#মেঘের_আড়ালে_রোদ
#পর্ব_৩৮
লেখিকা #Sabihatul_Sabha
সকাল থেকেই আফজালের মন বেশ ফুরফুরে।
আমেনা বেগম স্বামীকে চা দিয়ে আফজাল সাহেবের জন্য চা বানালেন।
নিরুপমা আমেনা বেগমের হাত থেকে চা নিয়ে ড্রয়িং রুমে আসলেন।
আফজাল হাসলো নিরুপমার দিকে তাকিয়ে বিনিময়ে নিরুপমাও মুচকি হাসলো।
আজাদ চৌধুরী চা শেষ করে উঠে গেলেন।।
নিরুপমা আফজালের দিকে চা বাড়িয়ে দিল।
আফজাল ধরার আগেই হাত থেকে কাপ ছেড়ে দিলো।
চায়ের কাপ গিয়ে পড়লো আফজালের হাঁটুর উপর।
নিরুপমা ভয়ে চুপসে গেলেন।আফজাল ব্যাথায় চোখ বন্ধ করে নিয়েছেন।
নিরুপমা সরি সরি বলে টেবিলে রাখা গ্লাসের সবটা পানি ডেলে দিলো আফজালের উপর এতে আফজাল আর্তনাদ করে উঠলো।
টেবিলের উপর এই মাত্র ফুটন্ত গরম পানি রেখে ছিলেন আমেনা বেগম উনার শশুরের জন্য।
আফজালের আর্তনাদে সবাই দৌড়ে আসলো।
আফজাল রাগী চোখে নিরুপমার দিকে তাকালো নিরুপমার মুখে তাচ্ছিল্যের হাসি।
নিরুপমা আফজালের কানে কানে বলে উঠলো, ‘ তুমি এখনো আগের মতোই কাঁচা রয়ে গেলে বৃদ্ধ হচ্ছ একটু তো বুদ্ধি আনো না হয় তোমার ভাড়া করা কুত্তা গুলো থেকে ধার নাও।’
আফজাল অগ্নি দৃষ্টিতে তাকাতেই নিরুপমা হেঁসে বলে উঠলো, ‘ আজ তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে অপেক্ষা করো।’
আফজালের পা জ্বলে যাচ্ছে চোখ বন্ধ করে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করছে নিরুপমার কথায় তেমন গুরুত্ব দিলো না।
আফজাল নিজের রুমে বসে আছে। পায়ে বার বার পানি দিচ্ছে। একদম চামড়া উল্টে গেছে।
আমেনা বেগম দুই বার এসে জিজ্ঞেস করে গেছেন ডাক্তার ডাকবে কিনা। আফজাল বার বার নিষেধ করে দিয়েছে।
নিরুপমা হাতে মলম নিয়ে এসে আফজালের সামনে রাখলো৷
আফজালঃ ইচ্ছে করে করেছো তাই না!.?
নিরুপমাঃ যাক এতো দিনে একটু বুদ্ধি হয়েছে তোমার।
আফজাল হাসলো।
নিরুপমাঃ ভাঙবে তাও মচকাবে না।
আফজালঃ এইগুলো করে লাভ কি!.? আমার কিছুই করতে পারবে না।
নিরুপমাঃ তোমার কিছু করতে পারবো কিনা জানিনা তবে তোমার পাপের রাস্তা সব এক এক করে শেষ করে দিব।
আফজালঃ হাস্যকর।
নিরুপমাঃ মলমটা লাগিয়ে নাওও।
আফজাল মলমটা ভালো করে দেখে লাগিয়ে নিল।
নিরুপমা মুচকি হেঁসে পায়ের দিকে তাকিয়ে আছে।
আফজাল সাহেব আসতে আসতে বলে উঠলো, ‘ পা জ্বলছে কেন!.?’
