#ভালোবাসার_অন্যরুপ 🌸❤
#পর্ব :16
#লেখিকা : Aye Sha
[স্যাড এন্ডিং আমি দেবো না। আগেও বলেছি আবারও বললাম]
🌸
নীতা– আআআআআআ!! (আর্তনাদ করে)
আমান– কি হলো নীতা বেইবি?? এতো জোরে চিৎকার করছো কেনো??
নীতা– আ..আ..আমায় প্লিজ ছ..ছ..ছেড়ে দাও আ..আ..আমান! আমার ভ..ভ..ভীষণ জ্বালা ক..ক..করছে।
আমান– এতো টুকুতেই জ্বলছে?? এখনও তো আমি কিছুই করলাম না। শুধু মাত্র তোমার হাতেই এই ফুটন্ত গরম জল ঢেলেছি। এরপর তো আরো অনেক ট্রিটমেন্ট বাকি আছে তোমার। যা আরো বেশি বিভোৎষ।
নীতা– ছেড়ে দাও আমায় প্লিজ, প্লিজ ছেড়ে দাও।
আমান– উমমম ছেড়ে দিতে পারি বাট একটা শর্তে। (নীতার চারিপাশে ঘুরে)
[ পুলিশ স্টেশনে এসে আমান নীতার সাথে দেখা করতে চায় আলাদা একটা রুমে, সেখানে নীতা কে একটা চেয়ারে দু-হাত বাঁধা অবস্থায় রয়েছে আর আমান বিপরীত দিকে একটা চেয়ারে বসেছিল। ]
নীতা– ক..ক..কি শর্ত??
আমান– কার কথায় কাজ করছো তুমি?? কে পাঠিয়েছে তোমাকে??
নীতা– আমি কারোর কথায় কোন কাজ করছি না। ছেড়ে দাও আমাকে।
আমান– ও তার মানে তুমি বলবে না তাইতো?? ঠিক আছে তাহলে তো আরেকবার তোমার ব্যবস্থা করতে হবে জাস্ট ওয়েট।
আমানের কথা শেষ হতে দেরী হলো কিন্তু কাজ করতে দেরী হলো না। আমানের হাতে একটা ধারালো ছুরি ছিলো সেটা দিয়ে এক পোচ মেরে দিলো নীতার দু-হাতের কব্জির উপরে।
নীতা– আআআআ!! ছ..ছ..ছেড়ে দাও আ..আ..আমায়।
আমান– তুমি আমাকে বাধ্য করেছো আমার হিংস্র রুপটাকে সামনে আনতে, আমি বারণ করেছিলাম তোমাকে। কিন্তু তুমি শোনোনি।
আমান পাশের টেবিল এ রাখা একটা লেবু নিয়ে সেটা কে অর্ধেক করে নীতার কাটা জায়গার ওপর চিপতে শুরু করলো। এদিকে নীতা পাগলের মতো চিৎকার করছে।
আমান– আমার কলিজার গায়ে তোমার জন্য ফোস্কা পরেছে, যাকে আমি এতদিন ধরে আগলে রেখেছি তার গায়ে আচর কাটার সাহস করেছো তুমি আর তোমার আম্মি। এখন তোমার ব্যবস্থা করছি, নেক্সট টার্গেট তোমার আম্মি। কফি খাওয়ার খুব ইচ্ছে তাই না তোমার বেইবি??
আমান কথাটা বলে পাশে টেবিলে রাখা ফ্লাস্ক খুলতেই সেটা থেকে ধোঁয়া বের হতে লাগলো, নীতা সেই দেখে ঘাবড়ে গেলো আর হাউমাউ করে কান্না করতে লাগলো, আমান ওর দিকে হিংস্র চোখে তাকিয়ে আস্তে আস্তে কাটা জায়গাটার ওপর কফি টা ঢালতে শুরু করলো। নীতা সমানে চিৎকার করছে, নীতার চিৎকার আমানের কানে লাগলেও মনে লাগছে না। একসময় চিৎকার করতে করতে নীতা জ্ঞান হারালো। আমান সেই দেখে বাঁকা হেসে বললো।
আমান– সবে তো শুরু নীতা, এখনই জ্ঞান হারাচ্ছ?? এতদিন ধরে তুমি আর তোমার আম্মি আমার মীরুর সাথে যা যা করেছে তার সব কিছু দ্বিগুণ ভাবে ফেরত পাবে। তোমরা জানো না এই আমান কতটা ভয়ানক হতে পারে, আমার কলিজায় হাত দেওয়া তো দুর, চোখ তুলে তাকানোর চেষ্টা করলে তার কলিজা টা বার করে আনি আমি। সেখানে তোমরা তো দিনের পর দিন টর্চার করেছো। আজ আমার যেই রুপ নীতা দেখেছে তা তো কিচ্ছু না, এবার থেকে যে যে আমার আর মীরুর মাঝে আসবে তার পরিণতি আরো ভয়ানক হবে। কিন্তু আমার এই রুপ মীরু কোনদিন দেখবে না, দেখলে হয়তো ও আমাকে ছেড়ে চলে যাবে যেমনটা আ…। লেট ইট বি আমান।
আমান বেরিয়ে গেলো রুম থেকে আর কয়েকটা মহিলা কন্সটেবল গিয়ে নীতার ট্রিটমেন্ট করা শুরু করলো।
অন্যদিকে,
মীরা– সুমি আমাকে বল, কি করেছে অর্নিল তোর সাথে??
