#অপ্রিয়_জনাব
#Mehek_Enayya(লেখিকা)
#পর্ব_১০
-এভাবে বলতে নেই আপা। যাই হোক সে আপনাদের আম্মা হয়।
উপমার কথায় মৌন হয়ে যায় তাহসিয়া। তাহেরা হটাৎ খেয়াল করে উপমার গলার ঠিক নিচে লম্বা একটা কাঁটা দাগ। সবসময় ঘোমটা দিয়ে থাকার ফলে এই দাগ কখন তাঁদের নজরে পরেনি। তাহেরা হালকা করে ছুঁয়ে প্রশ্ন করে উঠলো,
-এটা কিসের দাগ ভাবিজান?
তাহেরার প্রশ্নে ঘাবড়ে যায় উপমা। সাথে সাথেই আঁচল দিয়ে গলা সহ মাথা ঢেকে ফেলে। ততক্ষনে তাহসিয়াও দাগ খেয়াল করে ফেলেছে। দুইজনই প্রশ্নবোধক চাহনি নিক্ষেপ করে উপমার পানে। উপমা স্মিত হাসার চেষ্টা করে বলে,
-তেমন কিছুই না। একবার ব্যাথা পেয়েছিলাম সেটারই দাগ।
তাহেরা বুঝার ভান করে মাথা নারায়। তাহসিয়ার কেনো জানি উপমার কথা বিশ্বাস হলো না। সন্দেহ নজরে তাকিয়ে রইলো। উপমা চোরা চোখে সেই দৃষ্টি দেখে মিনমিনে স্বরে বলল,
-এতো চুপচাপ করে আছো কেনো? তাহেরা তোমাদের শৈশবকালের কিছু ঘটনা বলো শুনি?
শৈশবের কথা শুনে তাহেরার মুখ খুশিতে ভরে উঠে। সে বলল,
-আমার শৈশবকাল অনেক আনন্দময় ছিল। আম্মাজানের আদর, আব্বাজানের বকুনি, ভাইজান ও বোনদের ভালোবাসা সব মিলিয়ে দারুণ ছিল সেই সময়টা। কিন্তু ছোট আপার শৈশবকাল আমার দেখা ততো ভালো ছিল না। আপা তার আদরের বড় আব্বাজানকে হারালো, তার প্রাণপ্রিয় সখিকে হারালো, তারপর আবার তার বিবাহ হয়ে গেলো।
শেষের কথায় জিব কামড় দেয় তাহেরা। কথায় কথায় কী সব বলে ফেললো সে। তাহসিয়া রেগে তাহেরাকে বলল,
-তোকে বলেছি আমার বিষয় কিছু বলতে? এতো বেশি বলিস কেনো তুই?
তাহসিয়া রাগে বসা থেকে উঠে চলে যায়। উপমা নীরব দর্শকের মতো সবটা দেখছিলো। তাহেরার মন খারাপ হয়ে যায়। তাই কথায় ফোড়ন কেটে বলল,
-তা আপনার শৈশবকালের কিছু বলুন ভাবিজান। পরিবারের বিষয় কিছু বলুন শুনি।
উপমা একবার তাকালো তাহেরার দিকে। তারপর আঁখিজোড়া বন্ধ করে বলে,
-আমার শৈশব মানেই এক অফুরন্ত ভালোবাসা। এক গল্পের কাহিনী। এক আনন্দময় অনুভূতি। আবার সেই আনন্দময় অনুভূতি মাঝে মাঝে ভীষণ পীড়াদায়ক অনুভূতিও হয়ে দাঁড়ায়।
-মানে?
-মানে তেমন কিছুই না। আসলে আমার স্পষ্ট মনে নেই শৈশবের কথা।
উপমার কথায় তাহেরা চুপ হয়ে যায়। উপমা শান্ত হয়ে বলল,
-আচ্ছা, বড় আব্বা মানে? আব্বাজানের কী আরো ভাই ছিল?
-হ্যাঁ ভাবিজান। আব্বারা তিন ভাই এক বোন ছিল। আব্বাজান সবার বড় তারপর আমার বড় আব্বা তারপর ছিল ছোট আব্বা। হুমাউদ্দীন মির্জা ছিল তার নাম।
উপমা ভাবুক হয়ে সবটা শুনলো। কথার পাল্টা জবাবে বলল,
-তাহলে এখন উনি কোথায়? উনার পরিবারই বা কোথায়?