নিরুপমার মুখে হাসি দেখেই রাগ আর কন্ট্রোল করতে পারলো না।এক তো দুইবার ফুটন্ত গরম পানি একই জায়গায় পড়েছে তার উপর মলমে কিছু মিশানো ছিল।
আফজাল রেগে নিরুপমার গালে থাপ্পড় মারতে গেলে নিরুপমা নিজেই আফজালের গালে থাপ্পড় মেরে বসে।
আফজাল হতভম্বের মতো তাকিয়ে আছে নিরুপমার দিকে।
নিরুপমা রুম থেকে বেরিয়ে যেতে নিলেই আফজালের ফোন বেজে ওঠে সাথে হাসি ফুটে উঠে নিরুপমার মুখে।
আফজাল থমথমে মুখে মোবাইলের দিকে তাকিয়ে হাতে নেয়। থাপ্পড় খেয়েছে তাও নিরুপমার হাতে এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। এতো সাহস কিভাবে আসলো!.?
আফজাল ফোন কানে দিয়ে হেলো বলতেই অপর পাশ থেকে কিছু একটা শুনে চোখ মুখ শক্ত হয়ে গেলো রেগে মোবাইল দেওয়ালে ছুড়ে মারলো।
চিৎকার করে বলে উঠলো, এতো গুলো মেয়ে পুলিশ কিভাবে ধরলো!? কার এতো বড় সাহস.!??
_____________
আজ দুপুরের দিকে নির্জন মেঘলা বাড়িতে আসলো।
মেঘলার দিকে সন্দেহের সৃষ্টিতে তাকালেন আমেনা বেগম।
আমেনা বেগমঃ আজকাল তোমাদের দুইজনকে সব সময় এক সাথে দেখা যায়। আমার ছেলেকে ফাঁসিয়ে শান্তি হয়নি তোমার!.?? এখন দেবরের সাথেও!
মেঘলা অপমানে মাথা নিচু করে নেয়।
নির্জন অবাক হয়ে বলে, ‘ কি বলছো বড় আম্মু!.??’
আমেনা বেগমঃ তুমি চুপ থাকো!!. আক্কেল জ্ঞান সব তো পকেটে নিয়ে রাখো। নিজের মায়ের অবস্থা দেখেছো.? দিন কে দিন ঘর বন্ধি হয়ে যাচ্ছে এর মধ্যে এমন কাজ করো না জেনো একদম শেষ হয়ে যায়।
নির্জনঃ বড় আম্মু তুমি একটু বেশি ভেবে ফেলছো।
আমেনা বেগমঃ আমি অন্ধ নই। আজ বাসার মানুষের চোখে পড়ছে কাল বাহিরের মানুষ বলাবলি শুরু করবে।
মেঘলা লজ্জায় মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে সে কিছুতেই শাশুড়ীর সাথে তর্ক করতে চায় না। অবশ্য শাশুড়ী ভুল কিছু বলছে না। ওদের সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন ছিল।
” আন্টি আপনি যেমন ভাবছেন তেমন কিছু না, নির্জনের ছোট একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে সেই জন্য হসপিটালে আমি মেঘলা কে কল দিয়ে ডেকে ছিলাম।”
আমেনা বেগম পেছনে ফিরে সাজ্জাদ কে দেখলেন।
আমেনা বেগমঃ আরে সাজ্জাদ অনেক দিন পর আসলে।
সাজ্জাদ হেঁসে আমেনা বেগমের দিকে তাকালো।
আমেনা বেগম চিন্তিত হয়ে নির্জনের দিকে তাকালো। এত্তোক্ষন রাগের বসে খেয়াল করা হয়নি।
হাতে, পায়ে বেন্ডেজ করা কপালেও কেটে আছে।
আমেনা বেগমঃ কিভাবে হলো এইসব!.?
