শুধু_তোমাকেই_চাই #শারমিন_হোসেন #পর্ব৪২

0
442

#শুধু_তোমাকেই_চাই
#শারমিন_হোসেন
#পর্ব৪২

ঘড়ির কাঁটা জানান দিচ্ছে দুপুর একটা বাজতে পনের মিনিট বাকি আছে। ইকোনমিক্স ডিপার্টমেন্টের ভবনটির দোতলার ক্লাসে বসে ক্লাস করছে লিয়া। ম্যাক্রো-ইকোনমিক্স ক্লাস চলছে।টিচার হোয়াইট বোর্ডে কিছু লিখে সবাইকে বোঝাচ্ছেন।ছাত্র-ছাত্রীরা কেউ কেউ মনোযোগ দিয়ে টিচারের লেকচার শুনছে।আবার কেউ কেউ আড়ালে ফিসফিসিয়ে কথা বলছে।আবার কেউ তো বসে বসে উসখুস করছে।তেমনি লিয়ার পাশে বসা রিভি কলম কামড়ে ধরে উসখুস করছে।লিয়া মুদ্রাস্ফীতির হার নির্ণয়ের সূত্রটা খাতায় তুলছে।এরমধ্যে রিভি একটু নড়েচড়ে বসে লিয়াকে পেন দিয়ে খোঁচা দেয়।

লিয়া বিরক্তিকর ফেস করে মৃদু আওয়াজে “আউচ”শব্দ করে। কিয়ৎক্ষন পরেই রিভির দিকে শান্ত চাহনিতে চেয়ে ফিসফিসিয়ে গম্ভীর গলায় বলে,,”হোয়াট হ্যাপেন্স? প্রবলেম টা কি তোর?পুরো ক্লাস টাইম ধরে আমি নোটিস করছি তোকে। ক্লাসে তো তোর নিজের মন নেই-ই।আমাকে পর্যন্ত ঠিকঠাক ক্লাস করতে দিচ্ছিস না। কন্টিনিউয়াসলি আমাকে বিরক্ত করে চলছিস।এই পেন দিয়ে খোঁচাচ্ছিস ।এই নড়াচড়া করছিস।যেমন ভাবে নড়াচড়া করছিস।তোর নড়াচড়া করা দেখে মনে হচ্ছে,যেনো দশমাসের গর্ভবতী।ঠিকঠাক বসে থাকতে সমস্যা হচ্ছে।”

মুখের সামনে এক হাত ধরে রিভি বড় করে হাই দেয়।এটা দেখে লিয়ার কপালে কিঞ্চিৎ ভাঁজ পরে। লিয়া এতগুলো কথা বললো। রিভির মুখ দেখে মনে হচ্ছে।এসব কথা রিভির কানের পাঁচ ইঞ্চি পাশ দিয়ে গিয়েছে।সেই কারনে কথাগুলো রিভির কানে ঢুকেনি।কোনো প্রভাব ফেলেনি রিভির মনে।কারন আগের মতই এটিটিউট নিয়ে আছে।লিয়া হতাশ হয়ে ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছাড়ে।

রিভি মিনমিনে স্বরে বলে,,”এই বোরিং ক্লাসের থেকে
তাও ভালো ছিলো। অনন্ত বাচ্চার মা তো হতে পারতাম।কারো বউ তো হতে পারতাম।এটলিস্ট চুটিয়ে সংসার তো করতে পারতাম।পড়ালেখার এই প্যারাময় জীবন আর ভালো লাগছে না।একটু চিলমুডে থাকতে চাই বোহেনা।”

লিয়া দৃষ্টি সরু করে দাঁতে দাঁত পিষে বলে,,”একটু কেনো?যত খুশি তত চিলমুডে থাক।নো প্রবলেম।তবুও ডিস্টার্ব করিস না।আর মাত্র ফিফটিন মিনিটস বাকী আছে।তাই ক্লাস টা শেষ হবে।তারপর যত খুশি তত গসিপ করিস।এখন আপাতত কানের পাশে ঘ্যানঘ্যান করা বন্ধ কর।হাতজোড় করছি।”

রিভি মুখটা মলিন করে ঠোঁট উল্টিয়ে বলে,,”এই লিয়ু!আমার কথাগুলো তোর কাছে ঘ্যানঘান মনে হচ্ছে।আই আ’ম অবাক দোস্ত।আমি সত্যি অবাক হচ্ছি।আমার বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে তুই এরকমটা বলতে পারলি।যেখানে এমনিতেই আমার মুড সুয়িঙ এর ব্যামো আছে।তোর কথা শুনে তো,আমার মন খা’রাপের পারদ আকাশ ছুঁইছুঁই অবস্থা হয়েছে।এমনিতেই আজ আমার মনের অবস্থা খুব একটা ভালো ছিলো না।এখন তো আরো ভীষণ ভীষণ খা’রাপ হয়ে গেলো।”

