স্নিগ্ধ_প্রিয়া #সাদিয়া_শওকত_বাবলি #পর্ব_২৫

0
764

#স্নিগ্ধ_প্রিয়া
#সাদিয়া_শওকত_বাবলি
#পর্ব_২৫

( অনুমতি ব্যতীত কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ )

ওয়েটার ছেলেটা কপাল কুঁচকালো, বলল – কিন্তু উনি তো বলে গেলেন বিলটা আপনারা দুজন দিবেন।

তৃষাম আর চ্যাং এর মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো। এ কেমন কথা? বিল তো দেওয়ার কথা জায়ানের। তাই তো এত খাবার অর্ডার করেছিল তারা। শেষ পর্যন্ত কিনা এমন একটা বেইমানি জায়ান করতে পরলো তাদের সাথে। চ্যাং দ্রুত বিলের কাগজটা খুললো। কাগজের নিচে লেখা পেল ৪০০ ইয়ান ( বাংলাদেশী টাকায় ৬১৮৯.৩৫ টাকা ) মাথায় যেন বাজ পড়লো তার। ঠিক চ্যাং মাছের ( টাকি মাছ ) মতোই ছটফটিয়ে উঠলো সে। তৃষামের হাত টেনে দেখালো বিলের কাগজটা। টাকার অংক দেখে চোখ কপালে তার। এত টাকা? এত খেয়েছে তারা? টেবিলের পানে একবার তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললো। সত্যিই এতই খেয়েছে তারা। কিন্তু এখন বিল কিভাবে দিবে? পকেটে এত টাকা নিয়ে দুজনের কেউই তো বের হয়নি। প্রথমে সন্দেহের বশে জায়ানের পিছু নিয়েছিল আর তারপর জায়ানের পকেট ফাঁকা করার নিয়াতে এখানে এসেছিল কিন্তু জায়ান যে এভাবে একটা ধরা খাওয়াবে তাদের কল্পনাতেও আনতে পারেনি। চ্যাং আর তৃষাম নিজেদের পকেট অনেক খুঁজে ১২৯.৪৬ ইয়ান ( ২০০০ টাকা ) বের করতে পারলো। এখনও তো অনেক টাকার প্রয়োজন। চ্যাং তাকালো ওয়েটার ছেলেটার পানে। ইতস্তত কন্ঠে বলল – আসলে এত টাকা তো এখন আমাদের কাছে ক্যাশ নেই। আমরা ব্যাংক থেকে তুলে এনে দেই? একটু অপেক্ষা করুন আপনারা।

– ম্যানেজারের সাথে কথা বলে জানাচ্ছি আপনাদের।

ওয়েটার নম্র কন্ঠে কথাটা বলেই প্রস্থান করলো। ক্ষানিক বাদেই ফিরে এলো সে। নম্র কন্ঠেই বলল – স্যরি স্যার এমন কোনো নিয়ম নেই আমাদের এখানে। আপনাদের বিল প্রদান না করা অব্দি কোথাও যেতে পারবেন না।

চ্যাং আর তৃষাম যেন ফেঁসে গেছে এবার ঠিকঠাক ভাবেই। মোবাইল বের করে তারা দুজন মিলে কল করলো কয়েকজনকে কেউই কল ধরলো না। বিপদের সময় কাউকে পাওয়া যায় না, কথাটার সত্যতা যেন আজ হারে হারে টের পাচ্ছে তারা। ছেলে দুটোর অসহায় মুরগি দেখে ওয়েটার ছেলেটা একটু এগিয়ে এলো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে, বলল – স্যার আপনারা চাইলে আমরা আপনাদের একটা সুযোগ দিতে পারি।

তৃষাম আর চ্যাং যেন আশার আলো খুঁজে পেল একটু। লাফিয়ে উঠলো চ্যাং, বলল – তাহলে আমাদের খাবারের বিল পরিশোধ করতে হবে না?

– জ্বী তবে বিনিময়ে আপনাদের রাত দশটা অব্দি কাজ করতে হবে রেস্টুরেন্টে।

তৃষাম আর চ্যাং এর মুখ গুলো চুপসে গেল। শেষে কিনা খেয়ে দেয়ে সেই খাবার বিল পরিশোধ করতে রেস্টুরেন্টে। কিন্তু এ ছাড়া তো আর উপায়ও নেই কোনো। টাকা না দিতে পারলে তো কাজ করতেই হবে। দু’জনই রাজি হলো ওয়েটারের কথায়। কিছুক্ষন যেতেই তাদের দুজনকেই পড়িয়ে দেওয়া হলো ওয়েটারের পোশাক। কাজ শুরু হলো তাদের। এ টেবিল ও টেবিল ঘুরে খাবার অর্ডার নেওয়া এবং খাবার পরিবেশন করতে লেগে পড়লো দুজনই।