নির্জনঃ গাড়ি এক্সিডেন্ট হয়ে ছিলো বড় আম্মু তবে বেশি কোনো সমস্যা হয়নি।
আমেনা বেগম নির্জনের কপালে হাত রেখে দেখছেন হাত, পা দেখে রেগে বলে উঠলো, ‘ বার বার তোর বড় আব্বু নিষেধ করেছে এই জব নিস না তাও তুই এটাই নিলি৷ কি করেছিস শরীরের। এদিকে আয়।
নির্জনকে সোফায় বসিয়ে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করছে আর বকছে।
সাজ্জাদ মেঘলার পাশে গিয়ে দাড়ালো।
সাজ্জাদঃ মেঘলা..
মেঘলাঃ ভাবি!
সাজ্জাদঃ কেনো! নাম ধরে বললে সমস্যা.??
মেঘলাঃ ভাবি ডাকটা সুন্দর আর ভাইয়ের বউকে ভাবি বলে।
সাজ্জাদ মেঘলার দিকে কিছু সময় তাকিয়ে রইলো হেঁসে বলে উঠলো, ‘ আপনার জন্য একটা জিনিস এনে ছিলাম।’
মেঘলাঃ আমার জন্য! কি.?
সাজ্জাদ একটা পেকেটে মুড়ানো ব্যাগ মেঘলার হাতে দিলো।
মেঘলা খুলতে চাইলে সাজ্জাদ এখন খুলতে নিষেধ করলো।
নিজের রুমের দরজা থেকে দাঁড়িয়ে ড্রয়িং রুমের সব দেখছে আফজাল।
ঈগল চোখে তাকিয়ে রইলো মেঘলার দিকে এতোদিন মেয়েটাকে সন্দেহ না হলেও আজ ভীষণ ভাবে রহস্যময়ী লাগছে। এইসব কিছুর পেছনে নির্জন আছে আর নির্জনের পেছনে কে!.??? মেঘলা.?
আফজাল মনে মনে ছয় নয় কষলো একপর্যায়ে কাউকে কল দিয়ে বললো,’ আজকের মধ্যে এই মেয়ের সব বায়ু ডাটা চাই।’
_________
মহুয়া আহনাফের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
আহনাফ অবাক হয়ে মহুয়ার দিকে তাকালো।
মহুয়া রাগী দৃষ্টিতে আহনাফের দিকে তাকিয়ে চোখ অন্য দিকে করে নিলো।
ডক্টর সোনিয়া বেশ লজ্জায় পড়ে গেলেন৷
এমন কিছু হবে জানলে এই সময় আহনাফের কাছে আসতেন না।
আহনাফ শান্ত কন্ঠে বলে উঠলো, ‘ মহুয়া বসো।’
মহুয়া হাতের টিফিন বক্স রেখে চুপচাপ বসলো।
ডক্টর সোনিয়া কিছু বলতে চাইলে আহনাফ থামিয়ে দিল।
আহনাফঃ ডক্টর সোনিয়া আপনি এখন আসেন আমরা বাকি কথা পড়ে বলব।
মহুয়া রাগে বিরবির করে বলে উঠলো, ‘ হুহ্ এখন প্রেম আলাপ করলে তো আমি শুনে ফেলবো।’
আহনাফ মনে মনে হাসছে মহুয়ার মুখ দেখে।
ডক্টর সোনিয়া চলে যেতেই আহনাফ চেয়ার ছেড়ে মহুয়ার সামনে এসে বসলো।
মহুয়া অন্য দিকে তাকিয়ে আছে।
আহনাফঃ আমার বউ দেখি ভীষণ হিংসুটে। এটা ঠিক না উদার মনের ডক্টর আহনাফ চৌধুরীর বউ এতো কিপটে।
মহুয়াঃ কিপটে.?
আহনাফঃ না, ভীষণ জেলাস।
মহুয়া মুখ ভেংচি কেটে বলে উঠলো, ‘ মোটেও না।’
আহনাফঃ তাহলে তো ভালোই হলো আমার আর কিছু বলতে হবে না। শুধু শুধু প্যারা নিচ্ছিলাম।
আহনাফ উঠে দাঁড়ালো, মহুয়া অভিমানী সুরে বলে উঠলো, ‘ আপনি ওই মেয়ের সাথে কি করছিলেন!.?’
