কথা থাক ,,আমি আসছি,,(কথা গুলো বলেই চলে গেল অনু)
__________________________________________
– অভ্র অফিস থেকে বাড়ি এসে আগে নিজের ঘরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নেয়। তারপর ব্যালকনিতে গিয়ে একটা সিগারেট ধরিয়ে যেই না মুখে দিতে যাবে,,অমনি পিছন থেকে অনু বলে ওঠে,,,
– হমমম হুমম,,,এই নিন আপনার চা,,(অনুর ডাকে অভ্র সিগারেট টা ফেলে দিয়ে পিছনে ফিরে দাঁড়ায়,, তারপর টাউজারের পকেটে হাত রেখে বলে,,,)
– আমি তো চা খাই না,,আমি চা পছন্দ করি না,,, যদি পারো তো কফি নিয়ে আসো,,,
-দেখুন মাঝে মাঝে চা খাওয়া ভালো,,,, কফি খেলে আরো বদমেজাজি হয়ে যায় মানুষ,,সেটা হয়তো তারা টের পাইনা,, কিন্তু যারা তাদের আশেপাশে সর্বক্ষণ থাকে তারা ভালো করেই টের পাই,,,
-অনুর কথা শুনে অভ্র শব্দ করে হেসে দেয়,,,আর অনু অভ্রের দিকে হাবলার মতো তাকিয়ে থাকে,,
অনু-ইসস মানুষটাকে কি সুন্দর লাগে হাসলে,,আর উনি কি না সব সময় মুখ গোমড়া করে রেখে দেবেন,,(মনে মনে)
-ঠিক আছে দাও,,,আজ থেকে নাহয় মাঝে মধ্যে চা খাওয়া যেতেই পারে(হাসি থামিয়ে)
-অনু চা টা রেখেই চলে যাচ্ছিল হঠাৎ,,কি মনে করে পিছন ফিরে অভ্রের উদ্দেশ্যে বলে ওঠে,,,
– চায়ের মতো যদি মাঝে মধ্যে সিগারেট খান তাতেও কোনো অসুবিধা নেই,,, জানেন তো রেগুলার স্মোকিং করা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক,,,( বলেই ব্যালকনি থেকে চলে যাওয়ার জন্য উদ্দ্যত হচ্ছিল,,আর অভ্র অনুর মুখে এমন কথা শুনে বিষ্ময়ে তাকিয়ে ছিল কেননা অনুর দিকে ফেরার আগেই ও সিগারেট ফেলে দিয়েছিল,,,, তাড়াতাড়ি বিষ্ময় কাটিয়ে অনুর উদ্দেশ্যে বলে ওঠে,,,)
-আচ্ছা তোমার নাম টা কি,,, মানে পুরো নাম টা??
-(অভ্রের কথা শুনে অনু কিছুটা অবাক হয়ে বলে)হে ভগবান যার সাথে আপনার বিয়ে হয়েছে,,যার সাথে আপনি এত গুলো দিন আছেন,,,যাকে যখন তখন ধমকান,, তার নামটাই জানেন না??অবশ্য জানবেন কি করে এই বিয়েতে তো আপনার মত ছিল না,, আর ফুলসজ্জা রাতে যে স্বামী তার স্ত্রীকে কনট্রাক্ট পেপার হাতে ধরিয়ে দেয়,,, সে কি করে তার নাম জানবে??এটাই স্বাভাবিক,,
-দেখো আমি কিন্তু সেভাবে মানে আমি জানি অনু নাম তোমার,,কিন্তু
-অনুপমা রায়,,সবাই ছোট করে অনু বলে ডাকে(বলেই ঘর থেকে চলে অনু আর সেইদিকে তাকিয়ে অভ্র আপনমনে বলে ওঠে,,)
-অনুপমা নাম টা তো বেশ,,,বলেই চায়ে চুমুক দিলো অভ্র,,,তারপর আবার চায়ের কাপের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,,,এই রকম চা প্রত্যেক দিন পেলেও ক্ষতি নেই বরং স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো,,,,,