_____________________________________

রাত বাড়লো। চারদিক নিশুতি আঁধারে ছেয়ে গেছে। যদিও দিকে দিকে কৃত্রিম আলোর ঝলকানিতে বোঝার জো নেই তার। ঘড়ির কাঁটায় টিক টিক করে জানান রাত দশটা প্রায়। একটু পরই হয়তো হোস্টেল বন্ধ করে দিবে। জায়ান নীরববিলী নিজের হোস্টেল কক্ষে বসে পড়ছিলো। হঠাৎ টোকা পড়লো তার কক্ষের দরজায়। পড়া ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো জায়ান। দরজাটা খুলে দিল। দরজা ঠেলে থমথমে মুখে ভিতরে প্রবেশ করলো জায়ান এবং চ্যাং। জানায় আবার নিজের স্থানে বসতে বসতেই শুধালো – কি ডিউটি কেমন করলি?

চ্যাং কাঁদো কাঁদো হলো। কন্নার ভঙ্গিতে বলল – তুই পারলি আমাদের সাথে এমন কাজটা করতে? তোর কলিজায় একটুও বাঁধলো না?

জায়ান ভাবলেশহীন। নির্বিকার ভঙ্গিতেই উত্তর দিল – নাহ একটুও বাঁধেনি। উল্টো তোদের শরীরের জং ছাড়লো একটু। সারাদিনে হোস্টেলে শুয়ে বসে থাকতে থাকতে তো তোদের শরীরে জং ধরে গিয়েছিল একদম।

তেতে উঠলো তৃষাম। ঝাঁঝালো কন্ঠে বলল – তুই আমাদের বন্ধু না শত্রু, একটা পাষান তুই।

কথাটা বলে পরপরই কোমড়ে হাত দিল ছেলেটা। কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলল – দেখিস এই অত্যাচার ধর্মে সইবে না। আমাদেরও দিন আসবে একদিন।

– তোদের দিন কবে আসেনি?

– মানে?

– কিছু না। যাহ ফ্রেশ হয়ে আয়। তোদের শরীর থেকে রেস্টুরেন্টের খাবারের গন্ধ আসছে।

জায়ানের কথা শেষ হতেই চ্যাং নিজের জামা কাপড় নিয়ে ওয়াশ রুমে ঢুকে গেল। ঝগড়া পড়ে করা যাবে। আগে ফ্রেশ হওয়া প্রয়োজন। চ্যাং ওয়াশ রুমে ঢুকতেই তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলল তৃষাম। জায়ানের পানে তাকিয়ে বলল – তোর সাথে আমার কথা আছে জরুরী।

ভ্রু কুঁচকালো জায়ান। একটু আগে ঝগড়া করলো এখন আবার জরুরি কথা? ভ্রু দ্বয় কুঁচকে রেখেই সে শুধালো – কি কথা?

– যে পথে পা বাড়িয়েছিস সে পাথে আর আগানোর চেষ্টা করিস না। এই পর্যন্তই থেমে যা।

– কোন বিষয়ের কথা বলছিস তুই?

তৃষাম শীতল দৃষ্টিতে তাকালো জায়ানের পানে। শান্ত কন্ঠে বলল – কোন বিষয়ের কথা বলছি তা না বোঝার মতো অবুঝ তুই নস।

জায়ানের দৃষ্টি তীক্ষ্ম হলো। গম্ভীর কন্ঠে সে প্রশ্ন করলো – কেন? বিল না দিয়ে রেস্টুরেন্টে কাজ করিয়েছি বলে এমন বলছিস?

– না।

– তাহলে?

তৃষাম এগিয়ে গিয়ে হাত রাখলো জায়ানের কাঁধে অতঃপর বলল – যে জিনিস কিংবা সম্পর্ক কখনও পূর্ণতা পাবে না সে সম্পর্কের দিকে না আগানোই ভালো।

– কে বলেছে পূর্ণতা পাবে না? আর কেনই বা পাবে না?