আহনাফঃ প্রেম করছিলাম। ঘরের বউ একজন পাষাণী সেই জন্য বাহিরে প্রেম খুঁজতে হয়।
মহুয়া রাগে ফুঁসে ওঠলো।
মহুয়াঃ সব ছেলেরাই এক।
মহুয়া চুপচাপ দাঁড়িয়ে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বের হয়ে যেতে চাইলো আহনাফ মহুয়ার হাত ধরে নিলো। নিজের দিকে ঘুরিয়ে টেনে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরলো। মাথায় হাত বুলিয়ে বলে উঠলো, ‘ শান্ত হও, এতো রেগে গেলে হবে!.? তুমি জানো রাগ শরীরের জন্য কতোটা ক্ষতিকর!.?’
মহুয়াঃ জানতে হবে না আমার ছাড়েন। যার কাছে প্রেম খুঁজেন তাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরেন।
আহনাফঃ তুমি তো আমাকে ভালোবাস না, পছন্দ করো না, স্বামী হিসেবে মানো না তাহলে জ্বলছে কেনো.? এতো জেলাস কেনো.??
মহুয়াঃ আমি মোটেও জেলাস না।
আহনাফঃ আচ্ছা মেনে নিলাম জেলাস না। তাহলে আমি প্রেম করতে পারি.? বউ নিজেই পারমিশন দিয়ে দিলো! এমন বউ প্রতিটা ছেলের হোক।
মহুয়াঃ ছিঃ! কি দোয়া করছেন..??? আজ বাসায় আসেন আপনার প্রেম করার শখ মিটে যাবে। লুচু পুরুষ বউ থাকতে বাহিরে প্রেম খুঁজেন!. অন্য মেয়ের কাছে! এইসব করার জন্য হসপিটালে আসেন.? আমি আজ বাসায় গিয়ে আন্টিকে সব বলবো।
আহনাফঃ আচ্ছা তোমার শাশুড়ী কে বলো।
মহুয়া আহনাফকে দূরে সরাতে চাইলো কিন্তু আহনাফ ছাড়লো না।
আহনাফঃ শুনো.. সোনিয়া একটা কাজে আমার কাছে এসে ছিলো। কথা বলতে বলতে চোখে কি জেনো পড়েছে এখানে তো আর কেউ নেই তাই বাধ্য হয়ে আমি চোখ দেখতে ছিলাম তুমি দরজার কাছে ছিলে তাই উল্টা পাল্টা ভেবেছো। মেয়েটা অনেক ভালো।
মহুয়া শুনলো আহনাফের কথা। সে আহনাফ কে বিশ্বাস করে। আহনাফ মিথ্যা বলে না।
মহুয়া হেঁসে বলে উঠলো, ‘ আমি জানি ডক্টররা কসাই হয় তাদের মনে প্রেম ভালোবাসা থাকে না। ‘
আহনাফঃ তোমাকে তো বললাম এসিস্ট্যান্ট হয়ে চলে আসো, তোমার একটাই কাজ থাকবে কসাই থেকে প্রেমিক বানানো।’
মহুয়া আহনাফ কে সরিয়ে বলে উঠলো, ‘ থুর! আমি বাসায় যাব।’
আহনাফঃ যাও আমি তো ধরে রাখিনি।
মহুয়া বিরবির করে বলে উঠলো, ‘ এতোক্ষণ কি তাহলে জ্বীনে ধরে রেখে ছিলো!.?’