লিয়া চোখ রাঙিয়ে মৃদু আওয়াজে বলে,,”আবার লিয়ু। ওহ্ গড!কতবার বলেছি তোকে? আমার সুন্দর নামটাকে একদম বিকৃতি করবি না।আর কি যেনো বলছিলি। ওহ্!হ্যা মনে পড়েছে।তোর ভীষণ মন খা’রাপ করছে।তাই তো?আরে ইয়ার তোর ওটা মন না চায়না প্রোডাক্ট বলতো আমাকে। চায়না প্রোডাক্টের যেমন গ্যারান্টি নেই।যখন-তখন খা’রাপ হয়ে যায়।তোর মন-ও ঠিক তেমনি।”

রিভি গাল ফুলিয়ে বলে,,”বেস্ট ফ্রেন্ডকে এমন করে বলতে পারলি।একবারো মুখে বাঁধলো না।চায়না প্রোডাক্টের সাথে আমাকে তুলনা করলি।”

লিয়া ঠোঁটে ঠোঁট চেপে স্মিত হাসে। তারপর স্বাভাবিক ভাবে স্পষ্ট গলায় ব্যাকা করে বলে,,”ভুল বললি।তোর সাথে নয়। তোর মনের সাথে বলেছি।”

ক্লাস শেষ হতেই লিয়া ফোনটা হাতে নেয়।ফোন ওপেন করে ডায়ালে যায়। ডায়ালের সামনেই কাংখিত নম্বর টা দেখতে পেয়ে কল দেয়।ফোনের ওপাশ থেকে জারিফ বলে,,”টেন মিনিটস ওয়েট করো। আমি আসছি।”

“ওকে”বলে লিয়া কল কে’টে দেয়।লিয়া আর রিভি সিঁড়ি দিয়ে নামতে থাকে।রিভি গম্ভীর ভাবে বলে,,”ধ্যাত ভালো লাগে না। খানিকটা খা’রাপ সময় গেলেও তুই তো তাও তোর ভালোবাসার মানুষ কেই স্বামী হিসেবে পেয়েছিস।আর আমার অবস্থা দেখ। খুবই শোচনীয় অবস্থা আমার।আমার ফুফুমনি দিনে চার -পাচটা করে বিয়ের সম্বন্ধ নিয়ে আসছে।আর এদিকে আজ এক মাসের বেশী হবে ফুফমনির ছেলের সাথে আমার রিলেশন চলছে।”

লিয়া ফোন স্ক্রল করতে করতে নির্বিকার ভঙ্গিতে স্পষ্ট স্বরে বলে,,”তাহলে তোর ফুফুমনিকে খুলে বল।তোর কাজিনের সাথে যে তোর রিলেশন চলছে।সেটা জানানো দরকার তোর ফুফুমনিকে। নাহলে বেচারা তোর প্রেমিক ওরফে কাজিন।নিজ মায়ের জন্যই নিজের প্রেমিকা প্লাস কাজিনকে হারিয়ে বসবে।তখন আফসোস করে লাভ হবে না। তাই সময় থাকতে থাকতেই হুঁশিয়ার হতে হয়। ফ্রেন্ড হিসেবে আমার মতামত হলো, তোর উচিত আর্লি সবটা বাড়িতে খুলে বলা।যাতে করে তোর পরিবার-ও যেনো অন্যকাউকে কথা দিয়ে না বসে।এখনকার সময়ে তো সবাই বেটার অপশন খোঁজে।বেটার কাউকে পেলে পরিবারের কাছে সেটাই ফাস্ট প্রায়োরিটি পায়।ভালোবাসা,দুজন দুজনের জানা-শুনা এসব কিছু ফিকে হয় যায়।”

রিভি মুখটা ম্লান করে নিরস স্বরে বলে,,”একদম রাইট।ঠিক বলেছিস তুই।তবে কি জানিস লিয়া,আমার কাজিন বেকার। অনার্স কমপ্লিট করে মাস্টার্স করছে। তাই ভাইয়াও আমাদের বিয়ের কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না।ভাইয়ার ভ’য় যদি আমার বাবা-মা বেকার ছেলের সাথে বিয়ে দিতে রাজি না হয়।আর এদিকে আমার পরিবার থেকে বিয়ের জন্য পাত্র দেখতে শুরু করেছে।”