তাহেরা দুঃখি মুখ করে ফেলে। কাঁদো কাঁদো স্বরে বলল,
-আমাদের আরেকটা বাড়ি ছিল। সেই বাড়িতে বড় আব্বা দাদাজান দাদিজানকে নিয়ে থাকতো। দাদাজান দাদিজান মারা যাওয়ার নয়দিনের মাথায় একদিন ঐ বাড়িতে আগুন লেগে যায়। সেই আগুনেই পুড়ে মারা যায় বড় আব্বা আর তার পুরো পরিবার। আমাদের আরো দুইজন ভাইবোন ছিল। সরফরাজ মির্জা আর হুমাশা মির্জা। সরফরাজ ভাই ছিল ভাইজানের সমবয়সী। আর হুমাশা আপা ছিল তাহসিয়া আপার এক মাসের ছোট। হুমাশা, তাহসিয়া আপা আর ছায়া ভাবিজান বান্ধবী ছিল।
বিস্ময়বিমূঢ় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো উপমা। তাহেরার কথায় ভীষণ অবাক হয়েছে এমনই ভনিতা তার। ভ্রূজোড়া কুঁচকে আগ্রহী কণ্ঠে জিগ্যেস করে,
-আগুন কী অসাবধানতায় লেগেছিলো নাকি কেউ শত্রুতা করে লাগিয়েছিল?
-আমি সঠিক জানি না ভাবিজান। তবে সবাই বলে অসাবধানতায় লেগেছিলো।
-ওহ।
আলাপ পর্ব শেষ হতেই তাহেরা চলে যায়। কক্ষের দরজা লাগিয়ে বিছানায় এসে বসে উপমা। মাথার ঘোমটা খুলে শাড়ীর আঁচল বক্ষস্থল থেকে সরিয়ে ফেলে। বড় আয়নায় সামনে দাঁড়িয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে থাকে নিজেকে। মৃদু প্রসারিত হয় তার ওষ্ঠজোড়া।তাচ্ছিল্যর হাসি ফুটে উঠে তার কোমল মুখশ্রীতে। আয়নায় ভেসে উঠে তার গলার লম্বা কাঁটা চিহ্ন। বুকে, পেটে অনেক আগের পোড়া কালো দাগ। উপমা সেই দাগে হাত বুলিয়ে কাঠিন্য স্বরে বলে,
-চিন্তা নেই, একে একে সকলেই তার কর্মের ফল পাবে।
শেষ রাতে কেউ একজন উপমার কক্ষের দরজায় মৃদু স্বরে ঠোকা দেয়। প্রথমে বুঝতে পারে না উপমা যখন বুঝে দ্রুত দরজা খুলে দেয়। হাতে কিছু একটা নিয়ে ইয়াশার দাঁড়িয়ে আছে তার কক্ষের বাহিরে। উপমা হালকা হেসে এদিকসেদিক তাকিয়ে বলল,
-যেটা আনতে বলেছিলাম এনেছো সেটা?
ইয়াশার মুখ ফুটে কিছু বলল না। একটা কাগজের পুটলি ধরিয়ে দেয় উপমার হাতে। উপমা বড় একটি হাসি দেয়। খুশি হয়ে বলে,
-আমি জানতাম তুমি আমাকে নিরাশ করবে না। অনেক বেশি ধন্যবাদ তোমাকে আমার এতো বড় উপকার করার জন্য।
-তুমি জানো তো তুমি কী করতে যাচ্ছ? সোহরাব ভাই কিন্তু তোমাকে ছাড়বে না!
-নির্বোধ!তোমার মনে হয় আমি তোমার ভাইকে ভয় পাই? নিজের কাজ করে তার চোখের সামনে দিয়ে আমি উড়ে যাবো জনাব কিছুই করতে পারবে না।
বাঁকা হাসে উপমা। ইয়াশার জানে উপমার ধারা সব সম্ভব তবুও তার ভয় করছে। যত যাই হোক একসময় ভালো বেসেছিলো এই নারীকে। ইয়াশারকে কিছু বলতে না দেখে উপমা নিজেই বলল,
-আমি জানতাম ইয়াশার তুমি অন্তুত আমাকে বুঝবে। আমার জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্যই ছিল এটা। তোমার সাথে বিবাহ করে সংসার করা নয়!তুমি ভালো কাউকে পাবে। তাহসিয়া বানুর মতো! একজন বন্ধু হিসেবে আমাকেও তুমি আজীবন পাশে পাবে যদি বেঁচে থাকি। এখন যাও কেউ দেখে ফেললে সর্বনাশ।
দরজা লাগিয়ে দেয় উপমা। ইয়াশার কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে আশেপাশে তাকিয়ে চলে যায়।
________________________
পরেরদিনই ইয়াশার তাহসিয়া চলে যায়। তাহেরা কিছুদিন থেকে তারপর তার স্বামীর বাসায় চলে যায়। তুলসীর অবস্থা আগের থেকে আরো বেশি খারাপ। রসইকক্ষে রান্না করছিলো উপমা আর সাইয়েরা। মিনা তার দু মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে গিয়েছে। এখানে থাকলে তার নাকি বেশি কষ্ট লাগে তাই তার বাবা এসে তাকে নিয়ে গেছে। উপমা রান্না করছিলো আর আড়চোখে তুলিকে দেখছিলো। চঞ্চল প্রকৃতির মেয়েটা কিছুদিন ধরে কেমন যেনো চুপচাপ হয়ে গিয়েছে। আগের মতো কথা বলে না, হাসাহাসি করে না। সর্বাক্ষণ ভয়াত মুখ করে রাখে। কোনো বিষয় নিয়ে কী সে ভয় পাচ্ছে! উপমা তুলিকে কয়েকবার জিগ্যেস করেছিল কোনো সমস্যায় আছে কী না। কিন্তু তুলি তাকে তেমন কিছুই বলেনি। ফাতু সবজি কাটতে কাটতে বলল,
-ছোডু ভাবিজান আরো কাডুম?