আহনাফ হেসে বলে উঠলো, ‘ নাহ্ আমার আত্মায়।’
_________
রাতে শ্রাবণ বাসায় আসলো। সোফায় বসে পানি খেয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো।
আফজাল নিজের রুম থেকে খুড়িয়ে খুড়িয়ে বের হয়ে আসলো। শ্রাবণের পাশে বসে টুকটাক কথা জিজ্ঞেস করলো অফিসের বিষয়।
এক পর্যায়ে নির্জনের কথা, নির্জন থেকে মেঘলা সাজ্জাদ সব কথাই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে তুললো আফজাল।
শ্রাবণ এমনিতেই ক্লান্ত ছিল সাজ্জাদের কথা শুনতেই মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো।
আমেনা বেগম কিছু বলতে আসলে না শুনেই সিঁড়ি বেয়ে হনহন করে রুমে চলে গেলো।
শ্রাবণের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো আফজাল। সে মেঘলার ভীষণ সব তথ্য সংগ্রহ করে নিয়েছে। নিজের বোকামির জন্য নিজের উত্তর রাগ হচ্ছে এতো বড় ভুল কিভাবে করলো!.? যেভাবে ভুল করেছে সেভাবেই ঠিক করবে। মেঘলার অস্তিত্ব মুছে দিবে। এখন টার্গেট মেঘলা। এইসব দুই পয়সার সিআইডি সরাতে বা হাতের কাজ মাত্র।
___________
ছোঁয়া পিঠার প্লেটটা ঠাসস করে রাখলো নির্জনের সামনে।
নির্জন ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে প্লেটের দিকে তাকালো।
নির্জনঃ এভাবে রেগে আছিস কেন.? কেউ কিছু বলেছে.??
ছোঁয়াঃ আগে তুই বল তোরে এই চাকরি কে করতে বলছে.??
নির্জনঃ ছোঁয়া আমি তোর বড় একটু তো সম্মান দিয়ে তুমি করে বল।
ছোঁয়াঃ মরতে মরতে ফিরে এসেছে আবার আছে সম্মান নিয়ে। এইসব পুলিশ টুলিশ দের কেউ সম্মান দেয় না।
নির্জনঃ পুলিশ বুঝলাম কিন্তু টুলিশটা কি!.??
ছোঁয়া রেগে প্লেট থেকে কাটা চামচ নির্জনের সামনে ধরে বলে উঠলো, ‘ একদম ফাজলামো করবি না নির্জনের বাচ্চা! ‘
নির্জনঃ ছোঁয়া আমার এখনো বিয়ে হয়নি বাচ্চা আসবে কোথায় থেকে.?
ছোঁয়াঃ এখন কি বাচ্চার জন্য মামিকে বলবো বিয়ে দিয়ে দিতে!.??
নির্জন লজ্জা পাওয়ার মতো মুখ করে বলে উঠলো, ‘ আমি তো প্রথমে আলহামদুলিল্লাহ কবুল।’
ছোঁয়া রেগে তাকিয়ে রইলো নির্জনের দিকে।
নির্জনঃ যা রুম থেকে বের হ।
ছোঁয়াঃ কেন.? রুমটা তোর.?
নির্জনঃ তো কার.?
ছোঁয়াঃ কোথাও কি নাম লেখা আছে..?
নির্জনঃ তোর চোখের পাওয়ারের সাথে সাথে পড়ালেখার পাওয়ার ও কমে গেছে ভালো করে রুমের দেওয়াল গুলোতে তাকা।
ছোঁয়াঃ তাতে কি আমি রুম থেকে বের হবো না।
নির্জনঃ তাহলে চুপচাপ বসে থাক বিরক্ত করবি না।
ছোঁয়াঃ আমি তোকে বিরক্ত করছি.? আমাকে তো বিরক্ত লাগবেই। ভালো লাগবে সব রাস্তার পেত্নী গুলোকে।
নির্জন তাকালো ছোয়ার দিকে।
নির্জনঃ কি হয়েছে তোর.??
ছোঁয়াঃ আমার আবার কি হবে..?
নির্জনঃ এমন করতেছিস কেন.?