লিয়া শক্ত গলায় বলে,,”রাজি না-হয় এটা মাত্র ধারনা তোদের।আর তোরা ভাবছিস চাকরি পাওয়ার পর সবাইকে বলবি। কিন্তু এর আগেই যদি কোথাও তোর বিয়ে ঠিক হয়ে যায়।তখন?তখন কি হবে?তাই আমার মতে,আগে বলে দেখাই বেটার।”

রিভি ফোনে সময় দেখে নেয়। কিয়ৎক্ষন পরেই ঠোঁট আওড়িয়ে বলে,,”ওকে ইয়ার।ধন্যবাদ এত্তগুলো উপদেশ দেওয়ার জন্য।আর তোর কথাগুলো ভেবে দেখবো।এখন আসি।তুই তোর বরের জন্য ওয়েট কর।”

রিভি মিষ্টি হেসে চলে যায়।লিয়া ফোন স্ক্রল করে টাইম পাস করতে থাকে।টেন মিনিটস পেরিয়ে থার্টি মিনিটস হতে চলছে। অবশেষে জারিফ আসে। এতক্ষন লিয়াকে ওয়েট করানোর জন্য লিয়া মৃদু রা’গ দেখিয়ে গাল ফুলিয়ে থাকে।জারিফ দুই আঙ্গুল দিয়ে কপালের ঘামটুকু মুছে নেয়। লিয়ার দিকে শান্ত চাহনিতে চেয়ে শুকনো ঢুক গিলে নেয়।তারপর বাচ্চা বাচ্চা ফেস করে গলার স্বর একদম খাদে নামিয়ে বলে,,”সরি।”

লিয়া জারিফের দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নেয়।লিয়া ছোট ছোট চোখ করে জারিফের মুখের এক্সপ্রেশন দেখে।জারিফের মুখায়ব দেখে লিয়ার ভীষণ হাসি পায়। লিয়া ঠোঁটে ঠোঁট চেপে আনমনে হাসে।জারিফের আড়ালে ।লিয়ার হাসিটা জারিফের দৃষ্টিগোচর হয়না।তবুও জারিফের সামনে মেকি রা’গ আর কঠোরতা দেখাতে শক্ত গলায় বলে,,”হোয়াট ফর সরি?”

জারিফ টাইয়ের নাটটা একহাতে একটু ঢিল করে। অতঃপর দৃষ্টি সরু করে কিছুটা জড়তা নিয়ে বলে,,
“লেইট হওয়ার জন্য।তোমাকে বলা টাইমে আসতে না পারার জন্য।এই রোদের মধ্যে তোমাকে দাড় করিয়ে রাখার জন্য। প্রত্যেক টার জন্য আলাদা আলাদা সরি।খুব খুব সরি।এবার হ্যাপি। রা’গ করে থেকো না, প্লিজ।তোমার চাঁদের মতো মুখে গ্রহন লেগে আছে দেখলে।আমার পুরো দুনিয়া অন্ধকার হয়ে যায়।এবার অন্তত হাসো।যাও আজকে তোমাকে নিয়ে ক্যান্ডেল লাইট ডিনারে যাবো।এবার তো মুড অন করো।”

লিয়া দুইহাত বুকে গুঁজে স্ট্রেইট দাঁড়িয়ে কাঠকাঠ গলায় বলে,,”ঝরে যাওয়া ফুল আর করে ফেলা ভুল।দুইটা কনডিইশন-ই সেইম টু সেইম।যেমন ঝরে পরা ফুলকে তার পূর্বের অবস্থানে নেওয়া কখনো সম্ভব নয়।ঠিক তেমনি,কোনো ভুল একবার হয়ে গেলে,সেটাও ফিরিয়ে নেওয়া পসিবেল নয়।বুঝতে পেরেছেন মিস্টার আয়মান জারিফ।আর এতক্ষণ এই কাঠফাটা রোদে পুড়ে আমি চিকেন ফ্রাই হয়েছি।টেন মিনিটসের জায়গায় থার্টি মিনিটস আমাকে ওয়েট করিয়েছেন।তাই এটা আপনার জন্য শুধু ভুল নয় অপরাধ-ও বটে,হুহ।”