– ভাই তুই বুঝতে পারছিস না। ওর পথ আর তোর পথ সম্পূর্ণ আলাদা। তুই আর ও সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুর দুজন মানুষ।

জায়ান কঠোর হলো। শক্ত কন্ঠে বলল – সে আমি বুঝে নেব। ওর মেরু আর আমার মেরু মিলিয়ে নেব আমি।

– দেখ তুই চীনের বাসিন্দা আর ও বাংলাদেশের। ওর বাবা মা কখনও মেয়েকে সারাজীবনের জন্য বিয়ে দিয়ে চীনে পাড়ি জমাতে দিবে না, পড়তে দিয়েছে সেই অনেক। আর তাছাড়া মেয়েটা একবার ম’র’তে ম’র’তে বেঁচেছে আমি চাই না ওর জীবনে আবার ঝড় উঠুক আবার ও ম’রু’ক।

তৃষামের কথায় কপালে ভাঁজ পড়লো জায়ানের। মেয়েটা ম’র’তে ম’র’তে বেঁচেছে মানে কি? আর ম’র’তে’ই বা গিয়েছিল কেন? জায়ান কপালে ভাঁজ ফেলেই শুধালো – ম’র’তে ম’র’তে বেঁচেছে মানে কি? কি হয়েছিল ওর?

– আমি ঠিক জানি না সম্মূর্ণ ঘটনা। আর যতটুকু জানি তাও বলতে ইচ্ছুক নই। ব্যাপারটা একান্ত ওর ব্যক্তিগত। ও আমার বোন, বোনের ব্যাক্তিগত বিষয় বন্ধুর সাথে নাড়াচাড়া করতে ইচ্ছুক নই আমি। আমি শুধুমাত্র বলবো তুই ওর পিছন ছেড়ে দে। চীনে অনেক মেয়েরা আছে তাদের দিকে যা।

জায়নের প্রশ্ন ছিল অনেক। অনেক কিছু জানতে চাইছিলো সে। কিন্তু তার আগেই ওয়াশ রুমে থেকে বেরিয়ে এলো চ্যাং। কথা বন্ধ করলো তৃষাম। নিজের জামা কাপড় নিয়ে ঢুকলো ওয়াশ রুমে।

_____________________________________

সকালের আলো ফুটেছে। কলেজ খোলা আজ। জায়ানও আর সকাল সকাল আজ আর কল করেনি পূর্বাশাকে। লাইব্রেরীতে কাজ আছে তার। কয়েকটা বই খুজতে হবে। পরিকল্পনা মাফিক ক্লাস শুরুর আগেই জায়ান কলেজের লাইব্রেরীতে গেল বই খুঁজতে। বেশ বড় লাইব্রেরী তাদের কলেজে। অবশ্য শুধু মাত্র তাদের কলেজে বলতে ভুল হবে চীনের স্কুল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই এমন বড় বড় লাইব্রেরী দৃশ্যমান। ছাত্র ছাত্রীদের প্রয়োজনীয় অধিকাংশ বইই থাকে এই লাইব্রেরীর তাক জুড়ে। তবুও দুই চারটা বই যদি কিনতে যেতে হয় তারও ব্যবস্থা থাকে প্রতিষ্ঠানের আশেপাশের লাইব্রেরীতেই। জায়ান লাইব্রেরীর তাক ঘুরে ঘুরে বই নিল কিছু অতঃপর একটা খালি টেবিল দেখে বসলো সেখানে। আশেপাশে অনেকেই রয়েছে। বিভিন্ন টেবিল জুড়ে তাদের বিচরন। তবে নিস্তব্ধতায় ঘেড়া চারদিক। এখানকার লাইব্রেরী গুলোর নিয়ম অনুযায়ী লাইব্রেরীতে বসে হৈচৈ তো দূরে থাকে জোরে কথা বলাও বারন। অতি প্রয়োজনীয় কথা তাও বলতে হবে ফিসফিস করে। জায়ান বিভিন্ন বইয়ের ভাঁজে দেখতে দেখতে হঠাৎ চোখ পড়লো দরজার দিকে পূর্বাশা আসছে। একটু নড়েচড়ে বসলো জায়ান। টেবিলে ছড়ানো ছিটানো বইগুলো গুছিয়ে নিল ব্যস্ত হাতে। পাশের চেয়ারটাও ছেড়ে দিয়ে একটু সড়ে অন্য চেয়ারে বসলো। মেয়েটা হয়তো তার দিকেই আসবে, তার পাশেই বসবে। এই দুই দিনে তো মোটামোটি একটা ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে তাদের মধ্যে। পূর্বাশা যেতেও নিল সেদিকে। কিন্তু হঠাৎ কোথা থেকে এক মেয়ে এসে দাঁড়ালো জায়ানের সম্মুখে। জায়ানের পাশের চেয়ারটা দেখিয়ে ধীর এবং লাজুক স্বরে শুধালো – আমি এখানে বসবো?