___________________________________________
-দেখতে দেখতে প্রায় চারটে মাস পার হয়ে গেল অভ্র আর অনুর বিয়ের,,,কালকে অভ্রের মা বাবার ফেরার কথা,,,সকাল থেকেই অনু ব্যস্ত,,,এখন অভ্র আর অনুর সম্পর্কে অতটাও জড়তা নেই,,আবার দুজনের সম্পর্ক অতটাও ঘনিষ্ঠ নয়,,একসাথে শপিং মলে যাওয়া,, ডিনার করা,,,মুভি দেখতে যাওয়া এই সব লেগেই আছে প্রায়শই ,,,মাঝে মাঝে দুজন দুজনের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে কিন্তু পরক্ষণেই দুজনেই নিজেকে সামলিয়ে নেয়,,,এইভাবেই দিন গুলো কেটে যাচ্ছে বেশ,,,,
-আজ অভ্র ওর মা বাবাকে এয়ারপোর্টে আনতে যাবে তাই তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে নেয়,,কিন্তু বিপত্তি বাঁধে সকালে একটা এমারজেন্সি মিটিং থাকায়,, তাই গেস্টরুমে যায় অনুর সাথে দেখা করে বলতে যে ও হয়তো যেতে পারবে না ,,,কিন্তু অনুর ঘরের দরজা খোলা থাকার দরুন সেখানে গিয়ে অভ্র হা হয়ে যায়,,, অনু সবে মাত্র স্নান করে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়েছে,,চুল থেকে টপটপ করে জল গড়িয়ে বুকের খাঁজে পড়ছে,,ভিজে শরীরে শাড়িটা লেপ্টে আছে,,,হালকা ব্লু রঙের সিল্কের শাড়ি ভেদ করে ফর্সা মেদহীন পেটটা আর তার ঠিক মাঝে অবস্থিত গোলাকার নাভিটা বার বার আকৃষ্ট করছে অভ্রকে ,,,,দীর্ঘক্ষণ ওইভাবে থাকার পর কোনো রকমে নিজেকে সামলিয়ে দরজায় নক করলো অভ্র,,,,
-আসবো,,,(হঠাৎ অভ্রের গলা পেয়ে নিজের পড়নের শাড়িটা কে ঠিক করে অনু বলল)
-আসুন,,,
-বলছিলাম যে আমার একটা দরকারি মিটিং পড়ে গেছে তাই আমাকে অফিস যেতে হচ্ছে,,,বাবার সাথে কথা হয়ে গেছে আমার,,, ড্রাইভার পাঠিয়ে দিয়েছি ওরা গাড়িতে চলে আসবে,,,তুমি তোমার জিনিসপত্র গুলো এই ঘর থেকে আমার ঘরে নিয়ে যাও,,,আর আমি আসছি,,
-ঠিক আছে সাবধানে যাবেন,,আর চিন্তা করতে হবে না,, এইদিকটা আমি সামলে নেবো,,,
-ঠিক আছে,,,(অভ্র অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়)
( অভ্র চলে যাওয়ার পর অনু গেস্টরুম থেকে নিজের যাবতীয় সব জিনিসপত্র অভ্রের ঘরে নিয়ে গিয়ে ভালো করে গুছিয়ে রাখে,,,তারপর রান্নাঘরে যায়)
-আর এইদিকে অভ্র অফিসে গিয়ে কোনো কাজে মন দিতে পারছে না,,, বার বার অনুর কথা মনে পড়ছে ওর,,,সকালের সেই মুহূর্তটা যেন এখনো ওর চোখের সামনে ভাসছে,,,তবে কি অনুর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছে ও,,এইসব কথা ভাবছে,,আর কফি মগের মধ্যে থাকা চামচটা হাত দিয়ে বারবার ঘোরাচ্ছে,,,,কখনো কখনো আপনমনে বলছে
-জীবন টাকে আর একবার সুযোগ দিয়ে দেখিনা কি হয়?মেয়েটাকে তো এতদিনে খারাপ বলে মনে হয় নি আমার,,, নিজের পছন্দের কাছে তো আমি হেরে গিয়েছি অনেক আগেই,,,বাবা মার পছন্দকে কি প্রাধান্য দেয়া যায়??না আমি আর ভাবতে পারছি না,,,
চলবে…..
(বিঃদ্রঃ- যেহেতু অনেক দিন পেজে গল্প দিইনি,সেহেতু পেজের রিচ কমে গেছে,,,হয়তো অনেকের কাছেই পৌছাবে না আজকের পর্বটি,, আমি তাই আপনাদের সবার উদ্দেশ্যে বলছি যারা যারা গল্পটি পড়বেন সবাই রিয়্যাক্ট ও মন্তব্য করবেন,,,
– আর একটা কথা সবাই সবার বন্ধুদের আমার পেজে ও গ্ৰুপে ইনভাইট করবেন প্লিজ,,কপি পেস্ট করবেন না দয়া করে,,)