কুঞ্চিত কপাল করে জারিফ কথাগুলো শ্রবণ করে। শ্রবণ শেষে কপালের ভাঁজ টা একটু সরল করে,একহাতে চুলগুলো ব্যাক ব্রাশ করে নেয়।তারপর শান্ত কন্ঠে বলে,,”আই নো।তবে আমি যতটা জানি।যেমন ক্ষমা করা মহৎ গুণ।ভুল বলো আর অপরাধ যাই বলো না কেনো ক্ষমা তো করায় যায়।আর হঠাৎ-ই একটা জরুরী কাজে আঁটকে গিয়েছিলাম।তাই লেইট হয়েছে।”

লিয়া ওভাবে দাঁড়িয়ে দুইদিকে ঘাড় ঘুরিয়ে কঠোরভাবে বলে ,,”উঁহুম।আমি অতটাও মহৎ নই।তাই ক্ষমা-টমা আমার দ্বারা সম্ভব নয়।তবে পানিশমেন্ট দিলে আমার অশান্ত মনটা কিছুটা হলেও শান্ত হতে পারে।”

জারিফ মুচকে হেসে বলে,,”ওকে।ব্যাপার না।তুমি তো আমার দিলরুবা।তুমি তো আমার মেহবুবা।তুমি আমার মনের মহারানী। তোমার দেওয়া যে কোনো সাজা আমি মানতে আছি রাজি।ফটাফট বলে ফেলো।কি পানিশমেন্ট দিতে চাও?”

লিয়া স্মিত হাসে।কিছু ভাবতে থাকে। অতঃপর কোমল গলায় বলে,,”উহ! পানিশমেন্ট টা আজকে বরং তোলা রইলো। আজকে নয়।অন্য কোনো দিনের জন্য পাওনা থাকলো।আর একটু হিন্স তো দিয়ে রাখা যায়।তাই বলছি, পানিশমেন্ট হিসেবে আমি যা বলবো।আপনাকে তাই করতে হবে।আর ইউ এগরি মেজিস্ট্রেট সাহেব?”

“ইয়াহ।মাই বিবিজান।”

জারিফ লিয়া একসাথে বাসায় ফেরে। বাসায় ফিরে লিয়া শাওয়ার নেয়। অতঃপর দুইজন একসাথে লাঞ্চ করে।বিকেলে মোবাইলের শব্দে লিয়ার ঘুম ভেঙ্গে যায়। দুপুরে লাঞ্চ করে ঘুমিয়ে ছিলো।ফোনের স্ক্রিনে Ammu নামে সেভ করা। নম্বরটি থেকে ইনকামিং কল দেখে ঘুমুঘুমু চোখে মুখেই লিয়ার মুখে হাসি ফোটে।ফোন রিসিভ করে ভালো-মন্দ অনেক কিছুই বলে।রাজিয়া সুলতানা আসার কথা বলতেই,লিয়া দুই একদিনের মধ্যেই আসবো বলে।

সন্ধ্যার পর রেডি হয় লিয়া। পেস্ট কালারের স্লিকের শাড়ি পরে।মাথায় হিজাব পিনআপ করে নেয়।জারিফ পিৎ কালারের শার্ট আর গোল্ডেন কালারের প্যান্ট ইন করে পরে।আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে গায়ে পারফিউম পুস করতে করতেই আড়চোখে লিয়াকে পরখ করে।

চারিদিকে আলোক উজ্জ্বল পরিবেশ। বিভিন্ন লাইটিং এ চতুর্দিক ঝলমল করছে। চোখ বুলালেই আভিজাত্য পূর্ণ সব কিছুর ছোঁয়া ।মনোরম, নিরিবিলি পরিবেশের একটা টেবিল বুকড করে জারিফ লিয়া বসে পড়ে।জারিফ আর লিয়া KFC তে আসে।টেবিলের উপর থাকা মেনু কার্ডে একবার নজর বুলিয়ে নেয় জারিফ।তারপর একহাত দিয়ে কার্ডটা লিয়ার সামনে এগিয়ে দেয়।

“কি খাবে বলো।আজকে খাবার সিলেক্ট তুমি করবে।”

জারিফের কথার প্রতি উত্তরে লিয়া মিষ্টি হেসে ঘাড় নাড়ায়।যার অর্থ “ঠিক আছে। সমস্যা নেই। আমি মেনু সিলেক্ট করছি।”

ফ্রেঞ্চ ফ্রাই,চিকেন ফ্রাই সাথে মেয়োনিজ অর্ডার করে লিয়া।জারিফ ওয়েটার কে ডেকে লিয়ার চুজ করা খাবার গুলো অর্ডার করে।লিয়া দুইহাত টেবিলের উপর রেখে মৃদু আওয়াজে ঠোঁট আওড়িয়ে বলে,,”কষ্ট করে এখানে না এসে। KFC এর খাবারগুলো অর্ডার করলেই তো হয়ে যেতো। শুধু শুধু রেডি হয়ে বাইরে আসার ঝামেলা পোহাতে হতো না।”