পূর্বাশা ঘুরে গেল। বসলো গিয়ে অন্য টেবিলে। জায়ানের দৃষ্টি তীক্ষ্ম হলো। এই মেয়েটার জন্য, সব এই মেয়েটার জন্য। এই মেয়েটার জন্যই পূর্বাশা এখানে আসতে গিয়েও অন্য টেবিলে বসলো। ইচ্ছে তো করছে একে এখন ধাক্কা মেয়ে লাইব্রেরীর ফ্লোরে ফেলে দিতে। জায়ানকে চুপ করে থাকতে দেখে মেয়েটি আবার শুধালো – এখানে বসতে পারি?

জায়ান কন্ঠ খাদে নামালো তবে কন্ঠে রুক্ষতা বজায় রেখেই বলল – না।

মেয়েটা ভ্রু কুঁচকালো। ভ্রু কুঁচকে নিচু স্বরে বলল – চেয়ারটা তো খালিই আছে। বসলে সমস্যা কি?

জায়ান টেবিলের সব বইগুলো হাতে নিল। সেগুলো রাখলো পাশের খালি চেয়ারে। দাঁতে দাঁত চেপে বলল – এখন খালি নেই। অন্য টেবিলে যান।

লজ্জায় অপমানে থমথমে হলো মেয়েটার মুখ খানা। ভিতরে ভিতরে হয়তো ক্রোধিতও হয়েছে তবে তা প্রকাশ করতে পারলো লাইব্রেরীতে বসে। এখানে বসে চিৎকার চেঁচামেচি চেঁচামেচি করলে হয়তো তার অপমানকে আরেক দফা বাড়িয়ে তাকে বের করে দেওয়া হবে লাইব্রেরী থেকেই। মেয়েটা থমথমে মুখশ্রী নিয়েই অন্য টেবিলে বসলো। জায়ান পকেট হাতরে নিজের মোবাইলটা বের করলো। লক খুলে ব্যস্ত হস্তে পূর্বাশাকে মেসেজ করলো – আমার টেবিলে আসুন।

ভাইব্রেট চালু থাকায় কেঁপে কেঁপে উঠলো পূর্বাশার মোবাইলটা। নিজের ব্যাগ থেকে মোবাইলটা বের করে আনলো। স্ক্রীনে ভেসে উঠলো জায়ানের নামটা। পূর্বাশা চোখ তুলে একবার তাকালো জায়ানের পানে অতঃপর মেসেজটা ওপেন করে দেখে ব্যস্ত হাতে সে লিখলো – এখানে বসেছি তো।

মেসেজটা পাঠানোর প্রায় সাথে সাথেই ওদিক থেকে উত্তর এলো জায়ানের। সে লিখলো – হয় আপনি এখানে আসুন নয়তো আপনার পাশের সিটটা খালি করুন আমি আসছি।

পূর্বাশা আশেপাশে তাকালো একবার। সেনজেই, সুজা কিংবা জেফি আজ কেউই আসেনি তার সাথে। অবশ্য আসেনি বললে ভুল হবে সে বললে হয়তো আসতো। কিন্তু মেয়েগুলো ঘুমাচ্ছিলো বিধায় সে আর ডাকেনি তাদের। একা একাই চলে এসেছে লাইব্রেরীতে। এমন অবস্থায় যদি পরিচিত কারো সঙ্গ পায় তাহলে খারাপ হয় না একদম। পূর্বাশা নিজের বইগুলো নিয়ে উঠে দাঁড়ালো। গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে গেল জায়ানের পানে। জায়ান পূর্বাশাকে আসতে দেখেই চেয়ার থেকে বইগুলো সরিয়ে চেয়ারটা খালি করে দিলো। পূর্বাশা গিয়ে বসলো সে চেয়ারটাতে। জায়ানের ওষ্ঠে হাসি ফুটলো। তবে সেই হাসি দৃষ্টিগোচর হলো না কারো। কেউ দেখার আগেই নিজের ঠোঁটের হাসিটুকু গিলে বরাবরের মতো গম্ভীর মুখো হয়েই বসে রইলো সে। পূর্বাশাও আর বলল না কিছু। জায়ানের পাশে বসেই মনযোগী হলো বইয়ের ভাঁজে।

চলবে…….

ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি লিংক –
https://www.facebook.com/profile.php?id=100090661336698&mibextid=rS40aB7S9Ucbxw6v

গ্রুপ লিংক –
https://www.facebook.com/groups/233071369558690/?ref=share_group_link

[ আহরাব ইশতিয়াদ এবং নিশিতা জুটির উপর লেখা আমার প্রথম উপন্যাস “স্নিগ্ধ প্রেয়শী” পড়ে নিন বইটই অ্যাপে, মাত্র ৪০ টাকা। বইয়ের লিংক এবং কিভাবে কিনবেন পেয়ে যাবেন কমেন্ট বক্সে ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here