ইসমি– প্লিজ মীরা বাদ দে। যা হওয়ার তা হয়ে গেছে, আমি আর এসব নিয়ে ভাবতে চাই না।
মীরা– ভাবতে না চাইলে তো আর হবে না তাই না?? আমি সবটা জানতে চাই তাই তুই বলবি।
ইসমি– (একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে) আসলে…
#ফ্লাশব্যাক 🌸🌸
নিলয়– অর্নিল! আই ক্যান্ট বিলিভ ইয়ার! যেই মেয়েটাকে কেউ পটাতে পারলো না এতদিন ধরে সেই মেয়েটাকে তুই পটিয়ে ফেললি??
আরুশ– অর্নিল কিন্তু নিজের চ্যালেঞ্জ কম্পলীট করেছে।
স্নেহাংস– একদম! নিলয় যেমন বলেছিল ইসমি কে পটাতে তেমনটাই করেছে অর্নিল। ওয়াও অর্নিল! তুই তো খুব সুন্দর অভিনয় করিস, গ্রেট জব ইয়ার। তাহ ব্রেক আপ কবে করছিস??
__আজকে এই মুহুর্তে!!
অর্নিল কিছু বলতে যাবে তখনই পিছন থেকে উত্তর টা এলো, ওরা সবাই তাকিয়ে দেখলো ইসমি অশ্রুভেজা চোখে দাঁড়িয়ে আছে। অর্নিল ইসমির দিকে এগিয়ে কিছু একটা বলতে গেলেই ইসমি থামিয়ে দেয়।
ইসমি– আপনাকে আর কিচ্ছু বলতে হবে না মিস্টার অর্নিল খান। আমি সবটা বুঝতে পেরেছি। আপনি আমার সাথে এই ভালোবাসার নাটক টা করেছেন তার কারণ মীরা আপনাকে অপমান করেছিল আপনার ভাই কে দিয়ে আপনাকে সবার সামনে অপমান করেছিল আর এখনও আপনার ভাই কে মেনে নেয়নি। আমি খুব ভালো করেই জানি আপনি আপনার ভাই কে কতো টা ভালোবাসেন কারণ আমিও মীরা কে ভালোবাসি। আমি বুঝেছি সব টা কিন্তু এতো বড়ো অভিনয় টা না করলেও পারতেন। যাক আপনার এই কাজে ভালোবাসা থেকে, মানুষের উপর থেকে বিশ্বাস টা আজীবনের মতো উঠে গেলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আমার জীবনে এতো বড়ো অধ্যায় টা নিমিষে শিখিয়ে দেওয়ার জন্য। আশা করছি আপনাদের রিভেঞ্জ নেওয়া, মজা নেওয়া সবটা শেষ। তাই দয়া করে আর আমার সামনে আসবেন না। চলি।
ইসমি ওখানে আর এক মুহুর্ত দাঁড়ালো না, অর্নিলের বন্ধুরা সবাই হা করে তাকিয়ে আছে কারণ যেই ইসমি কোনদিন ছেলেদের পাত্তা দিতো না সব সময় স্ট্রং থাকতো, আজ সেই ইসমির চোখে পানি! ইসমি যতক্ষণ অর্নিলের সাথে কথা বলেছে ততক্ষণ ওর চোখ দিয়ে পানি পরেছে। এদিকে অর্নিল ও ইসমির যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চলে গেলো ইসমির পিছনে। অর্নিলের বন্ধুরা একে অপরের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ওদের পিছনে গেলো।
সত্যি এই আড়াই অক্ষরের শব্দ ” প্রেম ” বড়োই অদ্ভুদ। যা বুঝতে এবং বোঝাতে অনেক সময় লেগে যায়। অনেক সময় হয়তো অনেকে বোঝেও না। এটি এমন একটি জিনিস যা বোঝা দুষ্কর। যখন মানুষ বোঝে না প্রেম কি জিনিস তখনও কষ্ট পায় আবার যখন বোঝে তখন ও। প্রেম কে নিজের মনে স্থান দিতে হলে নিজের মন খালি করতে হবে কোনো ছল, বানিজ্য, ব্যবসা, স্বার্থ থাকলে প্রেম সম্ভব নয়।
#ফ্লাশব্যাক_এন্ড 🌸🌸
মীরা– এটা অর্নিল কি করে করতে পারে?? আমার উপর রাগ থেকে এতো কিছু??