-না।
ইয়ামিন ডাকায় সাইয়েরা তার কাছে ছুটে যায়। উপমা তুলিকে দেখে বলল,
-তুলি আজ বিকালে আমরা দড়িলাফ খেলবো নে। তুমি খেলবা?
তুলি থমথমে মুখে দাঁড়িয়ে থাকে। মাথা নত করে কিছু বলতে যাবে তার আগেই ফাতু বলে,
-ঐ কী খেলবো!ওর তো শরীরই ভালা না।
তুলি চোরা চোখে ফাতুকে চুপ থাকতে বলে। উপমা সেটা খেয়াল করে। রান্নায় মনোযোগ দিয়ে বলে,
-কেনো কী হয়েছে তুলির? তাছাড়াও আমি বেশ কিছুদিন ধরে দেখছি ও চুপচাপ।
-কী হইসে কয় না ভাবিজান। খালি বমি করে আর চিৎ হইয়া বিছানায় পইড়া থাকে।
উপমার ভ্রুধয় কিঞ্চিৎ উঁচু হয়ে গেলো। সহসা কিছু পলক তাকিয়ে থাকলো তুলির দিকে। গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
-কাজ শেষে তুমি আমার কক্ষে আসবা তুলি।
-আইচ্ছা ভাবিজান
রান্না শেষে খাবার নিয়ে তুলসীর কক্ষে আসে উপমা। এই নারীকে দেখলে তার ভীষণ মায়া হয়। শেষ সময়ে এসেও শান্তি পেলো না সে। কিন্তু একটা কথা আছে না মানুষ তার কর্মের ফল পায়! মানুষ ছাড় দিলেও আল্লাহ পাপীদের ছাড় দেন না। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ভিতরে প্রবেশ করে সে।
তুলসী আধো আধো চোখ খুলে উপমা দেখে। উপমা বিছানায় আধশোয়া হয়ে বসায় তাকে। নিজের হাত দিয়েই খাবার খাইয়ে দিতে থাকে। খেতে খেতে তুলসী বলে,
-বড় বউমা কেমন আছে? বাচ্চা ঠিক আছে ছোট বউ?
-হ্যাঁ আম্মাজান। আপনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন অনাগত নাত-নাতির সাথে খেলবেন না।
তুলসী নিঃশাস ছাড়ে। বড়ই আফসোস সেই নিঃশ্বাসে। ছলছল দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
-আমি আমার জীবনে অনেক বড় পাপ করেছিলাম গো ছোট বউমা। একজন নির্দোষকে যে হত্যা করে সে পাপী আর যে সেই পাপের কথা জেনেও নিজ স্বার্থের কথা ভেবে চুপ থাকে সে হলো তার থেকেও বড় পাপী। আমি মনে হয় মইরা যামু গো ছোট বউ।
উপমা স্বাভাবিক ভনিতায় তুলসীর মুখ মুছে দেয়। স্মিত হেসে বলে,
-এইরকম কথা বলবেন না আম্মাজান। বরং যে সত্যি পাপী তার জন্য দোয়া করুন। সৃষ্টিকর্তা যাতে কম শাস্তি দিয়েই তাকে নিজের কাছে নিয়ে যান।
উপমার ঠান্ডা স্বরে বলা কথায় মৃদু কেঁপে উঠে তুলসী। কিছু একটা ছিল উপমার কথায়। আঁতকে উপমার পানে তাকিয়ে থাকে শুধু।
দুপুরের পর তুলি উপমার কক্ষে আসে। শাড়ী ভাঁজ করছিলো উপমা। তুলিকে দেখে দ্বার লাগিয়ে ভিতরে আসতে বলে। তুলি আজ ভয় পাচ্ছে উপমাকে। কাঁপাকাঁপি হাতে দরজা লাগিয়ে ভিতরে যেয়ে দাঁড়ায়। উপমা নিজের কাজ করতে করতেই প্রশ্ন করে,
-কী হয়েছে তোমার? কেউ কিছু বলেছে?