জারিফ লিয়ার ফেসের দিকে শীতল চাহনিতে চেয়ে সফট ভয়েজে বলে,,”তোমার কাছে ঝামেলা মনে হচ্ছে?আমি তো উপভোগ করছি প্রতিটা মুহূর্ত।এইযে, সুন্দর করে শাড়ি পড়েছো। তোমাকে দেখতে হেব্বি লাগছে।বাসায় থাকলে তো এটা মিস করতাম।আর সবচেয়ে বড় কথা বউকে পাশে নিয়ে ঘুরার মজাই আলাদা।অন্যরকম স্বর্গীয় অনুভুতি হয় হৃদয় মাঝে।যা বলে বোঝানো যাবে না।এমন একটা রোমান্টিক পরিবেশে তোমার কথাটা শুনে আমার রোমান্টিক মুডটা দপ করে দমে গেলো।”

জারিফের শেষের কথা শুনে লিয়া অস্পষ্ট স্বরে আওড়ায়,,”যাক তাও বাঁচা গেলো।”

লিয়ার বিড়বিড় করা দেখে জারিফ ভ্রু কুঁচকে বলে,,”কিছু বললে?”

লিয়া মুখে হাসি টেনে এনে জোরকরে বলে,,”ইয়েহ না। মানে।এই একটু গরম লাগছে,আরকি।”

এক হাত দিয়ে মুখের সামনে বাতাস করে নিয়ে কথাটা বলে লিয়া।জারিফ একবার লিয়ার দিকে তাকায়। আরেকবার দেওয়ালের সাথে সেট করা এসির দিকে তাকায়। তারপর সন্দিহান চোখে তাকিয়ে বলে,,”গরম লাগছে তোমার।এসি চলছে। টেম্পারেচার ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর নিচে ছাড়া উপরে হবে না।”

লিয়া কিছুটা জড়তা নিয়ে বলে,,”বাইশ হোক আর বারো শাড়ি পড়লে ঠিকই বুঝতে পারতেন।শাড়ি পড়লে অটোমেটিকলি নিজের শরীরের সহ পরিবেশের-ও টেম্পারেচার তরতর করে বাড়তে থাকে।শাড়ি পড়লে বুঝতেন,কতটা গরম আর চলাচলে আনইজি লাগে,হুহ।”

জারিফ ঠোঁট কামড়ে ধরে মুচকি হেসে বলে,,”হুম।ঠিকই বলেছো।যেমন তোমাকে শাড়িতে একটু বেশিই হট এন্ড এট্রাক্টিভ লাগে।এইযে এই মূহুর্তে আমার নিজেকে কিকরে স্বাভাবিক রাখছি।সেটা কেবল আমি নিজেই জানি।উমম!তোমাকে দেখে আমার নিজেরই আনইজি ফিল হচ্ছে।মন কে বোঝাচ্ছি এটা পাবলিক প্লেস।আমার বেডরুম নয়।আর সবর এ মেওয়া ফলে। উফফ!,সুন্দর একটা রাত কাটানোর জন্য অপেক্ষা করছি।শাড়ি পড়েছো তুমি।আর নিভু নিভু তুষের আগুন আমার বুকে জ্বলছে।”

একহাত বুকের বাম পাশে রেখে কথাগুলো বলে জারিফ।জারিফের কথার মাঝেই ওয়েটার এসে খাবার সার্ভ করে।লিয়া চোখ রাঙিয়ে ফিসফিস করে বলে,,”চুপ।একদম চুপ করেন, প্লিজ।খাবার খেতে আসছেন।তাই একমনে খাবার খেয়ে যান।নো সাউন্ড।”

[চলবে…ইন শা আল্লাহ]

(শব্দ সংখ্যা ১৬০০+
আমার ফুফুমনি খুব অসুস্থ।একদম শয্যাশায়ী।উনাকে দেখতে গিয়েছিলাম। সেইজন্য গতকাল কে গল্প দেওয়ার কথা থাকলেও দিতে পারিনি।আজকের পর্ব ছোটো প্লাস একদম এলোমেলো হয়েছে।একটু মানিয়ে নিয়েন। পরবর্তী পর্ব গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করবো ইন শা আল্লাহ।আর হয়ত আগামী পর্বেই ইতি টানবো। রিচেইক দেয়নি। ভুলত্রুটি মার্জনীয়।হ্যাপি রিডিং।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here