ইসমি– আমি তো বললাম মীরা আমি এসব নিয়ে ভাবতে চাই না। আর অর্নিলের সাথে আমার সম্পর্কের মেয়াদ মাত্র ১ মাসের তাই আমার কষ্ট হচ্ছে না।
মীরা– সত্যি কি তাই সুমি??
ইসমি– হ্যাঁ! আর শোন এবার সবটা ঠিক করে নেওয়ার চেষ্টা কর, নীতা কে যেভাবে জিজু প্লান করে বার করেছে সত্যি ভাবা যায় না। দারুন স্কিম। সাবধানে থাকবি আমি আসছি।
সুমি আর দাঁড়ালো না আমার সামনে চলে গেলো, সুমি মুখে যা বললো তা যে ওর মনের কথা নয় তা আমি খুব ভালো করেই জানি। আমাকে কিছু এক্তা করতে হবে। তুই ঠিকই বলেছিস সুমি, সবটা ঠিক করতে হবে আমায়।
ইসমি মীরার ঘর থেকে বেরিয়ে নিজের চোখের পানি ধরে রাখতে পারলো না, আজ সকালের ঘটনার পর ইসমির পক্ষে নিজেকে স্বাভাবিক রাখা অসম্ভব হয়ে পরেছে। সম্পর্কটা ১ মাসের হলেও ইসমি ভালোবেসে ফেলেছে অর্নিল কে। ভেবেছিল অর্নিল ওকে আগলে রাখবে নিজের ভালোবাসা দিয়ে যেমন টা আমান রাখে মীরা কে। কিন্তু তা হয়তো ইসমির কপালে নেই। ইসমি নিজেকে কোনোরকম স্বাভাবিক করে বেরিয়ে যেতে নিলো কিন্তু ঠিক সে সময় কেউ ইসমির মুখ চেপে ধরে একটা ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে নিলো।
ইসমি– উমম..উমমম…উমমমম….
অর্নিল– চুপ একদম চুপ! (ধমকে)
ইসমি অর্নিলের ধমক খেয়ে চুপ করে গেলো আর চারিদিকে ভালো করে চোখ বুলিয়ে দেখলো এটা অর্নিলের রুম। ইসমি ভয়ে একটা ঢোঁক গিললো আর অর্নিলের দিকে তাকাতেই অর্নিল ওর মুখ ছেড়ে দিলো, ইসমি সেই সুযোগে কিছু বলতে নিলেই অর্নিল এক হাতে ইসমির কোমর জড়িয়ে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে আরেক হাত ইসমির মাথার পিছন ধরে ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে দিলো। ইসমি প্রথমে শকড হলেও পরে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য অর্নিলের বুকে পিঠে কিল ঘুসি মারতে লাগলো কিন্তু কোনো লাভ হলো না।
বেশ অনেক্ষন পর অর্নিল ইসমি কে ছাড়লে ইসমি জোরে জোরে হাঁপাতে লাগলো, দেয়ালে ঠেস দিয়ে ইসমি কে দাঁড় করিয়ে অর্নিল বলতে শুরু করলো।
অর্নিল– আই রিয়েলি রিয়েলি লাভ ইউ ইসমি। আমি জানি আমাকে বিশ্বাস করাটা তোমার পক্ষে ডিফিকাল্ট বাট ইটস ট্রু। অভিনয় করতে করতে আমি সত্যি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। তুমিই প্রথম যে সারাক্ষণ আমার মাথা আমার মন আমার সারা শরীর জুড়ে বিচরণ করছে। আমি সত্যি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি। আমি এই কথাগুলো বলার চেষ্টা আজকে সকাল থেকে করছি।
ইসমি কিছু বলতে যাবে তার আগেই ইসমির মাথাটা কেমন ঘুরে গেলো আর ইসমি অর্নিলের কোলে ঢলে পরলো, ইসমি অর্নিলের বুকে ঢলে পরতেই অর্নিল পরম আবেশে ইসমি কে জড়িয়ে ধরলো জানো ইসমি কে নিজের ভিতরে ঢুকিয়ে নেবে।
[#ফিরে_আসবো_আগামী_পর্বে
17 part
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=122121840320106573&id=61553197202722&mibextid=Nif5oz