তুলি কিছু বলতে পারলো না। ঠোঁট কাঁপছে তার। উপমা এবার রেগে যায়। ক্রোধে অগ্নিমূর্তি হয়ে রুক্ষ স্বরে বলল,
-আমাকে ক্রোধিত করো না তুলি। ভালোয় ভালোয় উত্তর দেও?
তবুও কিছু বলল না তুলি। উপমা বুঝলো তুলি এভাবে বলবে না ওকে ভয় দেখাতে হবে। তাই উপমা তৎক্ষণাৎ তুলির গলা চেপে ধরে নিজের একহাত দিয়ে। ভীত তুলি কেঁদে দেয়। উপমা ছেড়ে দেয় তুলিকে। বড় বড় নিঃশাস নিতে থাকে সে। তুলি উপমার পায়ের কাছে বসে পরে। দু পা চেপে ধরে হাউমাউ কেঁদে উঠে। উপমা নিজেকে শান্ত করে তুলির সাথে নিচে বসে। তুলির দু কাঁধে হাত দিয়ে শান্ত কণ্ঠে বলল,
-তুলি দেখো আমি তোমার বড় বোনের মতো। ভয় না পেয়ে কী হয়েছে বলো আমাকে?
-আমারে হেয় মাইরা ফালাইবো। মাইরা ফালাইবো।
উপমা কিছুই বুঝলো না তুলির কথা। কে মেরে ফেলবে!কার কথা বলছে তুলি! তুলির গালে হাত দিয়ে করুণ স্বরে বলল,
-আমি আছি তো তোমার সাথে। তুমি শুধু আমাকে বলো।
-আ আমি গর্ভবতী ছোডু ভাবিজান।
ঝাঁকি দিয়ে উঠে উপমার শরীর। নয়নজোড়া বড় বড় হয়ে যায়। আকস্মিক তার হাত কাঁপতে থাকে। কম্পিত কণ্ঠে জিগ্যেস করে,
-সন্তানের বাবা কে?
-এডা আমি কইতে পারুম না ভাবিজান। মাফ করেন আমারে।
-তুলি বিশ্বাস করো আমাকে। আমি তোমার ভালো চাই।
তুলি কান্না জড়িত কণ্ঠে বলল,
-আপনের শশুর আব্বা।
________________________
সন্ধ্যার পর ছায়ার সাথে সাক্ষাৎ করতে আসে উপমা। কিছুক্ষন কথা বলে দুইজন। উপমাকে গম্ভীর থাকতে দেখে ছায়া প্রশ্ন করে,
-আমাদের হাস্যজ্জ্বল মেয়ে উপমার কী হয়েছে আজকে?
অনেকটা শয়তানির ছলে বলল ছায়া। উপমা মূর্তির মতো বসে রইলো। এক দৃষ্টিতে জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে থাকে। এবার ছায়া একটু চিন্তিত হয়ে পরলো। উপমার গালে হাত দিয়ে বলে,
-উপমা এইরকম লাগছে কেনো তোমাকে?
-তুলি অন্তসত্ত্বা আপা। তাও আবার আলাউদ্দিন মির্জার সন্তান তার গর্ভে!
পিলে চমকে যায় ছায়া। বিস্মিত স্বরে বলল,
-কী!কী বলছো তুমি?
থর থর করে কাঁপছে উপমা। ছায়া উপমার হাত ধরে তাকে শান্ত করার উদ্দেশ্যে বলে,
-নিজেকে শান্ত রাখো উপমা। এই পর্যন্ত এসে এখন ধয্যহারা হলে চলবে না। শয়তানদের যে বিনাশ করতে হবে।
উপমা ধপ করে ছায়ার পায়ের ওপর মাথা দিয়ে শুয়ে পরে। চক্ষু দিয়ে এক ফোঁটা দু ফোঁটা পানি গড়িয়ে পরছে তার। ছায়া উপলব্ধি করতে পারছে উপমার চিত্তের পীড়া। মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। উপমা আজ আর মুখোশের আড়ালে নিজেকে লুকাতে পারলো না। খানিকটা সময় নিয়ে শান্ত স্বরে বলল,
-আমি যদি এতো পীড়া সহ্য করতে না পেরে মারা যাই তাহলে আমার হয়ে তুই আমার প্রতিশোধটা নিয়ে নিবি না ছায়া? পারবি না এই হাত দিয়ে তোর গুছানো সংসার ধ্বংস করতে? বল?
>>>চলবে।