ছোঁয়াঃ তুই পুলিশের চাকরি ছেড়ে দে। এই চাকরি ভালো না।
নির্জনঃ কে বলেছে ভালো না.?
ছোঁয়াঃ আল্লাহ না করুক আজ যদি তোর কিছু হয়ে যেত।
নির্জনঃ তাতে তো তোর আরও ভালো হতো।
ছোঁয়ার অভিমানে চোখ ভরে উঠলো। নির্জন বুঝি ওর বিষয় এইসব ভাবে!!.?
নির্জনঃ আবার কি হলো.? এদিকে আয়।
ছোঁয়া উঠে যেতে নিলে নির্জন বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়।
ছোঁয়াঃ সর।
নির্জনঃ আমার দিকে তাকা ছোঁয়া।
ছোঁয়াঃ আমি কেন তোর দিকে তাকাবো! তোর দিকে তাকানোর তো মেয়ের অভাব নেই। আমার কথা কেন শুনবি.? ওদের কথা শুনবি।
নির্জন পকেট থেকে চকলেট বের করে বলে উঠলো, ‘ তোর জন্য এনে ছিলাম।’
ছোঁয়া হুঁ হুঁ করে কেঁদে উঠলো।
ছোঁয়াঃ তোর এমন অবস্থা দেখে আমার কেন এতো কষ্ট হচ্ছে.?
নির্জনঃ এই পাগলি আমার কিচ্ছু হয়নি, এই দেখ আমি সুস্থ।
ছোঁয়াঃ হু কতোটা সুস্থ দেখতে পাচ্ছি।
নির্জনঃ বিছানায় বস আজ গল্প করি।
ছোঁয়াঃ এখনি তো আবার বলবি আমার রুম থেকে বের হ।
নির্জনঃ বলবো না।
ছোঁয়াঃ প্রমিজ।
নির্জনঃ প্রমিজ।
________
শ্রাবণ রুমে এসেছে সেই কখন একবারও মেঘলার দিকে তাকায়নি ব্যালকনিতে বসে আছে।
মেঘলা ফ্রেশ হয়ে আয়নার সামনে দাঁড়াতেই সাজ্জাদের বক্সটা চোখে পড়লো।
হাতে নিয়ে খুলতেই শাড়ি,চুড়ি,কানের ঝুমকো চোখে পড়লো। বলা যায় সাজ্জাদের চয়েস সুন্দর।
মেঘলার বেশ পছন্দ হলো। মেরুন রঙের শাড়ি,চুড়ি, ঝুমকো। দেখেই পড়তে ইচ্ছে হলো।
শাড়ি,চুড়ি,ঝুমকো পড়ে নিজেকে বার কয়েক আয়নায় দেখে নিলো। চুলগুলো ছেড়ে ব্যালকনিতে উঁকি দিলো।
শ্রাবণ কখনো সিগারেট খায় না চুপচাপ বসে আছে।
মেঘলা ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে অন্যের দেওয়া শাড়ি,চুড়ি, গহনা পড়ে যখন প্রিয় পুরুষটির সামনে দাঁড়ালো। তখন কেমন করে জেনো শ্রাবণ মেঘলার দিকে তাকালো।
মেঘলা,’ আমাকে কেমন লাগছে..?’
শ্রাবণ অভিমানী,গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলো, ‘ সুন্দর লাগছে।’
মেঘলার বুক কেঁপে উঠল, এতোটা গম্ভীর কণ্ঠ!!? কাঁপা কাঁপা কন্ঠে জিজ্ঞেস করল, ‘ কতোটা সুন্দর লাগছে!.?’
শ্রাবণ হাসলো, কি ছিল সেই হাসিতে!.? হঠাৎ সেই হাসির রং পাল্টে গেল৷ অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো, ‘ বিশ্রী রকমের সুন্দর লাগছে।’
চলবে,
ভুলত্রুটি মার্জনীয়।